somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-আউটল হিরো (কত অজানা রে পার্ট-১৭)

২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আউটল। ওয়েষ্টার্ন মুভি, বই এর প্রধান চরিত্র। ডিচিও !!! ঢিচিও !!! ঢিচিও !!! আজ পড়েন কিছু লোকাল হিরোর কথা যাদের সাথে আইনের সম্পর্ক ছিল সাপে-নেওলে। .......

১) Phoolan Devi--


ফুলন দেবীকে নিয়ে মুভীর কাভার ফটো।

দস্যু রাণী হিসাবে পরিচিত ফুলন দেবী ১৯৬৩ সালে একটি দরিদ্র নিম্ন জাত হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করে উত্তর ভারতে। ১১ বয়সে তার বিয়ে হয় তার বয়সের তিন গুন বেশী বয়সী এক লোকের সাথে, কিন্তু তার বিয়ে ভেঙ্গে যায় এবং সে তার স্বামী এবং তার পরিবার পরিত্যক্ত হয়। ২০ বছর বয়সে সে অনেক যৌন নিপীড়নের শিকার হয় এবং অপরাধের জীবন বেছে নেয়।


ফুলন দেবীর ছবি।

১৯৭৯ সালে তাকে বিহমাই জায়গার, একটি অস্পষ্ট ঠাকুর গ্রামে কারারুদ্ধ করা হয়। দুই সপ্তাহের জন্য প্রতি রাতে, ঠাকুরদের একটি গ্রুপ ফুলনকে, অধিকাংশ সময় গনধর্ষন করতো তার চেতনা লোপ না হওয়া পর্যন্ত। তিন সপ্তাহ পর তিনি পালিয়ে যেতে সমর্থ হয় এবং একটি দস্যু দল গঠন করে।


ফুলন দেবীর গ্যাং (ছবিটি ফুলন দেবীর সে সময়ের ভিতর রেয়ার একটা ছবি)

প্রায় দুই বছর পরে, তিনি বিহমাই গ্রামে ডাকাতি করতে আসে, সে সময় সে সেখানে দুইজন ঠাকুরকে চিনতে পারে যারা তাকে ধর্ষন করেছিল। ফুলন গ্রামবাসীর কাছে বাকি ঠাকুরদের কথা জানতে চায় যারা তাকে রেপ করেছিল, যখন গ্রামবাসীরা গ্যাং নেতাদের হদিস প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়, তখন ফুলন গ্রামের সব পুরুষকে এক লাইনে দাড়া করিয়ে গুলি করা শুরু করে। ৩০ জনের ২২ জন তখন তখনই মারা যায় যা "সেন্ট ভ্যালেন্টাইন গণহত্যার" নামে পরিচিত, ভারতীয় ইতিহাসে দস্যুদের দ্বারা বৃহত্তম গণহত্যার হিসাবে বিবেচিত হয় এটি।

পরে পুলিশ তাকে ধরার জন্য বিশাল একটি সৈন্য বাহিনী ও হেলিকপ্টার পাঠায় কিন্তু ফুলন দেবী এর ইতিমধ্যে দরিদ্র মধ্যে খ্যাতি লাভ করে, এবং পুলিশ বাহিনী খালি হাতে ফিরে যায়। তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে ১৯৮৩ সালে ভগ্নস্বাস্থ্যের জন্য আত্মসমর্পন করে তখন তার গ্যাং সদস্যদের অধিকাংশই মারা গিয়েছিল। তিনি জেলখানায় ১১ বছর সাজা কাটেন এবং জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ভারতীয় সংসদে নির্বাচিত সদস্য হন। ভারতে পদদলিত ও পিছিয়ে পরা মানুষের রক্ষক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ফুলন দেবী এর অপরাধমূলক রেকর্ড এবং পরবর্তী পুনর্বাসন নিয়ে ভারতে একটি সফল ফিল্ম তৈরি হয়।

২৫শে জুলাই ২০০১ তারিখে তার নয়া দিল্লি বসবাসের গেটের সামনে গাড়ি থেকে বের হবার সময় ফুলন দেবী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। শের সিং রানা, হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে বলেন, তিনি বিহমাই ২২ ঠাকুরের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিয়েছে।

[অন্য দের কথা জানি না, তবে আমি ধর্ষকদের এমন সাজাকে সমর্থন করি। দে মাষ্ট শুট টু কিল। নো মার্সি ফর দিস খা.পো.]

২) Pancho Villa--


পানচো ভিলা।


এইটা ভিলার ছেলের ছবি।

পেনচো ভিলা (১৮৭৮-১৯২৩) ছিলেন একজন মেক্সিকান বিপ্লবী নেতা যিনি দরিদ্র কৃষকের অধিকার ও কৃষি সংস্কার চেয়েছিলেন। যদিও তিনি একজন হত্যাকারী ও দস্যু ছিলেন, কিন্তু একটি বিপ্লবী নেতা হিসাবে বহু লোক নায়ক হিসেবে তাকে মনে রেখেছে। তার মৃত্যুর ২০ বছর পর তাকে মেক্সিকোর "the 'panteón' of national heroes" গননা করা হয়। তাকে আজও মেক্সিকানরা এবং বিশ্বের অনেক মানুষ তাকে সম্মানের সাথে মনে করে।


ব্রোন্জের তৈরি ভিলার মনুমেন্ট।

পেনচো ভিলা একজন বরগা চাষির ঘরে জন্ম গ্রহন করেন সান জুয়ান ডেল রিও, ডুরাংগো তে। ভিলা অল্পবয়সেই চাষী জীবনের রুঢ় অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়। তার বয়স যখন ১৫, তখন তার বাবা মারা যান, পরিবারকে সহায়তা জন্য তিনি কাজ শুরু করেন। এক দিন তিনি ঘরে এসে তার ভূসম্পত্তির মালিককে তার ১২ বছর বয়সী বোনের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে দেখে। মাএ ১৬ বছর বয়সে, একটি পিস্তল হাতে নেন এবং ভূসম্পত্তি মালিক গুলি করে হত্যা করে তারপর পর্বতে পালিয়ে যায়, ১৮৯৪-১৯১০ পর্যন্ত সে আইন থেকে পালিয়ে থাকে থেকে।


নিউ মেক্সিকোর একটি শহর, ভিলা কি অবস্থা করছে।

১৮৯৬ সালে তিনি কিছু অন্যান্য দস্যুদের সাথে যোগদান করেন এবং শীঘ্রই তাদের নেতা হয়ে ওঠে। তার দস্যুদল গবাদি পশু চুরি করতো, টাকার গাড়িগুলো লুট করতো এবং ধনীদের বাসায় হানা দিত।


দল-বল নিয়ে ভিলা।

চুরি ধনীদের কাছ থেকে চুরি করে দরিদ্রদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়ায় অনেকেই তাকে আধুনিক রবিন হুড হিসাবে দেখে। তার ডাকাতির প্লান ও পালায়নের চাতুর্য অনেকের চোখে পরে, বিশেষত যারা তখন মেক্সিকোতে একটি বিপ্লবের পরিকল্পনা করছিল। তারা ভিলা এর এই দক্ষতা একটি গেরিলা যোদ্ধা হিসাবে যায়নি বিপ্লবের সময় ব্যবহারের চিন্তা করে। যেহেতু Porfirio Diaz, মেক্সিকো এর প্রেসিডেন্ট, দরিদ্র জন্য সমস্যার সৃষ্টি করেছিল এবং ফ্রান্সিসকো মাদেরো নিম্ন শ্রেণীর জন্য পরিবর্তনের অঙ্গীকার করেছিল, ভিলা মাদেরো এর সাথে যোগদান করে এবং বিপ্লবী সেনাবাহিনীর একজন লিডার হন।


ভিলা তার একটি হাইড আউটের সামনে।

যখন মাদেরো এর সামরিক কমান্ডার, Pascual Orozco, Madero বিরুদ্ধে পাল্টা বিদ্রোহের শুরু করে, ভিলা তার সৈন্যদল নিয়ে Madero সমর্থনে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পরে। যাইহোক, Huerta(সরকারি দলের লিডার) একটি উচ্চাভিলাষী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে ভিলাকে দেখতে পায় এবং তাকে মৃত্যুদন্ড দেয়। ভিলা একটি ঘোড়া চুরি করে পালানোর সময় ধরা পরে।


বিদ্রোহের সময় ভিলা কথা বলছে মিডিয়ার সাথে।

Villa একটি ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে অপেক্ষায় ছিল যখন রাষ্ট্রপতি Madero থেকে একটি টেলিগ্রাম আসে যাতে তার যাবৎজীবন আদেশ ছিল। যেখান থেকে পরে ভিলা পলান। Villa এর কারাবাস সময়, Gildardo Magaña Cerda নামের একজন লোক তাকে পড়তে ও লিখতে শেখায় যা পরে তাকে চিহুয়াহুয়া রাজ্যের প্রভিশনাল গভর্নর হিসাবে কাজ করতে সাহায্য করে।


এই সেই গাড়ি যাতে ভিলা গুপ্তহত্যা শিকার হয়ে প্রান হারান।

ভিলা বিপ্লবী জীবন থেকে ১৯২০ সালে অবসর নেয় কিন্তু ২০ শে জুলাই ১৯২৩ সালে তার গাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়।

৩) Lampião--


"ক্যাপ্টেন" Virgulino Ferreira da Silva ওরফে Lampião

Lampião (পর্তুগিজ ভাষায় "তেল ল্যাম্প") ছিল "ক্যাপ্টেন" Virgulino Ferreira da Silva, 'Cangaço' ব্যান্ডের (marauders এবং outlaws যিনি ১৯২০-১৯৩০ সালে উত্তর ব্রাজিলের ত্রাসের সৃষ্টি করেছিল) সবচেয়ে বিখ্যাত নেতার ডাক নাম।

ভীরগুলিনো ১৮৯৭ সালে Pernambuco রাষ্ট্রের উত্তর পূর্বে , ব্রাজিল সবচেয়ে অনুন্নত এলাকার জন্মগ্রহণ করেন। তার বাড়িতে পুলিশের রেইডের সময় তার পিতা হত্যা করা হয়। এটা ছিল পুলিশের ভুল যার জন্য পুলিশের দুঃখপ্রকাশ করা উচিৎ ছিল। ২৫ বছর বয়সে ভিরগুলিনো হয়ে ওঠে পুলিশ এবং সৈন্যদের হত্যাকারী। পরবর্তী ১৫ বছর পর্যন্ত সেজন্য তাকে ব্রাজিলিয় পত্রিকাতে শিরোনাম থেকে বেশি দুরে থাকতে হয়নি। তার দলে মেয়ে সদস্যও ছিল। এর ভিতর সবচেয়ে বিখ্যাত ছিল Maria Bonita (Pretty Mary) যে ভীরগুলিনোর সাথে আজীবন ছিল।

ভিরগুলিনো ছিল একটি জটিল এবং নিষ্ঠুর মানুষ। তিনি ছিলেন কিছুটা সাইকো টাইপের, যেখানেই সম্ভব ছিল সেখানেই তিনি তার ছবি প্রকাশ করতেন এবং বিভিন্ন পএ-পত্রিকায় সাক্ষাতকার দিতেন। তার ব্যান্ডে ৪০ জন দস্যু ছিল, কিন্তু তিনি ২০০ জনের সেনাদল বা স্পেশাল ফোর্সের বিরুদ্ধে পর্যন্ত যুদ্ধ করতে ভয় পেতেন না। পুলিশের প্রতি তার ঘৃনা ছিল অসীম। সে পুলিশ হত্যা শুধু করতো না, একটা ঘটনা এমন ছিল যে সে ও তার দলের ২০ জন দস্য মিলে এক পুলিশের বৌ কে গ্যাং-রেপ করে এবং সেই পুলিশকে তা দেখতে বাধ্য করে। এছাড়া পুলিশের দালাল দের চোখ সে চাকু দিয়ে খুচিয়ে তুলে ফেলতো আর মেয়ে হলে জিভ কেটে ফেলতো।


তার নামে ওয়ান্টেড বাউন্টি।

দস্যু হিসাবে তার ক্যারিয়ার শেষ হয় যখন একজন লোকাল সাপোর্টার তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। এই বিশ্বাসঘাতক পুলিশের কাছে বলে দেয় তার কোথায় আছে। ১৯৩৮ সালের এক সকালে জন সশস্ত্র সৈন্য মেশিনগান সঙ্গে তার ঢেরায় আতর্কিত আক্রমন করে। ভীরগুলিনো এবং মারিয়া নিহত হয়। ভীরগুলিনো যে সত্যিই মারা গেছে এ খবর বিশ্বাস করানোর জন্য সৈন্যরা ভীরগুলিনো ও তার দলের লোকদের মাথা কেটে নিয়ে যায়, প্রায় ৩০ বছর সে মাথাগুলো প্রদর্শনের জন্য রাখাছিল।


ভীরগুলিনো ও তার হুডের অন্যদের কাটা মাথা, এভাবেই ডিসপ্লে করে দেখানো হয়েছে প্রায় ৪০ বছর।

কিছু কিছু মানুষের জন্য, ভীরগুলিনো ছিল ব্রাজিল এর রবিন হুড, পার্থক্য হল, রবিন হুড ৯০ বছরের রোগশয্যাশায়ী মহিলারা সর্বস্ব চুরি করে তার কর্মজীবনের শুরু করেনি।

৪) Billy the Kid


লিজেন্ডারি বিলি দা কিড।

হেনরি মেকারটি (১৮৫৯-১৮৮১), "বিলি দি কিড" হিসাবে পরিচিত, ছিলেন একজন ১৯ শতকের আমেরিকান সীমান্ত ডাকু এবং বন্দুকবাজ(গানম্যান) তথাকথিত "লিঙ্কন কাউন্টি যুদ্ধে" অংশ গ্রহকারী। কিংবদন্তী অনুসারে, তিনি ২১ জনকে হত্যা করেছে, তার জীবনের প্রতিটি বছরের জন্য একটি করে হত্যা, কিন্তু তিনি সম্ভবত অর্ধেক হত্যাকান্ডের সাথে জরিত ছিল।


গানফাইটে বিলি তাকে এইখানে পাঠিয়েছিল।

যদিও সত্য এবং মিথ প্রায়ই আলাদা করা কঠিন, মনে হয় বিলি কিড ছিল দক্ষিন-পশ্চিম মরুভূমির মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত গানফাইটার। মাত্র ৪ বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ইতিহাস রেকর্ড , তিনি বন্দুকযুদ্ধে অন্তত ১৬ জনকে শুটআউট করে, এর মধ্যে, নিজে অন্তত ৪ জনকে সরাসরি গানফাইটে হত্যা করে এবং অন্তত জনকে হত্যা করতে সাহায্য করে।

তিনি যখন সিলভার সিটিতে, সদ্য যুবক হেনরিকে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করে, কিন্তু জেল থেকে পলিয়ে দক্ষিণ-উত্তর মেক্সিকোর মরুভূমিতে বিচরণ শুরু করে। অ্যারিজোনায় তিনি ঘোড়া চুরি করতো এবং ১৭ আগস্ট, ১৮৭৭ সালে, মাএ আঠারো বছর বয়সে গানফাইটে তার প্রথম ব্যক্তি হত্যা করে, জায়গাটি ছিল "ক্যাম্প গ্রান্ট সেলুন"।

বিলি অ্যারিজোনায় ফেরার হয় যখন হত্যাকান্ডের জন্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ওখান থেকে পালিয়ে অবশেষে সে নিউ মেক্সিকোর লিঙ্কন কাউন্টিতে আসে যেখানে তিনি বিলি Bonney, একজন তরুণ ঘোড়া চোর যে অনর্গল স্প্যানিশ বলতে পারে ও মেক্সিকান মহিলাদের মধ্যে জনপ্রিয় হিসাবে পরিচয় পায়।

McCarty (অথবা Bonney) ছিল নীল চোখ, গুডলুক ও পেটা শরীর এবং অনেকে বলতো সে " বিড়ালের মত চটপটে"। মেক্সিকান মেয়ে মহলে তার পরিচয় ছিল, "ফিটফাট পোষাক পরা ভদ্রলোক" হিসাবে। সঙ্গে সঙ্গে তার আগ্নেয়াস্ত্রে সুপ্রসিদ্ধ ও অনন্য দক্ষতা তাকে খুনে আউটল পরিচয়ের চেয়ে লোকাল হিরো হিসাবে খ্যাতি এনে দেয়।


Sheriff Pat Garrett, তিনি বিলিকে গানফাইটে হত্যা করেন।

তার জীবনের অনেক অধ্যায় এখনো অজানা, অনেক সময় অনেক লেখকরাই তার জীবনীতে(বায়োগ্রাফি) পরিবর্তন এনেছে। শেরিফ প্যাট্রিক গেরেট গানফাইটে মাএ ২২ বছরের এই আউটল লোকাল হিরোকে হ্ত্যা করে।


বিলির গ্রেভস্টোন।


বিলির গ্রেভস্টোন।


Old Fort Sumner Cemetery এখানে বিলি ঘুমিয়ে আছে।

(বিলি দা কিড কে নিয়ে একটা মুভি মনে হয় আমি দেখেছি, লিওনার্দো ডি ক্যাপরিও ছিল বিলি আর হ্যারিসন ফোর্ড ছিল সেরিফ পেট গ্যারেট, মুভির নামটা মনে নাই)

৫) Salvatore Giuliano--


দেখে তো নায়কের মতই ছিল, কি বলেন? টাইম ম্যাগাজিনের ফ্রন্ট পেইজে আসতেই পারে।

সালভাতোরে গিইউলিয়ানো (১৯২২-১৯৫০) ছিল সত্যিকার অর্থেই একজন রবিন হুড। সে ধনীদের সম্পদ লুট করে লোকাল গরীব কৃষকদের মধ্যে বিলিয়ে দিত। তার পারিপার্শিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তাকে দস্যু হতে বাধ্য করে কিন্তু তার কর্মপন্থা তাকে আর জীবনদশায় এবং জীবনাবসানের পরও লিজেন্ডে পরিনত করে।

সালভাতোরে সিসিলিয়ান ইনডিপেনডেন্টিস্ট আন্দোলনের" একজন সক্রিয় সদস্য হিসাবে ইতালীয় সরকার থেকে তার দ্বীপের স্বাধীনতা অর্জনের চেষ্টা করে। তার গল্প ও কাজ তাকে সকলের আকর্ষনের কেন্দবিন্দুতে এনে দেয় এবং তার সুদর্শন চেহারা ও ব্যাক্তিত্ব তাকে টাইম ম্যাগাজিনের ফ্রন্ট পেইজে তুলে আনে, বিশ্বব্যাপী মিডিয়ার মনোযোগ এনে দেয়।


পেপার কাটিং, সে সময়ের বিভিন্ন পত্রিকার।

তিনি ১৬ই নভেম্বর ১৯২২ সালে পশ্চিম সিসিলির পাহাড়ী গ্রাম "Montelepre" তে যার অর্থ "The Mountain of the hare" এ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একটি সিসিলিয়ান পর্বতের দস্যু পরিবারের দীর্ঘ বংশপরমপরার শেষ এবং "সম্মানিত" পুরুষ। পাহাড়ি দস্যুদের সাথে শহুরে মাফিয়াদের কোন লেনা-দেনা ছিল না। তাদের ছিল আলাদা কোড অফ অনার ও নিয়ম-কানুন। তারা সত্যিই ছিল দরিদ্র মানুষের বন্ধু এবং তারা ধনীদের কাছ থেকে লুট করে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিত। সময় পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু আজও আপনি পর্বতের প্রায় সব গ্রামে বয়স্ক মানুষেরা এখনও তার প্রশংসায় রচিত হওয়া গান গায়, শ্রদ্ধার সাথে মনে করে।

কথা ছিল সালভাতোরে প্রাথমিক স্কুল শেষ করে ঘরের কাজে (মানে দস্যুগিরি) যোগ দেওয়ার। কিন্তু তিনি পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চান এবং স্থানীয় ফাদার ও স্থানীয় স্কুলের শিক্ষকরা তার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সাহায্য করে। তিনি পড়াশুনায় ছিলেন অনেক ভাল এবং খুব পড়ুয়া একজন ব্যক্তি যে পড়াশুনাটাও করতেন তার পড়াশুনা দিয়ে তার লোকদের সাহায্য করতে। তার দস্যু হওয়াটাও ছিল সময়ের ফেরে পরে হওয়া, অন্যদের মত।

তার পিতার মৃত্যুর পর তার জ্যেষ্ঠ পুএের উপর দায়িত্ব পরে পরিবারের ভরোন-পোষনের কিন্তু তাকে যুদ্ধে যেতে হয়। ফলে সালভাতোরে-এর উপর দায়িত্ব এসে পরে সংসার চালানোর। মাএ ২০ বছর বয়সে তাকে এই দায়িত্ব কাধে নিতে হয়।

তিনি দস্যুবৃত্তিতে নতুন ছিলেন ফলে সে এমন একটা চৌকিতে ডাকাতি করতে যায় যা পাহাড়া দিতেছিল দুই জন ওয়ারডেন ও দুইজন গ্রাম্য পুলিশ। অনভিগ্য সালভাতোরে ৪০ কেজি ওজনের দুই বস্তা গম নিয়ে পালাতে শুরু করে। ফলাফল পুলিশ তার পিছনে লাগে তাকে ধরে আমেরিকান গ্যারিসনে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তরুন সালভাতোরে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন তখন পুলিশরা ছয়বার গুলি করে যার দুটি তার পশ্চাতদেশে লাগে। সে পাল্টা গুলি করে যার ফলে একজন পুলিশ অফিসার মারা যায়। বন্দুকটি তিনি তার বুটে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তার স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়ার পর সে পাহাড়ি এলাকায় আশ্রয় নেয়।


Mural of the Portella della Ginestra massacre। ১লা মে।

এই ভাবেই সালভাতোরে শেষ পর্যন্ত হয়ে উঠে পাহাড়ের দস্যু। তিনি রাজনীতিতে ছিলেন কমিউনিস্ট বিরোধী, বিরোধী দলের সদস্য এবং সিসিলির বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের নেতাদের একজন। তার হত্যাকান্ড নিয়ে অনেক গুলো তথ্য আছে। তাকে তার ঘুমের মধ্যে হত্যা করা হয়েছিল বলে মনে করা হয়। আবার তার সহচর ও তার ডান হাত হিসাবে পরিচিত Gaspare Pisciotta কেও তার হত্যাকারী হিসাবে দায়ী করা হয়, যে কিনা সালভাতোরেকে বিষ প্রয়োগ করেছিল বলে দরা হয়। অন্য একটি সুএ বলে যে তাকে পালেরমোর মাফিয়া ডনের আদেশে তারই কাজিন হত্যা করে।


তাকে হত্যার পর পত্রিকায় সেই খবর, তার মা কাঁদছে।

এও মনে করা হয় যে সালভাতোরে বেচে আছে, সে নাকি সিসিলি থেকে পালিয়ে টুনিসে আসে সেখান থেকে আমেরিকায় চলে যায় এবং সেখানেই বসবাস করে।

মারিও পুজোর যে "দা সিসিলিয়ান" বইটা কে কে পড়ছেন ??? মিল খুজে পাচ্ছেন কি ?? জি হা, সালভাতোরে চরিএের ছায়া অবলম্বনেই মারিও পুজো এই বইটি লিখেন।

৬) Ishikawa Goemon


১৮৬৩ সালে 'টুয়োকুনি' নামের একজন আর্টিষ্টের আঁকা গোইমনের প্রোট্রেট।
Goemon, যার পুরো নাম হল Ishikawa Goemon (১৫৫৮-১৫৯৪) ছিল একটি জাপানিজ লিজেন্ডারি নিনজা দস্যু যে ধনীদের সোনা ও মূল্যবান সম্পত্তি চুরি করে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিত। তার সম্বন্ধে খুবই সামান্য ঐতিহাসিক তথ্য আছে। কিন্তু এইভাবে একজন লোকাল হিরো হিসাবেই তার চরিএ রচিত হয়েছে।


Toyotomi-কে হত্যার জন্য যাচ্ছে গোইমন।

তিনি "Toyotomi Hideyoshi" (সে একজন জাপানিজ ওয়ার-লড ছিল) উপর একটি ব্যর্থ হত্যা প্রচেষ্টা পরে তাকে জীবিত সেদ্ধ করে হত্যা করা হয়। একটা বড় লোহার কেতলি-আকৃতির বাথটাবে যাকে এখন বলা হয় 'Goemon-buro (Goemon-স্নান)।


Goemon-buro (Goemon-স্নান) জাপানের একধরনের বাথটাব।

গল্পের এক সংস্করণে বলা হয় , Goemon, Hideyoshi কে হত্যা করতে যায় তার স্ত্রীর হত্যার প্রতিশোধ নিতে ও তার আটক পুত্র, Gobei কে মুক্ত করার জন্য। তিনি Hideyoshi এর রুমে প্রবেশ করেন কিন্তু একটা টেবিল থেকে একটি পাএ পরে যায় এবং শব্দে জাপানী সামুরাই সৈন্যরা জেগে উঠে এবং তিনি বন্দী হযন।


জ্বলন্ত আগুন, তার উপর কড়াই, তার ভিতর গোইমন তার সন্তানকে উচু করে ধরে আছে। এভাবেই ধরে ছিল মরে যাবার আগে পর্যন্ত। সন্তানের জন্য এরও বেশী কিছু কি করা সম্ভব, বলেন ??? :(( :(( :((

তিনি একটি লোহার কড়াই এ জীবিত সেদ্ধ করে হত্যার আদেশ দেয় Hideyoshi। তাকে the Nanzenji Temple, Kyôto এর প্রধান গেটের সামনে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়। তাঁর অল্পবয়স্ক পুত্রকেও একই সাথে গরম পানিতে ছুরে দেওয়া হয়। শোনা যায়, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি তার পুএকে গরম পানি থেকে উপরে তুলে ধরে ছিলেন।

৭) Dick Turpin--


এমনি এমনি কি আর তাকে হাইওয়ে ম্যান বলা হতো।


ব্যাপটাইজড হবার কপি।

একটি কুখ্যাত ইংরেজি শঠ, রিচার্ড টুরপিন (১৭০৫-১৭৩৯) হয়তো ব্রিটেন এর সর্বশ্রেষ্ঠ বাটপাড় যে চোরাশিকার, অপহরণ, গবাদি পশু চুরি, ঘোড়া চুরি, ডাকাতি এবং হত্যা জড়িত ছিল। তার মৃত্যুর পর, তিনি "ডিক" Turpin হিসাবে কিংবদন্তির বিষয়ে পরিনত হয়।, ১৮ও১৯ শতাব্দীতে ইংরেজ আউটলদের ভিতর সে ছিল সবচেয়ে বীরত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয়। ২০শতকের ফিল্ম এবং টেলিভিশনে তার ইতিহাস এবং কিংবদন্তী বারবার ফিরে এসেছে।

তিনি এসেক্স কাউন্টিতে ১৭০৬ সালে একটি কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন কষাই হিসাবে তিনি কর্ম জীবন শুরু করে এবং অতি শিঘ্রই একটি কসাইখানা খুলে ফেলে।
কিন্তু বৈধ সরবরাহকারী উপর নির্ভরশীল টুরপিন অল্প কামাই এ সন্তুষ্ট ছিল না, ফলে সে ভেড়া এবং গবাদি পশু চুরি তে জড়িয়ে পরে। এটি তখনকার সময়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত একটি অপরাধ ছিল। শীঘ্রই তিনি ছিল দুই oxen চুরি করে ফেরার হন এবং এলাকা থেকে স্ত্রী ও ব্যবসা ফেলে পালিয়ে যান।


ওয়াগনে ডাকাতি।


টুরপিনের আকাম-কুকাম। ছিনতাই।

কাহিনী বড় করলে বই হয়ে যাবে। যাই হোক, ইয়র্কের Epping Forest-এ তার দস্যুবৃত্তি শুরু করে। সে সেখানে ধর্ষনে এমন নাম করে যে ওখানকার মেয়েরা তার নাম শুনলেই ভয়ে মূর্ছা যেত। সেখানে সে Thomas Morris নামের একজন ল'ম্যান কে হত্যা করে। যার ফলে ১৭৩৭ সালে তার নামে সে সময়ের ১০০ পাউন্ডের বাউন্টি বের হয়।


টমাস হেলহাম, ডিক টুরপিনের নতুন নাম।

কিছু দিন পর সে পালিয়ে Essex-এ চলে আসে এবং সম্মানিত ঘোড়া ব্যবসায়ী হিসাবে বসবাস শুরু করে। তার এই কাভার লাইফ ফাঁস হয়ে যায় যখন তাকে একজন সম্ভাব্য ঘোড়া চোর হিসাবে সন্দেহ করা হয় এবং তার ভাই কে সাহায্যর জন্য টুরপিনের একটি চিঠি এটাচ করে টেলিগ্রাম করা হয়। কিন্তু তার ভাই এতো গরিব ছিল যে সে টেলিগ্রামের বিল দিতে ব্যর্থ হয়। ফলে টেলিগ্রামটি Essex-এ ফেরত আসে। Essex-এর পোষ্টঅফিসে কাজ করতো টুরপিনের ফ্রেন্ড, যে টুরপিনের হাতের লেখা চিনতে পারে। সে চুপি চুপি ইয়র্কে যায়, টুরপিনের ঠিকানা বলে দেয় ও বাউন্টির রিওয়ার্ড পকেটে ভরে সেখান থেকে কেটে পরে।


মার্ডার অফ টমাস মরিস।


রিচার্ড টুরপিনের ট্রায়াল কপি।


ইয়ার্কের ফাঁসিকাষ্ট।

১৭৩৯ সালের এপ্রিল মাসে তাকে একটি ওয়াগনে করে ইয়ার্কে আনা হয়। সে তখন ওয়াগনের জানালা থেকে বাউ করে ও হাত নেরে নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষন করে। সে তার মৃত্যু দিনটিকে স্মরনীয় করে রাখে যখন সে কাঠগরায় দাড়িয়ে ৩০ মিনিটের একটি বিদায়ী ভাষন দেয়। তার পর সে ফাঁসির দড়ি গলায় লাগায় ও কাঠগড়া থেকে লাফ দেয়। ৫ মিনিট পর তার মৃত্যু হয়।


টুরপিনের গ্রেভস্টোন।

তার শেষ এই ভয়হীন কাজ টি তাকে মৃত্যুর পর লিজেন্ডে পরিনত করে। সে অন্যান্য আউটলদের মতই বাজে, নোংরা ও কেয়ারলেস ছিল। কিন্তু সময় কেমন করে যেন তাকে ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত আউটলতে পরিনত করে, অবশ্যই তার কিছু কাজের জন্য মানুষ তাকে মন থেকে মুছে ফেলতে পারে না।


মৃত্যুর পর পেপারে তার বায়োগ্রাফি ছাপা হয়।


৮) Ned Kelly--


১৮৭৩ সালে একজন পুলিশ ফটোগ্রাফারের তোলা ছবি।

এডওয়ার্ড "নেড" কেলি (১৮৫৪-১৮৮০) ছিলেন একজন অস্ট্রেলিয়ান bushranger এবং একজন লোকাল হিরো যে ঔপনিবেশিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। কেলি ভিক্টোরিয়ার একজন আইরিশ আসামি বাবার ঔরসে জন্মগ্রহণ করেন। অল্প বয়সে তিনি পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন।


তিনজন পুলিশ যাদের নেড হত্যা করেছিল তাদের সম্মানে স্মৃতিস্তম্ভ।


অ্যারন সেট্টি হত্যাকান্ড, এর পর পুলিশ নেড এর পিছনে আঠার মত লাগে গ্রেফতারের জন্য।


নেড কেলি ওয়ান্টেড হ্যান্ডবিল।


আগুনে পুড়ে যাওয়া জেম্স হোটেল।

তার বাড়িতে ১৮৭৮ সালে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার পর তার পুলিশের বিপক্ষে ব্যক্তিগত যুদ্ধ শুরু হয় যা পরে উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলনে পরিনত হয়। তিনি তিন জন পুলিশ হত্যা করে, উপনিবেশ কর্তৃপক্ষ কেলি ও তার গ্যাংকে ওয়ান্টেড ঘোষনা করে। যা কেলিকে চূড়ান্ত ও হিংসাত্মক ভাবে পুলিশের বিপক্ষে দাড়া করিয়ে দেয়।


নেডের আর্মারের বিভিন্ন অংশ।


১৮৮০ সালে তোলা ছবি, নেড এর আর্মার পরেছিল একজন পুলিশ অফিসার।


নেড কেলি ও স্টিভ হার্টস এর আর্মার পুড়ে যাওয়া হোটেলের ছাই এর নিচ থেকে উদ্ধার করা, স্টেট লাইব্রেরী অফ ভিক্টরিয়া।


নেড এর আর্মার, স্টেট লাইব্রেরী অফ ভিক্টরিয়া তে প্রদর্শনির জন্য রাখা।

কেলি, বাড়ির তৈরি ধাতুর প্লেট বর্ম এবং হেলমেট পরা অবস্থায় আটক হয় এবং বন্দী করে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনি ওল্ড মেলবোর্ন বন্দিশালা হত্যাকান্ডের জন্য ১৮৮০ সালে ফাঁসি দেয়া হয়। সাহসী এবং কুখ্যাতি তাকে অস্ট্রেলিয়ান ইতিহাসে, চিত্রে, লোক কাহিনীতে, সাহিত্যে, শিল্পে এবং ফিল্মে জায়গা করে দেয়।


সার্জন্ট স্টিলি ও রেলওয়ে গার্ড যখন নেডকে পাকরাও করছে তার ড্রয়িং।


সার্জেন্ট স্টিলের ড্রয়িং, ইনি নেড কে গ্রেফতার করেছিল।


কাঠগড়ায় নেড।


ট্রায়াল চলছে।


নেড এর ডেথ মাস্ক।


মৃত্যুর আগে তোলা ছবি।


৯) Belle Starr--


স্টুডিও পোর্ট্রেট অফ বেলি স্টার , ১৮৮০ সালে।

সুন্দরী স্টার ছিল এক পশ্চিমের সবচেয়ে 'বন্য' নারীডাকু যে লাভের জন্য যেকোন কিছু করতে পারে। এই "দস্যু রানী" ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ১৮৪৮ সালে Myra Belle শার্লি মিসৌরিতে জন্মগ্রহণ করে। শিশু কালে, তার পরিবার টেক্সাসে চলে আসে। Myra তার টিনেজ বয়সেই আকাম-কুকামে জড়িয়ে পরে। তিনি শীঘ্রই 'ফ্রাঙ্ক' ও 'জেসি জেমস' নামের দস্যুর সঙ্গে পরিচিত হয়।

কয়েক বছর পর সে তার গ্যাং এর একজন সদস্য "Cole Younger" এর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে এবং তাদের একটি সন্তান হয়। সে এখন দস্যু সম্প্রদায়ের একজন প্রতিষ্ঠিত সদস্য। ইয়ঙ্গার এর সাথে সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবার পর তিনি "জিম রিড" নামের এক ঘোড়া চোর কে বিবাহ করে এবং তাদের একটা পুত্র ছিল। দস্যু জীবনে রিডের সাথে তার বেশি দিনের ছিল না কারন তিনি একটি গানফাইটে নিহত হয়েছিলেন । সুন্দরী বেলি স্টার তারপর ইন্ডিয়ানা অঞ্চল যান এবং যেখানে তিনি তার দ্বিতীয় বিয়ে করেন, স্যাম স্টার নামের একটি চেরোকি ইন্ডিয়ানা দুর্বৃত্তের সঙ্গে। দস্যু দম্পতি এবার নিজেদের একটি দস্যু দল গঠন করে এবং কানাডিয়ান নদীর আশে-পাশে তাদের আস্তানা গড়ে তুলে। তারা গবাদিপশু চুরি, ঘোড়া চুরি, ইন্ডিয়ানদের কাছে হুইস্কি বিক্রি করা শুরু করে। এইসব ক্রিয়াকলাপগুলি, প্রতিটি পদক্ষেপ পরিকল্পনা যিনি করতেন সে তখন Belle Starr হিসাবে এখন নামে পরিচিতি লাভ করেন।


স্যাম ও বেলি স্টারের ওযান্টেড হ্যান্ডবিল।

Sam এবং Belle র দস্যু জীবন ছিল খুব লাভজনক। তিনি তার অর্থ উদারভাবে ব্যবহার করতেন যখন কোন গ্যাং সদস্য ধরা পরতো তার মুক্তির জন্য। যদি সে ল'ম্যানকে টাকা দিয়ে বাগাতে না পারতো তাহলে সে তার নারীসুলভ সৌন্দর্য ব্যবহার করতো, গেস হোয়াট, সে কখনোই খালি হাতে ফিরতো না।

১৮৮২ সালে Belle প্রতিবেশীর ঘোড়া চুরি চেষ্টা করার সময় ধরা পরে। বিচারে তার ২৬ মাসের জেল হয় কিন্তু নয় মাস পর ভাল আচরণ জন্য তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জেলের জীবন তার উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে নি, মুক্তি লাভের পর সে তার আগের রাসলিং লাইফে ফিরে যায়। ১৮৮৬ সালে তিনি আবার বিধবা হন যখন স্যাম একটি পার্টিতে মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। একটুকু সময় নষ্ট না করে সে তারচেয়ে কম বয়সি এক দস্যুর সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। ১৮৮৯ সালে বেলি তার তৃতীয় বিবাহ করে যার নাম ছিল 'জিম জুলাই'। এই বিবাহটি তার মৃত্যুর কারন হয়ে দাড়ায়।

একবার বেলির সাথে ঝগড়া করে মাদপ্য জুলাই ঘোষনা দেয় যে যদি কেও তার বৌ কে হত্যা করে তাহলে সে ২০০ ডলার দিবে। যখন কেও এই অফার গ্রহন করলো না তখন সে চিৎকার করে বললো, “ Hell – I'll kill the old hag myself and spend the money for whiskey!”। এর কিছু দিন পর, একটি এম্বুসে Belle Starr গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় তখন তার বয়স ছিল ৪১ বছর।


স্টাচু অফ বেলি স্টার, ওলারক, ওকলাহমা।

-----------------------------------------------------
(শেষ)

সবাইকে শুভকামনা , আজ এ পর্যন্তই ...


আমার "কত অজানা রে" সিরিজ:


পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-আউটল হিরো (কত অজানা রে পার্ট-১৭)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ডাক্তার কিন্তু সিরিয়াল কিলার ??? (কত অজানা রে পার্ট-১৬)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দুনিয়ার সবচেয়ে দামী হীরা (কত অজানা রে পার্ট-১৫)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ইতিহাসের বীর যোদ্ধা জাতি (কত অজানা রে পার্ট-১৪)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-নিষ্ঠুরতম নারীরা যারা নাৎসি বাহিনীতে কাজ করতো (কত অজানা রে পার্ট-১৩)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ট্রেজার শিপ, গুপ্তধনের সন্ধান (কত অজানা রে পার্ট-১২)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-"পারফেক্ট" ক্রাইম (কত অজানা রে পার্ট-১১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ভুতুড়ে শহর (কত অজানা রে পার্ট-১০)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-জীবন্ত পাথর (পাথর কেটে বানানো বিশাল মূর্তি) (কত অজানা রে পার্ট-৯)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-এক্সট্রিম বডিবিল্ডার (কত অজানা রে পার্ট-৮)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয় - জিওলজিকাল বিশ্ময় (এর অনেক গুলো আজ প্রথম দেখবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৭)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-ক্রেজিয়েষ্ট ম্যানমেইড ফাউনটে (কত অজানা রে পার্ট-৬)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-দুবাই ওয়াল্ড (দেখলেও পস্তাইবেন না দেখলেও পস্তাইবেন) (কত অজানা রে পার্ট-৫)
(পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- জাপানের কিছু পুকুর যাকে তারা 'হেল' বা নরক বা জিগোকু বলে ( কত অজানা রে পার্ট-৪)
পৃথিবীর যত কিছু আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-প্রাকৃতিক গরম পানির লেক (কত অজানা রে পার্ট-৩)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-কম্পিউটার মাউস (কত অজানা রে পার্ট-২)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-উৎসব (কত অজানা রে পার্ট-১)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৪৭
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×