ফরিদপুরের ১টি ছেলে নিউইয়র্কে ব্যাচেলর করার পর, নিউইয়র্কের একটি ছোট ইনভেষ্টমেন্ট কোম্পানীতে "ষ্টক ট্রেইডার" হিসেবে চাকুরী পেয়েছিলো; কোম্পানী তাকে H1 Visa করে দিয়েছিলো; সে ২ মাস ট্রেইডিং করে ৩ লাখ ডলার হারানোর পর, কোম্পানী তাকে বিদায় করে দেয়। H1 Visa টিকে রক্ষা করার জন্য ৬ মাসের ভেতর তার আরকটি প্রফেশানেল চাকুরী যোগাড় করার দরকার ছিলো; ৪ মাসে চলে গেছে, সে কিছুই পায়নি; এমন সময় সে সাহায্যের জন্য আমার কাছে আসে। তখন ট্রেইডিং'এ FIX Protocol জানলে, ১ সপ্তাহের মাঝে চাকুরী পাওয়া যেতো। আমি ব্যস্ত থাকার পরও তাকে সাহায্য করার শুরু করলাম। সে ৩/৪ মাসে শিখার বিষয়বস্তু ৩ সপ্তাহে শিখে নিয়ে চাকুরী খোঁজার শুরু করলো
তখন আমি ম্যানহাটনে একটি মাঝারী ধরণের ট্রেইডিং কোম্পানী, ই-ত্রেইড'এ চাকুরী করছি; আমাদের ১ জন ডিরেক্টর, আমাদের কোম্পানীতে চাকুরী করার পাশাপাশি মিলিওনিয়াম হেজ-ফান্ড নামে এক বড় কোম্পানীতেও চাকুরী করতেন। বাংগালী ছেলেটি মিলিওনিয়ামে ইন্টারভিউ পেয়েছে, সেখানে রেফারেন্সে আমার নাম দিয়েছে। তবে, আমি তাকে বলেছিলাম, যেহেতু মিথ্যা রেফারেন্স দিতে হবে, সে যেন আমার প্রাক্তন কোম্পানীর নাম দেয় ( রেফারেন্সে দেখানোর দরকার ছিলো যে, সে আমার প্রাক্তন কোম্পানীতে আমার সাথে একত্রে চাকুরী করেছে, আমি তার সম্পর্কে সুপারিশ করতে পারবো। ); কিন্তু সে আমার বর্তমান কোম্পানীতে আমার সাথে চাকুরী করেছে বলে রেফারেন্সে লিখেছে।
মিলিওনিয়ামে তার ইন্টারভিউ নেয়ার সময় আমাদের ডিরেক্টর উপস্হিত ছিলেন; তিনি জানেন যে, এই ছেলে মিথ্যা রেফারেন্স দিচ্ছে, সে কখনো ই-ট্রেইডে চাকুরী করেনি। ডিরেক্টর ছেলেকে কিছু বলেনি, চাকুরী দেয়নি; কিন্তু মনে আঘাত পেয়েছেন যে, আমি কোন ছেলেকে মিথ্যা রেফারেন্স দিচ্ছি। তিনি আমাকে কিছু বলেননি, বলেছেন আমার প্রজেক্ট লীডকে। প্রজেক্ট লীড ছিলো এক নারী, আমাকে খুবই ভালো জানতো। ডিরেক্টর থেকে এই তথ্য পেয়ে বিকেল ৫টায়, কাজ থেকে বের হওয়ার ৫মিনিট আগে অফিসে ডেকে আমাকে বললো,
-তুমি মাখদি নামে ১ ছেলেকে মিথ্যা রেফারেন্স দিচ্ছ?
-আমি মাখদি নামে কাউকে চিনি না, এবং আমি সম্প্রতি কারো জন্য রেফারেন্স দিইনি।
-আমি তোমাকে এত ভালো জানি, তুমি এই কাজ কিভাবে করছো?
আমি চিন্তা করছি, মাখদি নামে তো কাউকে চিনি না, একি সমস্যা! বুঝতে পারলাম, ইহা মখদি নয়, মেহেদী, যেই ছেলেটাকে মিথ্যা রেফারেন্স দেয়ার অশ্বাস দিয়েছিলাম। আমি লীডকে বললাম,
-আমি বুঝতে পেরেছি, ওর নাম নেহেদী; বিয়ের কথা চলছে, চাকুরী হারায়েছে, H1 Visa হারাবে, বেশ বিপদে আছে; আমি মিথ্যা রেফারেন্স দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলাম; তবে, ই-ট্রেইড'এর নামে নয়, আমার প্রাক্তন চাকুরীর সুত্রে।
-ঠিক আছে, আমাদের নামে নয়; কিন্তু অন্য কোম্পানীর নামে তুমি মিথ্যা রেফারেন্স দেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলে?
-হ্যাঁ, দিয়েছিলাম।
-ওকে, কর্পোরেট এথিক্যাল কোড ভংগ করার জন্য তোমার ব্যাপারটো দেখার জন্য আমি হিউম্যান রিসোর্সকে বলবো।
-ঠিক আছে, তুমি আমার ব্যাজ রাখো, আজকেই আমার শেষদিন।
হঠাৎ তার চেহারা বদলে গেলো; সে বললো,
-আমার উচিত হিউম্যান রিসোর্সকে জানানো; আমি তো তোমার চাকুরী থেকে বিদায়ের কথা বলিনি।
-বিদায়ের কথা আমি বলছি। আমি তো এখনো মিথাা রেফারেন্স দিইনি, তুমি নালিশ করতে চেয়েছ; আসলে আমি দিতাম; সে একটি ছাত্রীকে বিয়ে করেছে, তার চাকুরী চলে গেছে; আমি তার জন্য মিথ্যা কথা বলতে প্রস্তুত। আমার ব্যাজ রাখো।
-আমি তো এখনো নালিশ করিনি। তুমি বাড়ী যাও, আমাকে ভাবতে দাও।
আমি হিউম্যান রিসোর্সের অফিসে গেলাম; কেহ নেই, সবাই চলে গেছে। পরেরদিন দেরীতে অফিসে গিয়ে দেখি লীড নেই; অন্য অফিসে বসেছে। আমি হিউম্যান রিসোর্সে গিয়ে রিজাইন লেটার দিলাম; ওরা বলেলো, লীডের সিগনেচার নিয়ে আসতে।
-লীড অন্য অফিসে।
-লীডের সাথে কথা না'বলে আমরা কিছু করতে পারবো না; সর্বোপরি, কমপক্ষে ২ সপ্তাহের আগে রিলীজ দেয়ার নিয়ম নেই।
-তোমরা ব্যাজ রাখ, অফিসের সব বুঝে নাও, আমি ৩০ মিনিটের ভেতর অফিস ত্যাগ করবো।
-কোম্পানী তোমাকে ব্ল্যাকলিষ্টেড করবে, ভবিষ্যতে এই কোম্পানীতে আসতে চাইলে, তোমাকে নেয়া হবে না।
-তাই হোক, আমি যাচ্ছি।