এখন ইউরোপের গড় তাপমাত্রা এত বেশী ( গড়ে ১০৪ ডিগ্রি ফারেন ) হয়েছে যে, ইতিমধ্যেই ইউরোপে দেড় হাজারের বেশী মানুষের মৃত্যু হয়েছে অস্ভাবাবিক গরমে; ইহাতে ফার্মিং ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, ঘরবাড়ী পুড়ছে, কাজকর্মে প্রোডাকটিভিটি কমছে; এই অবস্হা যদি আগামী ১০ বছর চলতে থাকে, ইউরোপের অর্থনীতিতে ইহার বিশাল প্রভাব পড়বে। ইউরোপ বিপদে পড়লে, জার্মানীই ছিলো ভরসার স্হল; কিন্তু জার্মানীতে এখন মার্কেল নেই, এবং জার্মানরাও গত ৩০ বছরে এবারই প্রথম অর্থনৈতিক অস্হিরতা অনুভব করছে।
আগে ধারণা করা হয়েছিলো যে, জলবায়ু পরিবর্তনে নীচু দেশগুলোর সমস্যা হবে বেশী: সাগরের পানির লেভেল উপরে উঠে, দেশের কিছু অংশ ডুবায়ে ফেলবে ও অনেক অংশ লবনাক্তের কারণে ভুগবে। এখন মনে হচ্ছে, ইহা থেকে কেহই রেহাই পাবে না: অধ্যধিক তাপমাত্রা, খরা, বন্যা ও শৈত্য বিশাল ফ্যাক্টর হয়ে যেতে পারে।
ইউরোপের আর্থিক অবস্হা ক্রমাগতভাবে নীচের দিকে যাচ্ছে; স্পেন, পর্তুগাল, গ্রীস ও পুর্ব ইউরোপের দেশগুলো কিছুতে স্বাবলম্বী হতে পারছে না। যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার ফলে পুর্ব ইউরোপ বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সময়ের সাথে জলবায়ুর সমস্যা প্রকট হয়ে উঠলে, ইউরোপকে নিজ এলাকা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হবে; তখন এশিয়ার দরিদ্র জাতিগুলোর ও আফ্রিকার পাশে দাঁড়ানোর জন্য কেহ থাকবে না; তদের নিজের পথ নিজদেরকে বের করতে হবে; কিন্তু তারা এই বিষয়ে অনেকটা অজ্ঞ এখনো; সমস্যা দেখা দিলে ধনীরা পালিয়ে ইউরোপ ও আমেরিকা চলে যাবে।
বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান জলবায়ু সমস্যাকে সামনে রেখে সহযোগীতামুলক কোন প্রোগ্রাম এখনো হাতে নেয়নি; সমাধান খোঁজার জন্য কোন টাস্কফোর্স গঠন করেনি। ভারত ও পাকিস্তান খুবই বড় দেশ, এরা নিজের সমস্যা নিজেরা সমাধান না করলে, এদেরকে সাহাযয় করা অনেকটা অসম্ভব হবে। শীঘ্রই ভারতে জনসংখ্যা চীনকে ছাড়িয়ে যাবে।
বিশ্ব একটি ব্যাপারে একমত যে, জলবায়ু সমস্যায় সবচেয়ে বেশী ভুগবে বাংলাদেশ: ইহা ঘনবসতির দেশ, আয়তন কমলে ও ভুমিতে লোনা পানি ঢুকলে, এদের দরিদ্র জনসংখ্যা শহরের দিকে পালাবে। তাপমাত্রা বাড়লে, এরা যতটুকু সহ্য করতে পারবে, শৈত্যের প্রাদুর্ভাব হলে, এই জাতি ইহার সাথে সহজে খাপ খাওয়াতে পারবে না। ইউরোপ যদি দুর্বল হয়ে যায়, বাংলাদেশও ইউরোপিয়ান সাহায্যও পাবে না।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুলাই, ২০২২ ভোর ৫:৫৫