somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আশ্রমের মিলন মেলায় প্রায় শতভাগ তৃপ্তি

২৩ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৫:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গত ৫ তারিখে আশ্রমে আগামীকাল মিলন মেলা পোস্টো জানিয়েছিলাম আশ্রমে মিলন মেলার আয়োজন চললছে। ঠিক তার পরদিন অর্থাৎ ৬ই আগষ্ট ২০২২ রোজ শনিবার মিলন মেলাটি প্রায় শতভাগ সফলাতার সাথে সমাপ্ত করা গেছে।


প্রথমে লোক সংখ্যা ৩৫ থাকার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত দেখা গেলো দাওয়াতীর সংখ্যা ৫০+ হয়ে গেছে। আমাদের ট্রলারের ধারন খমতা ৪৫+। আমাদের ১৫ জন যাবে মটর সাইকেল-প্রাইভেট কারে। ফলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। ট্রলার আগেই ঠিক করে রাখা হয়েছে।

কথা ছিলো সকাল ৯টায় সবাই বেরাইদ বোট ঘাটে উপস্থিত থাকবে। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি পরছে। ৯টা পার হয়ে গেলো এলাকাতেই। যাওয়ার পথে বাজার থেকে ৫ কেজি পেয়ারা কিনে নিলাম। কোক-পানি-খাবার সব কিছু নিয়ে যখন বোট ঘাটে পৌছেছি তখন দেখা গেলো অনেকেই আসেনি। এমনকি ট্রালার ওয়ালারও খবর নেই। ১০ মিনিট পরে ট্রলার আসলে দেখা গেলো ট্রলারের উপরে চান্দিনা থাকলেও চেয়ার নেই। আমি তখন আরেকজনকে সঙ্গে নিয়ে ডেকেরেটরের লোকের সাথে যোগাযোগ করে তার গোডাউন থেকে তালা খুলে ২টি রিক্সায় করে ২৫টি চেয়ার নিয়ে এলাম। সবাই যখন ট্রলারে উঠেছে তখন গুনে দেখা গেলো মাত্র ২৭ জন। বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকজন বাদ পড়েছে। বাকিরা চলে আসবে নিজ নিজ বাহনে চেপে আশ্রমে।















প্রায় ঘন্টা দেড়েকের যাত্রা শেষে আমরা পৌছে গেলাম উলুখোলা ঘাটে। সামনের দিকে আর যাওয়ার চেষ্টা করলাম না। কারণ গতকাল সেখানে আমাদের আরেক টিম যাওয়ার চেষ্টা করে ফেরত এসেছে। অনেকটা পথ কচুরি পানায় ভরে আছে। কোনো ভাবেই যাওয়া সম্ভব না। তাই আমরা ট্রলার থেকে নেমে ইজি বাইকে করে রওনা হলাম আশ্রমের পথে। ১৫ মিনিট গ্রামের গাছপালা ঘেরা পথে ছুটে পৌছতে হয় আশ্রমের সামনের রাস্তায়। সেখান থেকে নেমে ১০মিনিটে পাঁয়ে চলা মেঠো পথে এগুতে হয় শশ্মান পেরিয়ে, মাঠ পেরিয়ে আশ্রমে।



সকলেই সহি-সালামতে পৌছে যাই আশ্রমে। সকালে বুষ্টি হয়েছে, যদিও এখন রোদ, তাই মাটি অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। অলরেডি যোহরের ওয়াক্ত হয়ে গেছে। নামাজীরা ওযু করে নামাজে দাঁড়িয়েছেন। আশ্রমের চাচী তখন লেবু চিপে এক বালতি লেবুর শরবত তৈরি করে ফেলেছেন। ছোট ছোট ওয়ান টাইম গ্লাসে প্রতিজন কয়েক গ্লাশ করে লেবুর শরবত পান করলেন তৃপ্তি সহকারে।

একদল দুপুরের কড়া রোদে নেমে গেছেন ফুটবল খেলতে। দুই দল বসেছে তাস নিয়ে। যদিও আশ্রমে তাস খেলা নিষিদ্ধ তবুও আমরা কিছু বলি নাই, কারণ টাকা ছাড়া খেলা হচ্ছিলো। সিনিয়ারদের এক গ্রুপ অনেক বছর পরে একসাথে হয়ে জম্পেস আড্ডা শুরু করেছে। ৩০-৩৫ বছরের পুরনো গল্পে মজে আছেন তারা। গ্রাম ঘুরে দেখার কথা বেমালুম ভুলে গেছেন।



চুলায় তখন ৫ সের গরুর দুধ জাল করে ঘন করে পায়েস রান্না হচ্ছে। এরই মধ্যে সালাদ তৈরির চাপে পায়েস নাড়া দিতে ভুলে যাওয়ায় তলায় বেশ খানিকটা লেগে যায়। পুড়ে যাওয়া অংশ টুকু ধীরে ধীরে ফেলে দেয়ার পরে আমি খেয়ে চেখে দেখলাম পোড়া গন্ধ নেই। আমি যখন পোড়া গন্ধ পাইনি তখন অন্য কেউও পাবে না সেটা শিওর। পায়েসের পর্ব হবে সব শেষে এখন শুরু খাওয়ার পর্ব। মাঠে থাকা খেলোয়ারদের বাদে বাকিদের বিফ কাচ্চি পরিবেশন করা হলো। সাথে সালাদ, কোমল পানীয়। উপর নিচ মিলিয়ে প্রায়৩০ জন একসাথে লাঞ্চ সরলো।






খেলোয়ার গ্রুপ ঘন্টা দেড়েক খেলে একটিও গোল দিতে পারলো না। আকাশে তখন চকচকে রোদ। এই রোদের মধ্যে খেলে সকলেই ঘেমে একাকার। এরা মাঠ ছেড়ে ফিরে এসে ১৭০ ফুট নিচ থেকে তোলা শীতল জলে গোসল করে খাবার খেয়ে নিলো।






এর আগেই শুরু হয়েছে পায়েস খাওয়া। দেখতে দেখতে আছরের সময় হয়ে এলো। এর মধ্যে পেয়ারা পরিবেশনের সময় দেখা গেলো যার কাশুন্দী আনার কথা তার ব্যাগে সেটি নেই। অনেক খুঁজেও কাশুন্দী না পেয়ে কাচা মরিচ আর লবন দিয়ে মাখা হলো। পেয়ারা শেষে আসলো আমড়া মাখা। তারপরে এলো গাছ পাঁকা কাঁঠাল। আমড়া শেষ হয়ে গেলেও পেয়ারা আর কাঁঠাল রয়ে গেলো অনেকটাই। টান পরলো পায়েসে। কেউ কেউ একাধিকবার নিয়েছে, খুব বেশী স্বাদ হওয়ার ফল এটি।









আছরের নামাজ শেষে পরিবেশন করা হলো ৫ সের গরুর দুধের কফি। অসাধারণ স্বাদ হয়েছিলো। এটাও প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিলো।



এবার ফেরার পালা, ফোন করে ৫টি ইজি বাইক আসতে বলা হলো। সেগুলিতে করে উলুখোলা বাজারে। সকলে মিষ্টি-দই- রস মালাই- আমিত্তি কিনে ট্রলারে উঠে বাড়ির পথে রওনা হলাম।





বিশেষ ঘোষণা : ঐদিন বেশ ব্যস্ত থাকার কারণে আমি ছবি তোলার সময় পাইনি। শুধু মাত্র দ্বিতীয় ছবিটি ও ফুটবল খেলার ২টি মোট এই ৩টি ছবি আমি তুলেছি। বাকি ছবিগুলি অন্যদের ফেসবুক থেকে নেয়া। অসতর্কতা হেতু প্রতিটি ছবিতেই মরুভূমির জলদস্যু ছাপ পরে গেছে।


=================================================================
আশ্রমের কথা :
আশ্রম নিয়ে সামুতে প্রথম পোস্ট : প্রায় কাল্পনিক একটি রাতের চিত্র
বৃষ্টি বিলাস
গল্প কিন্তু গল্প না
বর্ষার জলে অবগাহন চিত্র
শীত বিলাস ২০২২
এবার আগাম জোয়ার এসেছে!!
আশ্রমের পুকুরে দ্বিতীয় দফায় মাছ ধরা হলো
আবার কোনো দিন বৃষ্টিতে ডুব দিবো পুকুরের জলে....
আবার কোনো দিন বৃষ্টিতে ডুব দিবো পুকুরের জলে.... (ছবি ব্লগ)
আশ্রম বিলাস
আশ্রমে গিয়ে বিপাকে
আশ্রমে দিন-রাত্রি
আশ্রমে আগামীকাল মিলন মেলা

আশ্রম ভ্রমণ ও একটি ভৌতিক অভিজ্ঞতা - অপু তানভীর
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০২২ বিকাল ৩:৩৩
২২টি মন্তব্য ২৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×