পর্ব- ১
পর্ব- ২
পর্ব- ৩
পর্ব- ৪
পর্ব- ৫
পর্ব- ৬
পর্ব- ৭
পর্ব- ৮
"মিথুন, এই মিথুন.... সেই কখন থেকে ডাকছি তোকে"
> কি হয়েছে মা? এত সকালে কেন ডাকাডাকি করো?
> এত সকাল মানে! কয়টা বাজে সেই খবর রাখিস? অফিসে যাবি না....???
> (হাই তুলতে তুলতে) ওহ্ অফিস, তাই বলো। আমি ভাবলাম কি না কি.....
> এবার ওঠ। সাড়ে আটটা বাজে।
> হায় হায় বলো কি...!! তার মানে আজকেও লেট, বসের সেই রামঝাড়ি...!!!
প্রতিদিনের মত লাফ দিয়ে বিছানা ছেড়ে নামলো মিথুন। তাড়াহুড়ো করে ওয়াশরুমে গেলো।
রেডি হয়ে বের হবে এমন সময় মা পিছন থেকে ডেকে উঠলো--
> নাশতাটা খেয়ে যা।
> সময় নাই মা, গেলাম...
ছুটির দিন বাদে প্রায় প্রত্যেক সকালেই মিথুন নাশতা না করেই বেরিয়ে যায়। কখনো হয়তো মা জোর করেই খাইয়ে দেয়।
মিথুন সকালে বাসা থেকে বের হবার সময় পাগলের মত গাড়ি ড্রাইভ করে। আজো তার ব্যাতিক্রম হয়নি।
তবে মেইনরোডে গিয়েই সিগনালে আটকাতে হলো। সামনে বিশাল জ্যাম। অন্যান্য দিনও জ্যাম থাকে তবে এতোটা না।
মিথুনের মেজাজ তো ভীষন তিরিক্ষ হয়ে গেল.....!!!
আশেপাশে মানুষের চেচামেচি, গাড়ির হর্ন, রিক্সার টুং টাং অবিরাম চলছেই। এসবে মিথুনের মেজাজ আরো খারাপ হতে লাগলো।
হঠাৎ পাশের রিক্সায় বসা রমনীর দিকে মিথুনের চোখ আটকে যায়।
মিথুনের মনে হলে এত সুন্দর, অসম্ভব রুপবতী মানবী সে এর আগে কখনোই দেখেনি....
মাঝে মাঝে মৃদু হাওয়ায় মেয়েটার চুল বাতাসে উড়ছে...
মিথুন তাকে যতই দেখছে, ততই যেন নিজেকে তার মাঝে হাড়িয়ে ফেলছে...
মেয়েটাকে সে অপলক দৃষ্টিতে দেখছে। তার মনে হচ্ছে, "এত সুন্দর মানবীও পৃথিবীতে আছে! ও নিশ্চয়ই অন্য কোন গ্রহের বাসিন্দা হবে...."
মেয়েটা একটা নীল রঙের সেলওয়ার কামিজ পড়া। কপালে ছোট একটা নীল রঙের টিপ। চোখ দুটোতে গাঢ় করে কাজল দেয়া। দুহাতে কয়েকটা নীল রঙের কাঁচের চুড়ি। কানে ছোট ছোট নীল রঙের কানের দুল।
মেয়েটাকে ভীষন চিন্তিত দেখাচ্ছে। বারবার মোবাইল বের করে টাইম দেখছে। এত তাড়াহুড়ো কেন মেয়েটার? সেও কি অফিসে যাচ্ছে? অথবা ইমপরটেন্ট ক্লাস বা পরীক্ষা?
নাকি সে তার প্রেমিকের সাথে দেখা করতে যাচ্ছে? নাহ্, এটা হতে পারে না। এ ব্যাপারটা মিথুন মেনে নিতে পারলো না।
হঠাৎ করে কি হলো মিথুনের? কেন তার এমন মনে হচ্ছে? এই মেয়েটা তো তার পরিচিত কেউ না। মেয়েটার নামটা পর্যন্ত সে জানে না...
হঠাৎ আশেপাশের গাড়ির হর্ন আর মানুষের চিৎকার-চেচামেচিতে মিথুনের হুশ ফিরে এলো। ততক্ষনে গ্রীন সিগনাল পড়ে গেছে, সেই রমনীও রিক্সা সহ গায়েব। পেছন থেকে চিৎকার শোনা যাচ্ছে, "ঐ মিয়া আগে বাড়েন। সিগনাল পড়ছে দেহেন না? রাস্তার মাঝে গাড়ি থামায় থুইছেন ক্যান?"
মিথুন তখন জোরসে ড্রাইভ করা শুরু করলো। ১০ মিনিটের মধ্যে অফিসে পৌছে গেলো। অফিসে ঢুকতেই কলিগ খালিদ ভাইয়ের সাথে দেখা।
> এইযে ইরফান সাহেব, আজকে মনে হয় আপনার খবর আছে।
> কেন খালিদ ভাই?
> বস আপনারে খুঁজে। বসের রুমে গিয়া অবস্থা দেখেন।
> ধুর মিয়া আজাইরা টেনশন দিয়েন না তো। যাইতেছি বসের রুমে।
মিথুনের ভালো নাম ইরফান। অফিসে সবাই তাকে এই নামেই ডাকে।
বসের রুমে গিয়ে ব্যাপক ঝাড়ি খেলো মিথুন। আজকে কেন যেন ঝাড়ি খেতে ভালোই লাগলো। সবকিছুই ভালো লাগছে। উফ কি যে করে দিলো মেয়েটা! মেয়েটা যেন ছবির মত চোখে ভেসে উঠছে
সারাক্ষনই মেয়েটার কথা ভাবছে সে। এক সেকেন্ডের জন্যও যেন মেয়েটাকে ভুলতে পারছে না। অন্যরকম এক ভালোলাগা যেন ঘিরে রেখেছে তাকে.......
(চলবে.......)