4th part 3rd part 2nd part 1st part
( যারা আমার এই গল্প ধৈর্য্ সহকারে আগ্রহ নিয়ে এতদিন পড়েছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ। আমার অনুভূতিগুলো গল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করতে চেয়েছি। আদৌ কি আমার অনুভূতির সবটুকু লেখার মধ্যে উঠে আসছে? জানিনা। তারপরও পাঠকদের কাছে আমার ছোট্ট অনুরোধ । যারা পড়ছেন আশা করছি তারা সবগুলো পর্বই পড়ছেন। পর্বগুলো সব মিলেই আমার অনুভূতি। আলাদা আলাদা ভাবে এরা কিছুই নয়। সুবিধার জন্য আমার বাকি পর্বগুলোর লিঙ্ক এড করলাম। )
একটু পরেই সব শুনলাম। গতিময় জীবনের অনেক সুখ স্মৃতিই ধুলিমলিন হয়ে বিস্মৃতির এশট্রেতে গড়াগড়ি খায়। অথচ কিছু দুঃসহ স্মৃতি কাঁটার মত গলায় বিঁধে থাকে। জীবন বয়ে চলে কিন্তু সেই কাঁটা নামে না। তার অস্তিত্ব অস্বীকার করতে চাইলেও করা যায় না। কিছুক্ষণ পরে পরে অজান্তেই ঢোক গিলতে হয়। আর তারপরই ব্যথায় অন্ধকার হওয়া পৃথিবী।
গোড়ার দিকে তার মন খারাপ থাকার কারণ স্পষ্ট হয় এবার। মাঝে মাঝেই বিবিধ ছদ্মবেশে তার কথাগুলো বলা-না বলার সীমান্তে এসে দাড়িয়েছিল। আমি বুঝতে পারিনি। রাতভরে তাড়া করা দুঃস্বপ্নের প্রহরগুলো সে কাটিয়েছে একা। তার কষ্টের জগতে সে এতটা সময় নিঃসঙ্গ থেকেছে। আমাকেও সঙ্গে নেয়নি। কিন্তু আর সে একা সইতে পারছেনা। তুমি কি আমার কষ্টের ভাগ নিবে ? - সে ভয়ে ভয়ে জানতে চায়। এতদিন তার চোখে আমাকে হারানোর ভয় দেখিনি। আজ দেখি।
ঘটনাটা শুনে আমি কি করলাম বলতে পারেন ? নিজেই নিজের গল্পের নায়ক সেজে বসেছি আর সেই নায়ক মহত্ব দেখাবে না তা কি হয়! কিন্তু ও কি শুধুই মহত্ব আর কিছু নয়? যে ভালবাসা তাকে বোঝানোর জন্য নিত্যদিন খাবি খেয়েছি, কিভাবে তাকে আনন্দ দিবো, গর্বিত করবো তা ভেবে নিজের মাথার চুল ছিড়েছি, যার কথা ভেবে এলোমেলো জীবনটা সাজাতে গিয়ে নিজেই আবার এলোমেলো করে ফেলেছি সেই আমার জন্য এতো আশ্চর্য সুযোগ! আমি আমার সমস্ত ভালবাসা দিয়ে ঝাপিয়ে পড়লাম।
কিন্তু লাভ হল না। সে আস্তে আস্তে বদলে যেতে লাগলো। আমার সাথে সামান্য ঝগড়া হলেই সে ভাবতে লাগলো আমি ঐ কথা শোনার পর তার সাথে এমন করছি। তার সুন্দর কল্পনার রাজ্য ভেঙ্গে চুরে ভারী নিষ্ঠুর এক হতাশা লীলানৃত্য করে। মাঝে মাঝেই ভেবেছি ঐ ঘটনা না ঘটলে হয়তো সে আমাকে কোন দিনও ভালবাসতো না। তার কোল জুড়ে আসা পুতুলের মত বাচ্চাগুলো আমার কাছে তাদের মায়ের নামে হাজারটা অভিযোগ করতো না। পরক্ষণেই ভেবেছি হতে পারে এই ধারণা সত্যি তবুও তো তাকে পেয়েছি! সেই বা কম কি? থাকুক না চাঁদের এক আধটা কলঙ্গ। আমি সূর্য হয়ে যতটুকু পারি আড়াল করবো।
তার মুখ থেকে প্রাণটুকু হারাতে থাকে। আমি কিছুই করতে পারলাম না। যে আমি এককালে সামান্য মোজা জোড়াও গুছিয়ে রাখতে পারতাম না সেই আমি দুইটা জীবন একহাতে গোছাই। একটু গোছানো মনে হলেই তাকে দেখাই আর প্রবোধ দিয়ে বলি, দেখো, সব ঠিক হয়ে যাবে।
ঠিক হয়না কিছুই। সে মানসিক ভাবে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রবল আগ্রহ নিয়ে সে একটা কাজই শুধু করে। সেটা আমার সাথে দেখা করা। জীবন সম্পর্কে চরম অনীহার কারণে অবশিষ্ট মুষ্ষ্ঠিমেয় আগ্রহগুলো তার বাবামার প্রশ্রয় পায়। তবে তার বড় বোনটি অদূরে আমাদের কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করে। তার মাঝেই একদিন সে আমাকে বলে, তুমি আমাকে কোলে নিয়ে চরকির মত ঘুরাতে পারবে? আমি তার ছোট্ট খাট্ট শরীরের দিকে একবার আর একবার অনতিদূরে বসে থাকা তার বোনের দিকে তাকিয়ে বলি, এখানে?
হ্যা। পারবে না? অভিমানে তার গাল ফুলে আসে। আমি তাকে কোলে নেই। চরকির মত ঘুরাই। কাছেই তার বোন দেখেও না দেখার ভাণ করেন। সে হাসে অনেকদিন পর। আমার চোখে জল আসে।
(to be continued)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



