ডলার সংকটের কারণে কয়লার দাম দিতে না পারায় সাময়িকভাবে বন্ধ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কয়লা না থাকায় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দু’টি ইউনিটের একটিতে গত বৃহস্পতিবার থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে।পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় কয়লা কিনতে ঋণ দেয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির চীনা অংশীদার চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি) ।কয়লা আমদানির বকেয়া বিল না দিতে পারার কারণে নতুন করে কয়লা কেনা যাচ্ছে না। ২৪৮ কোটি টাকা প্রকল্প ব্যায়ে নির্মিত এই বিদ্যূৎকেন্দ্র বন্ধ থাকলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে পিডিবি।
সুত্র ঃ বিবিসি বাংলা
প্রশ্ন হচ্ছে কয়লা আমদানির বিল বকেয়া পড়ার কারন কি? কয়লা কেনার ঋন দিচ্ছে চীন , তাহলে টাকার সরবরাহতো আছেই। জনগনও নিয়মিত বিদ্যূৎ বিল পরিশোধ করে। সুতরাং এই ক্ষেত্রে এই ডলার সংকটের অজুহাতটা কতটা যৌক্তিক? কয়লা কিনতে চীন থেকে পাওয়া ঋনের টাকা কোথায় গেল? সড়ক, ব্রীজ , বিদূৎকেন্দ্র , মেট্রো রেল নির্মান আমাদের দেশে উন্নয়নের সংজ্ঞা!! সভ্য দেশের উন্নয়ন শব্দটার সাথে আমাদের দেশের সংজ্ঞার যত পার্থক্যই থাকুক না কেন, মানুষ যদি কিছুটা উপকৃতও হয় এই কথিত উন্নয়নে, তাহলে সেটাতেই অনেক খুশি আমাদের দেশের মানুষ। কিন্ত সেটাও দুরাশা এই দেশে। কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে বিদ্যূৎকেন্দ্র স্থাপিত হয় কিন্ত তাও লোড শেডিং এ চরম দুরাবস্থার শিকার এই দেশের মানুষ। ব্রীজ, ফ্লাই ওভার,মেট্রো রেল নির্মানেও এতটূকু সুরাহা হচ্ছে না ট্রাফিক জ্যামের। তাহলে কেন বার বার কুমিরের বাচ্চা দেখানোর মত এই উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয় আমাদের সামনে? মানুষ যদি উন্নয়নের সুফল ভোগ নাই করতেই পারে , তাহলে কোন সে উন্নয়ন ?
উন্নত দেশে নিরবিচ্ছিন বিদ্যূৎ নিশ্চিত করারা পাশাপাশি তাপমাত্রা কন্ট্রোলে রাখার জন্য '' ন্যচারাল ওয়াটার সাইকেল'' এর ওপড় নির্ভর করা হয়।'' ন্যচারাল ওয়াটার সাইকেল '' যদি সঠিকভাবে কাজ করে তবে গরম বাড়লে বৃষ্টিও নিয়মিত হয়। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারনে বিশ্বব্যপী বিদ্যূৎের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে । কয়লা, পেট্রোলিয়াম জাতীয় ফসিল ফুয়েল ব্যবহার করে বিদ্যূৎ উৎপাদনের কারনে বাতাশে বাড়ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমান এবং এই গ্যাসের আধিক্যে বাড়ছে তাপমাত্রা । আর তাই উন্নত দেশে ফসিল ফুয়েল বিদ্যূৎ উৎপাদনে ব্যবহার কমিয়ে সোলার , ওশান ওয়াটার ইত্যাদি বিকল্প জ্বালানীও ব্যপকভাবে ব্যবহ্রুত হচ্ছে। আমাদের দেশে বহু বছর আগে কাপ্তাই জলবিদ্যূৎ কেন্দ্রই কেবল স্থাপিত হয়েছে। এছাড়া নতুন করে আর কোথাও জলবিদ্যূৎ কেন্দ্র নির্মিত হয়নি। বিগত কয়েক বছরে আমাদের দেশে বৃষ্টির পরিমান আশংকাজনক ভাবে কমছে যার অর্থ হচ্ছে ন্যচারাল ওয়াটার সাইকেল কাজ করছে না। এর জন্য দায়ী অপরিকল্পিত নগরায়ন , বনভুমি হ্রাস ও নদ নদির নাব্যতা না থাকা। আর তাই ৪০ ডিগ্রীর উপর তাপমাত্রা , অনাবৃষ্টি ও মরুভুমির ন্যায় আবহাওয়া বিরাজ করছে আমাদের মৌসুমী জলবায়ূর দেশে ।
রাস্ট্রীয় ব্যপক সংস্কার প্রয়োজন আমাদের দেশে। দিন দিন জীবন যাত্রা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। দক্ষ ও সৎ মানুষ দ্বারা রাস্ট্র পরিচালিত না হলে মানুষের কষ্ট সামনে আরো বহুগুনে বাড়বে।