অ্যাডোনিস
তাকে বন্দনা করা হতো ঋতুর দেবতা হিসেবে। অ্যাডোনিস ছিল সৌম্য চেহারার অনিন্দ সুন্দর এক যুবক। গ্রিক নগরের শেষ প্রান্তে অত্যন্ত স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠেছিল। তার রূপে বিমোহিত হয়ে দেবী আফ্রেদিতি ভালোবেসে ফেলে। অ্যাডোনিসকে তার ভালোবাসার কথা জানানোর আগে এক শুয়োরের আক্রমণে ভীষণভাবে আহত হয়ে অ্যাডোনিস মৃত্যু বরণ করে। অ্যাডোনিসের এমন মৃত্যু দেবী আফ্রেদিতি কোনোভাবে মেনে নিতে পারছিলেন না। শোকে-দুঃখে তিনি বিহ্বল হয়ে পড়েন। শোকে কাতর আফ্রেদিতির অবস্থা দেখে স্বর্গের সর্বময় ক্ষমতাধর দেবতা জিউস অ্যাডোনিসকে আবার পৃথিবী প্রত্যাবর্তনের অনুমতি দিলেন ঠিক তবে শর্ত সাপেক্ষে। শর্ত ছিল বছরের অর্ধেক অর্থাৎ ছয় মাস অ্যাডোনিস পৃথিবীতে থাকলে বাকি ছয় মাস থাকবে মৃত্যুপুরী বা পাতালপুরীতে।
আফ্রেদিতি
স্বর্গদেবতা ও দেবতাধিরাজ জিউসের কন্যা আফ্রেদিতি ছিলেন অনিন্দ্যসুন্দরী। তাই তাকে বন্দনা করা হতো সৌন্দর্য ও প্রেমের দেবী হিসেবে। তবে একসময় আফ্রেদিতিকে গ্রিকরা সমুদ্রের দেবী হিসেবে বন্দনা করতেন। জগৎখ্যাত যোদ্ধা প্যারিসের মনোবাঞ্ছনা ছিল পরমাসুন্দরী কোনো নারীকে স্ত্রী হিসেবে পাওয়ার। তাই আফ্রেদিতি প্যারিসের জন্য হেলেনকে নির্বাচন করেছিলেন। কিন্তু তার পরই আরম্ভ হয় যায় অবিস্মরণীয় সেই ট্রয়ের যুদ্ধ।
নার্সিসাস
অপূর্ব সুন্দর ছিলেন নদীর দেবতার পুত্র নার্সিসাস। তার রূপের সৌম্য দ্বীপ্তির অহমিকায় সে ছিল কারো মুখাপেক্ষা হতেন না। নারীদের তীব্র ভালোলাগার নার্সিসাস বরাবরই থাকতেন নারীদের পাশ্চাৎমুখী। কিন্তু এত নির্দয়তার মধ্যেও ইকো নামের এক সুন্দরী তরুণী ভালোবেসে ফেলে তাকে। তার ভালোবাসার কথা নার্সিসাসকে জানালে গেলে সে প্রত্যাখ্যান করে নিষ্ঠুরভাবে। নার্সিসাসের এমন প্রত্যাখ্যান সইতে না পেরে ইকো প্রতিধ্বনি হয়ে মিশে গেলে পৃথিবীর ধাবমান বায়ুর সঙ্গে। প্রাচীন গ্রিকরা পরবর্তীতে ইকো বা প্রতিধ্বনিকে এভাবে মেনে যেতে শুরু করল। তরুণী ইকোর এরূপ করুণ দশা লক্ষ্য করে দেব-দেবীরা নার্সিসাসকে শান্তি প্রদান করলেন।
প্যান্ডোরা
হাজার হাজার পূর্বের গ্রিকদের মতে প্যান্ডোরাই নাকি পৃথিবীর প্রথম নারী। আর প্যান্ডোরার অর্থ হচ্ছে-‘উপহার সামগ্রী’। মানুষকে দেয়ার জন্য আগুন চুরি করেছিল দেবতা প্রমিথিউস। এ কারণে স্বর্গদেবতা জিউস রাগান্বিত হয়েছিলেন অগ্নিদেবতা প্রমিথিউসের ওপর। তাই তিনি পৃথিবীতে পাপ নিক্ষেপ করলেন প্যান্ডোরার সৃষ্টির মাধ্যমে। পৃথিবীতে নিক্ষেপিত হওয়ার সময় প্যান্ডোরাকে উপহার দিয়েছিলেন দেব-দেবীরা। যার মধ্যে ছিল-জ্ঞান, সৌন্দর্য, চাতুর্য, স্তাবকতা ইতাদি। সবকিছু একটি বাক্সবন্দি করে দিয়েছিল। নির্দেশ ছিল কখনো কোনোরূপে যেন বাক্সটি খোলা না হয়। কিন্তু প্যান্ডোরার কৌতূহলী মন বাক্সটি খুলে ফেলতে বাধ্য করল। প্যান্ডোরা বাক্স খুলতেই পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল সব পাপ, অসুখ, উপদ্রব, অশান্তি, ব্যথা, হতাশা, লোভ ও হিংসা।
ইরোস
গ্রিক পুরাণের প্রেমের দেবতা। আফ্রেদিতির পুত্র। লাখ লাখ নর-নারীর প্রেমের নির্মাতা হলেও নিজেই প্রেমে পড়েছিলেন সাঈক নামে এক মানবীর।
কিউপিড
কিউপিড ছিল মূলত প্রেমের দেবী। প্রেমে পড়া নর-নারী পূজা করত তাকে। দিনের বেলায় নয় সাধারণত রাতের বেলায়। কারণ দেবী কিউপিড নাকি রাতে আকাশে উদিত হতো মেঘের ডানায় চড়ে।
এথিনা
যুদ্ধ আর শিল্পকলার দেবী ছিল এথিনা। প্রাচীন গ্রিসের একটি শহরকে এথিনা খুব পছন্দ করতেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয় নগরের যাকে পূজা করবে শহরটি তার হবে। এথিনা সেই মতে নগরবাসীর জন্য জলপাই গাছ এনে দেয়, নগরবাসী গাছ থেকে ফল, কাঠ ও তেল পেয়ে এথিনাকে সবাই পূজা করতে শুরু করে এবং শহরটির নাম হয়ে যায় এথিনার নামে। সঙ্গে সংগতি রেখে এথেন্স।
ইথার
ইথার ছিলেন অদ্যকালীন দেবতাদের মধ্যে একজন। গ্রিকরা বিশ্বাস করতেন ইথার ছিলেন সৃষ্টির প্রারম্ভে যে মৌলিক উপাদানগুলো জরুরি ছিল তার মধ্যে একটি আলো আর আলো এবং স্বর্গে বয়ে যাওয়া পবিত্র বিশুদ্ধ বায়ুর দেবতা।
তথ্যসূত্র : এখানে। ক্লিক করুন।