৮ বছরের শিশু ফাহিম। সাতক্ষীরা কুশখালি গ্রামের মুজিবর রহমান ১৪ জুন বাজার থেকে এক কেজি মাংস কিনে প্রতিবেশীর নাতি আট বছরের ফাহিমকে বলে তার বাসায় দিয়ে আসতে।
ফাহিম মুজিবর রহমানের বাড়ি গিয়ে দেখে তাদের বাড়িতে কেউ নেই। সে সময় বাড়ির সামনে থাকা ভ্যানের ওপর মাংস রেখে চলে আসে সে। পরে মুজিবর রহমানের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি এসে দেখে মাংসের প্যাকেট কুকুরে টানাটানি করছে।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবর রহমান ফাহিমকে ডেকে পাঠায় এবং মাংসের প্যাকেটের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। ফাহিম উত্তর দিলে মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বেদম মারপিট করে।
এতে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফেটে রক্ত বের হতে থাকলে রক্ত বন্ধ হওয়ার জন্য ফেভিকল আঠা লাগায় মুজিবর ও তার পরিবারের সদস্যরা। তাতে রক্ত বন্ধ না হয়ে উল্টো ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে চাক চাক হয়ে ওঠে। তখন কোনো উপায় না পেয়ে ফাহিমকে একটি বাক্সে বন্দি করে রাখে তারা। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর পর রাতে কোনো এক সময় ফাহিমকে পাশের একটি পাটক্ষেতে ফেলে দেয় তারা।
ডেইলি স্টার
এনটিভি বিডি
বিডিনিউজ
চ্যানেল আই অনলাইন
গত ১৪ জুন এই নৃশংস ঘটনাটি ঘটলেও পরের দিন ১৫ জুন সন্ধ্যায় কুশখালীর সীমান্ত এলাকার পাটক্ষেত থেকে শিশু ফাহিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
আরো শুনবেন? খুনিরা আবার জানাযায় অংশও নিয়েছে!
"ফাহিমের জানাজায় অংশ নেয় খুনীরা!" সিলেট টুডে
সারাদেশে এমন কান্ড (শিশু নির্যাতন) কয়েকমাস আগেও এপিডেমিক হারে দেখেছি আমরা।
রাকিব (১২), খুলনা, গ্যারেজে কাজ ছেড়ে দেওয়ার অপরাধে মোটর টায়ারে পাম্প দেওয়ার পাইপ মলদ্বারে প্রবেশ করিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এ ঘটনায় গ্যারেজ মালিক মিন্টুসহ আরো তিনজনকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে এলাকাবাসী। বিচারে ২ আসামীর ফাঁসির রায় হয়।
এর কিছু আগে, সিলেটে শিশু সামিউল আলম রাজন (১২)কে পিটিয়ে হত্যায় মামলার প্রধান আসামি কামরুল ইসলামসহ চার জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল আদালত। শিশুটিকে নির্যাতনের সময় সে দৃশ্য ভিডিও করে ফেসবুকে আপলোড করে খুনিরা। ২৮মিনিটের ভিডিও ফুটেজটি প্রচন্ড নির্মম আর পৈশাচিক ছিল।
রাজন এবং রাকিব - এ দুটি শিশু কতটা ন্যায় বিচার পেয়েছে তা জানি না। এমন পৈশাচিক ভাবে দুটি শিশুকে খুন করতে পারা মানুষগুলোর কথে ভাবতে গেলে গা শিরশির করে ওঠে। তবে, ওরা কিছুটা সহায়তা পেয়েছিল মিডিয়ার, নিয়মিত ফলোআপ দেশজুড়ে জনমত তৈরী করতে পেরেছিলো ঐ নৃশংস খুনীদের বিপক্ষে।
আর ৮ বছরের শিশু ফাহিম এর বিষয়টা পড়ে থাকছে সেই সাতক্ষীরা কুশখালিতেই - ফাহিম এর স্বজনদের মাঝে, কিছু অনলাইন একটিভিস্টদের স্ট্যাটাসে আর কয়েকটা সংবাদপত্রের একদিনের নিউজ আকারে।
এবিষয়ে কি আমাদের কিছুই করার নেই? ব্লগের সাংবাদিক বন্ধুদের অনুরোধ করবো বিষয়টা নিজেদের পত্রিকাতে একটু সামনের দিকে আনার চেষ্টা করা যায় কি না সে বিষয়ে একটু ভেবে দেখতে।
ব্যাকআপঃ নিজের ব্লগ
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ২:৩৩