somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভার্সিটির ডাল (ডাইল নয়) : ৪র্থ পর্ব - শাহ্‌ পরাণ হল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট

১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[ বাণী চিরন্তনিঃ
যেই ছেলে বা মেয়ে ভার্সিটি তে পড়াশোনা করেছে কিন্তু ভার্সিটির আবাসিক হলের ডাল খায় নি তার ক্যাম্পাস জীবন অপূর্ণই থেকে গেল, ঠিক যেমন মাঝি ছাড়া নৌকা অপূর্ণ থেকে যায় – জনৈক ক্যাম্পাস মনীষী]

আমার বন্ধুদের মাঝে সবথেকে বেশি সংখ্যক চান্স পেয়েছিল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে। আমিও চান্স পেয়েছিলাম কিন্তু সাবজেক্ট পছন্দ না হওয়াতে ভর্তি হইনি। বন্ধুরা সবসময়ই বলত সিলেটে ঘুরতে যাবার জন্যে। বিভিন্ন কারনে সময় হচ্ছিল না। থার্ড ইয়ার পরীক্ষা শেষ হবার পর সিদ্ধান্ত নিলাম এইবার যাবই যাব।

তিন দিন ছিলাম শাহ্‌ পরাণ হলে। ঘটনাটা ২য় দিন রাতের। তখন শীতের সময়। যারা সিলেট থাকেন তারা জানের শীতের সময় সিলেটে ভালই শীত পড়ে। এম্নিতেই ঠান্ডা তার উপর যদি কেউ গোসল করতে চায় তবে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা অনেক কষ্টদায়ক হয়ে যায়। তাই নিতান্ত প্রয়োজন না হলে কেউ রাতে গোসল করে না, আর যদিও করে তবে পানি গরম করে করে।

আমি আমার বন্ধুর সাথে যেই রুমে ছিলাম তার পাশের রুমেই এক বড় ভাই থাকতেন যার সাথে আমার বন্ধুর এক রুমমেটের সম্পর্ক ভাল যাচ্ছিল না। ওই বড় ভাই তাকে খুব জ্বালাতন করতেন। কারন বড় ভাই পলিটিক্স করতেন আর আমার বন্ধুর রুমমেট বিপক্ষ দলের সমর্থক ছিল। এই জ্বালাতনে অতিষ্ঠ হয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হল ছেড়ে দিবেন এবং সুযোগ পেলে ওই বড় ভাইকে একটু সাইজ করবেন। সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। সেই রাতে যখন তিনি হল ছেড়ে মেসে উঠার জন্য জিনিসপত্র গোছাচ্ছিলেন তখনি সুযোগ চলে আসল।

বড় ভাই সেদিন বাইরে কোথাও গিয়েছিলেন। রাতে ফিরলেন এবং প্রস্তুতি নিলেন গোসল করার। এই সময় বিদ্যুৎ চলে গেল। শীতের সময় খুব কমই বিদ্যুৎ যায়। বড় ভাই তখন আমাদের রুমে এসে বললেন-
“এই আরিফ (যন্ত্রনায় কাতর রুমমেট এর ছদ্মনাম), তুমি তো চলে যাচ্ছ। যাবার আগে শেষবারের মত আমার একটু সেবা করে দিয়ে যাও। ডাইনিং থেকে আমার কথা বলে গরম পানি নিয়ে তিন নাম্বার বাথরুমে দিয়ে এসো। আমি ওইখানে গোসল করতে ঢুকছি।“

আরিফের মুখটা ম্লান হয়ে গেল। সে প্রথমে তার লাগেজগুলো রিকশায় করে মেসে পাঠিয়ে দিয়ে ডাইনিং এ গেল গরম পানি আনতে। পানি নিয়ে বাথরুমে দিয়ে রুমে এসে আমদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল। কিছুক্ষণ পরেই ইলেক্ট্রিসিটি চলে আসল হঠাত আমরা চিৎকার শুনতে পেলাম। বুঝলাম বাথরুম থেকে আওয়াজ আসছে। দৌড়ে গেলাম। গিয়ে দেখি বড় ভাই চোখে হাত দিয়ে চিৎকার করছে। তার বালতিতে তাকিয়ে সব পরিষ্কার হয়ে গেল। সেখানে পানির বদলে ছিল ডাল।

আসলে আরিফ এই ইলেক্ট্রিসিটি চলে যাবার সুযোগটা পুরোপুরি নিয়েছিল। গরম পানির বদলে সে ভার্সিটির বিখ্যাত পানসে ডাল নিয়ে এসেছিল। যেহেতু বিদ্যুৎ ছিল না তাই বড় ভাই সেটা ধরতে পারেন নি। এটাকেই সম্ভবত বলে প্রকৃতির প্রতিশোধ। নাহলে শীতকালে যখন বিদ্যুৎ যায় না তখন সেদিন ই কেন বিদ্যুৎ চলে যাবে। সৃষ্টিকর্তা সম্ভবত আরিফের ক্ষোভ মেটাবার একটা বন্দোবস্ত করে দিয়েছিলেন। বেচারা আরিফ। কম জ্বালাতন তাকে সহ্য করতে হয় নি। এই ঘটনার পরে কার কি অবস্থা হয়েছিল তা জানি না। তবে মাঝে মাঝে জানতে খুব ইচ্ছে হয়।

১ম পর্বঃ Click This Link
২য় পর্বঃ Click This Link
৩য় পর্বঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:২৬
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×