somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঊনসত্তুর থেকে পচাঁত্তুর-'৭১এ যাদের বয়স তিনের কম ছিল তাদের থেকে সামুর কনিষ্ঠতম ব্লগারটিকে উৎসর্গীকৃত-পর্ব১৫

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ দুপুর ২:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[si]অবতরনিকা: বংগবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বংশকারীদের (আমি নির্বংশই বলবো কারন প্রচলিত ধারায় বংশগতি পুরুষ উত্তরাধিকারীর ওপরেই বর্তায়) শাস্তি প্রদানের পর থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটার পর একটা পোষ্ট আসছে। যার প্রায় সবগুলোই (গুটি কয়েক ব্যতিক্রম ছাড়া) পক্ষপাত দুষ্ট। অনেক ভাবনা চিন্তা করে আমার নিজস্ব ক্ষতির কথা ভুলে/ এড়িয়ে আমি আমার একান্ত ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা তুলে ধরছি, শিরোনামে উৎসর্গীকৃত ব্লগারদের জন্যে। ৩ বছরটা উল্লেখ করার কারন হ'ল যে মানুষের কোন স্মৃতি ৩ বছর বয়সের আগে থাকেনা, সাধারনত। এ পোস্টে আমার ব্যাক্তিগত ক্ষতি গুলোঃ

১। এটা প্রকাশিত হবার পর আমার পরিচয় গোপন থাকবেনা, যা আমি এতদিন সযতনে রক্ষা করেছি।

২। ব্যাক্তিগত ঘটনা বয়ান পাঠকদের কাছে মাঝে মধ্যে আত্মপ্রচার ও পারিবারিক প্রচারের মত লাগবে যা আসলেই অশোভন, অরুচিকর এবং বিরক্তিকর। এগুলোও আমি লুকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে এসেছি আজীবন।

৩। কোন পক্ষাবলম্বন না করে লেখাটা অত্যন্ত দুঃসাধ্য। আমার জন্যে আরো কঠিন। কারন যৌবন যখন সদ্য দেহ-মনে ভর করে আমার সমগ্র সত্তাকে ভীষনভাবে নাড়িয়ে দিচ্ছে, যা কিছুই সুন্দর তারই প্রেমে পড়ছি, ঠিক সে সময়ই বংগবন্ধুর সাথে আমার পরিচয়। নিরপেক্ষভাবে তাঁর ব্যাপারে লিখতে আমার খুবই কষ্ট হবে এবং আমাকে অসাধ্য সাধন করতে হবে।

৪। শুধুমাত্র স্মৃতি নির্ভর লেখার মূল সমস্যাটা হ'ল ভুল স্মৃতি মনের মধ্যে থাকা। যে কেউ যদি নিজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার কোন বক্তব্যে দ্বিমত প্রকাশ করেন, তা'লে তাকে আমি অনুরোধ করবো মন্তব্যে তা তুলে ধরতে। আমার স্মৃতি ঘাটতে সাহায্য করার নেই কেউ আমার হাতের কাছে।

আমি আপ্রাণ চেষ্টা করবো-আমার যে একটা দায় আছে আমার পরের প্রজন্মগুলোর কাছে।

আমার এই দায় শোধ যদি এই প্রজন্মকে আমাদের গৌরবময় আর কলংকলেপিত অতীতকে নিরপেক্ষ ভাবে দেখতে শেখার পথে একপাও এগিয়ে নিয়ে যায়, তা'লেই আমি মনে করবো সেটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অর্জন।

অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন এটা আমার একান্তই ব্যাক্তিগত সৃতিচারন। পারিবারিক ঘটনাবলীর চর্বণ। সমগ্র দেশের ব্যাপারটা কখনোই প্রধান্য বিস্তার করবেনা, সে সাধ্য বা যোগ্যতা আমার নেই।

পুরো সময়টার কিছু অনুল্লেখ যোগ্য অংশ বিষদ ভাবে আসবে আবার অতি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ পরবে, ব্যাক্তগত স্মৃতিচারনের এটা একটা বিরাট সমসয়া। অনুরোধ করি বিষয়টা মনে রেখে আমার এ লেখাটা পড়বেন ।

পুরোটা পড়ার পর অনেকের কাছেই এটাকে "পর্বতের মূষিক প্রসব" বলে মনে হ'তে পারে। তাদের কাছে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

পর্ব-১পর্ব-২পর্ব-৩ পর্ব-৪
পর্ব৫পর্ব-৬পর্ব-৭ পর্ব-৮ পর্ব-৯ পর্ব-১০ পর্ব-১১ পর্ব-১২ পর্ব-১৩ পর্ব-১৪ পর্ব-১৫ পর্ব-১৬পর্ব-১৭ পর্ব-১৮পর্ব ১৯ পর্ব-২০

ইন্দিরা গান্ধী ও ভক্সল ভিভা

বাবার অধীনে ছিল প্রগতি ইন্ডাসট্রিজ। জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন হাবিবুল্লাহ খান (তখন কারখানা প্রধানরা জি এম ছিলেন, এখনকার মতো এম ডির চল ছিলনা) । হাবিবুল্লাহ খান ছিলেন অত্যন্ত প্রভাবশালী। বংগবন্ধুর সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। হেড অফিসের আদেশ নির্দেশের কোন তোয়াক্কাই তিনি করতেন না। তার অধীনস্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের তিনি ইচ্ছেমত বিভিন্ন সুযোগ সুবিধে দিয়ে পুরোপুরি বশ করে রেখেছিলেন। বাবা শত চেষ্টাতেও তাকে বাগে আনতে পারছিলেন না।

এসময় ইন্দিরা গান্ধী আসলেন বাংলাদেশ সফরে। বিশাল আয়োজন চারিদিকে। সাজ সাজ রব। আমরা ইন্দিরা গান্ধীকে যথেষ্ট সম্মান করতাম ও ভালবাসতাম। সবারই মনে খুশী ও কৃতজ্ঞতার আমেজ। খুশীর চোটে হাবিবুল্লাহ খান ইন্দিরা গান্ধীকে প্রগতিতে সংযোজিত একটি ভক্সল ভিভা গাড়ি উপহার দিলেন।

বাবা এরকম একটা সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিলেন। তিনি প্রথমে এই উপহার দেয়ার কারন দর্শাতে বল্লেন। জবাব সন্তোষজনক না হওয়াতে আইনানুগভাবে তাকে বরখাস্ত করলেন। সাইফুল ইসলাম চাচা আবার বাবকে অনেক বোঝাতে চেষ্টা করলেন। ব্যার্থ হয়ে তিনি বাবাকে বল্লেন: "Sir Habibullah Khan is a Titanic, don't underestimate him. You have no idea about his influences. In no time he would ensure that you are thrown in the trash (হাবিবুল্লাহ খান হচ্ছে টাইটানিক, তাকে ওজন করতে ভুল করবেন না। আপনার কোন ধারনাই নেই যে ও কত প্রভাবশালী। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই সে নিশ্চিত করবে যাতে আপনাকে আবর্জনায় নিক্ষেপ করা হয়)। "

বাবার উত্তর " Mr. Saiful Islam, if Habibullah Khan is Titanic, I'm an iceberg (হাবিবুল্লাহ খান যদি টাইটানিক হয় তা'লে আমি সমুদ্রে ভাসা বিশাল বরফখন্ড)।" সাইফুল ইসলাম চাচা বাবাকে ব্যাপারটা শিল্প মন্ত্রীকে অবহিত করতে বল্লেন। বাবা রাজী হলেন না এ বলে যে আইনানুগভাবে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে যা তার এখতিয়ারের ভেতর।

হাবিবুল্লাহ খান ঢাকায় বেশ কয়েকবার আসলেন, বংগবন্ধু সহ অনেকের সাথে দেন দরবার করলেন। কিন্তু কিছুই হ'লনা। তল্পিতল্পা গুটিয়ে তিনি অবশেষে প্রস্থান করলেন।

এইবার বাবা পড়লেন বিপদে। যাকেই প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজে পোষ্টিং দেন সেই এসে অনুরোধ করেন বাবাকে পোস্টিং বাতিল করতে। আমার মনে হ্য় বাবার অধীনের প্রায় সবগুলো কারখানার মহাব্যাবস্থাপককেই নিয়োগ দেয়া হয়েছিল প্রগতিতে।

শেষে এগিয়ে আসলেন মহিউদ্দিন চাচা (বর্তমানে প্রধান মন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেকের আপন চাচা, বাড্ডা এলাকা যখন গ্রাম ছিল তখনকার সেখানের স্থায়ী বাসিন্দা, হার্ট এ্যাটাকে অনেকদিন আগেই গত)। মহিউদ্দিন চাচা তখন ছিলেন এ্যাটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের মহা ব্যাবস্থাপক। গুজব উঠলো যে উনি দায়ীত্ব নিতে গেলে ওখানকার লোকেরা তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলবে। অত্যন্ত সাহসী তিনি প্রগতিতে যোগ দিলেন। কঠোর হাতে সব অসন্তোষ দমন করলেন।

দেশের মধ্যে যে আরেকটা দেশ ছিল তার অস্তিত্ব লোপ করলেন।

বংগবন্ধু হত্যার পর হাবিবুল্লাহ খান জিয়ার শিল্প উপদেষ্টা/মন্ত্রী (সম্ভবতঃ) হয়েছিলেন । তিনি কখনোই বাবার ওপর প্রতিশোধ নেবার চেষ্টা করেন নি।



গাজী গোলাম মোস্তফায়/রাস্তা দিয়া হাইট্টা যায়/ কম্বল একখান বান্ধা ছিল/ গাছেরো আগায় গো...

এটা একটা প্যারোডি: দ্বীনের নবী মোস্তফায়/রাস্তা দিয়া হাইট্টা যায়/ হরিন একখান বান্ধা ছিল গাছেরো তলায় গো....

একদিন বাবার পিএ বাবার অফিস কক্ষে উদ্ভ্রান্তের মত ঢুকে পড়লেন। " স্যার গাজী গোলাম মোস্তফা ফোন করেছেন"। বাবা বল্লেন "তো ইন্টরকমে না দিয়ে এখানে এসেছেন কেন?" লজ্জিত হয়ে পিএ প্রস্থান করলেন। ফোনে ওপার থেকে আওয়াজ আসলো " .. আমি গাজী গোলাম মোস্তফা। আপনার কর্পোরেশনে ডাঃ ফাতেমা (ধানমন্ডি ১৯/১৫ নম্বরে থাকতেন। তাঁর মেয়ে চিত্রার প্রেমে পড়েনি এমন খুব কম যুবকই ছিল তখন ধানমন্ডিতে)কে ১৭ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ থেকে Retrospective আদেশ দিয়ে আজই আপনার কর্পোরেশনের চীফ মেডিক্যাল অফিসার বানিয়ে আদেশ বের করবেন। বাবার মাথার শেষ ঢিলা স্ক্রুটি খুলে গেল। বল্লেন "Who are you to dictate me that? গাজী উত্তর করলো : এটা প্রধান মন্ত্রীর হুকুম। বাবা উচ্চস্বরে বল্লেনঃ "If it is Prime Minister's order it should come in writing from PM's Secretariat"। বলে ফোনটা রেখে দিলেন। বাবার গলার স্বরে সাইফুল ইসলাম চাচা আর গিয়াস চাচা পিএর কাছ থেকে খবর নিয়ে জানতে পরলেন যে জিজিএম ফোন করেছিল বাবাকে। বাবার কাছে সব শোনার পর বাবাকে সাইফুল ইসলাম চাচা সনির্বদ্ধ অনুরোধ করলেন যাতে করে ডাঃ ফাতেমাকে পদোন্নতি দিয়ে (অবশ্যই অন্যদের ডিংগিয়ে) এখনই বাবা জিজিএমকে ফোন করে ঘটনাটার ফয়সালা করে নেন।

পরিচালককে যেহেতু "বহিস্কার হও" বলা প্রোটোকল অনুমোদিত নয় , বাবা তাই নিজেই অফিস থেকে বের হয়ে গেলেন।

তোফায়েল চাচার উদ্দ্যোগে আবার চেষ্টা চালানো হ'ল রাজনৈতিকভাবে এটার সূরাহা করা যায় কিনা। সম্ভব না হওয়াতে সকলে বাবাকে স্বপরিবারে খরচের খাতায় লিখে রাখলেন।

সেদিন বাবা খুব তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে এসেছিলেন-সন্ধ্যার সাথে সাথেই। ছোট খালু (তখন বুয়েটের সহযোগী অধ্যাপক, এখন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য) এলেন পর পরই কোথায় থেকে যেন জি জি এমএর এর সাথে বাবার কথোপকথন শুনে। আসলেন প্রয়াত সাইফুল ইসলাম চাচা, গিয়াস চাচা, বাবার সবচেয়ে কাছের বন্ধু প্রয়াত মোরশেদ চাচা (মাটির ময়নার তারেক মাসুদের কাজিন), বাবার অনেক ক'জন ছাত্র(বুয়েটের)। ডঃ মোজাফ্ফর আহমেদ (প্রাক্তন টিআইবি, পাকিস্তান আমলে চাকুরীতে বাবার জেষ্ঠ ছিলেন, বাবার এ সি আর লিখতেন। বাবা যদ্দিন সুস্থ ছিলেন তদ্দিন প্রতি ঈদের নামাজের পর পরই ওঁর বাসায় আমাদের সবাইকে নিয়ে দেখা করতে যেতেন) ফোন করলেন। এর পরপরই ফোন আসলো কিংবদন্তীর ডঃ রশীদের (বুয়েটের প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য)। ডঃ রশীদ ছাড়া সবাই বাবার হঠকারিতায় চিন্তিত, আতংকিত এবং বিরক্ত। ডঃ রশীদ (বাবার শিক্ষক, আহসানুল্লাহ ইনজিনিয়ারিং কলেজের, পরে কলিগ) বাবাকে সাহস দিলেন এবং বল্লেন ভীতুরা মরে বহুবার, সাহসীরা একবার (Cowards die many times before their death...............)। কোন কিছুতেই রাজী না করাতে পেরে সবাই বাবাকে অনুরোধ করলো বাসা ছেড়ে কিছুদিন অন্য কোথাও লুকিয়ে থাকতে। বাবা রাজী হলেন না।

আপনার যারা জিজিএম সম্পর্কে জানেন না তাদের জন্য- বলছি। জিজিএম ছিল ভয়ংকর একটা ত্রাসের প্রতিশব্দ। সে সময় (বোধ করি) সে ছিল রেড ক্রস সোসাইটির চেয়ারম্যান। আজকের এরশাদ শিকদার, জয়নাল হাজারী, মকবুল, পিন্টু, অভির যদি ক্রস ব্রিড করা যায় তা'লে একটা জিজিএম হলেও হতে পারে। প্রতিপক্ষকে তিনি কয়েক প্রজন্ম সহ এক রাতের মধ্যে পৃথিবী ত্যাগে বাধ্য করতেন।

যে বাবা সন্তানের এবং স্ত্রীর জীবনকে শুধুমাত্র পেশাগত কারনে বলী দিতে প্রস্তত থাকেন, সে বাবাকে, সে স্বামীকে আমি আদর্শ বাবা, আদর্শ স্বামী হিসেবে মেনে নিতে পারিনা। এজন্যে তাকে শ্রদ্ধাও করা যায় না। বড় জোর মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন বলে ক্ষমা করা যায়।

আমাদের ভাগ্য সেদিন ছিল অতি সুপ্রসন্ন। সে রাতেই জিজিএম এর ছেলে এক বিয়েতে মেজর ডালিমের স্ত্রীর চুল টেনে এলাহী কান্ড ঘটায়। মেজর ডালিমকে ধরে জিজিএম বংগবন্ধুর বাসায় নিয়ে এসে বলেন ডাকাত ধরে এনেছি (এ এইচ এম কামরুজ্জামান, বাংলাদেশের সম্ভবত দ্বিতীয় শিল্প মন্ত্রীর কাছ থেকে শোনা)।

বাবার চরম বেয়াদবী চাপা পড়ে যায়।

তালহা তিতুমির গত পোষ্টে একটি ব্যাপার খোলাসা করতে বলেছিল আমাকে (মেজর ডালিমের স্ত্রীকে অপহরণ ও নির্যাতন করেছিলো শেখ কামাল। আসলে এ কুকর্মের নায়ক হলো আওয়ামিলীগ নেতা গাজী)। শেখ কামাল ডালিমের স্ত্রীকে অপহরন করেনি। পুরো ঘটনায় তিনি কোনভাবেই জড়িত ছিলেন না। ঘটনার মূল নায়ক হচ্ছে গাজীর ছেলে। সেই বিয়েতে নিমন্ত্রণ খেতে আসা ঐ ঘটনার সাক্ষীর অনেকেই এখনো বেঁচে আছেন, ঢাকাতেই আছেন।

জিজিএমের এক ছেলে এখন থাকে গুলশানের ৩৫ নম্বর রোডে (যদি এখনো বেঁচে থাকে)। জনসমক্ষে আসেনা। তার স্ত্রীই সবকিছু সামলায়। বছর খানেক আগেও দেখেছি বান থাই নামে কুখ্যাত এক মিলন কেন্দ্র সেই বাড়িতে।


সন্তানের জন্যে

এক গভীর রাতে বাবা মার চিৎকারে ঘুম ভেংগে গেল। অনেক কাল আগের বুয়েটের স্মৃতি মনে পড়ে গেল। সে সময় বাবা মা প্রায়ই ঝগড়া করে থালা বাসন ভাংগতেন, ফলশ্রুতিতে আমাদের ডেকচীর ঢাকনায় খাবার খেতে হ'ত। অনেক সময়ই ডঃ আলীমুল্লাহ খান এবং জুম্মার নামাজ থেকে ফেরা পথে একদিন ডঃ রশীদও সে ঝগড়ার মধ্যস্থতা করেছেন। তবে ১৯৬৫ সালে ছয় মাসের মধ্যে আমাদের সম্প্রসারিত পরিবারের বাবার এবং মার সব মুরুব্বী মৃত্যুবরন করলে বাবা-মা সে বিশাল পরিবারের প্রধান এবং একমাত্র উপার্জনক্ষম দম্পতি হয়ে যান । তারপর থেকে ঝগড়া করার সময় ও সুযোগ তাঁরা পান নি।

আমি ওঠার আগেই বাড়ির সবাই উঠে গিয়েছিল। ঝগড়ার বিষয়ঃ মা সে রাতে আমার ছোট বোনের জন্যে সোভিয়েত দুতাবাসের দেয়া নৈশ ভোজ থেকে এক টুকরো খাবার নিয়ে এসেছিলেন। বাবা ব্যাপারটা জানতে পেরে তুলকালাম বাঁধিয়েছেন।

তখন মাসে অন্ততঃ দুটো নৈশভোজ বা বিয়ের দাওয়াত থাকতো। সেগুলোতে অংশ নেয়া মার জন্য ছিল রীতিমত মানসিক অত্যাচার।

ফাকুন্দা (fungus) পড়া ডাল আর কুড়োর রুটি ছাড়া সন্তানকে যে মা আর কিছুই খাওয়াতে পারেনা, সে মা যদি ৭/৮ প্রস্থ (course) নৈশভোজ থেকে এক টুকরো খাবার নিয়ে আসেন অপার বাৎসল্যে তা'লে তাকে বোধ হয় দোষ দেয়াটা সমীচীন নয়।

-চলবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই এপ্রিল, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৩
৩২টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একটা গাছ কাঠ হলো, কার কী তাতে আসে গেলো!

লিখেছেন নয়ন বড়ুয়া, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:০৬



ছবিঃ একটি ফেসবুক পেইজ থেকে

একটা গাছ আমাকে যতটা আগলে রাখতে চাই, ভালো রাখতে চাই, আমি ততটা সেই গাছের জন্য কিছুই করতে পারিনা...
তাকে কেউ হত্যা করতে চাইলে বাঁধাও দিতে পারিনা...
অথচ... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। কালবৈশাখী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৪



গত পরশু এমনটি ঘটেছিল , আজও ঘটলো । ৩৮ / ৩৯ সে, গরমে পুড়ে বিকেলে হটাৎ কালবৈশাখী রুদ্র বেশে হানা দিল । খুশি হলাম বেদম । রূপনগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×