এখন সময় সকাল ৭:৪৯ ( নিউইয়র্ক সময় ), আমি ফাইন্যান্সিয়াল চ্যানেল দেখছি, দেশের অন্যতম ষ্টকমার্কেট সুচক, ডাও জোনস ( Dow Jones Industrial Average ) ফিউচার ৫৮৮ পয়েন্ট নীচে নেমে গেছে; মার্কেট সুরু হবে সকাল ৯:৩০ টায়। ডাও জোনস দেশের অর্থনীতি ও ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টরের জন্য থার্মোমিটার; ইহা ১০০ পয়েন্টের নীচে নেমে গেলে সেদিন মার্কেটের অবস্হা বেশ খারাপ হিসেবে নেয়া হয়।
আজকে ডাও'কে নীচের দিকে টেনে নামিয়েছে ব্যাংকিং সেক্টর, বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ব্যাংকগুলো; ইউরোপিয়ান ব্যাংকগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশী পড়ে গেছে "ক্রেডিট সুইস", ইহা পড়েছে ২৯%; ইহা ভয়ংকর বিপদের পুর্বাভাস। সবচেয়ে কম পড়েছে স্পেনিশ ব্যাংক "সেনটেনডার" (-৭% ); ইউরোপের অবস্হা ভালো নয়।
গত শুক্রবার আমেরিকার ১টি বড় শিল্পব্যাংক, সিলিকন ভেলী ব্যাংক ফেল করেছে; ইহার সম্পদের পরিমাণ ছিলো ১৯২ বিলিয়ন ডলার; সরকারের একটি সিকিউরিটি সংস্হা, FDIC ইহাকে দখল করে নিয়েছে। ইহা বাংলাদেশের ব্যাংকের মতো নিজের ক্যাপিটেলের বড় অংশ হারায়েছে: ২দিনে ইহার শেয়ারের মুল্য ২৬৮ ডলার থেকে ১০৪ ডলারে এসে যাবার পর, ইহার বেচাকেনা বন্ধ করে দেয় ষ্টক-মার্কেট, এবং ব্যাংকটির মালিকানা আপাতত কেড়ে নেয়া নয়েছে।
সিলিকন ভেলী ব্যাংক'এর এই অবস্হা হয়েছে "ইনফ্লেশান বন্ধ করার জন্য সুদের হার বাড়ানোতে"; দেখা যাচ্ছে যে, ইহার পতনের মুলে সরকারও দায়ী। এই ব্যাংটি নিজের আয়ের সোর্চ হিসেবে সরকারী ও বেসরকারী বন্ড কিনে রেখেছিলো; তারা ৯০ বিলিয়ন ডলারের বন্ড কিনে রেখেছিলো। গত সপ্তাহে তারা ২৬ বিলিয়ন ডলারের বন্ড কমদামে বিক্রয় করার পর, গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে, এই র্যাংক আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে পারবে না; তখন মানুষ টাকা তোলার শুরু করে; কিন্তু ব্যাংকের অনেক টাকা ঋণ হিসেবে দেয়া থাকায় ও বন্ডে বিনিয়োগ থাকায় তারা তারল্য সমস্যায় পড়ে, উহা প্রকাশ হওয়ার পরপরই তাদের শেয়ার মুল্য পড়তে থাকে;২ দিনের মাঝে শেয়ারের মুল্য ১৬৪ ডলার কমে যায়।
সিলিকন ভেলী ব্যাংকের পতনের ফলে, আরো ২০টির মতো ব্যাংকের শেয়ার গড়ে ৪০% ভাগের নীচে পড়ে যায়; একই সাথে, তাদের ব্যাংকে যেসব কর্পোরেশন টাকা আমানত রেখেছিলো, তাদের শেয়ারের মুল্য পড়ে গেছে; ইহাকে "ডোমিনো এফেক্ট" বলা হয়, যা পুরো ফাইন্যান্সিয়াল এলাকায় ছড়ায়ে পড়ার সম্ভাবনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৫৪