somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামনের দিনগুলোতে ইউনূস হটাও আন্দোলন দেখা যেতে পারে ।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ড. ইউনূসকে ঘিরে নানা আলোচনা ও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। একসময় তার পাঁচ বছর মেয়াদী সরকার নিয়ে যে প্রত্যাশা ছিল, কিংবা কোনো কোনো ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের কাছে নির্বাচন ঠেকিয়ে রাখার জন্য তার দীর্ঘায়ু কামনা করা হয়েছিল, এখন সেই সুর অনেকটাই পাল্টে গেছে। জামায়াতের এক মৌলভী যখন তাকে 'নবীদের মতো মনোনীত' বলে দাবি করে নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা নেই বলছিলেন, তখন অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন।

সামনের দিনগুলোতে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন দেখা দিতে পারে। কিছু মানুষকে দেখা যাবে যারা ইউনূস সাহেবের পদত্যাগ চান। তবে এরা প্রত্যাবর্তিত আওয়ামী লীগ নয়। এমন আন্দোলনকারীরা শুধু আওয়ামী লীগের বিরোধী নয়, বরং তারা এমন এক শক্তি যারা দেশে কোনো নির্বাচনই চায় না। অন্যদিকে ড. ইউনূস ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবেই এ ব্যাপারে বারবার সকল দলকে সতর্ক করেছেন। তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন যে, নির্বাচন ছাড়া অন্য কিছু ভাবলে সেটা জাতির জন্য বিপদজনক হবে।

সম্প্রতি তিনি এনসিপি, জামায়াত এবং বিএনপির সাথে বৈঠক করে সবাইকে এই বার্তা দিয়েছেন। কিন্তু তার কথায় এনসিপি এবং জামায়াত সন্তুষ্ট হয়েছে বলে মনে হয় না। জামায়াত বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসে প্রশ্ন তুলেছে, যারা চাঁদাবাজি থামাতে পারে না, তারা কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন দেবে? অন্যদিকে এনসিপি জাতীয় নির্বাচনের পরিবর্তে জুলাই সনদভিত্তিক সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচন চায়। ড. ইউনূসের এই নির্বাচন-কেন্দ্রিক অবস্থানের কারণে এনসিপি এখন তার সমালোচনা করছে।

ড. ইউনূসের মুখে বারবার নির্বাচনের কথা শুনে অনেকের মেজাজ খারাপ। নির্বাচন নিয়ে কথা বলায় এনসিপি এখন ড. ইউনূসের সমালোচনা করছে। তাদের দুইজন নারী নেত্রী ইউনূস সাহেবকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষমতার আসনে বসেছেন বলে অভিযোগ করেছেন। ড. ইউনূসের স্বজনপ্রীতি নিয়েও অভিযোগ তুলছেন তারা। এমনকি অনেক পুরাতন অভিযোগ সামনে আনা হচ্ছে। এরকম ঘটনা ঘটতেই থাকবে দিন যতো যাবে। জামায়াত যদিও সরাসরি কিছু বলবে না, কিন্তু তাদের নতুন নতুন দোকান (সংগঠন)কে ব্যবহার করে দেশে বিশৃঙ্খলা লাগিয়ে দিতে পারে যাতে ড. ইউনূস নির্বাচন না করতে পারেন।

দেশী কোনো শক্তি নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করলে সুবিধা পাবে না, কারণ নির্বাচনের পক্ষে বিএনপির মতো বড় শক্তি রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে অনেক শক্তি নির্বাচন বানচাল করতে চাইলেও ড. ইউনূসের শক্তিশালী সংযোগের কারণে সেটা ঠেকিয়ে দেওয়া যাবে।ড. ইউনূস পদত্যাগ করবেন, সেনাবাহিনী ক্ষমতা নেবে - এমন গুজব ছড়িয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে যে অংশ নির্বাচন চায়, তাকে দুর্বল করা হচ্ছে। এসব কথা বলে মূলত ছাত্র-জনতাকে রাজপথে নামার জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের ভর কেন্দ্র অনেকগুলি। কোনো একটি অংশ হয়তো চায় ইউনূস সাহেবকে সরিয়ে দিতে। তাহলে দেশে আর নির্বাচন হবে না, ওয়াকার উজ জামানকে সরানো যাবে এবং নিজেদের পছন্দমত লোক বসিয়ে দেশ পরিচালনা করা যাবে বিপ্লবের নামে।

ড. ইউনূসকে অবশ্যই নির্বাচন দিয়ে যেতে হবে।। যদি কোনোভাবে নির্বাচন বানচালও হয়, তবুও তাকেই দেশকে একটি স্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে হবে। যারা নৈরাজ্যবাদী তারা চায় ইউনূস সাহেবকে ব্যর্থ করে দিতে পারলে বুঝি তিনি পদত্যাগ করবেন। কারণ এর আগেও ইউনূস সাহেব পদত্যাগ করবেন এমন কথা শোনা গিয়েছে। নৈরাজ্যবাদীরা সেই সুযোগটাই নিতে চায়। যদি নির্বাচন নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়, তাহলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা।

ইউনূসবিরোধী দুই শিবির আন্দোলন শুরু করতে পারে যাতে জাতীয় নির্বাচন না হয়। আওয়ামী লীগও জামায়াত-এনসিপি জোট। যদি ড. ইউনূসকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়া যেতে পারে , তাহলে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। বাংলাদেশ আজ এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দাঁড়িয়ে। গণতন্ত্র বনাম নৈরাজ্যের এই লড়াইয়ে জয়ী হতে হবে গণতান্ত্রিক শক্তিকেই। অন্যথায় দেশ আরও গভীর সংকটের দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:১৫
২৪টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×