somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি চতুষ্পদ ভালবাসা - ৫

৩০ শে এপ্রিল, ২০০৮ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

4th part 3rd part 2nd part 1st part

( যারা আমার এই গল্প ধৈর্য্ সহকারে আগ্রহ নিয়ে এতদিন পড়েছেন তাদের অনেক ধন্যবাদ। আমার অনুভূতিগুলো গল্পের মাধ্যমে প্রকাশ করতে চেয়েছি। আদৌ কি আমার অনুভূতির সবটুকু লেখার মধ্যে উঠে আসছে? জানিনা। তারপরও পাঠকদের কাছে আমার ছোট্ট অনুরোধ । যারা পড়ছেন আশা করছি তারা সবগুলো পর্বই পড়ছেন। পর্বগুলো সব মিলেই আমার অনুভূতি। আলাদা আলাদা ভাবে এরা কিছুই নয়। সুবিধার জন্য আমার বাকি পর্বগুলোর লিঙ্ক এড করলাম। )

একটু পরেই সব শুনলাম। গতিময় জীবনের অনেক সুখ স্মৃতিই ধুলিমলিন হয়ে বিস্মৃতির এশট্রেতে গড়াগড়ি খায়। অথচ কিছু দুঃসহ স্মৃতি কাঁটার মত গলায় বিঁধে থাকে। জীবন বয়ে চলে কিন্তু সেই কাঁটা নামে না। তার অস্তিত্ব অস্বীকার করতে চাইলেও করা যায় না। কিছুক্ষণ পরে পরে অজান্তেই ঢোক গিলতে হয়। আর তারপরই ব্যথায় অন্ধকার হওয়া পৃথিবী।

গোড়ার দিকে তার মন খারাপ থাকার কারণ স্পষ্ট হয় এবার। মাঝে মাঝেই বিবিধ ছদ্মবেশে তার কথাগুলো বলা-না বলার সীমান্তে এসে দাড়িয়েছিল। আমি বুঝতে পারিনি। রাতভরে তাড়া করা দুঃস্বপ্নের প্রহরগুলো সে কাটিয়েছে একা। তার কষ্টের জগতে সে এতটা সময় নিঃসঙ্গ থেকেছে। আমাকেও সঙ্গে নেয়নি। কিন্তু আর সে একা সইতে পারছেনা। তুমি কি আমার কষ্টের ভাগ নিবে ? - সে ভয়ে ভয়ে জানতে চায়। এতদিন তার চোখে আমাকে হারানোর ভয় দেখিনি। আজ দেখি।

ঘটনাটা শুনে আমি কি করলাম বলতে পারেন ? নিজেই নিজের গল্পের নায়ক সেজে বসেছি আর সেই নায়ক মহত্ব দেখাবে না তা কি হয়! কিন্তু ও কি শুধুই মহত্ব আর কিছু নয়? যে ভালবাসা তাকে বোঝানোর জন্য নিত্যদিন খাবি খেয়েছি, কিভাবে তাকে আনন্দ দিবো, গর্বিত করবো তা ভেবে নিজের মাথার চুল ছিড়েছি, যার কথা ভেবে এলোমেলো জীবনটা সাজাতে গিয়ে নিজেই আবার এলোমেলো করে ফেলেছি সেই আমার জন্য এতো আশ্চর্য সুযোগ! আমি আমার সমস্ত ভালবাসা দিয়ে ঝাপিয়ে পড়লাম।

কিন্তু লাভ হল না। সে আস্তে আস্তে বদলে যেতে লাগলো। আমার সাথে সামান্য ঝগড়া হলেই সে ভাবতে লাগলো আমি ঐ কথা শোনার পর তার সাথে এমন করছি। তার সুন্দর কল্পনার রাজ্য ভেঙ্গে চুরে ভারী নিষ্ঠুর এক হতাশা লীলানৃত্য করে। মাঝে মাঝেই ভেবেছি ঐ ঘটনা না ঘটলে হয়তো সে আমাকে কোন দিনও ভালবাসতো না। তার কোল জুড়ে আসা পুতুলের মত বাচ্চাগুলো আমার কাছে তাদের মায়ের নামে হাজারটা অভিযোগ করতো না। পরক্ষণেই ভেবেছি হতে পারে এই ধারণা সত্যি তবুও তো তাকে পেয়েছি! সেই বা কম কি? থাকুক না চাঁদের এক আধটা কলঙ্গ। আমি সূর্য হয়ে যতটুকু পারি আড়াল করবো।

তার মুখ থেকে প্রাণটুকু হারাতে থাকে। আমি কিছুই করতে পারলাম না। যে আমি এককালে সামান্য মোজা জোড়াও গুছিয়ে রাখতে পারতাম না সেই আমি দুইটা জীবন একহাতে গোছাই। একটু গোছানো মনে হলেই তাকে দেখাই আর প্রবোধ দিয়ে বলি, দেখো, সব ঠিক হয়ে যাবে।

ঠিক হয়না কিছুই। সে মানসিক ভাবে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রবল আগ্রহ নিয়ে সে একটা কাজই শুধু করে। সেটা আমার সাথে দেখা করা। জীবন সম্পর্কে চরম অনীহার কারণে অবশিষ্ট মুষ্ষ্ঠিমেয় আগ্রহগুলো তার বাবামার প্রশ্রয় পায়। তবে তার বড় বোনটি অদূরে আমাদের কথা শেষ হওয়ার অপেক্ষা করে। তার মাঝেই একদিন সে আমাকে বলে, তুমি আমাকে কোলে নিয়ে চরকির মত ঘুরাতে পারবে? আমি তার ছোট্ট খাট্ট শরীরের দিকে একবার আর একবার অনতিদূরে বসে থাকা তার বোনের দিকে তাকিয়ে বলি, এখানে?
হ্যা। পারবে না? অভিমানে তার গাল ফুলে আসে। আমি তাকে কোলে নেই। চরকির মত ঘুরাই। কাছেই তার বোন দেখেও না দেখার ভাণ করেন। সে হাসে অনেকদিন পর। আমার চোখে জল আসে।
(to be continued)




২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×