somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (২৪)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১২ দুপুর ১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

২৪তম পর্ব

এভাবে তাদেরকে ক্ষমতায় বসিয়ে শরীয়তকে মান্য করার ব্যাপারে নিষেধ জারির ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন করবো। তাদেরকে এমনভাবে কাজে লাগাতে হবে যাতে উপনিবেশিক মন্ত্রণালয় যাই করতে আদেশ দেবে তারা তাই যেন বিনা দ্বিধায় সম্পন্ন করতে তৎপর হয়। তাদের মাধ্যমেই আমরা মুসলমানদের মধ্যে এবং মুসলিম দেশগুলোতে আইনী সহায়তায় আমাদের ইচ্ছাগুলোকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হবো।

আমরা এমন একট জীবন ধারা ও পরিবেশ গড়ে তুলবো যেখানে শরীয়ত মান্য করা একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং ইবাদত করা হবে পশ্চাদমুখীতা। মুসলমানগণ যেন অমুসলিমদের মধ্য থেকে তাদের নেতা নির্বাচনে উৎসাহিত হয় আমরা সে কৌশলও অবলম্বন করবো। এসব করতে গিয়ে আমাদের কিছু ছদ্মবেশী এজেন্টকে উচ্চপর্যায়ে নিয়োগদান করবো, তারা মুসলমান এবং মুসলিম দেশগুলোতে ইসলামের আশা আকাঙ্খা প্রতিফলনের নামে আমাদের ইচ্ছগুলোকেই বাস্তবায়িত করবো এবং এর জন্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নেয়া হবে।

৯. আরবী শিক্ষা বন্ধ করতে যথাসাধ্য চেষ্টা চালাবে। আরবী ভাষা বাদে অন্যান্য ভাষা যেমন ফার্সী, কুর্দিশ এবং পশতু এ সকল ভাষাসমূহকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করবে। আরব দেশসমূহে বিদেশী ভাষা প্রবেশ করিয়ে দেবে এবং কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের প্রাঞ্জল ভাষা ও তার সাহিত্য গুণকে নষ্ট করার লক্ষ্যে আঞ্চলিক ভাষাকে জনপ্রিয় করার চেষ্টা করবে।

১০. সরকারী আমলাদের পাশে আমাদের নিজস্ব লোক বসাতে হবে এবং পর্যায়ক্রমে এ সকল লোকদের সচিব পর্যায়ে নিযোগ দিতে হবে। যাদের মাধ্যমে আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়ের অভিলাষগুলো পূরণ করবো। এ কাজ করার সহজ পদ্ধতি হচ্ছে দাস ব্যবসা অবলম্বন করা। প্রথমে আমাদের গুপ্তচরদের ভালভাবে প্রশিক্ষণ দিতে হবে এবং এবং পরে তাদের দাস এবং রক্ষিতার ছদ্মবেশে পাঠাতে হবে। মুসলিম রাজন্যবর্গ বা আমলা স্থানীয় ব্যক্তিদের স্ত্রী, সন্তান এবং তাদের পরিচিত জনদের মাঝে এ সকল দাস বা রক্ষিতাদের বিক্রি করতে হবে। এভাবে যাদেরকে বিক্রি করা হবে তারা ধীরে ধীরে মালিকের হৃদয়ের কাছাকাছি পৌঁছবে এবং মুসলিম শাসকদের এমনভাবে ঘিরে থাকবে যেমন চুড়ি হাতের মধ্যে জড়িয়ে থাকে।

১১. আমাদের মিশনারী অঞ্চলের পরিধি বিস্তৃত করতে হবে যাতে সমাজের যে কোন শ্রেণী এবং পেশার লোকদের মধ্যে বিশেষত ওষুধ ব্যবসা, প্রকৌশল এবং হিসাব-নিকাশের কর্মকান্ডে গভীরভাবে অনুপ্রবেশ করা যায়। আমাদের প্রকাশনা এবং প্রচারকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। চার্চ, স্কুল, হাসপাতাল, লাইব্রেরী, দাতব্য প্রতিষ্ঠানের নামের আড়ালে আমরা মুসরিম দেশগুলোতে আমাদের কর্মকা- চালিয়ে যাবো এবং যতদূর সম্ভব চতুর্দিকে এর বিস্তৃতি ঘটাতে হবে। বিনামূল্যে আমাদের লাখ লাখ খ্রিস্টান ধর্মের বই পুস্তক ছড়াতে হবে। ইসলামের ইতিহাসের পাশাপাশি আমাদের খ্রিষ্ট ধর্মের ইতিহাস এবং সরকারী আইন প্রকাশ করতে হবে। বিভিন্ন চার্চ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহে পুরোহিত ও নান এর ছদ্মবেশে আমাদের এজেন্ট নিয়োগ দিতে হবে এবং ধর্মীয় আন্দোলনের নেতা হিসেবে কাজে লাগাতে হবে। তারা একইসাথে ইসলাম জগতের সকল গতি প্রবাহ এবং আন্দোলনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের রিপোর্ট করবে। তাছাড়া অধ্যাপক, বৈজ্ঞানিক এবং গবেষক ইত্যাদি নামের আড়ালে আমরা গড়ে তুলবো এক দল খ্রিস্টান বাহিনী যারা ইসলাসের বিকৃত বা নিশ্চিহ্ন করার তৎপরতা চালাবে। এরা ইসলামের জীবন পদ্ধতি, আচার-আচরণ এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ সব আয়ত্ব করে ইসলামের বই-পুস্তক নষ্ট করবে এবং ইসলামী শিক্ষাকে নির্মূল করার চেষ্টা করবে।

১২. মুসলমান যুবক, বালক এবং মেয়েদের মনে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করতে হবে এবং ইসলামের ব্যাপারে তাদের মনে সন্দেহ জাগিয়ে তুলতে হবে। স্কুল, বই-পত্র, ম্যাগাজিন, খেলাধুলার ক্লাব গঠন, প্রকাশনা, সিনেমা, টেলিভিশন ইত্যাদির মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণরূপে তাদের অন্তর থেকে নৈতিক মূল্যবোধ সরিয়ে ফেলবো এবংয আমাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এজেন্টরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। মুসলিম যুব সমাজকে ফাঁদে ফেলার জন্যে প্রয়োজনে গোপনে সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে তার মাধ্যমে ইহুদ, খ্রিস্টান এবং অমুসরিম যুবকদের জ্ঞান দান এবং প্রশিক্ষন দেয়া হবে।

১৩. গৃহযুদ্ধ এবং গণবিদ্রোহ সৃষ্টিকে উসকে দিতে হবে। মুসলমানদেরকে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে ব্যস্ত রাখতে হবে। একইভাবে অমুসলিমদের সাথেও যুদ্ধে লিপ্ত রাখতে হবে যাতে তাদের শক্তি নষ্ট হয় এবং উন্নতি ও ঐক্য বজায় রাখা বাধাগ্রস্ত হয়। তাদের মানসিক উৎকর্ষতা এবং আর্থিক ক্ষমতার উৎস যেন সমূলে ধ্বংস হয়ে যায়। যুব ও কর্মশক্তিকে নষ্ট করে তাদের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কার্যকলাপের ব্যাপকতা সৃষ্টি করতে হবে।

১৪. তাদের অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে সাধন করতে হবে। উপার্জনের সকল উৎস, কৃষি ক্ষেত্রে সেচ ব্যবস্থা, পানি সংযোগ এবং নদীর প্রবাহ এক কথায় সবকিছু নষ্ট করতে হবে। লোকজনদেরকে করতে হবে কর্মবিমুখ, অলস এবং ইবাদত-বন্দেগীর প্রতি অমনযোগী। অলসদের জন্য খেলার মাঠ উন্মুক্ত করতে হবে। মাদক দ্রব্য এবং শরাব পান করাকে সহজতর করতে হবে। দলীলসমৃদ্ধ, চমকপ্রদ এমন একটি কিতাব দেয়ায় আমি সচিবকে ধন্যবাদ না জানিয়ে পারলাম না।

লন্ডনে এক মাস থাকার পর মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে নির্দেশ দেয়া হলো ইরাকে গিয়ে নজদের ওহাবের সঙ্গে পুনরায় দেখা করতে। আমি যখন আমার মিশনে যাত্রা শুরু করবো তখন সচিব আমাকে বলেছিলো, “নজদের সেই ওহাবের ব্যাপারে কখনই উদাসীন থেকো না। এ যাবৎ গোয়েন্দাদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী বিষয়টি পুরোপুরি বোঝা গেছে যে, আমাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থের জন্য ওহাবী নজদী অত্যন্ত উপযোগী গবেট প্রকৃতির এক লোক।”

(ইনশাআল্লাহ চলবে)

এথান থেকে পরুন পর্ব- ১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৩
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৪
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৫
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৬
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৭
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৮
এথান থেকে পরুন পর্ব- ১৯
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২০
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২১
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২২
এথান থেকে পরুন পর্ব- ২৩
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×