somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

" রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ " - ইউরোপে রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া যদি ," গ্যাসকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগ উঠে " তবে রাশিয়ার সাথে EU ও আমেরিকা যা করছে সেগুলো কি ? (৪ র্থ পর্ব)

২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবি - আরব নিউজ

পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত দনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকেই ওই অঞ্চলে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছিল এবং তাদের রক্ষায় সেনা প্রেরনের ঘোষনায় যুদ্ধ শুধু সময়ের অপেক্ষার বিষয় হয়ে দাড়ায়। অবশেষে, ২৪/০২/২০২২, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মিসাইল ছুঁড়ে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করেছে রাশিয়া এবং এর ফলে নানা ঘটনা পরস্পরায় উদ্ভুত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার সাথে সাথে তেল-গ্যাস সহ নানা ক্ষেত্রে রুশদের ওপর হাজার হাজার নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এতে টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বিশ্ববাণিজ্যে। এসব নিষেধাজ্ঞা শুধু রাশিয়া সরকারের জন্য নয়। দেশটির উচ্চ পদস্থ অভিজাত ব্যক্তিবর্গও এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছে এবং দেশের তেল-গ্যাস-ব্যাংক-কৃষি-শিল্প অর্থ্যাৎ রাশিয়ার কোন একটি খাত ই বাদ যায়নি তাদের নিষেধাজ্ঞা থেকে। পশ্চিমা এসব নিষেধাজ্ঞার বিপরীতে রাশিয়াও নানাভাবে চেষ্টা করছে তার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকতে বা অর্থনীতি সচল রাখতে এবং পশ্চিমা অবরোধের বিপরীতে তার সাধ্যানুসারে তাদেরকেও কিছু কিছু ফেরত দিতে।

পশ্চিমা এসব অবরোধের বিপরীতে রাশিয়ার হাতে আছে গ্যাস ও তেল অস্ত্র , যার চাহিদা দুনিয়া ব্যাপী এবং যা ব্যতীত কোন দেশই চলতে পারেনা। এদিকে, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ান তেল ও গ্যাসের ওপর ব্যাপক নির্ভরশীল। ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে মিলে রাশিয়ার ওপর অর্থনীতির সাথে সাথে আরও অন্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের জবাবে রাশিয়া প্রাকৃতিক গ্যাস তথা জ্বালানির সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ/বন্ধ করে দিতে পারে তা হয়ত তাদের ধারনায় ছিলনা বা তারা হয়ত ভেবেছিল রাশিয়া তাদের নিষেধাজ্ঞায় কাবু হয়ে অচিরেই যুদ্ধে হেরে যাবে এবং রাশিয়ার অর্থনীতি ধসে পড়বে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে চলছে আজ ১৫৪ দিন এবং রাশিয়া সকল অবরোধ পাশ কাটিয়ে টিকে আছে এবং চেষ্টা করছে পশ্চিমাদের তাদেরই করা ইটের বদলে কিছুটা পাটকেলের আঘাত ফেরত দিতে পশ্চিমা অবরোধের বিরুদ্ধে ।

ইউরোপে জ্বালানী সরবরাহে রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ আরোপ -

চলতি জুলাই মাসেই বাৎসরিক রক্ষণাবেক্ষণের কারণে নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনে ১০ দিনের জন্য পুরোপুরি বন্ধ রাখা হয়েছিল গ্যাস সরবরাহ। টারবাইন মেরামত শেষে গ্যাস লাইন চালুর পর রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ যতটুকু গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব, সেই পরিমাণ গ্যাস ইউরোপকে দিচ্ছে দেশটি তবে সরবরাহ পরিমাণে খুবই কম ছিল। ইউরোপে যে গ্যাস সরবরাহ কমবে, সেই কথা গত সোমবার (২৫/০৭/২০২২) জানিয়েছিল গাজপ্রম। এরপর বুধবার পেসকভ আবারও বলেন, "নর্ড স্ট্রিম - ১ এর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষ হলে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ আবারও বাড়াতে পারবে গাজপ্রম"। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেছেন, "পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞার করণে যদি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ না করা যায়, তাহলে গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে না"। সেই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞার প্রভাবের বিষয়টিও যুক্ত করেছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, "পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে যে কারিগরি জটিলতা দেখা দিয়েছে, তার প্রভাব পড়েছে ইউরোপে সরবরাহ গ্যাসের ক্ষেত্রে।

রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রযুক্তিগত কারনে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ কমিয়ে আনতে যাচ্ছে রাশিয়া এবং এ জন্য তারা নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনের একটি টারবাইন বন্ধ করে দিচ্ছে বলে ইউরোপকে জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি নীতি বিষয়ক প্রধান কাদরি সিমসন একে "রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত" বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ খবর ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম আরো বাড়িয়ে দিয়েছে এবং ইউরোপ জুড়ে গ্যাস সংকটের তীব্র আশঙ্কা তৈরি করেছে।

১০ বছরের বেশী সময় ধরে রাশিয়া নর্ড স্ট্রিম-১ পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রতিদিন জার্মানিতে ১৭০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার গ্যাস পাঠায় । রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গের কাছে উপকূল থেকে বাল্টিক সাগরের তলদেশ দিয়ে প্রায় ১২০০ কিলোমিটার লম্বা যে পাইপলাইন স্থাপন করা হয়েছে ইউরোপে গ্যাস সরবরাহের জন্য সেটিই নর্ড স্ট্রিম ১। এ পাইপলাইনের মালিকানা ও পরিচালনা নর্ড স্ট্রিম এজির হাতে যার বেশিরভাগ শেয়ারের মালিক রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি গ্যাজপ্রম। জার্মানি তার প্রয়োজনীয় যত গ্যাস আমদানি করে তার শতকরা ৫৫ ভাগই করে রাশিয়ার কাছ থেকে। আর এর বেশিরভাগই আসে নর্ড স্ট্রিম ১ পাইপলাইন দিয়ে। বাকিটা তারা আমদানি করে স্থলপথের পাইপলাইন দিয়ে। উল্লেখ্য,রাশিয়া-জার্মানি নর্ড স্ট্রিম ২ নামে আরেকটি পাইপলাইন তৈরির বিষয়ে একমত হয়েছিল। তবে রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার কারণে জার্মানি সেই চুক্তি বাতিল করে দিয়েছে।

এদিকে, গত মে মাসে বেলারুশ ও পোল্যান্ডের মধ্য দিয়ে যাওয়া একটি গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করে দিয়েছিল রাশিয়া। এর মাধ্যমে জার্মানিসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে গ্যাস পাঠাতো রাশিয়া। এরপর জুনের মাঝামাঝিতে নর্ড স্ট্রিম ১ এর মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ তিন চতুর্থাংশ কমিয়ে দিলে দিনে গ্যাস সরবরাহের পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ৪০ মিলিয়ন কিউবিক মিটারে। জুলাইয়ের শুরুতে নর্ড স্ট্রিম ১০ দশ দিনের জন্য বন্ধ রাখা হয় রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য।এখন আবার চালু করার পরপরই রাশিয়ার পক্ষ থেকে হয়েছে যে, গ্যাজপ্রম গ্যাস সরবরাহ আরও বিশ ভাগ কমিয়ে দেবে। আর এ খবরে ইউরোপে একদিনের মধ্যেই গ্যাসের পাইকারি দাম দশ শতাংশ বেড়ে যায়।এমনিতেই গ্যাসের দাম গত বছরের এই সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। ক্রিস্টল এনার্জির সিইও ক্যারোল নাখলে জানান, "বাজার এখন এমন অবস্থায় সরবরাহে যে কোন ধরনের বাধা গ্যাসের দাম আরও বাড়িয়ে দেবে"। তার মতে, এ"টি ইউরোপের অর্থনীতিকে মন্থর করবে যা মন্দার দিকে ঠেলে দেয়ার অবস্থা তৈরি করতে পারে"।

রাশিয়ার গ্যাস সরবরাহ কমানোর খবরে ইউরোপের প্রতিক্রিয়া ও রাশিয়ার গ্যাস নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা -

রাশিয়া তথা গ্যাজপ্রম বলছে, " টারবাইন রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য তারা গ্যাস সরবরাহ কমিয়ে দিচ্ছে"।

কিন্তু ইউরোপে এটি খুব কম মানুষই বিশ্বাস করছে।

জার্মান সরকার বলছে, " বর্তমানে কারিগরি এমন কোন কারণ নেই যাতে গ্যাজপ্রম গ্যাস সরবরাহ কমাতে পারে"।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি নীতি বিষয়ক প্রধান কাদরি সিমসন একে " রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত" বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি একে "প্রকাশ্য যুদ্ধ আখ্যায়িত করেছেন যা রাশিয়া ইউরোপের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে"।

লন্ডন ভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক দা এনার্জি ইন্সটিটিউটের ফেলো কেইট ডৌরিয়ান বলেন, "রাশিয়া গ্যাসকে ক্রমশ অস্ত্রে রূপান্তর করছে"।
তার মতে, "রাশিয়া এখনো নিজেকে জ্বালানি সুপারপাওয়ার হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে এবং দেখাতে চাইছে যে ইউরোপের নিষেধাজ্ঞার পাল্টা পদক্ষেপ নিতে পারে তারা"।



ছবি - সি এন এন

ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই আমরিকা-ইউরোপ রাশিয়ার তেল-গ্যাসের উপর নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচছে। এরই ফলশ্রুতিতে ইউরোপ চেষ্টা করছে রাশিয়ার পরিবর্তে অন্য জায়গা থেকে তেল-গ্যাস কিনতে এবং আমেরিকা দীর্ঘদিন পর ভেনিজুয়েলার উপর থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছে এবং বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা হিসাবে জো বাইডেন সৌদি আরব সফর করেছেন। যদিও বাইডেনের এ সফর থেকে পজেটিভ তেমন কিছু অর্জিত হয়নি বলেই মূল্যায়ন করেছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা এবং মধ্যপ্রাচ্যে বাইডেনের সফরের মধ্য দিয়ে এ অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের দুর্বল প্রভাবের দিকটি ফুটে উঠেছে প্রকটভাবে। এদিকে জার্মানি নরওয়ে ও নেদারল্যান্ডস থেকে গ্যাস আনার বিকল্প চেষ্টা করছে । ইতিমধ্যেই তারা পাঁচটি ভাসমান টার্মিনাল কিনে নিয়েছে যাতে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলএনজি আমদানি করতে পারে। অবশ্য এর সাথে উপকূল থেকে জার্মানির অন্য সব জায়গায় গ্যাস নেয়ার জন্য পাইপলাইন তৈরির বিষয় জড়িত, যা করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। অন্যদিকে, ইতালি আলজেরিয়া থেকে বেশি করে গ্যাস আমদানির চেষ্টা করছে। সমস্যার সাময়িক সমাধানের জন্য পরিবেশগত প্রভাব থাকা সত্ত্বেও জার্মানি কয়লা ব্যবহার বাড়ানোর পাশাপাশি কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জীবনকাল বাড়িয়ে নেয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে। রাশিয়ার জ্বালানি ঘাটতি মেটাতে ইউরোপের প্রত্যেকটি দেশই তাদের নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ নিচ্ছে সংকট কাটিয়ে উঠতে।

রাশিয়ার গ্যাস নির্ভরতা কমানোর চেষ্টা হিসাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি চুক্তি নিয়ে কাজ করছে যেখানে তার সদস্য রাষ্ট্রগুলো গ্যাসের ব্যবহার ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনবে। আবার, ইউরোপের বহু দেশ ও তাদের নাগরিকরা নিজেদের মতো করেই ব্যবস্থা নিয়েছে। মিস নাখলে জানিয়েছেন, "জার্মানিতে অনেকেই কাঠের স্টোভ কিনেছে এবং বাসায় সোলার প্যানেল সংযোজন করছে"।

যার কারনে এত সব সমস্যা ( রাশিয়া-ইউক্রেন সমস্যার কারন) -

নানা কারনে রাশিয়ার সাথে আমেরিকা-ইউরোপের টানাপোড়ন চলছে গত কয়েক বছর যাবত। আর এসব কারনের সমষ্ঠিই হলো রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ । কারনগুলি -

১। ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারন - রাশিয়া তার নিরাপত্তা ও ন্যাটোর পূর্বমুখী সম্প্রসারনে বার বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যাকে আমেরিকা বা ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন কোনভাবেই আমলে নিতে রাজি হয়নি। রুশ কর্মকর্তারা প্রকাশ্যেই জোরেশোরে বলছেন যে," ন্যাটো রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি"। ১৯৯০ সালে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস বেকার তৎকালীন রাশিয়ান নেতা মিখাইল গর্বাচেভের কাছে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে," মস্কো যদি জার্মানির পুনর্মিলনের অনুমতি দেয় তবে ন্যাটো এক ইঞ্চিও পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে না"। তবে আমেরিকা বা ন্যাটো এখন তা মানতে চাচছেনা। এখানে আমেরিকানরা হাস্যকর রকমের অজুহাত ব্যবহার করে এই অঙ্গীকার থেকে সরে এসেছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে তা কখনো লিখিতভাবে এরকম কোন প্রতিশ্রুতি দেয়নি আর তাই তা মানার বাধ্যবাধকতা তাদের নেই।

২। বাইডেনের ইউরোপকে নিজের সাথে রাখার চেষ্টা - ইউরোপকে নিজের সাথে এবং নিজের বলয়ে আনতে মরিয়া বাইডেন। নানা কারনে সারা দুনিয়া ও ইউরোপে আমেরিকার প্রভাব কমে আসছে বা কমতির দিকে। আমেরিকা সুপার পাওয়ার হওয়ার পরও বিশ্বের নানা দেশ এখন আর আমেরিকার উপর এককভাবে নির্ভরশীল নয় এবং আগে যেরকম সারা দুনিয়ায় আমেরিকার কথাই শেষ ছিল সেরকম পরিস্থিতিও এখন আর নেই। আবার আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ইউরোপের সাথে আমেরিকার কৌশলগত সম্পর্কও তলানীতে গিয়ে ঠেকে। আর আমেরিকা-ইউরোপের মতবিরোধ এর সর্বশেষ উদাহরন হলো আফগান ইস্যু। আফগান ইস্যুতে আমেরিকার সাথে পশ্চিমা মিত্রদের মতবিরোধ সারা দুনিয়ার নজর এড়ায়নি ।

আর তাই , বাইডেন প্রশাসন এখন ইউক্রেন ইস্যুকে পুজি করে রাশিয়ার প্রশ্নে ইউরোপে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তৈরির জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কারণ তিনি জানেন, ইউক্রেনে রাশিয়া হামলার বদলা হিসেবে যে ব্যাপক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার হুমকি তিনি পুতিনকে দিচ্ছেন তা কার্যকর করতে ইউরোপকে তার সাথে আনতে হবে। এর প্রথম পদক্ষেপ হিসাবেই তিনি ইউক্রেন ইস্যুতে প্রতিটি পদক্ষেপে ন্যাটো দেশগুলোকে সাথে রাখছেন। যদিও এটি তার ঘোষিত পররাষ্ট্রনীতি তারপরও আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে পশ্চিমা মিত্রদের সাথে যে দূরত্ব তার তৈরি হয়েছিল- তা থেকে বাইডেন শিক্ষা নিয়েছেন।

৩। রাশিয়ান ও ইউক্রেনিয়ানরা একই জনগোষ্ঠী - ভ্লাদিমির পুতিনের দাবি, "রাশিয়ান ও ইউক্রেনিয়ানরা একই জনগোষ্ঠী এবং উভয়ই রাশিয়ান সভ্যতার অংশ"। তবে রুশ প্রেসিডেন্টের এ দাবি নাকচ করে আসছেন ইউক্রেনিয়ানরা।

চলতি শতকেই ইউক্রেনে দুই দফা গণ–অভ্যুত্থান ঘটেছে। ২০০৫ ও ২০১৪ সালে উভয় ক্ষেত্রেই বিক্ষোভকারীরা রাশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব অস্বীকার করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো জোটে দেশের অন্তর্ভুক্তির দাবি তুলেছেন। অপর দিকে নিজের সীমান্তের সামনেই ন্যাটোর সম্ভাব্য ঘাঁটি নিয়ে শঙ্কিত ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলে আসছেন, "যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন এই সামরিক জোটে ইউক্রেনের যোগ দেওয়াটা হবে চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করা"।

৪। ইউক্রেনের সামনে ইউরোপীয়ান ও ন্যাটো সদস্যর মুলো ঝুলানো - বিনা যুদ্ধে ও বিনা অস্ত্র ব্যবহারে প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও রাশিয়ার উপরে অবরোধ আরোপ আর মানবাধিকার লংঘন এ দুই অস্ত্র ব্যবহার করে বিজয় লাভের ভাবনায় তারা (আমেরিকা ও ইউরোপ) এক সাথে কাজে নেমে পড়ে। আর এ কাজে বলির পাঠা হিসাবে বেছে নেওয়া হয় ইউক্রেনকে, যে কিনা পুরনো সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেতরে ১৪ রাষ্ট্রের একটি যাকে এখনো ন্যাটোর সদস্যই করা হয়নি। গত ২০১৪ সাল থেকে ইইউ, আমেরিকাসহ ন্যাটো ইউক্রেনকে প্রলুব্ধ (তার সামনে মূলো ঝুলায়) করে তাকে ন্যাটোর সদস্য করে নেয়া হবে বলে - আর তাই ন্যাটোর সদস্যপদ ইউক্রেনের কাছে এক সোনার হরিণ করে গড়ে তোলা হয়েছিল এবং ইউক্রেনের রুপালী পর্দার হিরো প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি সেই মূলো লাভের আশায় তার অতীতকে ভূলে এক অদৃশ্য সোনার হরিণের পিছনে ছুটে চলা শুরু করেন এবং খায়েশ করেন বর্তমান রাশিয়ান আধিপত্য থেকে বাইরে থাকার ।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর ব্যবস্থা

পশ্চিমা দেশগুলো মূলত নানা ধরনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে রাশিয়ার উপর। রাশিয়াকে দেয়া এসব "অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মূল লক্ষ্যই হলো পরাশক্তি হিসাবে রাশিয়ার পতন,বিশ্বে রাশিয়াকে এক ঘরে করা এবং রাশিয়ার অর্থনীতিকে পংগু করে দেয়া।

এ লক্ষ্যে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলো প্রথম যে ব্যবস্থা নিয়েছে সেটি হলো আন্তর্জাতিক আর্থিক বার্তা লেনদেন সার্ভিস " তথা সুইফট " থেকে রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন রাখা। বিশ্বে ২০০ টির বেশি দেশের ব্যাংক এবং আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো এটি ব্যবহার করে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এটিকে একটি মারাত্মক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর ফলে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর পক্ষে কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক লেনদেন চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। ২০১২ সালে এটি ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল।

এরকম হাজরো নিষেধাজ্ঞায় ও যুক্তরাষ্ট্রের রাশিয়াকে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডলার ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার ফলে তারা আশা করছিল রাশিয়ার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য একেবারে সীমিত হয়ে পড়বে এবং এর বিরাট প্রভাব পড়তে পারে রুশ অর্থনীতিতে। আবার নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও তার ঘনিষ্ঠজনদের বিরুদ্ধে। এদিকে পশ্চিম ইউরোপে রাশিয়া যে জ্বালানি বিক্রি করে, সেটি বন্ধ করার কথাও আলোচনায় আসছে। রাশিয়া বিশাল এবং এখনো বিশ্বের ২য় পরাশক্তির দেশ যার উপর তেল-গ্যাস-সার-সামরিক-কৃষি সহ নানা ক্ষেত্রে দুনিয়ার বহুদেশ নির্ভরশীল এবং এসব ক্ষেত্রে খুব বেশী রাশিয়ার বিকল্প এখন পর্যন্ত আমেরিকা-ইউরোপ বা অন্য দেশগুলোর নেই। তবে ব্যাপার যাই হোক রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা দেশগুলোর অবরোধের ফলে বা তারা রাশিয়াকে শাস্তি দিতে গিয়ে এখন নিজেরাই জ্বালানি সংকট সহ মুদ্রাস্ফীতি সহ আরো বহু সমস্যায় জর্জরীত এবং এসব সমস্যা কতদূর পর্যন্ত যাবে তা নিয়ে কারো কোন ধারনা নেই।

বাইডেন আসলে কি চেয়েছেন বা কি আশা করেছিলেন ?

বাইডেন হয়ত আশা করেছিলেন , অর্থনৈতিক ও সামরিক ব্যবস্থা নিয়ে যেভাবে ইরাক-লিবিয়া-আফগানিস্তানকে ধ্বংস করা সহ তাদেরকে অল্প সময়ের মাঝেই দীর্ঘ মেয়াদে সব দিক দিয়ে পংগু করে দিয়েছিলেন সেভাবে রাশিয়াকেও পারবেন।আর তাই বাইডেন হয়ত আশায় ছিলেন এবং ধরে নিয়েছিলেন যে, রাশিয়া যদি তেল-গ্যাস বেচতে না পারে এবং তার ট্রিলিয়ন ডলার সম্পদ আটকে গেলে রাশিয়ার কিছুই করার থাকবে না, সব স্তব্ধ হয়ে যাবে। অথচ আমেরিকার মত দেশের একজন প্রেসিডেন্ট এসব মনগড়া অনুমানে কি করে চলতে পারেন?আর তিনি এটাও ভেবে দেখেননি যে, ইরাক-লিবিয়া-আফগানিস্তান আর রাশিয়া এক নয়। বাইডেনের অনুমান অবশ্য কিছুটা সত্য হয়েছে এতে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু তিনি শুধু ঘটনার একটি দিক নিয়ে ভেবেছেন। অন্য দিকের খবর তিনি নেননি বা ভাবেন নি । দুনিয়ার সব বেচা-বিক্রি মানেই যে একপক্ষীয় এমন নয়। কারণ যেটা বেঁচা সেটিই আরেক দিক থেকে কেনা। এখানে দুটি পক্ষই জড়িত থাকে । কাজেই রাশিয়া বেঁচতে না পারলে যেমন রাশিয়ার বিপদ, তেমনি বিপদ জ্বালানি ক্রেতারও। বাইডেন এ দিকটা ভেবে দেখতেই চাননি। যার ফলে বাস্তবতা হলো, ক্রেতা ইইউর সব সদস্যের জন্যই এটি বিক্রেতা রাশিয়ার মতোই সমান সঙ্কটের। যদি ইউরোপ রাশিয়ান তেল-গ্যাস না কিনে কাতার বা অন্য কোথাও থেকে কিনতে চায় তা হলে সেই বিকল্প জ্বালানি যদি পাওয়াও যায় তবু সেটি তাদের জন্য বিপদেরই হবে। কারণ তার জন্য অবকাঠামো কোথায়? আর মূল্য কতটা দিতে হবে , তা নিয়ে তারা মনে হয় ভেবেও দেখেনি।

আমেরিকা-ইউরোপ কাতার বা ভেনিজুয়েলা থেকে গ্যাস-তেলের জন্য এখন নতুন করে বিকল্প ব্যবস্থা করা-পাইপলাইন বসাতেও তো কিছু সময় থেকে কয়েক বছর লাগবে। এ সময় কিভাবে চলবে ইউরোপ বা আমেরিকা ? এসব প্রশ্নের জবাব মনে হয়না বাইডেন কিংবা ইউরোপের নেতাদের কাছে আছে। আর সামনে আছে শীতকাল । এসময় রাশিয়া যদি তার শেষ তুরুপের তাস (গ্যাস সরবরাহ ইউরোপে পুরো বন্ধ ) ব্যবহার করে তাহলে এই শীতে তুষার-বরফের হাড়কাপানো শীতের মাঝেও গ্যাসের অভাবে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপে ই্উরোপের কত শাসকের পতন ঘটে ( ইতিমধ্যেই ইংল্যান্ড ও ইতালিতে সরকারের পতন হয়েছে) তা সময়েই বলে দেবে।

যুদ্ধে জেলেনস্কি হারবেন এটা নিশ্চিত। কারন, রাশিয়া আর যাই হোক, যুদ্ধে রাশিয়াকে আমেরিকা-ইউরোপ হারাতে পারবে এ আশা কেউ করেনা। আর তাইতো পুতিন সরাসরি ঘোষনা দিয়েছেন যে, " যদি আমেরিকা-ইউরোপ যুদ্ধে রাশিয়াকে হারাতে পারে তবে হারাক"।আবার রাশিয়া বার বার বলছে ইউক্রেন দখলের বা তার সরকার পরিবর্তনের কোন ইচছা রাশিয়ার নেই। রাশিয়া শুধু কিছু জিনিষের নিশ্চয়তা চাচছে ইউক্রেন থেকে । যখনই ইউক্রেন তার শর্ত মানবে তখন থেকেই পুতিন যুদ্ধ বন্ধ করে দিবেন। আর তাইতো ক্রেমলিনের মুখপাত্র বলেছেন,"ইউক্রেনকে দেয়া শর্ত পূরণ হলেই মুহূর্তের মধ্যে রাশিয়া থেমে যাবে"।

রাশিয়া যুদ্ধ থামানোর জন্য ৩ টি শর্তের কথা বলেছেন যেগুলো আগেও রাশিয়া-ফ্রান্স আলোচনায় পুতিন স্পষ্ট করে বলেছিলেন।পুতিনের শর্ত তিনটা হলো-

১। ইউক্রেন নিরেপেক্ষ হয়ে যাবে । এ জন্য তার কনস্টিটিউশন সংশোধন করে এ কথাগুলো সেখানে ঢুকাবে। অন্য ভাষায় রাশিয়ার নিরাপত্তাবোধে অভাব সৃষ্টি করবে না, ন্যাটোর সদস্য হতেও আর চেষ্টা করবে না।
২। রাশিয়া ইউক্রেনকে অসামরিকীকরণের কাজ শেষ করবে।
৩। বিচ্ছিন্ন দুই প্রদেশ যার বাসিন্দারা এথনিক রাশিয়ান, সে দুই আবাসভূমিকে স্বাধীন দেশ বলে ইউক্রেন মানবে এবং ক্রাইমিয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে রাশিয়ার সাথে যুক্ত হওয়াকেও মেনে নেবে।


এ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে আমেরিকা চেয়েছিল সারা দুনিয়াকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে এক করতে , তবে জি ৭ এবং ইউরোপ ব্যতীত আর কাউকে সাথে পাননি বাইডেন। ইতিমধ্যেই ইউক্রেন - রাশিয়া যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সারা দুনিয়া দৃশ্যত দু ভাগ হয়ে গেছে তারপরও রাশিয়াকে একেবারে আলাদা করা কোন ভাবেই আমেরিকার পক্ষে সম্ভব হবে বলে মনে হয়না। আবার এ যুদ্ধকে কেন্দ্র করে সারা দুনিয়া খাদ্য - জ্বালানী ও মুদ্রাস্ফীতির সংকটে দিশেহারা। আই এম এম,বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘ বার বার এ ব্যাপারে সর্তক করলেও বিবদমান কোন পক্ষই তাতে কর্ণপাত করছেনা। এর ফলে আফ্রিকা সহ গরীব দেশগুলোতে খাদ্য ও জ্বালানী সংকটে যে সামাজিক সমস্যার তৈরী হবে তা কতটা দুনিয়ার জন্য সহায়ক হবে তা সময়ই বলে দিবে , তবে ভাল কিছু যে কারো জন্যই নেই তা নিশ্চিত।

আর এ সব সমস্যার আশু সমাধানের জন্য আমেরিকা-ইউরোপের উচিত রাশিয়াকে টেনে নামানোর জেদ/চেষ্টা বাদ দিয়ে তার উদ্বেগকে বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে দেখে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করা এবং রাশিয়ারও উচিত ইউক্রেনের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বকে ঠিক রেখে দ্বি - রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের দিকে নজর দেয়া। আর এর ফলেই হয়ত উভয়ের সম্মান-মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি ইউক্রেন - রাশিয়া মুক্তি পেতে পারে এ যুদ্ধ থেকে এবং বিশ্ব মুক্তি পেতে পারে মানবিক-অথনৈতিক বির্পযয় থেকে।

তথসূত্র - এএফপি,বিবিসি,রয়টার্স,আল জাজিরা,সিএনএন।

==================================

পূর্ববর্তী পোস্ট -

"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (৩য় পর্ব) Click This Link
"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (২য় পর্ব) Click This Link
"রাশিয়া - ইউক্রেন যুদ্ধ" - (১ ম পর্ব) Click This Link
এবং
" ইউক্রেন সংকট " - (শেষ পর্ব) - Click This Link
" ইউক্রেন সংকট " - ২ য় পর্বের লিংক - Click This Link
" ইউক্রেন সংকট " - ১ ম পর্বের লিংক - Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুলাই, ২০২২ দুপুর ২:৪৬
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×