somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উইকিপিডিয়া: জনমানুষের বিশ্বকোষ (পর্ব ১)

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৭ রাত ১২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[জানুয়ারি ১৫, ২০০৭ তারিখে বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতির আয়োজিত !@@!474248 !@@!474249 !@@!474250-!@@!474251 !@@!474252 !@@!474253 !@@!474254 !@@!474255 !@@!474256] "উইকিপিডিয়াঃ জনমানুষের বিশ্বকোষ শিরোনামে বক্তব্য রেখেছিলাম। ঐ ভাষণটির অনুলিপি পর্যায়ক্রমে যোগ করছি। আজ এর প্রথম খন্ড পোস্ট করলাম

* ভূমিকা ও ধন্যবাদ

আসসালামু আলাইকুম। সুধীবৃন্দ, জহুরুল হক ও আব্দুল্লাহ আল মুতী শরফুদ্দীন বার্ষিক বিজ্ঞান বক্তৃতামালার ৩য় আয়োজনে আমাকে বক্তব্য রাখতে দেয়ার জন্য শুরুতেই ধন্যবাদ জানাচ্ছি বাংলাদেশ বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ সমিতিকে। সেই সাথে এই অনুষ্ঠানে আসার জন্যও আপনাদেরকে জানাচ্ছি অশেষ ধন্যবাদ।

আমি পেশায় ও নেশায় একজন কম্পিউটার প্রযুক্তিবিদ। তাই আমার বক্তব্যের মধ্যে এসে যায় কম্পিউটার ও কারিগরি সব কথামালা। কিন্তু আজ আমি প্রযুক্তির খটোমটো বিষয় নয়, বরং আমাদের জীবনের তাগিদে, আমাদের মনের তাগিদে এই প্রযুক্তির যথার্থ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করবো। আজকে আমার বক্তৃতার বিষয় হলো, জনমানুষের বিশ্বকোষ উইকিপিডিয়াকে নিয়ে।


* জীবনের জন্য বিজ্ঞানচর্চা

অনেক দিন আগে প্রফেসর মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখায় একটা কথা আমার খুব ভালো লেগেছিলো। হুবুহু মনে নেই, তবে তার মোদ্দা কথা হলো, যে বিজ্ঞান জীবনের কাছাকাছি, সেটাই প্রকৃত বিজ্ঞান। যে বিজ্ঞান আমাদের জীবনের তাগিদে, জীবনের সুখ দুঃখ, আশা আকাংক্ষা, ইতিহাস, ঐতিহ্যের প্রয়োজন মেটায়, সেটাই যথার্থ বিজ্ঞান।

আজকের বিশ্বটা তথ্যপ্রযুক্তির জোয়ারে ভাসছে। ইমেইল, ইন্টারনেট, এসএমএস, ৪র্থ প্রজন্মের মোবাইল ফোন ু এসব প্রযুক্তি আজ পৌছে গেছে সারা বিশ্বের দুয়ারে দুয়ারে। বাঁধ ভাঙ্গা জোয়ারের মতই আমাদের জীবনের প্রতিটি অংশে অংশে আমরা পাচ্ছি এসব প্রযুক্তির ছোঁয়া। কিন্তু এই সব প্রযুক্তির শুধু ভোক্তা না হয়ে জীবনের জন্য, আমাদের ইতিহাসের জন্য, আমাদের শতবছরের জ্ঞানের যথাযথ সংরক্ষণের জন্য এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে। আর এই তথ্যাবলী একসাথে করার কাজের জন্য আমাদের প্রয়োজন তথ্যের সমন্বিত সংকলন বা বিশ্বকোষ রচনা করা।


* তথ্য পাওয়ার সার্বজনীন অধিকার

জীবনে এগিয়ে যেতে হলে বিজ্ঞানচর্চার কোনোই বিকল্প নেই। কিন্তু এ জন্য চাই তথ্য, আর সেই তথ্যকে মুক্ত ভাবে লাভ করা ও ব্যবহার করার অধিকার। তথ্য লাভের অধিকার সার্বজনীন ও মৌলিক অধিকার। এটা সুনিশ্চিত করতে হলে আমাদের জীবন, শিক্ষা, বিজ্ঞান এ সব কিছুর সমন্বিত সংকলন সৃষ্টি করতে হবে, আর তাতে সবার সর্বাত্মক প্রবেশাধিকার সুনিশ্চিত করতে হবে।

* বিশ্বকোষের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

জ্ঞান-বিজ্ঞানকে একসাথে জড়ো করে রাখার প্রচেষ্টা কিন্তু আজকের নয়। সেই হাজার বছর আগে থেকেই জ্ঞানী বিজ্ঞানীরা এভাবে লিখে আসছেন বিশ্বকোষ। আজ থেকে প্রায় দুই হাজারেরও বেশি বছর আগে অ্যারিস্টোটল লিখেছিলেন বিশ্বকোষ। তাঁর পর ইতিহাসবিদ প্লিনি লিখেন ৩৭ খন্ডে এক বিশাল বিশ্বকোষ। ৯ম শতকে এরকম একটি বিশ্বকোষ তৈরীর কাজ করেন চীনা পন্ডিতরা। মুসলিম বিজ্ঞানী আবু বকর আল রাযী লিখেন বিজ্ঞানের বিশ্বকোষ। ইবনে সিনা লিখেছেন চিকিৎসার বিশ্বকোষ। অষ্টাদশ শতকে ফরাসি দার্শনিকেরা ২৯ বছর চেষ্টা করে লিখেন একটি বিশ্বকোষ। তার জবাবে ১৭৬৮ সালে স্কটল্যান্ডে অনেক জন বিশেষজ্ঞের প্রচেষ্টায় ব্রিটেনে তৈরী হয় এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকার প্রথম সংস্করণ, ৩ খন্ডে।

বাংলা ভাষায় প্রথম বিশ্বকোষ রচনা করা হয় সেই উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে, নরেন্দ্রনাথ বসুর হাতে। বিংশ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলাদেশের এশিয়াটিক সোসাইটির উদ্যোগে ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরী হয় বাংলা ভাষার বিশ্বকোষ বাংলাপিডিয়া, যা মূলত বাংলাদেশ ও অখন্ড বাংলার উপরেই জোর দিয়েছে। তবে এতে বিশ্বের অন্যান্য অংশের সম্পর্কে এবং বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার তথ্য নেই। তাই বর্তমানে বাংলায় পূর্ণাঙ্গ একটি তথ্যভান্ডারের বড়ই অভাব। আমাদের দেশের মানুষের পক্ষে লাখ টাকার বিদেশী বিশ্বকোষ কেনাটা সম্ভব না। আর ইংরেজিতে লেখা নিবন্ধ পড়ে অনুধাবন করাটাও আপামর মানুষের জন্য খুব সহজ না। জনমানুষের কাছে সারা বিশ্বের সব জ্ঞান ও তথ্য পৌছে দিতে হলে আমাদের দরকার আধুনিক প্রযুক্তির সর্বাত্মক ব্যবহার, আর তা করতে হবে মাতৃভাষাতেই।

এ তো গেলো বিশ্বকোষের ইতিকথা। এবার দেখা যাক তথ্য প্রযুক্তি কিভাবে এতে সাহায্য করতে পারে।

[চলবে]
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×