somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার লেজেগোবরে অবস্থাঃ অচিরেই কি আমরা একটি মেধাহীন জাতিতে পরিণত হতে যাচ্ছি????

২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



অন্যকে অনুকরণ করে, অন্যের ভাষায় কথা বলে, অন্যের মতো চলাফেরা করে, অন্যের মতো আচরণ করে নিজেকে কি প্রকাশ করা সম্ভব? সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘না’। এতে মানুষ না পারে তাঁর উপস্থিতিকে জানান দিতে, না পারে অন্যদের অনুরূপ হতে। এতে এক ধরণের আইডেন্টিটি ক্রাইসিস বা স্বকীয়তার অভাবে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য নিজেরাই হুমকী হয়ে পড়ে। আমরা বাংলাদেশীরা কি এই রোগে ভোগা শুরু করেছি?

আমাদের বিশেষত্ব কি? এমন কি আছে যা আমাদেরকে অন্যদের থেকে আলাদা করে চিনিয়ে দিচ্ছে?

অতীতে অনেক কিছুই ছিল। কিন্তু বর্তমানে আমরা তা হারিয়ে ফেলছি প্রতিনিয়ত। নিজেরাই নিজেদের ধ্বংসের কারণ হয়ে যাচ্ছি।
মেধা ও মনন কোনো অলৌকিক বিষয় নয়। এটা চর্চার ফল। যে জাতি যত বেশি চর্চারত এই বিষয়ে সে জাতি গোটা বিশ্বে ততই অগ্রসরমান। আমরা কতটা চর্চা করছি?

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার হালহকিকত অন্য দেশের সাথে তুলনা করলেই এর কংকালটা চোখে পড়বে। গায়ে কোনো মাংস নেই। শুধুই হাড়সর্বস্ব কংকাল। এই কংকালটাও কবে উধাও হয় তা দেখার বিষয়।

কোন দেশ অপরাপর বিশ্বে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় দেখতে চায় তা তাদের গবেষণা ও উন্নয়ন খাতের ব্যয় দ্বারা বিবেচনা করা যায়। বাংলাদেশে গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে জিডিপির এত কম (১০০ মিলিয়ন ডলারের নিচে হলে বিবেচনায় নেওয়া হয় না) পরিমাণ ব্যয় করেছে যে তা ইউনেস্কো তাদের হালনাগাদে উল্লেখ করতে পারে নি। অর্থাৎ বাংলাদেশ জিডিপির ০.১০% এরও কম এ খাতে বরাদ্দ করেছে।



অন্যদিকে দরিদ্রদেশ নেপাল পর্যন্ত জিডিপির .৩০% ব্যয় করেছে এই খাতে। ২০১৭ সালে ভারত (.৮০%), ইসরাইল (৪.১১%), দক্ষিন কোরিয়া (৪.৩০%)। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে শুধু মালয়েশিয়া (১.১৩%), তুরস্ক (.৯৬%)।

বাংলাদেশ সরকারের কত টাকা কত দিকে অপচয় করছে? এর সামান্য কিছু কি বরাদ্দ করতে পারে না গবেষণা ও উন্নয়নে। এটা যে ভবিষতে জাতির জন্য আশির্বাদ হয়ে আসবে তা কি নীতিনির্ধারকেরা জানে না। যদি জানে তবে মানে না কেন? এই কেন’র উত্তর কীভাবে পাওয়া যাবে? মৌলিক গবেষণা ছাড়া একটি জাতি কোনভাবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে না। এটা না করলে সারাজীবন আমাদের অন্যের গোলামী করেই যেতে হবে।

একটি শিক্ষিত ও বিবেকসম্পন্ন জাতি নিজ সম্প্রদায় তথা দেশের খোলনোলচে পাল্টে ফেলতে পারে। তবে এই শিক্ষিত দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে পড়ে লাইব্রেরীতে হাবিজাবি গাইডবই গলাধঃকরণ করে চাকরী সর্বোচ্চ তথাকথিত শিক্ষিত নয়। যখন দেশের সেরা ছাত্ররা মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং বা ভার্সিটির ফলাফলে টপ পজিশনে থেকেও গাইডবই পড়ে চাকরীর ধান্ধায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে তখন বুঝতে হবে জাতি এক ভয়ঙ্কর সময় পার করছে।

এতে অবশ্য আমাদের শিক্ষার্থীদের পুরোপুরি দোষ দেওয়াও অন্যায়। আমাদের নীতিনির্ধারকেরাই এই অবস্থার সৃষ্টি করেছে। নিজেদের সামান্য ব্যক্তি স্বার্থের জন্য আমরা জাতির ভয়ঙ্কর ক্ষতি করে চলেছি। এতে আমরা কেউ পিছিয়ে নেই। সরকারপ্রধাণ থেকে শুরু করে নিচের ধাপ পর্যন্ত বেশির ভাগেরই এই অবস্থা।

প্রশ্ন আসতে পারে। দেশের যাঁরা একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন সেই স্বাধীনতার পর থেকেই তাঁরা কি জানতেন না এইসব। এখনো যিনি আছেন, তিনি কি জানেন না। উত্তর, ‘হ্যাঁ, জানেন’। তাহলে মানেন না কেন? এর উত্তর জানা নেই। তাহলে ইনারা কীভাবে দেশপ্রেমিক হলেন যদি দেশের ভালোর জন্য এই কাজটুকু না করতে পারেন। যেখানে তাঁরা ইচ্ছা করলেই করতে পারেন। ইনারা সবি জানেন, বোঝেন কিন্তু মানেন না। জনগণও এতে টেনশনের কিছু দেখছে না। জাতি গোল্লায় যাক! আপনি বাঁচলে বাপের নাম! সবাই যেন গায়ে গণ্ডারের চামড়া নিয়ে বসে আছি।

সে জন্য কবি শামসুর রাহমান আক্ষেপ করে কবিতায় লিখেছেন, ‘একদিন ভোরবেলা ঘুম থেকে জেগে চোখ কচলাতে কচলাতে দেখি/ আমার জন্মশহরের প্রায় প্রতিটি রাস্তা শত শত গণ্ডারে/ ভরে গেছে’। কারো কোনো বিকার নেই!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭ সালে গবেষণার জন্য বরাদ্দ ১৪ কোটি। পাশের দেশ ভারতের আইআইটি মুম্বাই একাই ব্যয় করছে ২৪৫ কোটি রুপি (৩০০ কোটি টাকা)। সবগুলো আইআইটি মিলে পাচ্ছে প্রায় ৭,৭৭১ কোটি টাকা। বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় মিলে এর কত শতাংশ পায়?

আমরা অনেক কিছুতেই ভারতকে অনুসরণ করি। তাহলে এই ভালো দিকটিতে অনুসরণ করি না কেন? ভারতে জিআরএফ (জুনিয়র রিসার্স ফেলো) ইত্যাদির মাধ্যমে গবেষক নিয়োগ দেওয়া দেওয়া হচ্ছে। তারা ফুলটাইম জবের মতো করে গবেষণা করছে। পিএইচডি ডিগ্রি নিচ্ছে। নতুন জ্ঞানের সঞ্চার করছে।

আর আমাদের মাথামোটা পলিসি মেকাররা এসি রুমে বসে এখন পর্যন্ত একটি সুষ্ঠু পলিসি তৈরি করতে পারছে না। প্রশ্ন আসতে পারে, ‘এটা কি স্বদিচ্ছার অভাব’? নাকি জাতির প্রতি ভালোবাসাহীনতা। নাকি উদাসীনাতা! নাকি ভালোবাসাহীনতার কারণেই এই উদাসীনতা। তাহলে এই সব নষ্ট লোকেরা দেশপ্রেমিক হয় কি করে?

উন্নত দেশ উন্নত কারণ তারা তাদের পরবর্তী প্রজন্মের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়। আমরা অনুন্নত কারণ আমরা নিজের জন্য বাঁচি। তারা বুঝেছিল একমাত্র শিক্ষায় পারে জাতির ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে, তাই সে অনুসারেই তাদের কর্ম পরিকল্পনা। মানব সম্পদ উন্নয়নে নিজেদের নিংড়ে দিয়েছে।

জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কথা ধরুন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও কোরিয়ান যুদ্ধের পরে বিধ্বস্ত দুটি দেশ। অর্থনীতি ও অবকাঠামো বলতে কিছু নেই। সেখান থেকে ফিনিক্স পাখির মতো কীভাবে এখানে চলে আসল ভাবা যায়। তারা কিন্তু ইউরোপ-আমেরিকার মতো গরীব দেশগুলোতে গিয়ে ছলচাতুরীর মাধ্যমে নিজেদের সম্পদ কুক্ষিগত করে নি। তিলে তিলে গড়ে তুলেছে মেধা ও মননের চুড়ান্ত পরাকষ্ঠা দেখিয়ে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১৩২ ডলার। দক্ষিণ কোরিয়ার ৩০১ ডলার। ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাংকের মতে বাংলাদেশ ১৩৫৯ ডলার, আর কোরিয়া ২৭,৫৩৯ ডলার। ভাবা যায়। এটা এমনি এমনি ঘটে নি। তাদের ছিল ঘটে বুদ্ধিওয়ালা কিছু নেতা ও আমলা। আর আমাদের কি ছিল বা আছে নিজেকে প্রশ্ন করলে উত্তরটাও দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।

আমরা কখনই জাতির পটেনশিয়াল সত্তার কথা ভাবি নি। নিজেদের আমিত্বকে গুরুত্ব দিয়েছি বেশি। ফলে গুটিকয়েকজন নিজেদেরকে নব্য জমিদারীর জাতে তুললেও জাতিকে ডুবিয়েছি আগপাশতলা।

তারা যদি যুদ্ধ পরবর্তী অবস্থায় শিক্ষাখাতে জিডিপির সিংহভাগ ব্যয় করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারি নি। এর পরবর্তীতেও কেন পারি নি? এখনো কেন পারছি না? এখনো শুধু গবেষণা ও উন্নয়ন খাতেই ক্রয়ক্ষমতার ভিত্তিতে জাপান ব্যয় করছে জিডিপির ৩.৫৬% বা ১৮০ বিলিয়ন ডলার, দক্ষিণ কোরিয়া ৪.৩০% বা ৯২ বিলিয়ন ডলার। মানব সম্পদ উন্নয়নের পেছনেই জিডিপি’র ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ ব্যয় কার্যকর করছে। তারা সনি, মিতসুমিশি, স্যামসাং, হুন্দাই, এলজির, দাইয়ুর মতো বৈশ্বিক কোম্পানি বানাবে নাতো কি আমরা বানাব?

এইভাবে চলতে থাকলে বিপদে আপদে বা ভাল কিছু খাওয়ার জন্য এইসব দেশের কাছে সামনের বছরগুলোতে আরো বেশি করে দৌড়াতে হবে সাহায্যের আশায়। ইতোমধ্যেই মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১০ বছরে ২০০% বেড়ে গেছে (এখন জিডিপি’র ৩৩%)। ঋণ বাড়ুক তাতে অর্থনৈতিক ভাষায় সমস্যা নয়। তবে তা কার্যকরভাবে ব্যয় করা শিখতে হবে। কোথায় ব্যয় করলে সর্বোচ্চ ডিভিডেন্ট পাওয়া যাবে সেখানেই তা করতে হবে। তছরুপ করলে চলবে না। এ দেশে শেষেরটাই ঘটছে। ফলে এই ঋণ জনগণের উপর একসময় বোঝা হয়ে দাঁড়াবে। সামনে আরো কালোরাত অপেক্ষা করছে।

তবে দুর্ভাগ্য যে জাতির এই অনাগত দুর্ভোগগুলো আমাদের অসৎ নেতা ও আমলাদের ভোগ করতে হবে না। যা ঝড় যাবে বা যাচ্ছে তা ঐ আম আদমিদের উপর দিয়েই।

বাংলাদেশের বাজেট এখন প্রায় ৫০,০০০ মিলিয়ন ডলারের। এর থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার কি গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে ব্যয় করতে পারে না। বার্ষিক বাজেটকে মানব সম্পদ উন্নয়নমূখী করতে পারে না। তারপরো পুকুরে যতটুকু পোনা (পড়ুন বরাদ্দ) ছাড়া হচ্ছে তাঁর বেশির ভাগই পুকুরে আগে থেকে থাকা রাক্ষুসে মাছ (পড়ুন অসৎ নেতা ও দুর্ণীতিবাজ আমলা) গলাধঃকরণ করে দ্রুতই মাছশুণ্য করে ফেলছে।

নন-প্রডাকটিভ প্রতিরক্ষা খাতে যদি বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে পারে তাহলে প্রডাকটিভখাত যেখানে জাতির ভবিষ্য নিহিত সেখানে ব্যয় করতে এত কার্পণ্য কেন? এর পেছনের কারণ কি?

আবার দেখুন প্রাইভেট খাতের ইন্ডাস্ট্রিগুলো থেকে যে কোনো রিসার্স গ্রান্ড বাংলাদেশের ইউনি প্রফেসররা পাবে সেই কালচারটাই তৈরি হয় নি এখানে। বাংলাদেশের প্রফেসররা আছেন রাজনৈতিক তাঁবেদারীতে। অথচ সায়েন্টিফিক গবেষণায় ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফান্ডিং বলে একটা কথা আছে। ইন্ডাস্ট্রিগুলো নিজেরা মৌলিক গবেষণায় না গিয়ে ইউনির সাথে কোলাবরেশনে যায়। বাংলাদেশে এ ধারণার এখনো জন্মই হয় নি। তাঁরমানে এই নয় বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টরের শিল্পকারখানাগুলোর সক্ষমতা নেই। তাদের তা যথেষ্ট আছে। কিন্তু কেন ফান্ডিং হয় না তা বেশিরভাগ মেধাহীন ইউনি শিক্ষক বলতে পারবেন। রিসার্স গ্রান্ড পাওয়ার জন্য আপনাকে একটা গ্রহনযোগ্য রিসার্স প্রোপোজাল লিখতে হবে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এই রিসার্স প্রোপাজাল শব্দটা নিয়ে আতঙ্কে থাকে। যদিওবা দুএকজন তা আনতে পারে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার কদাচিৎ হয়।

পরিশেষে ইত্তেফাকের সম্পাদকীয় দিয়ে শেষ করি, ‘গবেষণা খাতে বরাদ্দের এইরূপ চিত্র কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নহে, সরকারি-বেসরকারি সকল বিশ্ববিদ্যালয়েরই। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তাহার ৮০ হইতে ৮৫ ভাগ টাকা চলিয়া যায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে। তদুপরি অবকাঠামোসহ মৌলিক কিছু কাজও করিতে হয় প্রতি বত্সর। ফলে গবেষণার জন্য যথোপযুক্ত অর্থ বরাদ্দের সুযোগই থাকে না। ইতোপূর্বে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গবেষণা খাতে বরাদ্দের বিষয়ে উদ্বেগজনক তথ্য প্রকাশ করিয়াছে। ইহার এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১৫ সনে সরকারি ও বেসরকারি ১২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা খাতে এক পয়সাও ব্যয় করে নাই। এইগুলির মধ্যে ২৮টি বেসরকারি আর ১১টি সরকারি। কোনো ধরনের প্রকাশনা ও সাময়িকী নাই বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষক বা ছাত্র স্বপ্রণোদিত হইয়া বা নিজস্ব অর্থায়নে গবেষণা করিতেছেন এমন নজিরও নাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক গবেষণা করিবেন তাহা আমরা আশা করি না। কিন্তু হাতে গোনা যে কয়েকজন গবেষণা করেন তাহার মান নিয়াও যথেষ্ট প্রশ্ন থাকিয়া যায়। ফলে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গবেষণার চিত্র ভয়াবহই বলিতে হইবে।

শিক্ষা ও গবেষণা খাতে ব্যয় কম কেবল বাংলাদেশেই। এইখাতে মোট জাতীয় আয়ের দশমিক এক শতাংশও বরাদ্দ থাকে না। অথচ উন্নত বিশ্বে এইখাতে অনেক বেশি ব্যয় করা হয়। আর, বিশ্বের মান-সম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি গবেষণাকে প্রাধান্য দান করিলেও আমাদের দেশে এই খাতের চিত্র উল্টা। গবেষণা খাত সবচাইতে অবহেলিত। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ দুইটি। প্রথমত, শিক্ষাদান। দ্বিতীয়ত, শিক্ষাদানের জন্য নূতন নূতন জ্ঞানের উদ্ভাবন। একটিকে বাদ দিয়া অপরটি চলে না। গবেষণা না করিয়া জ্ঞান সৃষ্টিও সম্ভব নহে। ইহার ফলও আমরা হাতেনাতে পাইতেছি। অপ্রিয় হইলেও সত্য যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি দিনে দিনে অজ্ঞানতার ‘ভাগাড়ে’ পরিণত হইতেছে। শিক্ষকেরা সংকীর্ণ দলীয় লেজুড়বৃত্তি, টেলিভিশনের টক-শোতে ফাঁকা জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতাবাজি আর এনজিওগুলিতে টাকার ধান্দায় লিপ্ত হইয়া থাকিতেছে।‘’


আমার এই আগের পোষ্টটিও পড়ে দেখতে পারেন: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কতটা উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে যোগ্য নাগরিক হিসেবে আমাদের গড়ে তুলছে? নাকি যারা এখানে ভালো করছে তারা কিছুটা স্ব-উদ্যেগী হয়ে শত প্রতিকূলতার মাঝেও নিজেকে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্ঠা করে যাচ্ছে...।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৩৪
৪৮টি মন্তব্য ৪৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×