ধর্মগুলোর উদ্ভবের সময় বিশ্বব্যাপী সামন্তযুগ ছিলো; গ্রীক ও রোমানরা ব্যতিত অন্যদের মাঝে শিক্ষিত মানুষ তেমন ছিলো না। আমাদের নবী(স: ) আরবদের মাঝে বেশ জ্ঞানী ও জনপ্রিয় মানুষ ছিলেন; উনার জীবনের শেষ অধ্যায়ে একটি অপেক্ষাকৃতভাবে ভালো আরবী সামন্তবাদী সাম্রাজ্যের পত্তন হয়েছিলো; এটাই ছিলো উনার বিরাট সাফল্য। ফলে, উনার কথার কিছু মুল্য ছিলো। কিন্তু ততকালীন সময়ের কেহই আজকের সভ্যতার কথা কল্পনাও করতে পারার কথা নয়। আজকের মানুষের জ্ঞানের পরিধি অনেক অনেক প্রসারিত হওয়ায়, মানুষ ভবিষ্যত নিয়ে কিছু প্রেডিকশান করতে পারছে, যা আগত সময়ের জন্য প্রয়োজ্য হবে। কিন্তু সামন্তবাদের সময়ের কোন চিন্তাভাবনা আজকের সমাজের জন্য সুফল আনার কোন সম্ভাবনা নেই।
এটা পরিস্কার যে, উনার জীবনকালে, উনার আশপাশে ইতিহাস লেখার মতো শিক্ষিত মানুষ ছিলো না; ফলে, উনি কোন বিষয়ে কি বলেছেন, সেটা লিপিবদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। উনার আশপাশের মানুষ যতটুকু মনে রেখেছিলো, সেটাই উনার বাণী হিসেবে পরে লেখা হয়েছে। উনি কি উদ্দেশ্য কি বলেছিলেন, তা কে কি মনে রেখেছে ও পরে উহা কিভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে, সবকিছুই অপরিস্কার; উনার আসল বাণীর যায়গায়, কার বাণী লিপিবদ্ধ হয়েছে, সেটা আজকে বের করা অসম্ভব। উনার আশপাশের লোকজন উনার মত ও জ্ঞানী ছিলো বলে মনে হয় না; ফলে, উনার কথা সঠিকভাবে আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি।
আজকের এই সভ্যতায়, দেশ, জাতি, সমাজ নিয়ে আগের মানুষের কোন আইডিয়া কোন কাজে লাগার কথা নয়; মানুষ দেশ চালনার জন্য বিশ্বের জ্ঞানী মানুষের চিন্তাকে কাজে লাগিয়ে "সংবিধান" তৈরি করেছে, যার আলোকে আইন তৈরি হচ্ছে। দেশ, সমাজ, জাতিকে নিয়ে লেখার সময় আধুনিক জ্ঞানের আলোকে লেখাই উচিত।
ধর্ম নিয়ে যারা লেখাপড়া করেন; তারা সামন্তবাদের পুরাতন সেই সংস্কৃতিতে আটকা পড়ে যান; তারা আজকের কমপ্লেক্স সমাজ ব্যবস্হা বুঝার মতো জ্ঞান লাভ করেন না; ফলে, যেসব দেশে ধর্মীয় শিক্ষার উপর জোর দেয়, সেসব জাতিতে সামন্তবাদী সংস্কৃতি ও চিন্তাভাবনা সমাজের উপর প্রভাব ফেলে, ইহা আধুনিক ভাবনার সাথে সাংঘর্ষিক, এবং ইহার ফলাফল ভয়ংকর। ইহার জ্বলন্ত উদাহরণ হচ্ছে কিছু আরব দেশ। আমাদের পাশের দেশও মনে হয়, আগামীতে বেশ বড় ধরণের সমস্যার মাঝে প্রবেশ করবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫