করোনার কারণে কলকাতাসহ ভারতে বাংলাদেশীদের যাওয়া বন্ধ।
বাংলাদেশী নির্ভর ব্যবসা-বাণিজ্য ,চিকিৎসা ও পর্যটন শিল্পের শোচনীয় অবস্থা।
এই আক্রোশ ও হতাশার কারণেই কলকাতার কিছু লোক এবং এদেশের কিছু সংখ্যালঘু হঠাৎ করেই যৌথভাবে বাংলাদেশীদের অকৃতজ্ঞসহ বিভিন্ন অশ্লীল গালিগালাজ করছে।
ওই এক যুক্তি,বাংলাদেশীরা নাকি মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় অবদানের কথা স্বীকার করে উপযুক্ত প্রতিদান দিচ্ছে না !!!!!!
এদের মধ্যে টিন্কু বিশ্বাস নামে একজন লিখেছে ,ভারত আছে বলেই ভাইরাস মুক্ত শ্বাস নিতে পারবা, তাদের বলে দিও যারা ভারত কে বিনা দোষে গালি গালাগালি করে, হিংসুটে বাংলাদেশ।
এরকম অগণিত বাংলাদেশ বিরোধী ব্যাক্তির মন্তব্য আছে অনলাইনে।
এসব বক্তব্য চরম মিথ্যাচার।
ভারত থেকে বাংলাদেশ যেমন উপকৃত হয়,ভারতও তার চেয়ে বেশী হয়।পেট্রাপোল-কলকাতার মুদ্রা ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হোটেল,রেস্টুরেন্ট,ট্যাক্সি,নিউমার্কেট,বড়বাজার সব টিকে আছে বাংলাদেশীদের কারণে ।
এখন সেখানে হাহাকার কারণ বাংলাদেশীরা যায়না।
ভারত একহাতে যতো দেয়,দুইহাতে তার চেয়ে আরো অনেক বেশী নেয়।
আন্তর্জাতিক নদীর পানি আটকে রাখা ,নীরিহ বাংলাদেশীদের গুলি করে মারা কি ভালো প্রতিবেশীর পরিচয়?
পাকিস্তানী বা চীনাদের এভাবে গুলি করে মারার সাহস ভারতের কোনোদিনও হবে না।
বাংলাদেশও তো পাল্টা গুলি করে বিএসএফ মারতে পারে।
ভারত বাংলাদেশে সব পণ্য রপ্তানী করে কিন্ত ইলিশ ছাড়া কিছুই নিতে চায় না।
ভারতে সংখ্যালঘুদের দিনে-দুপুরে প্রকাশ্যে সড়কে পুলিশের সামনে পিটিয়ে হত্যা করা হয়,কিন্ত বাংলাদেশে জনগণই সংখ্যালঘুদের রক্ষা করে।
এরকম অসাম্প্রদায়িকতা ভারত কোনোদিনও দেখাতে পারবে না।
বাংলাদেশ স্বাধীন জন্যই ভারতের পূর্ব সীমান্ত নিরাপদ।
পাকিস্তান আর চীনের মতো আরেকটা শত্রু দেশে থাকলে ভারতের ১২টা বেজে যেতো।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের অবদান ইতিহাসে লেখা আছে এবং সেটা কেউই অস্বীকার করতে পারবে না।
কিন্ত এতোদূর যাওয়ারও দরকার হতো না, যদি ভারত ইংরেজ আমলেই মন্ত্রী মিশন প্রস্তাব বা সোহরাওয়ার্দী-শরৎ বসুর তত্ত্ব অনুযায়ী কলকাতাকে রাজধানী করে স্বাধীন যুক্ত বাংলা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবে রাজী হতো।
কিন্ত নেহেরু-প্যাটেলদের কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি।
১৯৩৭ সালেই কয়েকটা কংগ্রেস প্রদেশে নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করে গো-রক্ষা সমিতি গঠন, হিন্দিকে জাতীয় ভাষা এবং বন্দেমাতরম-কে জাতীয় সঙ্গীত ঘোষণা করেছিলো।
এছাড়া তাদের মদদে হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গাও ঘটে।
এই ২০২০ সালেও ভারতে সংখ্যালঘুদের উপর বর্বর জঙ্গী হিন্দুদের পৈশাচিক আক্রমণ দেখে বোঝা যায়, সেই সময় মুসলমানদের উপর তারা কি ধরণের বর্বর আচরণ করতো আর কেনো ১৯৪০ সালে মুসলমানরা লাহোর প্রস্তাব অনুযায়ী ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব সীমান্তে আলাদা একাধিক স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিলো,যেটা জিন্নাহর ষড়যন্ত্রে আর বাঙ্গালী নেতাদের অপদার্থতায় এক রাষ্ট্র পাকিস্তানে পরিণত হয়েছিলো।
শুধু মুসলমান না,শিখ,খৃষ্টান,আদিবাসী এমনকি নীম্নবর্ণের হিন্দুরাও ভারতে নিয়মিত জঙ্গী হিন্দুদের হামলার স্বীকার হয়।
প্রতিবেশী ভেবে পৃথিবীতে বাংলাদেশের লোক সবচেয়ে বেশী ভারত যায়।
বড় দেশ হিসেবে ভারতেরও বাংলাদেশকে সন্মান করা উচিত,যেটা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তারা করে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০২০ রাত ২:৩৭