শেখ সাহেবের রাজনীতির সারমর্ম হলো, তিনি ২টি উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক কর্মসুচী প্রনয়ন করেছিলেন: (১) ৬ দফা (২) বাকশাল। বাংগালী জাতীয়তাবাদ যখন পাকিস্তানী সামরিক সরকারের বিপক্ষে দানা বেঁধে উঠেছিলো, তখন শেখ সাহেব ৬ দফা নিয়ে মাঠে নামেন; ইহা কাজ করেছে, দেশ স্বাধীন হয়ে গেছে। কিন্তু উনার এই বিখ্যাত কর্মসুচীর মাঝে ফ্রি শিক্ষার বিষয়টি ছিলো না, উহা ততকালীন কোন বাংগালীর মাথায় আসেনি। বাকশাল করলে, ফ্রি শিক্ষাটা এসে যেতো; কিন্তু ক্রিমিনাল মিলিটারী ২ পয়সার বিনিময়ে উনাকে হত্যা করলো।
দেশ স্বাধীন হওয়ার ৫ বছরের মাথায় দেশের শতকরা ১০০ ভাগ মানুষকে দরকারী বিষয়ে পড়ার ও লিখার মতো অক্ষরজ্ঞান দেয়া সম্ভব ছিলো, দরকার ছিলো; সরকার সেটি করেনি। স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুতে যারা সরকারের উঁচু পদে ছিলো, তাদের দায়িত্ব ছিলো সবাইকে অক্ষর-জ্ঞান দেয়া; কিন্তু তারা দরকারী এই পদক্ষেপটি নেয়নি; কিন্তু এসব লোকদের পরিবারের সবাই শিক্ষার আলো পেয়েছিল। দেশের বাকীদের অক্ষরজ্ঞান না'দেয়া ছিলো বেশ বড় ধরণের অপরাধ ও নীচু মানের দেশ চালনার উদাহরণ।
আজকেও দেশের শতকরা ৩০ ভাগ মানুষ লিখতে, পড়তে পারেন না; এদেরকে অক্ষরজ্ঞান না দিয়ে যারা ২১'এর ভোরে ভাষা দিবস নিয়ে মাতাাতি করে, তারা ২১'এর গুরুত্ব বুঝে না, এরা ভুয়া।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করেও অনেকেই সঠিক মতো লিখতে পারে না, অনেকেই নিজের লেখার মুল বিষয়কে তুলে ধরতে পারে না; ব্লগ ও বিবিধ সোস্যাল মিডিয়ায় তার প্রমাণ প্রতিদিন মিলছে। অনেকেই সঠিকভাবে লিখতে না জেনেও বই পর্যন্ত বের করে ফেলছে; বইমেলার বেশীরভাগ বই পাঠের অযোগ্য।
বাংলাদেশের মানুষ মুলত: ১ ভাষাতেই কথা বলেন, এবং বাংগালীদের ভাষা শেখার মেধা একবারে খারাপ নয়, তারা সহজেই হিন্দি ও উর্দু কথ্য ভাষা শিখে নেন। জাতি অবশ্য ইংরেজী নিয়ে বেশ কষ্টে আছে, স্কুলে গড়ে ৭/৮ বছর ইংরেজী পড়ার পরও এই ভাষায় গড়ে খুব একটা ভালো করে না। তবে, নিজেদের মাতৃভাষা, বাংলা ভাষা ভালোভাবে শিখতে পারার কথা।
সঠিকভাবে লেখার জন্য ভাষাকে ভালোভাবে রপ্ত করতে হয়; লেখার বিষয়কে সঠিকভাবে তুলে ধরার জন্য ভাষা ও বিজ্ঞান'এর উপর দখল থাকতে হয়। যারা সাহিত্য লিখতে চান, তাদেরকে আসলে অনেকটা ভাষাবদ, শিল্পী ও সংস্কৃতিতে জ্ঞানী হতে হয়, লেখা যেন ইন্টারেষ্টিং হয়, যেন মানুষের জীবনের কথা থাকে, পাঠককে যেন টানতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:৩০