করোনার কারণে চাকরী চ্যুতি,ব্যবসায়িক লোকসান,যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধসহ বিভিন্ন কারণে পৃথিবীর ৩০ থেকে ৫০ কোাটি লোক চরম দারিদ্রে পড়তে পারে বলে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বারবারই ঘোষণা দিচ্ছে।
বাংলাদেশের মতো দেশগুলির জন্য বিষয়সটা আরো বেশী বিপদজনক।
মানুষের প্রথম ও প্রধান মৌলিক চাহিদা খাবার।
চেষ্টা করলে খাদ্যসংকট প্রতিরোধ করা যেতে পারে।
কিন্ত বাংলাদেশের মানুষের খাবার অভ্যাসের যদি পরিবর্তন না হয়, তাহলে এই সংকট কমার পরিবের্ত আরো বেশী সৃষ্টি হবে।
বেশীরভাগ বাঙ্গালী তিনবেলাই রাক্ষসের মতো চামচ ছাড়া হাত দিয়ে নোংরাভাবে ভাত খাওয়ার হাভাতে স্বভাব ছাড়তে পারলে দেশের অনেক উন্নয়ন হতো।
আলু,রুটি,শাক-সব্জি-এসব বেশী খেলে ধানের উপর চাপ কমতো।
এদেশের মানুষের অতিরিক্ত ভাত খাওয়ার স্বভাবের কারণ ধান উৎপাদনে জমির উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ার ফলে দেশের উন্নতি বিঘ্নিত হচ্ছে। ধানের পরিবর্তে অন্যান্য অর্থকরী ফসল চাষ করা হলে জমির উপযুক্ত ব্যবহার হতো।
১ কেজি ভালো চালের দাম ৮০-১০০ টাকা কিন্ত ১ কেজি কুল,কমলার দাম ১২০-১৫০ টাকা।ক্যাপসিক্যামে, ষ্ট্রবেরি,ড্রাগণ ফলের দাম দাম কেজি ৩০০-৭০০ টাকা।
ভাত কম খেলে জমিতে ধানের পরিবর্তে এসব চাষ করলে কৃষক বেশী লাভবান হতো আর রপ্তানী করা হলে দেশও অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে পারতো।
কিন্ত এরা উন্নত দেশ থেকে মদ, জুয়া,ব্যাভিচার শিখবে,কিন্ত খাবার ক্ষেত্রে সেসব দেশকে অনুসরণ করবে না।
এই ব্লগেই অনেকে বিদেশে আছেন এবং প্রবাসের কর্মব্যাস্ত জীবনে তারা কিভাবে নিজেদের খাবারের অভ্যাস পরিবর্তন করেছেন,সেটা তাদের লেখাগুলি পড়লেই বোঝা যায়।
উপরের ছবিগুলিতে দেখেন,এক ভদ্রলোক সিদ্ধ চাল না দেয়াতে কর্তৃপক্ষের উপর কিরকম ক্ষুদ্ধ হয়েছেন।তার কথার প্রেক্ষিতে আমার উত্তরগুলিও দেখেন। দেশের এতোবড় সংকটে তাদের জন্য যে খাবার সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে,সেটার প্রশংসা না করে সে এবং তার সঙ্গী-সাথীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আতপ চাল দেয়াতে !!!!!
একমাত্র দরিদ্ররা ছাড়া বেশীরভাগ বাঙ্গালী তার শরীরে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশী পরিমাণে শর্করা খায়।এর মূল কারণ শরীরের ক্ষুধার চেয়ে মনের ক্ষুধা। অন্তত দুই প্লেট ভাত না খেলে বেশীরভাগ, লোকের মনের শান্তি হয়না।
বাঙ্গালীরা প্রতিবেলায় যে পরিমাণ ভাত খায়,চীন জাপান বা কোরয়িার মতো উন্নত দেশের লোকজন ৩ বেলাতেও এতোটা খায় না।তারা স্যুপের ১ বাটি পরিমাণ ভাত কিছুট শাক-সব্জি ও আমিষ সহ খায়।এবং তারা অবশ্যই হাত ব্যবহার করে খায় না,সবসময়ই চামচ বা চপষ্টিক দিয়ে খায়।
বাংলাদেশের লোকজনও বিদেশের গেলে চামচ দিয়ে খায় কিন্ত নিজের দেশের মধ্যে এই চর্চা করে খুব বেশী হলে ১২/১৫ লাখে ১ জন।
সেনানিবাসে অবস্থিত সেনামালঞ্চে বিয়ের দাওয়াতে গেলে যারা জীবনেও চামচ দিয়ে খাননি, তাদের কষ্ট করে হলেও সেটা খেতে হয়।
হাত দিয়ে খাওয়া শুধূ দৃষ্টিকটুই না,এটা অস্বাস্থ্যকরও।কারণ হাত ধুলেও সম্পূর্ণ জীবাণূমুক্ত হয় না।
সারাদেশেই এই প্রথা চালু করা উচিত।কারণ কোনো উন্নত দেশের লোকজন হাত দিয়ে খাবার খায় না। আর চামচ বা কাটাচামচও ইউরোপ-এ্যামেরিকার আবিস্কার না,এর আবিস্কারও এশিয়া ও আফ্রিকায়।
একই সাথে আসন্ন খাদ্যসংকট নিরসনে দেশের প্রতিটা এলাকার সব জমিতে চাষাবাদ করার জন্য গতো দুই মাস ধরেই পত্রিকা ও ব্লগে লিখে বলে আসছি। দেশের কয়েক হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ মহাসড়কগুলির পাশের সরকারী জমিতেও যদি শাক-সব্জি ও ফল চাষ করা যায়,তাহলেও প্রচুর পরিমাণ লোকের খাদ্যসংকটের সমাধান হবে।
ঢাকা থেকে যেসব বস্তিবাসী ও ভবঘুরে লোকে গ্রামে চলে গেছে,তাদের আর ঢাকায় ফেরত এনে শহরকে অতিরিক্ত ঘনবসতি পূর্ণ না করে সরকারী জমিগুলিতে কৃষিকাজে নিয়োজিত করা যায়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ এদেশের উবর্ব মাটি,যার লোভে সারা পৃথিবী থেকে খাদ্যের সন্ধানে মানুষ এসে এদেশে বসবাস বা লুটপাট করতে এসছিলো।
এখন এই মাটির উপযুক্ত ব্যবহারের মাধ্যমেই দেশকে খাদ্যসংকট থেকে মুক্ত করা সম্ভব।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:৪৪