জেদ্দাতে আজ বৃষ্টি। মেঘের গর্জন না থাকলেও চারপাশ অন্ধকার হয়ে থেমে থেমে বৃষ্টি। পুরো দেশীয় আমেজ। মরুতে বৃষ্টি মানে অন্য রকম আনন্দ স্থানীয়দের জন্য।
নুর। আমার অপিষের হেভি ড্রাইভার। বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়ে নেমে পড়ল গাড়ি থেকে। ভিজবে বলে। নুর জাতীতে রোহিঙ্গা হলেও তার জন্ম, বেড়ে ওঠা সব জেদ্দাতেই। বাংলাদেশ বা বার্মা যায়নি কখনো। তায় আমাদের বৃষ্টি কেমন সে জানেনা। বছরে শীত আসার আগে ও পরে মরুতে বৃষ্টি হয় একটু সেটাতে ওদের আনন্দের সীমা নেই।
আমার ষষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্রটা সেদিন রাতে কেঁদে দিল কারন সে ভিজতে পারেনি। পড়াচ্ছিলাম এবং বৃষ্টি এলো হালকা। হালকা মানে হালকায়, রাস্তাঘাটও ভেজেনি ভাল করে, চার পাঁচ মিনিট এর বৃষ্টি। আমার জন্য সে ভিজতে পারেনি তায় বৃষ্টিটা চোখেই চলে এলো। আামর হাসি পেল।
পড়ায়ে যখন ফিরছিলাম দেখলাম একদল ছেলে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। বৃষ্টিতো আসার নাম করেই চলে গেল তবুও বৃষ্টি রয়ে গেল তাদের মনে। রাস্তার খাদে পায়ের গিরা পরিমান পানি জমেছিল সেখানে খেলছে ওরা। রাত তখন ন'টা ত্রিশ। ছোটরা ঘরে থাকতে পারলনা। বেরিয়ে পড়ল।
বৃষ্টিতে খেলতাম মাঠে, হাঁটু জলে ফুটবল। তারপর পুকুরে গিয়ে আরেক দফা। সমুদ্রপারে খেলতাম বৃষ্টিতেও। ঝড় এর বেগ এমন জোরে আসতো যে, পানির ফোটার তীব্রতায় গায়ে ব্যাথা পেতাম। দৌঁড়ে গিয়ে বাঁধ রক্ষা ব্লকের ফাঁকে চুপটি করে বসে থাকতাম। একটু কমলেই আবার খেলা। তারপর সমুদ্রস্নান করে ঘরে ফেরা।
ভাবলাম আহা। এদের যদি বর্ষাকালে নিয়ে যেতে পারতাম বাংলাদেশে। আবার ভাবলাম সেটাতো এখন কেবল স্মৃতি। কোথাও খেলার মাঠ নেই। ফাঁকা সব জায়গায় এখন ঘরবাড়ি, দোকানপাট।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা নভেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:১৫