দেশের প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন দেখার একটা শখ আমার আছে। আমাদের দেশের প্রাচীন স্থাপত্যের মধ্যে "মন্দির" গুলি বেশ আকর্ষণীয় এবং গুরুত্বপূর্ণ বটে। বেশ কিছু প্রাচীন মন্দির দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। আমার দেখা প্রাচীন মন্দির গুলির ৫টি ছবি রইলো এখানে।
০১১ : কিশোরীলাল বোস বাড়ি মন্দির / বোস বাড়ি মন্দির
বাড়িটি বা মন্দিরটি সম্পর্কে কোনো তথ্যই আমার জানা নেই।
ছবি তোলার স্থান : মালখানগর, সিরাজদিখান, মুন্সীগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinate : 23°33'11.9"N 90°25'28.1"E
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং
০১২ : ফেগুনাসার শিব মন্দির
মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের ফেগুনাসার গ্রামে ইছামতি নদীর ধারে ফেগুনাসার শিব মন্দিরটি অবস্থিত। কারো কারো মতে এটি ৭০০ বছরের পুরনো, আবার কারো কারো মতে এটি ৪০০ বছর পূর্বে রাজা রাজ বল্লবের নির্মিত শিব মন্দির।
শোনা যায় এক সময় বিশাল এলাকা নিয়ে রাজা রাজ বল্লব মন্দিরটি নির্মাণ করলেও বর্তমানে মন্দিরের চত্বর বাদে বাকি জায়গা প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। মন্দিরের আকার বেশি বড় নয়।
ছবি তোলার স্থান : সিরাজদিখান, মুন্সিগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinate : 23°33'16.5"N 90°26'14.5"E
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং
০১৩ : শিবু গুপ্ত বাড়ি মন্দির
আউটশাহী মোঘল মসজিদ দেখে সামান্য উত্তর পশ্চিমে এগিয়ে গেলে বেশ বড় একটি পুকুর বা দিঘী পাওয়া যাবে হাতের বামে। দিঘীর ঠিক উলটো পাশে আছে শিবু গুপ্তের প্রাচীন বাড়ি।
বাড়ির পাশেই আছে একটি চমৎকার মন্দির। বাড়িটি বা মন্দিরটি সম্পর্কে আর কিছুই আমার জানা নাই।
ছবি তোলার স্থান : আউটশাহী, টঙ্গীবাড়ী, মুন্সিগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinate : 23°31'24.8"N 90°26'36.6"E
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং
[i]ছবি তলেছে : Israfil Hossian[/i]
০১৪ : নন্দলাল ও যশোদালাল স্মৃতি মন্দির
যতদূর জানা যায়
গুরুন্ন প্রসাদের দুই পুত্র মথুরামোহন রায় এবং প্রিয় মোহন রায় এর উত্তরপুরম্নষ ভাগ্যকুলের বর্তমানের ওয়াপদায় বসতি স্থাপন করেন।
হরিপ্রসাদ রায় ১৮২৯ সালে ওলাউঠাতে মৃত্যুবরণ করলে গুরুন্ন প্রসাদ রায় ভ্রাতার বংশ রক্ষার্থে তার কণিষ্ঠপুত্র হরলাল রায়কে ১৮৩০ সালে পৌষ্যপুত্র প্রদান করেন। তীক্ষ্ণ বিষয়বুদ্ধি থাকায় হরলাল ব্যবসা বাণিজ্যে প্রভূত উন্নতিলাভ করেন। কলকাতায় বহু বাড়ি ক্রয় ও নির্মাণ করেন। তিনি ব্যয়শীল ও দাতা হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। কিন্তু মাত্র ২৬ বৎসর বয়সে বসন্ত রোগে নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। স্ত্রী মাণিক্যময়ী নিজের ৬ বছর বয়সী ছোটভাই হরেন্দ্রলালকে পৌষ্যপুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন।
গঙ্গাপ্রসাদ রায়ের ৪র্থ ও কণিষ্ঠ পুত্র প্রেমচাঁদ রায়ের তিনপুত্র ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী জমিদার। এদের মধ্যে শ্রীনাথ রায় এবং জানকী নাথ রায় ইংরেজ সরকার কর্তৃক রাজা উপাধি দ্বারা ভূষিত হন। এই দুইজন ভাগ্যকুলে প্রাসাদ নির্মাণ করে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তাদের প্রাসাদও প্রায় ৩০ বছর পূর্বে কৃত্তিনাশা পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়েছে। বংশের পরিধি বাড়ায় জমিদার পরিবারটি ৭টি হিস্যায় ভাগ হয়ে যায়।
রাজা শ্রীনাথ রায় ছিলেন বিক্রমপুরের জমিদারদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী। কলকাতার অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৮৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৫২সালে জমিদারী প্রথা বাতিল ও দেশ ভাগের কারণে তাঁদের নামে আর রেকর্ড হয় নি। ভাগ্যকুলের জমিদার নন্দলাল রায় ও যশোদালাল রায় বর্তমান ওয়াপদা ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। এখানে তাঁদের সমাধিসৌধ আছে।
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট
ছবি তোলার স্থান : ভাগ্যকুল, শ্রীনগর, মুন্সিগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinate : 23°30'47.6"N 90°13'08.9"E ও 23°30'47.3"N 90°13'09.0"E
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং
০১৫ : শ্রী শ্রী সর্বজনীন দুর্গা মন্দির
যতদূর জানা যায়
গুরুন্ন প্রসাদের দুই পুত্র মথুরামোহন রায় এবং প্রিয় মোহন রায় এর উত্তরপুরম্নষ ভাগ্যকুলের বর্তমানের ওয়াপদায় বসতি স্থাপন করেন।
হরিপ্রসাদ রায় ১৮২৯ সালে ওলাউঠাতে মৃত্যুবরণ করলে গুরুন্ন প্রসাদ রায় ভ্রাতার বংশ রক্ষার্থে তার কণিষ্ঠপুত্র হরলাল রায়কে ১৮৩০ সালে পৌষ্যপুত্র প্রদান করেন। তীক্ষ্ণ বিষয়বুদ্ধি থাকায় হরলাল ব্যবসা বাণিজ্যে প্রভূত উন্নতিলাভ করেন। কলকাতায় বহু বাড়ি ক্রয় ও নির্মাণ করেন। তিনি ব্যয়শীল ও দাতা হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। কিন্তু মাত্র ২৬ বৎসর বয়সে বসন্ত রোগে নিঃসন্তান অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। স্ত্রী মাণিক্যময়ী নিজের ৬ বছর বয়সী ছোটভাই হরেন্দ্রলালকে পৌষ্যপুত্র হিসাবে গ্রহণ করেন।
গঙ্গাপ্রসাদ রায়ের ৪র্থ ও কণিষ্ঠ পুত্র প্রেমচাঁদ রায়ের তিনপুত্র ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী জমিদার। এদের মধ্যে শ্রীনাথ রায় এবং জানকী নাথ রায় ইংরেজ সরকার কর্তৃক রাজা উপাধি দ্বারা ভূষিত হন। এই দুইজন ভাগ্যকুলে প্রাসাদ নির্মাণ করে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তাদের প্রাসাদও অনেক বছর পূর্বেই কৃত্তিনাশা পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়েছে। পরে বংশের পরিধি বাড়ায় জমিদার পরিবারটি ৭টি হিস্যায় ভাগ হয়ে যায়।
রাজা শ্রীনাথ রায় ছিলেন বিক্রমপুরের জমিদারদের মধ্যে সবচেয়ে প্রভাব-প্রতিপত্তিশালী। কলকাতার অত্যন্ত প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৮৪১ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
১৯৫২সালে জমিদারী প্রথা বাতিল ও দেশ ভাগের কারণে তাঁদের নামে আর রেকর্ড হয় নি। ভাগ্যকুলের জমিদার নন্দলাল রায় ও যশোদালাল রায় বর্তমান ওয়াপদা ভবনটি নির্মাণ করেছিলেন। এখানে তাঁদের সমাধিসৌধ আছে। ভাগ্যকুলের জমিদারদের এই অংশটিতে অল্প কিছু স্থাপনা এখনো টিকে আছে কালের স্বাক্ষী হয়ে। তবে সমস্যা হচ্ছে এই অংশটি বর্তমানে র্যাবের দখলে হওয়ায় দর্শনার্থীদের অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ করতে হয়।
অন্যদিকে রাজা সীতানাথ রায়ের দুই পুত্র যদুনাথ রায় এবং প্রিয়নাথ রায়। যদুনাথ রায় বাহাদুর বালাশুর গ্রামে গড়ে তুলেছিলেন তার জমিদার বাড়ি। তিনি হুবহু একই ধরনের দুটি ভবন নির্মাণ করেন। যার একটি ছিলো জমিদার যদুনাথ রায়ের। আর অন্যটি ছিলো তারই ছোট ভাই প্রিয়নাথ রায়ের।
বাড়িটির চারপাশ এক সময় রাতের আধাঁরে বিলের মাঝে আলোয় জলমল করত। প্রথা বিরোধী লেখক, ভাষা বিজ্ঞানী ড. হুমায়ূন আজাদ তার লেখা এক প্রবন্ধে এ বাড়িটিকে প্যারিস শহরের সাথে তুলনা করে লিখেছেন, বিলের ধারে প্যারিস শহর। বাড়ির সামনে বিশালাকৃতির দীঘি রয়েছে। দীঘির চারপাশেই শ্বেতপাথরে নির্মান করা শানবাঁধানো ঘাট।
জমিদার বাড়ীর সামনে রয়েছে “নবকুঠি”, এটি মূলত গদিঘর ছিল। এছাড়া আরো আছে শ্রী শ্রী সর্বজনীন দুর্গা মন্দির, শ্রী শ্রী রাজলক্ষ্মী নারায়ণ জিউ মন্দির, বায়োস্কোপ ঘর , কাচারি ঘর। এই জমিদার বাড়ীটি আনুমানিক ১৯২০ সালের আগে পড়ে নির্মাণ করা হয়।
ভাগ্যকুলের জমিদারদের সকলেরই কলকাতায় বাড়ি ছিল। তারা ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ কলকাতামুখী হয়ে পড়েছিলেন। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত শুধুমাত্র যদুনাথ রায় তার বিলের ধারের প্রাসাদে ছিলেন। তিনি ভাগ্যকুল ত্যাগ করতে চাননি। বৃদ্ধ বয়সে তার আত্মীয়-স্বজনরা জোর করে কলকাতায় নিয়ে যায়। তিনি কলকাতায় গিয়ে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই মৃত্যুবরণ করেন।
তথ্যসূত্র : ইন্টারনেট
ছবি তোলার স্থান : উত্তর বালাসুর, শ্রীনগর, মুন্সিগঞ্জ, বাংলাদেশ।
GPS coordinate : 23°31'48.3"N 90°13'11.7"E
ছবি তোলার তারিখ : ১৯/০৫/২০১৭ ইং
বি.দ্র. : প্রাচীন বলতে এখানে প্রচীন যুগকে বুঝানো হয়নি। প্রচীন বলতে এখানে বুঝানো হয়েছে -
অতীত, অতীতকালীন, আগেকার, কালজীর্ণ, জীর্ণ, দীর্ঘকাল ধরে বর্তমান, পুরাতন, পুরান, পুরানো, পূর্বকালীন, প্রত্ন, প্রাক্তন, বয়স্ক, বয়োবৃদ্ধ, বর্ষীয়ান, বহুকালের, বহুকেলে, বহুযুগ আগেকার, বার্ধক্যগ্রস্ত, বিগতকালের, মান্ধাতার আমলের, সাবেক, সাবেকী, সেকেলে, স্মরণাতীত, স্মরণাতীত কালের, ইত্যাদি।
=================================================================
আরো দেখুন -
হেরিটেজ ট্যুর ২৫ : আড়াইহাজার - সোনারগাঁও
হেরিটেজ ট্যুর ২৬ : মানিকগঞ্জ - নাগরপুর
হেরিটেজ ট্যুর ২৮ : চাঁদপুর
হেরিটেজ ট্যুর ২৯ : নরসিংদী - কিশোরগঞ্জ
হেরিটেজ ট্যুর ৩১ : নরসিংদী - গাজীপুর
হেরিটেজ ট্যুর ৬৫ : নারায়ণগঞ্জ - মুন্সিগঞ্জ
=================================================================
মসজিদ দর্শন : ০১ : মহজমপুর শাহী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০২ : ষাট গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৩ : বিবি বেগনী মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৪ : চুনাখোলা মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৫ : নয় গম্বুজ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৬ : জিন্দা পীর মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৭ : সিঙ্গাইর মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৮ : গোয়ালদি মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ০৯ : আবদুল হামিদ মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ১০ : পুরান বাজার জামে মসজিদ
মসজিদ দর্শন : ১১ : হাজীগঞ্জ বড় মসজিদ
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ১ম পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ২য় পর্ব
আমার দেখা প্রচীন মসজিদ – ৩য় পর্ব
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০১
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০২
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৩
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৪
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৫
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৬
বাংলার জমিদার বাড়ি সমগ্র - ০৭
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০১
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০২
আমার দেখা প্রচীন মন্দির সমগ্র - ০৩
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০১
বাংলার প্রাচীন মঠ (স্মৃতি-মন্দির) সমগ্র - ০২
=================================================================