শুভ দুপুর। মাঝে মাঝে অদ্ভুত কিছু ভাবনা মাথায় আসে। এই যেমন এখন লুইস আর্মস্ট্রং - এর হোয়াট হোয়াট এ ওয়ান্ডারফুল ওয়ার্ল্ড শুনছিলাম হঠাৎ প্রশ্ন এলো মনে, মানুষ হ্যাপি হয় কি করে? হ্যাপিনেস কেন চিরস্থায়ী নয়?
আমরা কি 'হ্যাপিনেস' শব্দটিকে এমনভাবে প্রমোট করছি, যাতে আমাদের অধিকাংশের মনে হয় বিইং হ্যাপিই আমাদের আল্টিমেট গোল? মানবজীবনের চিরস্থায়ী অনুভূতি হিসেবে সজ্ঞানে অজ্ঞানে আমরা হ্যাপি হতে চাই। আনন্দ চাই। প্রশান্তি চাই। হ্যাপিনেসের গ্লোবাল মার্কেটিং-এর আলোতে আমরা ভুলে গেছি, আমাদের সংবেদনশীল মন কখনই একই রকম আবেগ অনুভূতি ধরে রাখতে পারে না, তা তার জন্য আমরা যতোই প্রচেষ্টা করি না কেন। কাজেই পারিপার্শ্বিকের সাপেক্ষে ভালো খারাপ অনুভূতি ক্রমান্বয়ে আসবেই। যদি মানুষ ভালো অনুভূতির জন্যই সবসময় ক্ষুধার্ত থাকে তাহলে সে খারাপকে অস্বীকার করার চেষ্টা করবে। আমরা এমনই তো করছি। অথচ এই খারাপ অনুভূতি আমারই অংশ। আমাদেরই অংশ। নিজের চারপাশে ভালোর দেয়াল গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় আমাদের মন পড়ে থাকে জীবনের অর্ধেক অংশে, ভালো অনুভূতির অংশে। এত গতি, এত আয়োজন, এত লড়াইয়ের পেছনেও নিজেদের কমফোর্ট জোনে রাখার নিরন্তর চেষ্টাটাই মূল ফ্যাক্টর।
যদি আমরা বুঝি হ্যাপিনেস আসলে অনুভব করার নয়, কারণ চিরদিন তো পরের ব্যাপার, একই দিনেই ভিন্ন সময়ে আপনি আমি এই প্রশান্তি অনুভব করতে পারবো না। তাহলে কেমন হয় ব্যাপারটা? ভালো-মন্দ অনুভূতিগুলো আলাদা না করে একসাথে রাখলে কেমন হয়?
কেমন হয় কোন অনুভূতিতে এনগেজড না হলে? যেমন আপনি আপনার মানসিক অবস্থা সম্বন্ধে ধারনা রাখেন কিন্তু যেহেতু সেটা স্থায়ী নয় তাই সেই মানসিক অবস্থার পেছনের অনুভূতিকে নিজের জীবনে নিয়ন্ত্রণ করতে দেন না, এমন হলে কেমন হয়?
যদি আনন্দিত না হয়ে আনন্দের মুহূর্ত অবলোকন করা যায়, ব্যথিত না হয়ে দুঃখের মুহূর্ত অবলোকন করা যায়, সেটাকেই তো প্রকৃত হ্যাপিনেস বলা যায় , তাই না?