somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"বাজার প্রসঙ্গে" নিয়ে বিতর্ক ৩

২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১০:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্ব ( Click This Link); দ্বিতীয় পর্ব ( Click This Link)

ক:
অভ্যন্তরীণ বাজার দেখে পুজিবাদের বিকাশ বুঝা এক জিনিস আর বাজার কে পুজিবাদ বিকাশের শর্ত হিসাবে হাজির করা এক জিনিস। আপনি যদি বাজারকে পুজিবাদ বিকাশের লক্ষণ হিসাবে দেখতে চান আমার আপত্তি নাই কিন্তু যদি বাজারকে পুজিবাদ বিকাশের কারণ বা শর্ত হিসাবে বলতে চান কিংবা লেনিন বলেছেন বলে দাবী করেন তাহলেই আমার আপত্তি। আপনি ঠিক এই কাজটিই করছেন। আরে ভাই আপনাদের আর কেমনে বুঝাই যে লক্ষণ আর কারণ এক নয়!!!

যাক, আমার আর কিছু বলার নাই। যতটুকু বলেছি তাতে যদি পরিস্কার না হয়, আমার আর কিছু করার নাই। আমি অফ গেলাম।

অ: অন দ্য সো-কলড মার্কেটের ৩য় চ্যাপ্টার পর্যন্ত পড়লাম (অনেক কিছুই বুঝিনি- আজ দাউদ হোসেনের "বাজার প্রসঙ্গে" বইটি কিনবো ভাবছি), দাউদ হোসেনের "রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশ" বইটিরও ২ টি চ্যাপ্টার পড়লাম (টীকাগুলো সহ)। এ পর্যন্ত যতখানি পড়েছি তা থেকে কিছু ফাইণ্ডিংস:

১। আমি একদম শুরুতে যে দুটি প্রশ্নের জবাব খুঁজছি বলে জানিয়েছিলাম- তার ১ম টির ("The development of capitalism certainly needs an extensive home market" - এটা কেবল নারোদনিকদের কোন থিউরি কি না?) জবাব একটা সম্ভবত পেয়েছি। সেটা হলো: নারোদবাদীদের প্রচারিত আলাদা কোন থিউরি ছিল না, অন্তত- লেনিনের এই বই দুটিতে সেরকম কোন থিউরিরই খবর পাইনি। নারোদবাদীরা মূলত মার্ক্সের বিভন্ন আলোচনারই ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং রাশিয়ার প্রেক্ষাপটে মার্ক্সবাদকে ব্যাখ্যা দেয়া ও কিছু সিদ্ধান্ত টানার কাজ করেছে।

এদের আলোচনার পদ্ধতিটা দেখলাম- প্রথমে মার্ক্সের বা মার্ক্সবাদীদের স্বীকার্য আলোচনা করে- তারপরে সেই স্বীকার্য অনুযায়ী রাশিয়ার প্রেক্ষাপটে নিজেদের মত একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়ে সিদ্ধান্ত টানে।
অবশ্য রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশ বইটিতে এক টীকায় এমন অভিযোগও দেখেছি যে, নারোদবাদীরা কখনো কখনো মার্ক্সকে বিকৃতভাবেও উদ্ধৃত করেছে।

২। অন দ্য সো-কলড মার্কেট কোয়েশ্চেন বইটি ২য় চ্যাপ্টারে এগ্রেগেট সোশাল ক্যাপিটাল এর পুনরুৎপাদন নিয়ে আলোচনা আছে। এই আলোচনাটি আসলে নারোদবাদীদেরই করা এবং এটা মার্ক্সের ক্যাপিটাল বইয়ের ২১ নম্বর চ্যাপ্টারের একটা সংক্ষিপ্ত রূপ বলা যেতে পারে। বইটির ৩য় চ্যাপ্টারে দেখা যায়- এই আলোচনার মাধ্যমে নারোদবাদীরা কি সিদ্ধান্ত টেনেছে সেটা: সেটা হলো- সোশাল ক্যাপিটালের পুনরুৎপাদনের ক্ষেত্রে সারপ্লাস ভ্যালুর একুমুলেশনটা হয় সম্পূর্ণ স্বাধীন। লেনিন- এর পরে এই জায়গা থেকেই নারোদবাদিদের ধরেছেন, মানে মার্ক্সের একটা স্বীকার্য থেকে টানা সিদ্ধান্ত কেন সঠিক নয়, কোথায় ভুল- এসব নিয়ে আলোচনা করেছেন।

আমাদের মূল আলোচনায় এটি অপ্রাসঙ্গিক মনে হতে পারে- তারপরেও দিলাম এ কারণে যে- এই বইটিতে লেনিনের যুক্তি করার বা নারোদবাদীদের খণ্ডানোর পদ্ধতিটি দেখানোর জন্য। যতখানি পড়েছি তাতে মনে হয়েছে, লেনিন দুটো জিনিস দেখিয়েছেন: এক) নারোদবাদীদের টানা সিদ্ধান্তের কোন কোন জায়গায় ভুল আছে, এবং দুই) মার্ক্সবাদীদের যেসমস্ত স্বীকার্য তারা উল্লেখ করেছেন- সেগুলো বুঝতে কোন জায়গাটিতে তারা ভুল করছে।

৩। আবার ১ম চ্যাপ্টারে যাই। প্রথমেই বলেছি, প্রথম প্যারার ২য় বাক্যটি আমার মনে হয়েছে নারোদবাদীদের করা মূল প্রশ্নের (১ম বাক্য) স্বপক্ষে করা ১ম যুক্তি। ১ম প্যারার ৩য় বাক্যের (২য় যুক্তিটির) দিকেও যদি দেখি তাহলে একই রকম ফরম্যাট পাই। ৩য় বাক্য:
True, it is said that, by transforming the natural economy of our direct producers into a commodity economy, capitalism is creating a market for itself; but is it conceivable that the miserable remnants of the natural economy of indigent peasants can form the basis for the development in our country of the mighty capitalist production that we see in the West?
এখানেও বাক্যের ১ম অর্ধাংশকে কি নারোদনিক থিউরি বলবো?
সেখানে তো পরিষ্কার বলা হচ্ছে: সরাসরি উৎপাদকদের সাধারণ অর্থনীতি যখন পণ্য অর্থনীতিতে পরিণত হয়- তখন পুঁজিবাদ নিজের জন্য একটা বাজার সৃষ্টি করে।
আসলে- এটাও একটা মার্ক্সবাদী স্বীকার্য; এটাকে ধরেই পরবর্তী প্রশ্ন: সাধারণ অর্থনীতির এমন খারাপ অবস্থা থেকে পশ্চিমের মত শক্তিশালী অর্থনীতির ভিত কি তৈরী করা সম্ভব রাশিয়ায়?
আবার, উন্মেষকালে পুঁজিবাদ যে বাজারকে সৃষ্টি করছে- এটাও যদি নারোদনিকরা অস্বীকার করছে না। ফলে- অভ্যন্তরীন বাজারকে পুঁজিবাদের বিকাশের জন্য আবশ্যক বলার মাধ্যমে তারা কি প্রকাশ করতে চেয়েছে বলে মনে হয়?

ক বলেছেন: আরে ভাই আপনাদের আর কেমনে বুঝাই যে লক্ষণ আর কারণ এক নয়!!!
===>>
লক্ষণ আর কারণ এক এটা আমি কখনোই বলিনি, ফলে যা আমি বলিনি বা যা আমি নিজে মনে করি না- সেটাই আমাকে বুঝানোর দরকার নেই।

তবে তোমারে মনে শর্ত আর লক্ষণের মধ্যে সম্পর্কটা একটু বুঝানো দরকার। (শেষ পর্যন্ত ভাষা/শব্দ নিয়ে লাগতে হবে আগে ভাবিনি!!!).....

আমাশয় রোগটিকে সনাক্ত করা হয় তার কিছু লক্ষণ দেখে- যেমন পায়খানার কালার, ধরণ, ফ্রিকুয়েন্সি- পায়খানা দিয়ে বিজল যাচ্ছে কি না.. ইত্যাদি। এগুলো হলো লক্ষণ। এখন পায়খানার যদি স্বাভাবিক থাকে- এসব লক্ষণ যদি না দেখা যায়- তবে কি বলা হবে যে- আমাশয় হয়েছে? যেসমস্ত লক্ষণের উপর নির্ভর করে রোগের ধরণ নির্ধারণ করা হয়- সেগুলো কি রোগটি হয়েছে কি না তার স্বরূপ বুঝা যায়- সে লক্ষন গুলো শর্ত হিসাবে কাজ করছে না?

পুঁজিবাদ থাকা মানেই একটা পণ্য অর্থনীতি থাকা, একটা অভ্যন্তরীণ বাজার থাকা। পুঁজিবাদ আবির্ভাবের সাথে সাথে সে একটা বাজার সৃষ্টি করেই আসে। কিন্তু পুঁজিবাদ থাকা মানেই এই অভ্যন্তরীণ বাজারটি সব সময়ই বিকাশমান- তা নয়। বরং- এটা বলা যেতে পারে- পুঁজিবাদের বিকাশ মানে অভ্যন্তরীণ বাজারের বিকাশ। এখন পুঁজিবাদের বিকাশ হচ্ছে কি না এটা কিভাবে বুঝবো? সেটা বুঝার উপায় হলো- তার অভ্যন্তরীণ বাজার। কেননা- অভ্যন্তরীন বাজারই হচ্ছে- একটা রাষ্ট্রের টোটাল প্রোডাক্টিভ ফোর্সকে বুঝার ক্ষেত্র- বাজার দিয়ে বুঝা যায় রাষ্ট্রটির প্রোডাক্টিভিটি- মিনস অব প্রোডাকশনের প্রোডাক্টিভিটি, কমোডিটির প্রোডাক্টিভিটি, লেবার-কমোডিটির প্রোডাক্টিভিটি কেমন তা বুঝা যায়। (আগেই বলেছি- জাতীয় বাজারটি থেকে বৈদেশিক বাজারকে সাবট্রাক্ট করলে হোম মার্কেট পাওয়া যায়)।

সুতরাং- পুঁজিবাদের বিকাশ এটা একটা বিমূর্ত ফেনোমেনা- এটাকে মূর্ত করা সম্ভব তার লক্ষণ দিয়েই- অর্থাৎ তার প্রোডাক্টিভিটি বা প্রোডাক্টিভ ফোর্সের বিকাশ দিয়েই- সেটা আরো মূর্ট হয় অভ্যন্তরীণ বাজার দিয়ে। ফলে- পুঁজিবাদের বিকাশ হচ্ছে না সংকোচন ঘটছে- সেটা বুঝার উপায় সেই অভ্যন্তরীণ বাজারের লক্ষণ দেখেই। এভাবে বললেই বলতে চাই। এভাবে বলাকে যদি কেউ শর্ত হিসাবে দেখায়- তাহলে সেই অর্থে শর্ত হিসাবে বলতে আপত্তি দেখি না। কিন্তু অবশ্যই- অভ্যন্তরীণ বাজারকে কারণ হিসাবে বলি না। এবং কেউ যদি শর্ত আর কারণকে সমার্থক মনে করে- তবে সেই অর্থে একে শর্ত বলবো না।

আরেকটি বিষয়: অভ্যন্তরীণ বাজার ও পুঁজিবাদের বিকাশ এদুটোকে একে অপরের একদম অঙ্গাঙ্গি সম্পর্কযুক্ত, একটাকে বাদ দিয়ে আরেকটা বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখা ভুল- এটা জানার পরেও, ক এর আলোচনায় দেখা যাচ্ছে- বিকাশের ধারায় পুঁজিবাদ একটা অভ্যন্তরীণ বাজার সৃষ্টি করে- এটার পক্ষে যত জোরালো অবস্থান ব্যক্ত করছে- ঠিক ততটাই পুঁজিবাদের বিকাশের জন্য অভ্যন্তরীন বাজার আবশ্যক- এটাকে বাতিল করছে। প্রশ্ন আসছে- সে কি বিচ্ছিন্ন ভাবে দেখছে না? একটাকে আরেকটার উপর অধিক গুরুত্বারোপ করছে না?

অ: অন দ্য সো-কলড মার্কেট কোয়েশ্চেন বইটি পড়া শেষ করলাম (২-৩-৪-৫ চ্যাপ্টারের অনেক কিছুই বুঝিনি, আবার পড়তে হবে- দাউদ হোসেনের অনুবাদ কিনেছি- দেখি বুঝি কি না!)- চ্যাপ্টার ৭ আর ৮ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বাজারকে বুঝতে এবং আলোচ্য ডিবেটটির বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়ার জন্যে।
যাহোক- এই বইটি পড়ে আমার ফাইণ্ডিংসগুলো আমি এখানে তুলে ধরছি:

১। বলা যায় একদম শুরুতে যে দুটি প্রশ্নের জবাব খুঁজছি- সে দুটির জবাব পেয়েছি:
এক) "The development of capitalism certainly needs an extensive home market" - এটা কেবল নারোদনিকদের কোন থিউরি কি না? ==>> গতকালই বলেছি- এটা নারোদবাদীদের থিউরি বা দৃষ্টিভঙ্গী নয়; নারোদবাদীদের থিউরি বা দৃষ্টিভঙ্গি বলা যাবে এতটুকুই : "কৃষকদের ধ্বংসের কারণে- জনগণের দারিদ্রায়নের কারণে- অভ্যন্তরীণ বাজার যেহেতু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ও সংকুচিত হচ্ছে - সেহেতু রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটছে না"। এটাই হলো নারোদবাদীর দৃষ্টিভঙ্গী- তারা বাজারের সাথে পুঁজিবাদের বিকাশের সম্পর্কের যে কথা বলেছে- সেটা এই সিদ্ধান্ত দাঁড় করানোর জন্য একটা সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গী।

দুই) লেনিন কি আসলেই পুঁজিবাদ ও বাজার প্রশ্নে "The development of capitalism certainly needs an extensive home market" এর বিপরীত মত বা অবস্থান ধারণ করেন কি না?===>> অন্তত বলতে পারি, অন দ্য সো-কলড মার্কেট কোয়েশ্চেন বইটিতে এই বাক্যটির বিপরীতে একটা টু শব্দও লেনিন করেননি।

২। কেন লেনিন- ঐ বাক্যাংশের বিরুদ্ধে কোন যুক্তি করেন নি?
লেনিন যদি ঐ বাক্যের বিপরীত মত ধারণ করতেন, তবে কি- একদম প্রথমে- ঐটাকেই উড়িয়ে দিতেন না? "আরে ভাই, তোমরা একটা ভুল স্বীকার্য থেকে সিদ্ধান্ত টানলে তো ভুল সিদ্ধান্তই পাইবা"- এই বইলা শুরু করাটাই তো স্বাভাবিক ছিল।

৩। ৬ নং চ্যাপ্টারে দেখাচ্ছেন- বাজার আর শ্রমের সামাজিক বিভাজন তথা সামাজিক শ্রমের স্পেশালাইজেশন পরষ্পর অভেদ্য, দুইটার একটাকে আরেকটা ছাড়া বুঝা যাবে না।

মার্কসকে কোট করে দেখাচ্ছেন- কোন দ্রব্যের পণ্য হওয়ার সাথেই জড়িত হচ্ছে- বিনিময় মূল্যের বিষয়টি- আর বিনিময় মূল্য মানেই একটা বাজার। অর্থাৎ, পণ্য অর্থনীতি মানেই একটা বাজার অর্থনীতি।

সুতরাং- শুধু উৎপাদন, উৎপাদন সম্পর্ক, উৎপাদন উপায় এসমস্ত দিয়েই পুঁজিবাদ তথা এর বিকাশকে বুঝা সম্ভব নয়- এসমস্তকেও বুঝা যায়- বাজার দিয়ে। উৎপাদনটা পণ্য উৎপাদন কি-না- সেটা পরিষ্কার হয় বাজারের প্রশ্নে, অর্থাৎ ঐ উৎপাদনের সামাজিক বিনিময় মূল্য তৈরী হয়েছে কিনা সেটা দিয়ে।

৪। ১ম চ্যাপ্টারের ১ম প্যারায় রাশিয়ায় পুঁজিবাদ বিকাশ প্রসঙ্গে নারোদবাদীদের মূলত দুটি যুক্তি দেখি: এক) কৃষকদের ধ্বংস বাজারকে সংকুচিত করছে, ফলে- পুঁজিবাদের বিকাশও সম্ভব নয়। জনগণের দারিদ্রায়নের মধ্য দিয়ে দিয়ে যে পুঁজিবাদকে পাওয়া যাচ্ছে তা একটা দুর্বল ভিত্তির ও অপ্রতুল উৎপাদনের। দুই) এরকম অবস্থায় পশ্চিমের মত পুঁজিবাদের পূর্ণাঙ্গ বিকাশ সম্ভব কি না?

৫ নং চ্যাপ্টারে ২য় যুক্তিটি অর্থাৎ পূর্ণাঙ্গ বিকাশের বিষয়ে আলোচনা আছে। ৮ নং চ্যাপ্টারে এক নং যুক্তিটি খুব চমৎকার ভাবে খণ্ডন করেছেন। সেটা করতে গিয়ে- নিকোলাই থেকে কোট করেছেন আবার- নারোদবাদীদের যুক্তিগুলোকে তুলে ধরেছেন- এবং তারপরে সেটাকে খণ্ডন করেছেন। সেদিক থেকে- এই চ্যাপ্টারটিকে মূল খণ্ডনমূলক চ্যাপ্টার বলা যেতে পারে। প্রথমেই দেখি: নারোদবাদীদের যুক্তিকে লেনিন কিভাবে উপস্থাপন করেছেন:

"I am referring to Mr. Nikolai—on.[1]
He regards as the greatest “obstacle” to the development of capitalism in Russia the “contraction” of the home market and the “diminution” of the purchasing power of the peasants. The capitalisation of the handicraft industries, he says, ousted the domestic production of goods; the peasants had to buy their clothing. To obtain the money for this, the peasant took to the expansion of his crop area, and as the allotments were inadequate he carried this expansion far beyond the limits of rational farming; he raised the payment for rented land to scandalous heights, and in the end he was ruined. Capitalism dug its own grave, it brought “people’s economy” to the frightful crisis of 1891 and ... stopped, having no ground under its feet, unable to “continue along the same path.” Realising that “we have departed from the time-hallowed people’s system i1ussia is now waiting .. for orders from the. authorities “to infuse large-scale production into the village Community.” ..."

এখানে লক্ষণীয় যে- রাশিয়ায় পুঁজিবাদের বিকাশের বাধা হিসাবে দেখানো হয়েছে- বাজারের সংকোচন ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতা কমে যাওয়াকে। দেখানো হয়েছে কৃষক কিভাবে ধ্বংস প্রাপ্ত হচ্ছে- কিভাবে বাজার সংকুচিত হচ্ছে- সেটাই নারোদবাদীরা তুলে ধরেছে। সেটা থেকে- কিভাবে সিদ্ধান্ত টানা হচ্ছে যে: বাজারের সংকোচন পুঁজিবাদের বিকাশে বাঁধা? বাজার সংকুচিত হলে কি? সেটার সাথে পুঁজিবাদের বিকাশের সম্পর্ক কি? সম্পর্কটা হলো- ঐটাই- সাধারণ স্বীকার্য: পুঁজিবাদের বিকাশের জন্য অভ্যন্তরীণ বাজারের এক্সপানশন দরকার। এখানে এটা উল্লেখ না করা হলেও (উল্লেখ করার দরকার নেই- কারণ সাধারণ সেন্সেই বুঝা যায়)- ১ম চ্যাপ্টারের ১ম প্যারায় এটা উল্লেখ করা হয়েছে। এবং ঐ উল্লেখের মধ্যে সেটাকে কেউ কারণ হিসাবে ঘোষণা করে নি। আমি নিজে অন্তত ঐ বাক্যের মধ্য দিয়ে তাকে কারণ হিসাবে বুঝিনি- বুঝেছি লক্ষণ হিসাবেই, এবং আমার মনে হয়েছে- লেনিনও সেটাকে কারণ হিসাবে বুঝেন নি।

৫। এবারে নারোদবাদীদের এই যুক্তিকে লেনিন কিভাবে খণ্ডন করেছেন (চ্যাপ্টার ৮ থেকেই কোট করছি):
Nothing of the kind exists in reality. Commodity production could not have arisen in Russia if the productive units (the peasant households) had not existed separately, and everybody knows that actually each of our peasants conducts his farming separately and independently of his fellows; he carries on the production of products, which become his private property, at his own exclusive risk; he enters into relation with the “market” on his own.

Let us see how matters stand among the “peasantry.”

“Being in need of money, the peasant enlarges his crop area excessively and is ruined.”

But only the prosperous peasant can enlarge his crop area, the one who has seed for sowing, and a sufficient quantity of livestock and implements. Such peasants (and they, as we know, are the minority) do, indeed, extend their crop areas and expand their farming to such an extent that they cannot cope with it without the aid of hired labourers. The majority-of peasants, however, are quite unable to meet their need for money by expanding their farming, for they have no stocks, or sufficient means of production. Such a peasant, in order to obtain money, seeks “outside employments,” i.e., takes his labour-power and not his product to the market. Naturally, work away from home entails a further decline in farming, and in the end the peasant leases his allotment to a rich fellow community member, who rounds of! his farm and, of course, does not himself consume the product of the rented allotment, but sends it to the market. We get the “impoverishment of the people,” the growth of capitalism and the expansion of the market. But that is not all. Our rich peasant, fully occupied by his extended farming, can no longer produce as hitherto for his own needs, let us say footwear: it is more advantageous for him to buy it. As to the impoverished peasant, he, too, has to buy footwear; lie cannot produce it on his farm for the simple reason that he no longer has one. There arises a demand for footwear and a supply of grain, produced in abundance by the enterprising peasant, who touches the soul of Mr. V. V. with the progressive trend of his farming. The neighbouring handicraft footwear-makers find themselves in the same position as the agriculturists just described: to buy grain, of which the declining farm yields too little, production must be expanded. Again, of course, production is expanded only by the handicraftsman who has savings, i.e., the representative of the minority; he is able to hire workers, or give work out to poor peasants to be done at home. The members of the majority of handicraftsmen, however, cannot even think of enlarging their workshops: they are glad to “get work” from the moneyed buyer-up, i.e., to find a purchaser of their only commodity—their labour-power. Again we get the impoverishment of the people, the growth of capitalism and the expansion of the market; a new impetus is given to the further development and intensification of the social division of labour. Where will that movement end? Nobody can say, just as nobody can say where it began,, and after all that is not important. The important thing is that we have before us a single, living, organic process, the process of the development of commodity economy and the growth of capitalism. “Depeasantising” in the countryside shows us the beginning at this process, its genesis, its early stages; large-scale capitalism in the towns shows us the end of the process, its tendency. Try to tear these phenomenon apart, try to examine them separately and independently of each other and you will not get your argument to hang together; you will be unable to explain either one phenomenon or the other, either the impoverishment of the people or the growth of capitalism.
.....

এবারে কি পরিষ্কার হচ্ছে না বিষয়টি?.......

প্রথমেই জানিয়ে দিচ্ছেন- প্রকৃত চিত্র এরকম না। এবং ক্ষণে ক্ষণে ধরিয়ে দিয়েছেন- রাশিয়ায় বাজার আসলে সংকুচিত হচ্ছে না, বরং বাজারের এক্সপানশন প্রসেসটাই চোখে আঙ্গুল দিয়ে ধরিয়ে দিলেন।

এখানেও বাজারের বিস্তার ও পুঁজিবাদের বিকাশের প্রসঙ্গটি পাশাপাশি হাত ধরাধরি করে এসেছে। যে কয়বার দেখিয়েছেন এভাবে দেখিয়েছেন: the growth of capitalism and the expansion of the market।

কৃষকদের ধ্বংস মানেই- এরা জমি থেকে মুক্ত হচ্ছে- গুটিকয়েক ধনী কৃষকের বড় ফার্মে গিয়ে হাজির হচ্ছে- এরা সেখানে চাষ করে ফসল ঘরে নিতে পারে না- নেয় মজুরি- এবং এভাবেই তারা নিজেদের শ্রমটাকেই একটা কমোডিটিতে পরিণত করছে এবং এর মানেই হচ্ছে- একটা মার্কেট তৈরী হচ্ছে- অর্থাৎ- বাজার এক্সপান্ডেড হচ্ছে- অর্থাৎ পুঁজিবাদ বিকাশিত হচ্ছে। খুব ভালো করে লক্ষ করুন- লজিকের পরম্পরাগুলো।

শ্রমের সামাজিক বিভাজন কিভাবে তৈরী হচ্ছে- স্পেশালাইজেশন কিভাবে হচ্ছে- সেটা কিভাবে মার্কেটকে এক্সপাণ্ড করছে- সেই আলোচনাতেও একই ক্রম। আর- মার্কেট এক্সপাণ্ড হচ্ছে মানেই- পুঁজিবাদ বিকশিত হচ্ছে।

৬। এভাবেই পুঁজিবাদ বিকাশের একটা প্রোসেস লেনিন দেখালেন। তার মতে এটা single, living, organic process, the process of the development of commodity economy and the growth of capitalism। এই বিকাশের শেষ কোথা? কেউ জানে না- এটা চলতেই থাকবে। এই কথাগুলোর মানে কি?

৭। এখানে লেনিনের আরেকটি লাইন আবার কোট করছি:
“Depeasantising” in the countryside shows us the beginning at this process, its genesis, its early stages; large-scale capitalism in the towns shows us the end of the process, its tendency.

এই লাইনটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ডিপিজেন্টিং এর মাধ্যমে প্রোসেসটির শুরু, আর- লার্জ স্কেল পুঁজিবাদী উৎপাদনের মাধ্যমে প্রোসেসটির সমাপ্তি। প্রোসেস মানে- the process of the development of commodity economy and the growth of capitalism।
সুতরাং- এই বইটিতে ডেভলোপমেন্ট বা গ্রোথ অব ক্যাপিটালিজম মানে কিন্তু ক্যাপিটালিজমের উন্মেষ বা শুরুর বিকাশ- জন্ম এসব।

সুতরাং- The “home market” for capitalism is created by developing capitalism itself, which deepens the social division of labour and resolves the direct producers into capitalists and workers, এখানে ডেভলোপিং ক্যাপিটালিজম মানে ক্যাপিটালিজমের উন্মেষকালে- সে একটা বাজার তৈরী করে, কিন্তু পুঁজিবাদ থাকা মানেই সে সবসময়ই নতুন নতুন বাজার তৈরী করবে বা বাজারের বিস্তার ঘটাবে- এটা না।

৮। দাউদ হোসেনদের দাবী: বাংলাদেশে যেহেতু পুঁজিবাদী অর্থনীতি বিরাজ করছে- সেহেতু এটা এর বাজারকে বিকশিত করবে। যেহেতু- বাজারের বিকাশ পুঁজিবাদের উপর নির্ভরশীল।

আসলেই কি তাই? কখনোই না। পুঁজিবাদ থাকলেই বাজারের বিকাশ হয় না। আজকে এই পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থায়- কারো অভ্যন্তরীণ বাজার বাড়ে- একই সাথে দশটা দেশের অভ্যন্তরীণ বাজার সংকুচিত হয়। অন্যদের বৈদেশিক বাজার দিয়ে অভ্যন্তরীণ বাজার স্থানান্তিত হয়। এখানে- বুঝার ভুলটা হলো: বাজারের বিকাশ আর পুঁজিবাদের বিকাশ সমার্থক। পুঁজিবাদের বিকাশ মানেই বাজারের বিকাশ- বাজারের বিকাশ মানেই পুঁজিবাদের বিকাশ (পুঁজিবাদ মানেই বাজারের বিকাশ না), একই ভাবে বাজারের সংকোচন মানে পুঁজিবাদের অধপতন- পুঁজিবাদের অধপতন মানেই বাজারের সংকোচন। কিন্তু- পুঁজিবাদের বিকাশ বা অধপতন এটা বিমূর্ত- ফলে সেটা আমরা দেখবো- বাজার দেখেই, সে হিসাবে পুঁজিবাদের বিকাশ/অধপতন বাজারের উপরই নির্ভরশীল। এটা বলা মানে এই নয় যে- বাজার পুঁজিবাদের কারণ!!!

৯। সিনারিওটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এক পলক দেখি:
স্বাধীনতার পর থেকে আজ অবধি এখানকার কৃষক জমি হারিয়েছে। এখন দেখি- এর ফলেই মার্কেট এক্সপানশন হয়েছে? পুঁজিবাদ বিকশিত কি হয়েছে?

বাংলাদেশের ষাট-সত্তুর ভাগ লোক ভূমিহীন। ভূমিহীনদের কি সবার শ্রমই পণ্য। পণ্য হতে গেলে- তার বিনিময় মূল্য লাগে- মানে বাজার দরকার। তাহলে- যে ভূমিহীন কৃষক- বেকার, যে ভিক্ষাবৃত্তি বা কোনরকমে দিন যাপন করছে তার শ্রমটাও কি পণ্য? না পণ্য না। কারণ যতক্ষণ পর্যন্ত তার শ্রম (এটার একটা ব্যবহারিক মূল্য আছে)- বাজারে আসছে, এর একটা বিনিময় মূল্য তৈরী হচ্ছে- ততক্ষণ কিন্তু এটা পণ্য নয়। ফলে, যখন বাংলাদেশে ভূমিহীনদের শ্রম বিকানোর মত বাজার তৈরী না হচ্ছে মানে- শিল্প-কারখানা তৈরী হচ্ছে- ততক্ষণ এই ভূমিহীনরা বাজারকে বাড়াতে পারছে না- অর্থাৎ পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটছে না। উল্টো- স্বাধীনতার পর থেকে আমরা একের পর এক শিল্প ধ্বংস করেছি- চাষযোগ্য জমি হারিয়েছি- মানে এইসব ভূমিহীনদের শ্রমটাকে বিক্রি করার ক্ষেত্র সংকুচিত করেছি- সে অর্থে আমাদের বাজারটা সংকোচনমুখী। এবং একই সাথে আমাদের পুঁজিবাদ অবিকাশমান ও নিম্নমূখী।

আমার মনে হয়- পুঁজিবাদকে বুঝতে গেলে তাই বাজারকে প্রোপারলি রিড করা ছাড়া আর কোন উপায় নাই। যতই- লেনিনের এমনকি মার্কসের টুকরো টুকরো কিছু লাইন বিচ্ছিন্নভাবে চোখ বন্ধ করে মুখস্থ করে চিৎকার করে যাওয়া হোক না কেন।

সবাইকে ধন্যবাদ, আমার কথা বার্তা শেষ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০০৯ সকাল ১০:০৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×