somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মসজিদ দর্শন : ০৮ : গোয়ালদি মসজিদ

২০ শে মে, ২০২২ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও থানার পানামনগর থেকে ৬ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে গোয়ালদি গ্রামে ঐতিহাসিক গোয়ালদি মসজিদটির অবস্থান। মসজিদটি গোয়ালদি গ্রামে অবস্থিত হওয়অর কারণেই এর হয়েছে গোয়ালদি মসজিদ। কেউ কেউ এটিকে গোয়ালদি গায়েবী মসজিদও বলেন।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এর ঐতিহাসিক সুলতানী স্থাপনার নিদর্শন এই গোয়ালদি মসজিদ। এই মসজিদ সংলগ্ন এলাকা থেকে পাওয়া একটি শিলালিপির তথ্যানুযায়ী সৈয়দ আশরাফ আল হোসাইনির পুত্র সুলতান আলাউদ্দীন হোসেন শাহ এর শাসনামলে ৯২৫ হিজরির ১৫ শাবান/১৫১৯ খ্রিস্টাব্দের আগষ্ট মাসে গোয়ালদি মসজিদ নির্মাণ করেন মোল্লা হিজাবর আকবর খান নামের এক ব্যক্তি। আলেকজান্ডার কানিংহাম শিলালিপিটির একটি ছাপচিত্র গ্রহণ করে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল-এ প্রেরণ করেন। সেখান থেকেই এই তথ্য পাওয়া যায়।



সুলতানী আমলে নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও এর গৌরবোজ্জ্বল মুসলিম ঐতিহ্যের অন্যতম সাক্ষী এই এক গম্বুজবিশিষ্ট গোয়ালদি মসজিদ। মসজিদের চারকোণে ৪টি গোলাকার পার্শ্ববুরুজ রয়েছে। পার্শ্ববুরুজ গুলো সুলতানি রীতিতে তৈরি। এগুলি ছাদপর্যন্ত উচু এবং প্রত্যেকটি নিয়মিত ব্যবধানে বন্ধনী দ্বারা বিভক্ত।













মসজিদের ভেতরে দেয়াল ও বাইরের দেয়ালে পাথর এবং ইটের ওপর আরব্য অলংকরণে নানান নকশা ও কারুকাজ রয়েছে।
মসজিদটির দেয়ালগুলো ১.৬১ মিটার পুরু।







মসজিদের পূর্ব দেয়ালে নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর ৩টি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের প্রতিটিতে ১টি করে মোট ৫টি খিলান যুক্ত দরজা রয়েছে। পূর্ব দিকের দেওয়ালের ৩টি দরজার মধ্যে মাঝখানের প্রধান দরজাটি অপেক্ষাকৃত বড়।







মসজিদের ভিতরে পশ্চিম দেয়ালে ৩টি মেহরাব রয়েছে। প্রধান প্রবেশপথ বরাবর মূল কেন্দ্রীয় মেহরাবটির অবস্থান। এটি কালো পাথরের তৈরি। কালো পাথর খোদাই করে নানান কারুকাজময় নকশা করা আছে সেখানে। কেন্দ্রীয় মেহরাবে দুইপাশে মেহরাব দুটি ইটের তৈরি এবং সেখানেও পোড়ামাটির অলংকরণ রয়েছে।







এক সময় মসজিদের অবস্থা খুবই খারাপ ছিলো। কিবলা প্রাচীর বাদে পুরো মসজিদটি গম্বুজ সহ ধসে পড়েছিল। প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর অধিদপ্তর যত্ন সহকারে মসজিদটির আসল নকশার অনুরূপে পুনরুদ্ধার করে। তবে বর্তমাণে মসজিদটি অযত্ন-অবহেলায় আছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদের ইতিহাসসংবলিত একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেছেন বলে মনে হয়।



সোনারগাঁও বেড়াতে আসা দেশী-বিদেশী পর্যটকদের অনেকেই ঐতিহাসিক এ পুরাকীর্তি দেখতে গোয়ালদি গ্রামে যান।



ছবি তোলার তারিখ : ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে তোলা ছবিগুলি
অবস্থান : গোয়ালদি, সোনারগাঁও, নারায়ণগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinates : 23°39'23.4"N 90°35'36.1"E

তথ্য সূত্র : বাংলাপিডিয়া ও উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল


=================================================================
মসজিদ দর্শন : ০১ : মহজমপুর শাহী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০২ : ষাট গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৩ : বিবি বেগনী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৪ : চুনাখোলা মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৫ : নয় গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৬ : জিন্দা পীর মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৭ : সিঙ্গাইর মসজিদ
=================================================================


আরো দেখুন -
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ১ম পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ২য় পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ৩য় পর্ব


বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০১
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০২
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৩
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৪
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৫
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৬


বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০১
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০২


আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০১
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০২
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০৩

=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০২২ রাত ১২:১০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×