somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধোঁয়া ধোঁয়া ভালোবাসা........... পর্ব- ১২

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব- ১
পর্ব- ২
পর্ব- ৩
পর্ব- ৪
পর্ব- ৫
পর্ব- ৬
পর্ব- ৭
পর্ব- ৮
পর্ব- ৯
পর্ব- ১০
পর্ব- ১১

> তোমাকে দেখে তো চিনতেই পারিনি। অনেক পাল্টে গেছো।
> কেনো ভূতের মত লাগছে নাকি? ভয় পেয়েছো?
> আরে না, কিযে বলো! হা হা...
> তাহলে কেমন লাগছে দেখতে? প্রিন্সের মত নাকি?
> হুউউউউম এতো বাড়িয়ে বলবো না। তবে প্রিন্সের কাছাকাছি...
> যাক তাও ভালো। বিয়ের সময় আশা করি ঝামেলায় পড়বো না! তা তোমার কি খবর বলো, অনার্স কমপ্লিট হতে আর কয়দিন?
> এইতো আর এক বছর। আরো বেশী সময়ও লাগতে পারে। ভার্সিটির যা অবস্থা, ভীষন গ্যাঞ্জাম। তোমার খবর বলো, কি করছো?
> আমার আর খবর... বিদেশে থাকি, খাই-দাই, পড়াশোনা করি, জব করি, ঘোরাঘোরি করি আর দিন শেষে মেষের মত ঘুমাই!
> হা হা হা! তা কদিন পর দেশে আসলে?
> প্রায় সাড়ে তিন বছর পর। এসময় আসতাম না। আসিফ দুইমাস আগে ফেইসবুকে স্কুলের রিইউনিয়নের ইভেন্টে ইনভাইট করেছিলো। ভাবলাম চলে আসি, সব ফ্রেন্ডদের সাথে দেখা করে যাই....
> তুমি রিইউনিয়নে এসছিলে.....???? কই তোমাকে তো দেখলাম না!
> হুউউউউউম আমি জানি তুমি দেখোনি। ইচ্ছে করেই লুকিয়ে ছিলাম।
> আরে এটা আবার কেমন কথা!
> নিজেকে আড়ালে রেখে কিছু কিছু বিষয় দেখতে খুব ভালো লাগে
> মানে?
> কিছু না, এমনি বললাম...


বর্ষন যে এখন অ্যামেরিকাতে থাকে তিতলি জানতোই না। তিতলি আসলে আজকে ভীষন excitement এর মধ্যে আছে। তার আজকে সবকিছুই ভালো লাগছে।

বিকেল থেকেই তিতলি আর বর্ষন ঘুরে বেড়াচ্ছে। ঘুরতে ঘুরতে চারুকলার দিকে গেলো।

> তা তিতলি আজকাল প্রেম-টেম করা হয় নাকি?
> আরে ধুর, প্রেম করার সময় কই!
> হুউউউউম তাই নাকি! নাকি আড়ালে-আবডালে প্রেম চলে?
> আরে না, সিরিয়াসলি প্রেম-টেম করি না। প্রেম তো তোমার করার কথা। অ্যামেরিকান গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি?
> আরে আমার কপাল কি আর অতো ভালো! তারা তো আমার দিকে ফিরেও তাঁকায় না। ঐগুলা সব খাটাশ, এদের সাথে প্রেম চলে না। দেখি বাঙালি কোনো মেয়ে যদি এবার একটু চান্স দেয়.....
> হুউউউউম... আচ্ছা বর্ষন একটা ব্যাপার খেয়াল করেছো?
> কি?
> আমরা আগে "তুই, তুই" করে কথা বলতাম। কিন্তু এখন "তুমি, তুমি" করে কথা বলছি।
> কেনো তোমার কি এভাবে কথা বলতে খারাপ লাগছে? আমার তো বেশ ভালোই লাগছে। [মুচকি হেসে বললো]
> না খারাপ লাগার মত কিছু না।
> কিছু কিছু সম্পর্কের মাঝে "তুমি" করে কথা বললে সম্পর্কটা কেমন যেন মধুর হয়ে যায়... [রহস্যময় মুচকি হাসি]

........................

"মেয়ে তুমি বড় অদ্ভুত,
তুমি অদ্ভুত এক রাজকন্যা।
তোমায় ছুঁতে গিয়েও ছুঁতে পারি না...."

মিথুনের আজকাল কোনো কাজেই মন নেই। সারাক্ষনই তিতলিকে নিয়ে ভাবছে। অফিসে বসে বসে নোটপ্যাড হাতে নিয়ে দু, চার লাইন কবিতাও লিখে ফেলছে। বোঝা যাচ্ছে ছেলেটা ভালো রকমের প্রেমে পড়েছে....!!!

রাতে খাওয়ার সময় ডাইনিং রুমে গিয়ে তো মিথুন মহাখুশি। তার পছন্দের সব খাবার দিয়ে ডাইনিং টেবিল সাজানো। সরষে ইলিশ, গলদা চিংড়ি ভূনা, চিংড়ি মাছের ভর্তা, টাকি মাছের ভর্তা, বুটের ডাল দিয়ে গরুর মাংসের তরকারি, মুরগীর কোরমা আরো অনেক কিছু.......
> ব্যাপার কি মা, হঠাৎ এত কিছু রান্না করলা?
> করলাম, তোর পছন্দের খাবার তো কতদিন রান্না করি না.......
> এটা কোনো কথা! তোমার হাতের সব রান্নাই আমার পছন্দের।
> আচ্ছা ঠিক আছে। খা এখন, খেতে বসে এত কথা বলতে হয় না।

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বারান্দায় ইজি চেয়ারে গিয়ে বসলো। কিছুক্ষন পর কফির মগ হাতে মিথুনের মা বারান্দায় গেলো। ছেলের হাতে একটা কফির মগ দিয়ে, নিজে একটা মগ নিয়ে মিথুনের পাশের চেয়ারটায় বসলো।
> মা তুমি এখনো জেগে আছো কেনো? কত রাত হয়েছে দেখেছো? যাও ঘুমুতে যাও।
> সবসময় তো আগে আগেই ঘুমাই, আজকে নাহয় একটু রাত জাগলাম। তোর সাথে তো আজকাল একটু কথাও বলা যায় না, আগে কত গল্প করতাম.......
> আচ্ছা ঠিক আছে, তবে খুব বেশিক্ষন না।
> আচ্ছা মিথুন ভাবছিলাম তোর বিয়ের ব্যাপারটা সেরে ফেলবো।
> মা তুমি যে কি বলো!
> খারাপ কি বললাম!?! এখনই তো তোর বিয়ের সময়। এই বয়সে বিয়ে করবি না তো কি বুড়োকালে বিয়ে করবি!
> হা হা হা..... আমি কক্ষনো বুড়ো হবো না!
> হয়েছে ঢং বাদ দে। এখন বল মেয়ে দেখা শুরু করবো কিনা, তোর পছন্দের কেউ থাকলেও বলতে পারিস।
> এত অস্থির হয়ো না তো মা। বিয়ে তো করবোই। পছন্দের কেউ তো আছেই, তোমার কষ্ট করে মেয়ে খোঁজা লাগবে না। আরেকটু সবুর করো, ঐ পছন্দের মেয়েকে তোমার সামনে হাজির করবো।
> আর কবে যে হাজির করবি............

........................

রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষ করেই তিতলি ফেসবুকে বসলো। বর্ষনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করেই বর্ষনের সাথে চ্যাট শুরু করে দিলো।
> kalke ki free acho?
> versity te kichu kaj ache. keno?
> na amni. dinner shesh?
> hmm. tomar?
> done...

"জুলেখা, মা জুলেখা''
ডাক শুনে বাবার রুমের দিকে গেলো তিতলি।
> বাবা ঘুমাওনি এখনো?
> এদিক আয় তো মা
> কি হয়েছে বাবা?
> তোর কি কোনো অসুবিধা হচ্ছে?
> হঠাৎ এই কথা কেনো বাবা? আমার আবার অসুবিধা কিসের?
> আচ্ছা ঠিক আছে। ঘুমুতে যা, অনেক রাত হয়েছে।

আজকাল মেয়েকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছেন ইকবাল সাহেব। সেদিন রাতে তাঁর স্ত্রীর সেই কথা শোনার পর থেকে দুশ্চিন্তা অনেক বেড়ে গেছে...........


(চলবে......)
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×