somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয়দর্শিনীকে লেখা নেহেরুর চিঠি, বিশ্ব ইতিহাস প্রসঙ্গ - ১

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অপরাধে ব্রিটিশ সরকার জওহরলাল নেহেরুকে কারাগারে পাঠায় অনেকবার। কারাগারে বসেই নেহেরু চিন্তা করলেন মেয়েকে বিশ্বের ইতিহাস জানাবেন। কিন্তু জানানোর মাধ্যমটা কি হবে? কারাগার থেকে তো স্বজনদের সাথে সবসময় দেখা করা যায় না! সবদিক ভেবে নেহেরু কন্যা ইন্দিরাকে চিঠি লেখা শুরু করলেন। একসময় এই চিঠিগুলো সংকলিত হয়ে প্রকাশ হল বই আকারে। নাম তার 'গ্লিমসেস অব ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি', বাংলা অনুবাদে ' বিশ্ব ইতিহাস প্রসঙ্গ'। চিঠিগুলো লেখা হয়েছে ভারতের বিভিন্ন কারাগার থেকে, ১৯৩০-১৯৩৩ এই সময়কালের মধ্যে। চিঠিতে জওহরলাল নেহেরু বর্ণনা করেছেন মানবজাতির ফেলে আসা ইতিহাসকে, আবিষ্কার করতে চেয়েছেন পুরাতনের সাথে নতুনের সম্পর্ককে। নেহেরুর বর্ণনায় চিঠির বিবরণ যেমন মূল্যবান হয়েছে ঠিক তেমনভাবে চিঠিগুলোতে প্রকাশ পেয়েছে নেহেরুর ব্যক্তিত্ব। সব মিলিয়ে চিঠির সংকলনটি সময়কে ছাপিয়ে হয়ে উঠেছে সর্বজনীন ও সর্বকালের।

সামহোয়্যারইনের জন্য ধারাবাহিক আকারে থাকবে ' বিশ্ব ইতিহাস প্রসঙ্গ ' নিয়ে ধাপে ধাপে কিছু বলার প্রচেষ্টা। বিরাট পরিধি নিয়ে লেখা ইতিহাসের সরল কিন্তু গভীর পাঠের এই সিরিজে আপনাকে স্বাগতম।


শুরুর কথা.......

নাইনির সেন্ট্রাল জেল থেকে ইন্দিরাকে লেখা প্রথম চিঠিটির শিরোনাম ' জন্মদিনের চিঠি'। সেখানে নেহেরু লিখেছেন-

" তোমার আমার মধ্যে অনেক কথা হয়েছে, তা বলে মনে কোরো না- সেই অতিবিজ্ঞের মতো- যা শেখবার মতো যা শেখবার তা শেখা হয়ে গেছে, জানা হয়ে গেছে, আমাদের এই বিস্তীর্ণ পৃথিবী ছাড়াও আরও কতসব আশ্চর্য জগৎ আছে - তাদের সম্বন্ধে শিখতে হলে, জানতে হলে কিন্তু অতিবিজ্ঞের মতো বড়াই করলে চলবে না। "

নেহেরু তাঁর শুরুর দিকের চিঠিতে বলতে চেয়েছেন, বালিকা ইন্দিরাকে উদ্দেশ্য করে লেখা সহজপাঠ চিঠিগুলোকে কোনভাবেই পৃথিবীর ইতিহাস বলা যায় না। বরং তাতে সমস্ত পৃথিবীর ইতিহাসে বিভিন্ন দেশের সম্পর্কের পরস্পরাক্রমের সাথে অতীত ও সেইকালের চলমান ঘটনার একটি যোগসূত্র স্থাপনের চেষ্টা করা হয়েছে মাত্র। নেহেরুর বলা ইতিহাসের বিষয়বস্তু ছিল - বর্বরতা অতিক্রম করে সভ্যতায় পরিনতি। একেই মূলমন্ত্র ধরে নেহেরু বাকি রচনাতে এগিয়েছেন।

নেহেরু ইন্দিরাকে দূরপাঠ দেওয়া শুরু করেছেন এশিয়া ও ইউরোপের পতন-উত্থানের ইতিহাস জানিয়ে৷ এশিয়ার ভাগ্য বিপর্যয় ও ইউরোপের উত্থান নিয়ে নেহেরু বলেছেন, ভারতবর্ষে আর্যদের আগমনের হাজার বছর আগেই গড়ে উঠেছিলো মহেঞ্জোদারো সভ্যতা। এরপরে গড়ে উঠেছিলো দ্রাবিড় সভ্যতা, শেষে আর্যদের আগমনে নতুন করে রচিত হয় ভারতবর্ষের ইতিহাস। আর এই সময়টায় ইউরোপ কেমন ছিল? তখনকার ইউরোপকে নেহেরু বলেছেন বর্বর।

নেহেরু লিখেছেন, " এশিয়া ও ইউরোপকে পাশাপাশি রাখলেই আমরা দেখতে পাব সময়ের ফেরে কীভাবে ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে গেছে। পৃথিবীর মানচিত্র খুলে দেখো- দেখতে পাবে স্বল্পায়তন ইউরোপ এশিয়ার বিস্তীর্ণ ভূখন্ডের সঙ্গে কেমন করে জুড়ে রয়েছে, মনে হবে ইউরোপ এই মহাদেশেরই একটি ক্ষুদ্র অংশ বিশেষ।"

নেহেরু সবসময় চেয়েছেন সভ্যতার অগ্রগতিতে ইউরোপের প্রাপ্য গৌরব তাকে দিতে, কিন্তু সেটা এশিয়াকে খাটো করে নয়।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৫৬
২০টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বগতোক্তি (Soliloquy)

লিখেছেন সামরিন হক, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ ভোর ৪:৩৫


LIFE IS NOTHING BUT DEATH MAKES LIFE EVERYTHING .


Poetry is about feelings
But
Reality is about dealings‌.


In life faithfulness is more necessary than love.


Patience=Results
Goodness=Success
Truth=Path ...বাকিটুকু পড়ুন

রান্না থেরাপি

লিখেছেন তাহেরা সেহেলী, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:০৫



মন খারাপ থাকলে আমি রান্না করি, ভালো লাগে। এই কাজটা আমার জন্যে থেরাপির কাজ করে। হয়তো অনেকের জন্যেই কুকিং থেরাপিউটিক হতে পারে, চেষ্টা করে দেখুন তো!

করার সময় যদি দেখেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মফস্বল টু প্যারিস !

লিখেছেন স্প্যানকড, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৩

ছবি নেট।

আমার দোস্ত দীপ্ত কতকাল পর দেখা হলো তা প্রায় কুড়ি বছর পর। এক সময় এমনভাবে মিশে ছিলাম মেতে ছিলাম দুজনে যেন একই মায়ের সন্তান। ধরবার কোন উপায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

চিড়িয়াখানা (অণুগল্প)

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫৮


গাড়িতে উঠার আগেই আমার একটু সন্দেহ হয়েছিল। এই প্রথম ঢাকা শহর এলাম, চেনাজানা পরিচিত কেউ নেই। একটা বিশেষ কাজে এসেছিলাম রাতের ট্রেনে ফিরে যাব। পুরোটা দিন কী করা যায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরীক্ষা পদ্ধতি ছাড়া ছাত্রছাত্রীদের মেধা যাচাই এর দ্বীতিয় কোন বিকল্প নাই

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:০৯

শিক্ষার্থীদের আনন্দময় পরিবেশে পড়ানোর পাশাপাশি মুখস্থনির্ভরতার পরিবর্তে দক্ষতা, সৃজনশীলতা, জ্ঞান ও নতুন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে শেখাতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এক্ষেত্রে উন্নত দেশের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×