somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সমস্যা দেখা দিলে, সমাধান বের করতে হয়!

০৫ ই এপ্রিল, ২০২৩ দুপুর ১২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একবার, এক সাদা কিশোরী আমার ১টি অনুরোধ রাখেনি; সে পরোক্ষভাবে আমার নাগরিক অধিকারের বিপক্ষে গিয়েছিলো; আমি কৌশলে সামান্য ব্যবস্হা নিয়েছিলাম; ইহা সেই কাহিনী। ঘটনাটা ঘটেছিলো ২০২১ সালের বসন্তকালে।

করোনার সময় হাঁটার জন্য আমি উত্তর দিকে বের হতাম, ইহা সাদাদের পাড়া, গাড়ীঘোড়া কম, রাস্তা পরিস্কার, গাছাপালাও বেশী; সামান্য সমস্যা, কুকুরের সংখ্যাও বেশী। কিছু কিছু বাড়ীতে বড় বড় কুকুর তারের বেড়ার ভেতরে থেকে পথিককে অনুসরণ করে; আমি কুকুরকে ভয় পাইনা, রাস্তায় কোনটা হাতের পরশ চাইলে মাথায় হাত বুলিয়ে দিই; প্রায় সবগুলো ভদ্র; শুধু ২ বাড়ীর কুকুর মানুষ দেখলে বেশ রেগে যায়; একটা জার্মান শেপার্ড, অন্যটা খুবই বড় আকৃতির ভারিক্কি বুলডগ; মালিকেরা না থাকলে, শেপার্ড বারান্দায় থাকে, বুল বাড়ীর বেড়ার পাশ দিয়ে পথিককে বাড়ীর সীমানা অবধি অনুসরণ করে, চীৎকার দেয় না; তবে, চোখেমুখে ভয়ানক রাগ। বুলের মালিকরা, স্বামী-স্ত্রী, ২জনেই তরুণ, তারা বারান্দায় বসলে বুল বারান্দায় বসে থাকতে বাধ্য হয়, মালিকেরা তাকে নীচে নামতে দেয় না।

সম্প্রতি করোনা কমে আসায়, বুলের মালিকেরা কাজে যাচ্ছে; দিনের বেলা বুল একাই বারান্দায় থাকে, মানুষ দেখলে বেড়ার পাশ দিয়ে হাঁটে; গত ২/৩ সপ্তাহ থেকে, বারান্দায় এক কিশোরীকে দেখছি, বিকেলে সে সেখানে বসে বই পড়ে; বুল বারান্দায় শুয়ে থাকে; আমি হেঁটে যাবার সময় বুল নেমে আসে, আমাকে অনুসরণ করে, আমার পছন্দ হয় না; কিন্তু মেয়ে তাকে কিছু বলে না, কিশোরীর উপর মেজাজটা খারাপ হলো। সেদিন ফেরার সময় মেয়েকে বললাম,
-তোমার কুকুরটা মানুষকে অনুসরণ করে, তুমি ইহাকে বারান্দায় রাখো।
-সে তো কিছু করছে না, শূধু অনুসরণ করে।
-মানুষ তো ভয় পেতে পারে।
-ভয় পাবার কি আছে, সে কোনভাবে বেড়া টপকাতে পারবে না।

কিশোরী আমার কথার মুল্য দিলো না, ঠিক আছে, দেখি কি করা যায়; আমি কুকুর-ক্ষেপানোর বেশ কিছু ট্রিকস জানি, পরেরদিন বিকেলে একটা প্রয়োগ করে দেখলাম। বুল দৈত্যের মতো গর্জন করে, পাড়া মাথায় তুললো, লাফায়ে বেড়া পার হওয়ার জন্য চেষ্টা করে, বিফল হয়ে জলহস্তির মতো ক্ষিপ্ত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করলো; মেয়ে বারান্দা থেকে নেমে এসে বুলকে শান্ত করছে, আমি ২০০ গজ যাওয়া অবধি বুলের চীৎকার শুনলাম; ফেরার পথে সেই পথ দিয়ে ফিরিনি।

পরেরদিন ইচ্ছা করেই আবার বুলদের রাস্তায় গেলাম, বাড়ী থেকে ৫০ গজ দুর থেকেই আমি আমার ট্রিকস প্রয়োগ করলাম; তখনো বুলকে আমি দেখনি; কিন্তু বুল দৈত্যের মতো আওয়াজ করে, ২ পা বেড়ার উপর রেখে পুরো পাড়া মাথায় তুললো। আমি রাস্তার অপর পাশ দিয়ে হেঁটে গেলাম, দেখলাম কিশোরী বুলের সাথে যুদ্ধ করছে বারান্দায় নেয়ার জন্য।

তার পরেরদিন আমি সেই রাস্তায় প্রবেশ করতেই দেখি সেই কিশোরী আমার দিকে আসছে, কাছে আসতেই আমি বুঝলাম, সে আমাকে লক্ষ্য করেই আসছে; আমিই হাই বললাম, সে হাই'এর উত্তর দিয়ে আমাকে আমাকে বললো,
-আপনি কিছু মনে করবেন না, আমাদের কুকুর হাল্ক আপনাকে দেখে অনেকটা পাগলের মতো আচরণ করছে, আপনি কি ওকে কোনভাবে ভয় লাগায়েছেন?
-না, আমি ভয় লাগাইনি।
-সে একটু কিউরিয়াস, মানুষ দেখলে বেড়ার ভেতর থেকে অনুসরণ করে; সে আগে এভাবে কখনো রাগেনি।
-আমি বুলকে অনেকদিন আগের থেকে দেখছি, মালিকেরা বাড়ী থাকলে, তাকে আংগিনায় নামতে দিতো না; তুমি ওকে নামতে দিচ্ছ, সে নিয়ম ভাংগতে শিখছে; এতে আমার অসুবিধা নেই, অন্য কেহ হয়তো ভয় পেতে পারে; তুমি ওকে বারান্দায় রাখিও।
-ভয় পাবার কিছু নেই, সে কোনভাবে বেড়ার বাইরে যেতে পারবে না। আচ্ছা আপনার সাথে কি কোন ইলেকট্রোনিক ডিভাইস আছে, যা হাল্ককে ক্ষিপ্ত করে তোলে?
-না, কিছুই নেই, আমি সেলফোনও ব্যবহার করি না।
-আচ্ছা, আমি হাল্ককে আপনার সাথে পারিচয় করায়ে দিতে চাই, যাতে আপনাকে বুঝে, এভাবে হাল্ক যদি পাড়া মাথায় তোলে, প্রতিবেশীরা পছন্দ করবে না, পুলিশে অভিযোগ করতে পারে। আপনি বেড়ার বাইরে দাঁড়াবেন, আমি ওকে ঘর থেকে বেড়ার কাছে আনলে, আপনি ওর মাথায় হাত রেখে একটু আদর করে দিবেন, সব ঠিক হয়ে যাবে।

দেখলাম, বুল বারান্দায় নেই; মেয়ে তাকে ঘরের ভে্তরে রেখেছে; বুল কাঁচের দরজা দিয়ে আমাকে দেখে বাড়ী মাথায় তুলেছে। মেয়ে ফিরে এসে বললো:
-স্যরি, হাল্ক ক্ষেপে গেছে, ওকে বাইরে আনা ঠিক হবে না। কেন যে, সে আপনাকে পছন্দ করে না, বুঝতে পারলাম না।
-থাক, আমি পাশের রাস্তা দিয়ে হাঁটবো।
-স্যরি, আপনার অসুবিধা হবে না'তো?
-না, কোন সমস্যা নেই।



সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ২:৫৮
২৩টি মন্তব্য ২৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×