পদ্মার উদ্বোধনে ড: ইউনুস সাহেবকে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে; আশাকরি, উনি যোগদান করবেন; যদি উনি কোন কারণে যোগদান না করেন, ইহা হবে মারাত্মক ভুল। আওয়ামী লীগের কোন এক লিলিপুটিয়ান অংশ থেকে, কিংবা ড: ইউনুস-বিরোধীদের থেকে, ২০১২ সালে একটা মিথ্যা অপবাদ প্রচার করা হয়েছিলো যে, বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ বন্ধে ড: ইউনুসের হাত আছে। ইহা কারো পিগমী মগজের বিশাল আবিস্কার। বিশ্ব ব্যাংক এমন একটি সংস্হা, যা নিজেদের নিয়ম মেনে চলে; সেখানে বাহিরের কারো হস্তক্ষেপের সুযোগ ও সম্ভাবনা নেই।
বিশ্ব ব্যাংকের নিজস্ব নিয়ম আছে, নিয়মের অধীনে ঋণ দেয়া হয়। পদ্মার বেলায় যা ঘটেছে, পদ্মাসেতুর প্রজেক্টে বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির উপস্হিতি জেনেছে কানাডিয়ান পুলিশ থেকে, এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছে ইহার রিমেডি চেয়েছিলো। ঘটনাটা ছিলো, বিশ্ব ব্যাংকের প্রজেক্টগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের সিভিল ইন্জিনিয়ারিং অনেক কোম্পানী এনলিষ্টেড থাকে, যারা টেন্ডারে অংশ নেয়। সেই রকম ১টি ফার্ম ছিলো কানাডার এনসিআর ল্যাভানীন; ওরা ইনস্পেকশান করার কাজ পাবার চেষ্টা করছিলো পদ্মাসেতুতে। ল্যাভলীন যে পদ্মাসেতুতে বাংলাদেশের কয়েকজনকে ঘুষ দিয়েছিলো, সেটা বেরিয়ে আসে পরোক্ষভাবে।
আসলে, কানাডার ট্যাক্স ডিপার্টমেন্ট ফার্মটিকে ধরেছিলো, কম রেভেনিউ দেখায়ে, কম ট্যাক্স দেয়ার কারণে। ইনভেষ্টিগেশনে বেরিয়ে আসে যে, আফ্রিকা ও বাংলাদেশে ঘুষ দেয়ার জন্য তারা কোম্পানীর আয় কম দেখায়। বাংলাদেশে তারা পদ্মার টেন্ডারে ছিলো। বিশ্ব ব্যাংক ইহা জেনে বাংলাদেশ সরকারের কাছে কিছু নাম দেয়, ও এদেরকে ইনভেষ্টিগেশন করতে অনুরোধ করে; বাংলাদেশ সরকার দরকারী কোন পদক্ষেপ নেয়নি। এই সমস্যার সমাধান না হওয়ায়, বিশ্বব্যাংক ঋন না'দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন সেতুমন্ত্রী ছিলো কি এক আবুল হোসেন, যিনি আলাদীনের প্রদ্ধীপ পেয়েছিলো ততকালীন সময়ে।
যাক, সরকার ঋন যখন পাচ্ছে না, তখন কারো নামে অপবাধ দিয়ে আসল ঘটনাকে চাপা দেয়ার দরকার ছিলো; ২০১২ সালে, দেশে ড: ইউনুসের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিলো না। এর অনেক আগের থেকে, সুদের কারণে দেশের সকল ইসলামী দলের সাথে ড: ইউনুসের সম্পর্ক খারাপ ছিলো। কোন এক পক্ষ থেকে একটি সহজ অপপ্রচারণা চালানো হয় যে, বাংলাদেশের কিছু মানুষ চাহে না যে, আওয়ামী লীগ সেতু করুক; তাদের হয়ে, ড: ইউনুস নিজের প্রভাব খাটিয়ে ঋণ বন্ধ করেছে; ইহা আওয়ামী ক্যাডারেরা বোয়াল মাছের মতো গিলেছে।
ড: ইউনুস সাহেব যদি অনুষ্টানে না যান, উনার বিরোধী পক্ষ এই অপ-প্রচারণাকে এবার পুরোপুরিভাবে পাকাপোক্ত করবে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০২২ রাত ৩:০৫