একটা প্রতিষ্ঠান নিজেদের নামের সাথে বানী ঝুলিয়েছে, জাতির মননের প্রতীক।
তা এই মননটা কি?
১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের পর হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে সাম্প্রদায়িক মুসলিম লীগকে হঠানোর জন্য গঠিত যুক্তফ্রন্ট -এর নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী এই প্রতিষ্ঠানটা গঠিত হয়।কিন্ত জন্ম থেকেই এর কর্মকান্ড উল্টা-পাল্টা।
১৯৫২ সালে বাংলা রাষ্ট্রভাষা করার জন এদেশের মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছিলো।তাই সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলন ও বাংলা ভাষার প্রচার,প্রসার ও এই ভাষা নিয়ে গবেষণা ও জন্য গঠিত এই প্রতিষ্ঠানটার নামের সাথে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনে ‘‘ একাডেমী’’ নামে বিদেশী ভাষার একটা শব্দ যুক্ত করা হয়েছে। অথচ এর পরিবর্তে প্রতিষ্ঠানটার নাম বাংলা ভাষা গবেষণা কেন্দ্র রাখা যেতো।
প্রতিষ্ঠার প্রায় ৬৫ বছর পরও এই প্রতিষ্ঠানটা সর্বস্তরে বাংলা ভাষার প্রচলনে কোন ভূমিকা রাখা দূরে থাক, অাজ পর্যন্ত চিকিৎসা,প্রকৌশলের মতো বিষয়গুলি বাংলায় পড়ার মতো বই অনুবাদ করতে পারেনি। এর প্রধান কাজ হচ্ছে প্রতিবছর বইমেলার আয়োজনের নামে কোটি টাকার বাণিজ্য করা।এখানেও আবার নিজেদের পছন্দের প্রকাশক ও লেখকদের বিশেষ সুবিধা দেয়া।তসলিমা,হুমায়ন আজাদ এমনকি জয়নাল হাজারীর অশ্লীল ও ধর্মবিরোধী বই অবাধে বিক্রি করতে দেয়া। ব্রিটিশ কাউন্সিল আলিয়স ফ্রসেজ-এর মতো ভাষা আন্দোলনের চেতনা সাথে সঙ্গতিহীন প্রতিষ্ঠান,কোয়ান্টাম ও এনজিওদের বইমেলায় দোকান দেয়া।এমনকি প্রকাশক না হওয়ার পরও বসুন্ধরা গ্রুপকে মেলায় কাগজ বিক্রি করতে দেয়া। কিন্ত দেশ জাতি ও সমাজ পরিবর্তনের প্রচেষ্টাকারী দেশের একমাত্র বিপ্লবী লেখকের প্রকাশনীকে বইমেলায় নিষিদ্ধ করা।
সারা পৃথিবীর ১ নং সুদখোর ইউনুস এদের কাছে এতোই প্রিয় যে ড: ইউনুসের দারিদ্র বাণিজ্য নামে বদরুদ্দিন উমরের বই প্রকাশের জন্যও এখানে একটা প্রকাশনীর দোকান বন্ধ করে দেয়া হয়েছিলো। ভাষা-সাহিত্য-শিল্প-সংস্কৃতিতে অবদান থাক বা না থাক, প্রতিটা সরকারের লেজুড়দের এরা প্রতিবছর পুরস্কৃত করে।
এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও আজীবন সদস্য হিসেবে আছে এমন কিছু ব্যাক্তি,যারা নীতিহীন কর্মকান্ডের জন্য কুখ্যাত। এমনকি রানা ও সাবিনা -এই দুইজন গায়িকাকে প্রতিষ্ঠানটার ফেলো করা হয়েছে,যারা হাজার হাজার নকল গান গেয়েছে।
এ্যামেরিকা- ইউরোপের পূজিবাদী দেশগুলিতেও এধরণের অনৈতিক কর্মকান্ড বিরাট অপরাধ বলে বিবেচিত।
সেখানে নকল ছবির পরিচালক,লেখক,বা গায়ক-গায়িকা ,সবাই কোন না কোন ধরণের শাস্তি পায়।
তাদের জাতীয় ঐতিহ্যের সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠানের সদস্য করা সেসব দেশে অচিন্তনীয়।
এদেশের বেশীরভাগ লোক যেমন নীতিহীন,অসৎ ও দেশপ্রেমহীন,অসৎ পূজারী ও সৎ-নীতিবান ব্যাক্তিদের অপমাণ-অপদস্থকারী,এই প্রতিষ্ঠানটাও তেমন।
সত্যিই এই প্রতিষ্ঠানটা জাতির মননের প্রতীক।
আর সেটা হচ্ছে নষ্ট জাতির নষ্ট মননের।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৪:৪৫