
সম্প্রতি মেয়ের সৌজন্যে পরিবার সহ সামার ভেকেশন কাটালাম ৭ দিন ধরে প্যাসিফিক নর্থ ওয়েস্ট এর ন্যাশনাল ফরেস্ট এর গহীন জংগলে/বনে। চমৎকার সময় কাটালাম...সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত্য এলাকার বিভিন্ন পাহাড়, ট্রেইল, ঝর্না, বিচ, গুহা, কায়াকিং, হাইকিং জাপানিজ গার্ডেনস, করেই সময় কাটানো হয়েছে আর রাতে বনের মাঝেই Airbnb এর চমৎকার কটেজে। কানাডার কিছু অংশ এর মাঝে পড়ে। শয়ে শয়ে ছবি কিন্তু তা নিয়ে লিখতে ইচ্ছে করছে না।
এত কিছু করলাম কিন্তু কোন মানুষ এর সংস্পর্শ লাগলো না ভ্রমন এরেন্জ থেকে শেষ করা পর্যন্ত্য। আসার পর থেকেই চিন্তা করছিলাম ভবিষ্যত এর মানুষ এর চাকরি/বাকরি কেমন হবে, আগে এসব ভ্রমন এর সাপোর্ট এর জন্য হাজার হাজার চাকরী ছিল কিন্তু এখন সবই মেশিন নির্ভর হয়ে যাচ্ছে..।
যাওয়ার আগেই চ্যাটজিপিটি একদম সময় ধরে ৭ দিন এর ভ্রমনসুচি বানিয়ে দিল (এলাকার কোথায় কি আছে তা তার নখদর্পনে (নো ট্রাভেল এজেন্ট, ব্রসিয়ার লাগে না), সাথে কি কি নিতে হবে তারও লিস্ট বানিয়ে দিল। অনলাইনে প্লেনের টিকিট, বোর্ডিং পাস, এয়ারপোর্টে মেশিনে লাগেজ ঢুকিয়ে দেওয়ার ব্যবস্হা, পার্কিং লটে গাড়ী পার্কিং করে ড্রাইভার বিহীন শাটলে এয়ারপোর্ট, সিয়াটলে পৌছে ই গেলাম অনলাইনে রিজার্ভ করা গাড়ী রেন্ট করতে কিন্তু কোন লোকজন নাই, ফোনে টেক্সট আসলো যে রিজার্ভ করা গাড়ী ৩৪২ নাম্বার পার্কিং স্পটে রাখা আছে আর চাবী সিট এর উপর আছে!!!!!! জিপিএস এ অনলাইনে বুক করা Airbnb কটেজ এর ঠিকানা লিখে রওয়ানা দিলাম (প্রায় ২৫০০ মাইল আসলাম এখনও মানুষ ছাড়াই সব চলছে)... কটেজ এর কাছে আসার আগেই কটেজে ঢুকার দরজা খোলার কি লক এর নান্বার ফোনে চলে আসল, এখানেও নেই কোন লোকজন, নেই কোন কাগজ পত্র সিগনেচার, নেই কোন সরাসরি ভাড়া পেমেন্ট। ন্যাশানাল ফরেস্ট এর টিকিট সবই ফোনে, ঢুকার সময় মেশিনে স্ক্যান করে ঢুকে পড়া, রাস্তার টোল সবই মেশিনে (কোন লোকজন নাই টোল বুথে)
ভাগ্য ভাল যে প্লেন চালানোর জন্য পাইলট হিসাবে মেশিন না থেকে মানুষ ছিল!!!!!! তাও চেন্জ হয়ে যাবে বলেই বিশ্বাস
নিচের অংশ টুকু এআই দিয়ে লিখা
এআই সুনামি: ভবিষ্যতের ক্যারিয়ার গঠনে পিতামাতার জন্য একটি সতর্কবার্তা

আমার এই ভ্রমন এর এই অভিজ্ঞতা আমাকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়েছে—এআই একটি সুনামির মতো আসছে, যা মানুষের মেধার ওপর নির্ভরশীল প্রায় সব চাকরি গ্রাস করবে। শুধুমাত্র শারীরিক পরিশ্রমের কাজগুলো হয়তো কিছুটা রেহাই পাবে।এই ব্লগ পোস্টটি আমি লিখছি আমাদের পিতামাতাদের জন্য, যারা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত ক্যারিয়ার গঠনের কথা ভাবছেন। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের একটি গবেষণা প্রতিবেদন এআই-এর প্রভাবে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ৪০টি পেশা এবং তুলনামূলকভাবে নিরাপদ ৪০টি পেশার তালিকা প্রকাশ করেছে, যা আমাদের এই সুনামির তীব্রতা আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করে।
এআই কীভাবে চাকরির বাজারকে পাল্টে দেবে?মাইক্রোসফটের গবেষণায় দেখা গেছে, এআই বিশেষ করে সেই পেশাগুলোতে বড় প্রভাব ফেলবে, যেগুলো টেক্সট প্রসেসিং, তথ্য সরবরাহ, লেখালেখি, এবং যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল। গ্রাহক সেবা প্রতিনিধি (যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ২৮.৬ লাখ চাকরি), লেখক, সাংবাদিক, সম্পাদক, অনুবাদক, বিক্রয় প্রতিনিধি, ওয়েব ডেভেলপার, এবং ডাটা সায়েন্টিস্টের মতো পেশাগুলো সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। এই পেশাগুলোর কাজগুলো এআই টুলস যেমন চ্যাটজিপিটি বা মাইক্রোসফট কপাইলট ইতিমধ্যেই দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করছে।
অন্যদিকে, যেসব পেশায় শারীরিক উপস্থিতি, হাতে-কলমে কাজ, বা মানুষের স্পর্শ প্রয়োজন, সেগুলো এখনও এআই-এর কাছে তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। উদাহরণস্বরূপ, নির্মাণ শ্রমিক, ছাদ নির্মাতা, নার্সিং সহকারী, ম্যাসেজ থেরাপিস্ট, এবং ড্রেজ অপারেটরের মতো পেশাগুলো এআই দ্বারা সহজে প্রতিস্থাপিত হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই পেশাগুলোতে শারীরিক দক্ষতা, জটিল পরিবেশে সিদ্ধান্ত নেওয়া, এবং মানুষের সঙ্গে সরাসরি মিথস্ক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, যা বর্তমান এআই প্রযুক্তি এখনও পুরোপুরি অনুকরণ করতে পারে না।
মাইক্রোসফটের গবেষক কিরণ টমলিনসন বলেছেন, “আমাদের গবেষণা দেখায়, এআই অনেক কাজে সহায়তা করতে পারে, বিশেষ করে গবেষণা, লেখালেখি, এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে। তবে এটি কোনো পেশাকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে পারে না।” তিনি আরও জানান, এআই-এর প্রভাব শুধু কাজের ধরন পরিবর্তন করবে, সবসময় চাকরি হ্রাস করবে না। যেমন, এটিএম মেশিন ব্যাংক টেলারদের কিছু কাজ স্বয়ংক্রিয় করলেও, ব্যাংক টেলারদের সংখ্যা বেড়েছে, কারণ তারা গ্রাহক সম্পর্ক গড়ে তুলতে মনোযোগ দিয়েছে।
পিতামাতার জন্য পরামর্শ: সন্তানের ক্যারিয়ার কীভাবে প্রস্তুত করবেন?এআই-এর এই সুনামি থেকে বাঁচতে হলে আমাদের সন্তানদের এমন দক্ষতায় প্রস্তুত করতে হবে, যা এআই সহজে প্রতিস্থাপন করতে পারবে না। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো:সৃজনশীলতা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা গড়ে তুলুন: এআই যতই উন্নত হোক, মানুষের মতো আসল সৃজনশীলতা বা জটিল সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা এখনও তার নেই। শিল্প, উদ্ভাবন, বা স্ট্র্যাটেজিক চিন্তাভাবনার কাজে এখনও মানুষের প্রাধান্য আছে। সন্তানদের সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন, যেমন লেখালেখি, ডিজাইন, বা উদ্যোক্তা হওয়ার চিন্তাভাবনা।
টেকনোলজি বুঝুন এবং এআই-এর সঙ্গে কাজ করতে শিখুন: এআই যে চাকরি কেড়ে নিচ্ছে, তা সত্য, কিন্তু এআই নতুন চাকরিও তৈরি করছে। এআই ডেভেলপার, ডাটা সায়েন্টিস্ট, বা এআই এথিক্স বিশেষজ্ঞের মতো পেশা এখন জনপ্রিয়। সন্তানদের কোডিং, ডাটা এনালিটিক্স, বা এআই-সম্পর্কিত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে।
মানুষের স্পর্শের গুরুত্ব বোঝান: যেসব পেশায় মানুষের আবেগ, সহানুভূতি, বা সম্পর্ক গড়ার প্রয়োজন, সেগুলো এআই-এর পক্ষে প্রতিস্থাপন করা কঠিন। উদাহরণস্বরূপ, মনোবিজ্ঞানী, সামাজিক কর্মী, বা কোচিংয়ের মতো পেশা এখনও মানুষের ওপর নির্ভরশীল। সন্তানদের এমন পেশার প্রতি আগ্রহী করে তুলুন।
আজীবন শিক্ষার মানসিকতা গড়ে তুলুন: এআই-এর যুগে একটি ডিগ্রি নিয়ে সারাজীবন চাকরি করার দিন শেষ। সন্তানদের নতুন দক্ষতা শেখার এবং পরিবর্তনের সঙ্গে খাপ খাওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। অনলাইন কোর্স, ওয়ার্কশপ, বা স্ব-শিক্ষার অভ্যাস তৈরি করুন।
এআই সুনামির জন্য প্রস্তুতি নিনআমার ছুটির অভিজ্ঞতা এবং মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক গবেষণা একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়—এআই আমাদের জীবনকে সহজ করছে, কিন্তু চাকরির বাজারে আমূল পরিবর্তন আনছে। পিতামাতা হিসেবে, আপনার সন্তানদের এই পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত করা আপনার দায়িত্ব। তাদের এমন দক্ষতা শেখান যা এআই-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে, এবং তাদের মানসিকভাবে এমনভাবে গড়ে তুলুন যাতে তারা ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারে।এআই সুনামি আসছে, এবং এটি থেকে বাঁচতে হলে আমাদের আজ থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আপনার সন্তানের ভবিষ্যত গঠনের দায়িত্ব আপনার হাতে। এখনই সময়, সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার।লেখকের নোট: এই ব্লগটি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা এবং মাইক্রোসফটের গবেষণার ওপর ভিত্তি করে লেখা। আপনার মতামত বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন মন্তব্যে
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




