পশ্চিমের জানোয়ারগুলি ইচ্ছাকৃতভাবে বারবার অন্য ধর্মের অনুসারীদের অনুভূতিতে আঘাত করে উত্তেজিত করার চেষ্টা করে।
কিন্ত নিজেদের ধর্মের বেলায় তাদের আচরণ এর সম্পূর্ণ বিপরীত।
১৯৮৮ সালে মার্টিন স্করসেস পরিচালিত হলিউড ছবি The Last Temptation of Chirst মুক্তির পর যিশুখ্রিষ্টকে অসন্মানের অভিযোগে অনেক এ্যামেরিকান বিক্ষোভ করে। ফলে সেদেশের অনেক প্রেক্ষাগৃহ ছবিটা প্রদর্শন করা হয়নি। এ্যামেরিকার কয়েকটা রাজ্য এবং গ্রীস, মেক্সিকো, চিলিসহ সহ অনেক দেশে ছবিটা নিষিদ্ধ করা হয়।
ছবিটা মুক্তির পর এামেরিকাসহ বিভিন্ন খ্রিষ্টান দেশে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়। ফরাসীরা সবচেয়ে সহিংস প্রতিবাদ করেছিলো। ২২ অক্টোবর ক্যাথলিকদের একটা দল প্যারিসের সেন্ট মাইকেল প্রেক্ষাগৃহে মধ্যরাতের পর দাহ্য পদার্থ দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। এতে আগুনে পুড়ে ৪ জন মহিলাসহ ১৩ জন মারাত্বকভাবে আহত এবং প্রেক্ষাগৃহ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পরিচালক স্করসেসকে হত্যার হুমকি দেয়া হয় এবং তিনি দেহরক্ষী নিয়ে চলাফেরা করতে থাকেন। তখন তাদের মুক্ত চিন্তা, গণতন্ত্র কোথায় ছিলো?'Last Temptation' triggers unprecedented violence in France
অথচ এরা মানসিক বিকৃতির কারণে বারবার অন্য ধর্মের অুনুভূতিতে আঘাত করে।
ফরাসীরা অত্যন্ত ধুরন্ধর এবং ঠান্ডা মাথার খুনী-গণহত্যাকারী জাতি। ইংরেজরা যদি হুংকার দিয়ে মানুষ মারে তাহলে ফরাসীরা মারে গান গাইতে গাইতে। নিজেদের কূকর্ম ঢাকার জন্য বিরাট শিল্প-সংস্কৃতিমনা জাতি বলে পরিচয় দিতে চায় !!!
সাম্য স্বাধীনতা মৈত্রী-এসব বড় বড় বুলি ঝেড়ে মানুষকে ধোকা দিয়ে এরা বৃটিশদের মতোই সারা পৃথিবী দখল করতে চেয়েছিলো এরা। কিন্ত তাদের সাথে যুদ্ধে হেরে সেই পরিকল্পনা সফল হয়নি।
এদের মিথ্যাচার ও সন্ত্রাসী মানসিকতা প্রমাণ পাওয়া যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরও আফ্রিকার তিউনিসিয়া, আলজেরিয়া ও মরক্কোসহ বিভিন্ন দেশ দখলে রাখার জঘন্য অপচেষ্টা থেকে , যারা নিজেরাই নাৎসী জার্মানীর দখলে ছিলো।
বিশেষ করে আলজেরিয়ায় এদের বর্বরতা ছিলো মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের মতোই। যে চার্লস দ্য গল হিটলারের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, সেই আবার বড় সন্ত্রাসীর মতো আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রাম দমন করার চেষ্টা করেছে। তারপরও ফরাসী বর্বরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে ১৯৬২ সালে দেশটা স্বাধীন হয়।
এখনো এরা নিয়মিতই আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের আভ্যন্তরিণ বিষয়ে নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ করে এমনকি সৈন্যও পাঠায়।
নাস্তিক বা আস্তিক হওয়া যেকোনো ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত স্বাধীনতা। কোনো সভ্য দেশের আইনই এতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে না।
বিভিন্ন ধর্মে উল্লেখিত বর্ণভেদ প্রথা, নারীর-পুরুষের অধিকারের বৈষম্য নিয়ে নিরপেক্ষ ও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে অনেকেই সমালোচনা করে। কিন্ত্ সেজন্য নির্দিষ্ট কিছু ব্যাক্তি ছাড়া কেউ যুক্তিসঙ্গত সমালোচনার জন্য নাস্তিকদের উপর ক্রুদ্ধ হয়না। এছাড়া পূর্ব-পশ্চিম এমনকি অনেক আরব দেশেও ধর্মের মূলনীতি লংঘণ করে বিভিন্ন আইনও প্রণয়ণ করা হয়েছে।
তবে বিকৃতভাবে কোনো ধর্মের সন্মানিত কাউকে হেয় করা কোনো প্রকৃত জ্ঞানী নাস্তিকও সমর্থন করতে পারে না।
পশ্চিমারা শুধু ইসলাম না, সুযোগ পেলেই পূর্বের বিভিন্ন ধর্মকেই অপমাণিত করেছে। হিন্দু ধর্মের দেব-দেবীর নাম অনুযায়ী মদের নামকরণ করেও তাদের দেব-দেবীকে হেয় করার চেষ্টা করেছে।
২০১৯ সালের ফ্রেব্রুয়ারীতে এ্যামেরিকার ভর্জিনিয়ার একটা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হিন্দু দেবতা হনুমানের নামে বিয়ার বানিয়ে পরে প্রতিবাদের কারণে ক্ষমা চেয়েছে।Brewery apologizes for beer sharing name with Hindu deity
১৮৮৮ সাল থেকেই ব্রাজিলের একটা প্রতিষ্ঠান হিন্দু দেবতা ব্রক্ষা'র নাম অনুযায়ী বিয়ার বানাচ্ছে, যার বিরুদ্ধেও এবছরের জুলাইতে খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, হিন্দু ও জৈন ধর্মের অনুসারীরা প্রতিবাদ করে এর নাম পরিবর্তনের দাবী করেছে। Campaign brewing to get Hindu god Brahma off popular beer
২০২০ সালের ইউক্রেনের আরেকটা প্রতিষ্ঠান হিন্দু দেবী কালীর নামে বিয়ার তৈরী শুরু করে। এর বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ হয়।
Upset Hindus urge Ukraine brewery to withdraw beer named after goddess
তবে এই অপকর্মে চীনারাও কম যায়নি। তারাও ২০০৫ সাল থেকে লাকি বুদ্ধা নামে একটা বিয়ার তৈরী শুরু করে, যদিও চীনের ১৫% লোক এবং এশিয়ার অনেক দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী।
চীনাদের অনুসরণ করে ফ্লোরিডার একটা প্রতিষ্ঠানও ২০১০ থেকে ফান্কি বুদ্ধা নামে বিয়ার বানায়।
অথচ এরা কখনোই নিজেদের ধর্মের পবিত্র ব্যাক্তিদের এভাবে অসন্মানিত করেনা।
মুলত বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে উন্নত হলেও এসব দেশের বেশীরভাগ মানুষ প্রচন্ড বর্ণবাদী এবং এবং সন্ত্রাসী মানসিকতাসম্পন্ন।
এজন্যই এ্যামেরিকা-বৃটেন-ফ্রান্স-ক্যানাডাসহ ইউরোপ ও এ্যামেরিকার বিভিন্ন দেশে একের পর এক স্বাধীন দেশ দখল, বোমা মেরে ধ্বংস এবং সেসব দেশে অবাধে গণহত্যা ও লুটপাট চালালেও তাদের জনগণ এগুলির কোনো প্রতিবাদ না করে সমর্থন করে।
অন্য ধর্মের পবিত্র ও সন্মানিত বলে বিবেচিতদের বিভিন্নভাবে হেয় করাও এদের এই বিকৃতি ও সন্ত্রাসী মানসিকতারই আরেকটা রুপ।
এরা সম্পূর্ণ ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত এদের বর্বরতা থেকে পৃথিবীর মানুষ রক্ষা পাবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ডিসেম্বর, ২০২০ রাত ৩:৩৪