somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রাজীব নুর
আমার নাম- রাজীব নূর খান। ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে আমার বিশ্বাস নেই। নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসি। সৎ ও পরিশ্রমী মানুষদের শ্রদ্ধা করি।

সূরা আত-তাওবা

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো-
বহু লোক কোরআন পড়তে পারলেও বাংলা অর্থ জানে না। অথচ তার পুরো কোরআন মূখস্ত। পুরো কোরআন মূখস্ত করে বসে আছে অথচ জানে না- সূরার তাফসীর, আর শানে নুযুল। জানে না সূরার ব্যাখ্যা। কাজেই যারা কোরআন পড়েন তাদের উচিত বাংলা অর্থ বুঝে পড়া। প্রতিটা সূরার তাফসীর আর শানে নুযূল জানা। কোন সূরা কেন নাযিল হয়েছে। কখন নাযিল হয়েছে। উদ্দেশ্য কি। এখন ভালো ভালো প্রিন্টের কোরআন পাওয়া যায়। তাতে বাংলা অনুবাদ, অর্থ, উচ্চারন, তাফসীর, শানে নুযুল সবই থাকে। আমি মাদ্রাসার বহু ছেলেপেলে কে দেখেছি অল্প বয়সেই কোরআন মূখস্ত করে ফেলেছে। কিন্তু তারা বাংলা অর্থ জানে না।

সূরা 'আত-তাওবাহ' কোরআনের নবম সূরা।
এই সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৯ টি। তওবা অর্থ ক্ষমা। মুসলমানদের তওবা কবুল হওয়ার বর্ণনা রয়েছে এই সূরায়। এই সূরার বৈশিষ্ট্য হলো এর শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম লেখা হয় না। কারণ কোরআন শরীফের বিভিন্ন অংশ ২৩ বছরের দীর্ঘ পরিসরে অবতীর্ণ হয়েছিল। কখনও একটি পূর্ণাঙ্গ সূরাও ভেঙে ভেঙে অবতীর্ণ হতো। জিব্রাইল (আ:) তা কোথায় বসাতে হবে, তা বলে দিতেন। অনেকে এ সূরাকে আনফালের অংশ মনে করেন। সূরা তাওবা পড়তে চাইলে।

সূরা তাওবার বিষয়বস্তুঃ এই সুরায় মূলত ইসলামের দৃষ্টিতে যুদ্ধবিগ্রহ, জিহাদের আহকাম, স্বরূপ ও প্রেক্ষাপট বর্ণিত হয়েছে। বিশেষত কাফিরদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল, মক্কা বিজয়, তাবুক ও হুনাইনের যুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে এখানে। মুনাফিকদের চরিত্র ও পাপাচারের আলোচনা রয়েছে। মুহাজির ও আনসারদের প্রশংসা করা হয়েছে। ইসলাম গ্রহণ ও মহানবী (সা.)-এর হাতে 'বাইআত' গ্রহণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে বৈশিষ্ট্য মণ্ডিত এই সুরায়। সূরার সর্বত্র কিছু যুদ্ধ (মক্কা বিজয়, হোনাইন যুদ্ধ, তাবুক যুদ্ধ) যুদ্ধ সংক্রান্ত ঘটনাবলী এবং এ সংক্রান্ত হুকুম, মাসায়েল ইত্যাদির বর্ণনা রয়েছে। এসকল যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আরবের সকল গোত্রের সাথে সকল চুক্তি বাতিলের নির্দেশ আসে।

সূরা আত-তাওবার ১০০ নম্বর আয়াতে মহান আল্লাহ বলেছেন- "মুহাজের ও আনসারদের মধ্যে যারা প্রথম অগ্রসর হয়েছে এবং যারা নিষ্ঠা ও সততার সাথে তাদেরকে আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট, আল্লাহ তাদের জন্য প্রস্তুত করেছেন, জান্নাত বা বেহেশতী কুঞ্জ কানন, যার নিম্নদেশে নদী প্রবাহিত, তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে এটাই মহা সাফল্য। এই সূরার ১০‌১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে- “তোমাদের চর্তুদিকে থাকা মরু বাসীদের মধ্যকার একটি দল হচ্ছে মুনাফিক এবং মদীনা বাসীদের মধ্যেও অনেকে কপটতায় সিদ্ধ। তুমি তাদেরকে চেন না। আমি তাদেরকে চিনি। অচিরেই আমি তাদেরকে দুইবার শাস্তি দেব। পরে তাদেরকে আরও বড় শাস্তির জন্য ফিরিয়ে আনা হবে।

মনে রাখবেনঃ
ইসলাম শুধু এবাদত সর্বস্ব ধর্ম নয় যে, মানুষ শুধু উপাসনা ও বিশেষ এবাদত বন্দেগীর মধ্যেই নিমজ্জিত থাকবে। বরং দারিদ্র, সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষের জন্য কাজ করা, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় বিষয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা প্রত্যেক মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। কাজেই প্রত্যেক মুসলমানের ধর্মীয় কর্তব্য হচ্ছে উপার্জিত অর্থের একটি অংশ আল্লাহর রাস্তায় দান করে দেয়া। এর মধ্যে যাকাত হচ্ছে বাধ্যতামূলক, আর সদকা বাধ্যতামূলক না হলেও এর ওপর অনেক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে এবং সদকা অত্যন্ত সওয়াব বা পূণ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।

অষ্টম হিজরিতে মুসলমানরা মক্কা জয় করেছিলেন।
এ বিজয়ের পর বিশ্বনবী (সা.) সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেন। ফলে মক্কার মুশরিকরা আগের মতই এ শহরে জীবন-যাত্রা অব্যাহত রাখে। অর্থাৎ তারা তখনও কুসংস্কার, কুফর ও শিরকে পরিপূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানগুলো অব্যাহত রাখে। তাদের কেউ কেউ তখনও কাবা ঘরের চারদিকে উলঙ্গ অবস্থায় তাওয়াফ করতো। এইসব অনুষ্ঠান ছিল মুসলমানদের জন্য অসহ্য বিষয়। তারা এ বিষয়ে আল্লাহর নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ অবস্থায় সুরা তওবার প্রথম আয়াত নাজিল হয়।

মানুষের কল্যাণে কুরআ নাজিল করা হয়েছে।
যা মুমিনের পথ প্রদর্শক এবং সকল সমস্যার সমাধানকারী। যার মধ্যে নিহিত রয়েছে সকল সমস্যার সমাধান। মানুষের পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণে রয়েছে বিশেষ কিছু আয়াত। সূরা তাওবা প্রত্যেকদিন যে একশত বার পাঠ করবে, সে পার্থিব ও পরকালীন সকল বিপদ-আপদ হতে মুক্তি পাবে। যে দুই বা তিনবার পড়বে সে বিচারকের সামনে যাবে বিচারক তার প্রতি সহৃদয়তা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করবে। যে এই সূরা দিনে কমপক্ষে একবার পড়বে সে দিন তার মৃত্যু হবে না।

আগের পোষ্ট গুলোঃ

১। সূরা আল ফাতিহা
২। সূরা বাকারা
৩। সূরা আল ইমরান
৪। সূরা আন নিসা
৫। সূরা মায়েদা
৬। সুরা আন’য়াম
৭। সূরা আল আরাফ
৮। সূরা আনফাল
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৩:১৭
৩৫টি মন্তব্য ৩২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×