somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একটি চতুষ্পদ ভালবাসা - ৬

০৫ ই মে, ২০০৮ রাত ১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম খন্ড ২য় খন্ড ৩য় খন্ড ৪র্থ খন্ড ৫ম খন্ড

দিন দিন অবস্থা আরো খারাপ হয়। আমাকে তার বাসায় গিয়ে দেখা করে আসতে হয়। মানসিক অসুস্থতার জন্য সে হয় গৃহবন্দী। ডাক্তার বলেছে কোন ছেলের সাথে তার যোগাযোগ যেন না থাকে। তাহলে সে নাকি আরো অসুস্থ হয়ে পড়বে। বিদায়ের সময় দরজায় দাড়িয়ে সে আমার সাথে দূরে কোথাও চলে যাওয়ার পরিকল্পনা করে। অনেকক্ষণ আমি না বলতে পারি না। এই সুযোগে সে রিক্সা ডেকে চুপিচুপি তাতে চেপে বসে। আগ্রহ নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করে। তার পাশের দৃশ্যমান শূণ্যস্থানটুকু আড়াল করে যে অদৃশ্য শূণ্যতা সুকঠিন প্রাচীর তোলে তা আমি ভাঙতে পারি না। পারিনা তাই প্রাচীরের ওপাশে দুখী এক রাজকন্যাকে উদ্ধার করতে, তার অন্ধকার জীবনে এতটুকু আলোর সন্ধান দিতে। তবুও সে নিজে নিজেই আগ্রহের পিদিম জ্বালিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করে। এই দুঃখ আমি কোথায় রাখি ! এই ব্যর্থতা আমি কি দিয়ে ঢাকি !

একসময় যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ হল। সে অসুস্থ। ভীষণ অসুস্থ। আমার আবির্ভাবই নাকি প্রায় গুছিয়ে ওঠা তার জীবনটাকে এলোমেলো করেছে। আমি সরে যাই। শেষ মুহূর্তে আমি তাকে কিছু কথা বলেছি। আমি জানি সেকথা শুনে সে একদিন সুস্থ হবেই।

তার বেশ কদিন পরের কথা। খবর নিতে তার বাসায় ফোন করলাম। জানতাম অন্য কেউ ধরবে। ভারী একটা পুরুষের গলা। হয়তো তার বাবাই হবে। আমি হড়বড় করে অনেক কথাই বললাম। তিনি মনোযোগ দিয়ে শুনলেন। অগোছাল সেই কথাগুলো শুনে কি ভাবলেন কে জানে । আমার নিজের উপরই রাগ হল। কি বলছি নিজেই তো বুঝতে পারছি না। উনি বুঝবেন কি করে?

অনেকক্ষণ কোন কথা নেই। তারপর একসময় তিনি ধীরে ধীরে বললেন, ও মারা গেছে।

ফোনটা এরপর কে রাখলো তা মনে নেই। শুধু মনে হচ্ছিল কষ্টের ঘুড়ি টা সুতো কেটে উদ্দাম বেগে হারিয়ে গিয়ে লাটাই ধরার যন্ত্রণা থেকে আমাকে মুক্ত করে দিয়ে গেল। কিন্তু সেই মুক্তির মাঝে কোথাও একটা অতি আপনজন হারানোর মর্মন্তুদ হাহাকার ছিল। বিশাল বটবৃক্ষের শীতল ছায়া উপেক্ষা করে কেউ আর আমার ক্ষীণ প্রলম্বিত ছায়ায় এসে দাড়াবে না। বর্ষার ঘোর বর্ষণে মুক্তোর মত পড়তে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা গুলো ধরতে যখন আমি নদীতে ঝাপ দিতে যাবো তখন কেউ আর পেছন থেকে আমার শার্টের কলার খামচে ধরবে না। রাস্তা পার হওয়ার সময় এতটা আবেগ দিয়ে কেউ আর আমার শরীরের সাথে ঘন হয়ে হাটবে না।

সেই দিন থেকে আমার আর কিছুই ভাল লাগে না। (পরের পর্বে শেষ)



২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×