[ এশিয়ান দল হিসেব হাতে গোনা অল্প কয়েকটি দল যারা প্রাচীন কাল থেকে ক্রিকেটে আছে তাদের মধ্যে হংকং অন্যতম। তারা ১৮৬৬ সালে সর্বপ্রথম ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে নেমেছিল। আইসিসির সদস্যপদ ও পায় তারা বেশ আগে, ১৯৬৯ সালে! বর্তমানে নন-টেস্ট প্লেয়িং এশিয়ান দলের মধ্যে তারা তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। তাদের দলে বেশকিছু প্রতিভাশীল ক্রিকেটার আছে। তাদের পরিচয় করিয়ে দেবার ক্ষুদ্র চেষ্টা ]
জেমি অ্যাটকিনসনঃ
এই লোক কে বলা যায় হংকং এর জাতীয় সম্পদ! ২০১৪ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে খেলতে এসে বাংলাদেশ কে তাদের মাটিতে হারিয়ে যায় হংকং, এর পেছনে সাহসি সিদ্ধান্ত নিতে পারার জন্য মূল অবদান জেমি'র!! অনুর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়কত্ব করা এই ক্রিকেটার কে ২০১৪ সালে দায়িত্ব দেয়া হয়। প্রথম মিশনে বাংলাদেশে এসেই বাজিমাত করে যান।
আন্তর্জাতিক ওয়ানডে তে পারফর্মেন্স কিছুটা ধূসর হলেও টি-২০ তে তার ব্যাট ভালই হাসে। ১০৮ স্ট্রাইক রেটে তার অর্জিত রান ১০০ এখন পর্যন্ত। এই উইকেট-কিপার ব্যাটসম্যান ২০০৯ সালে কাউণ্টি দল ডারহামের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০১৩ সালে আবারো ডাক পান কাউন্টিতে, এবার গন্তব্য ছিল ওয়ারউইকশ্যায়ার।
তার অধিনায়কত্বেই হংকং ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ানডে স্ট্যাটাস অর্জন করে। সাহসি এই কাপ্তান অনেকদূর এগিয়ে যাবেন আশা করা যায়।
মার্ক চ্যাপমেনঃ
হংকং দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ তিনি! হাতেগোনা যতজন হংকং এর মাটিতে জন্ম নেয়া ক্রিকেটার দলে আছেন তাদের মধ্যে তিনি আছেন কাপ্তান এর পরেই! বয়স মাত্র ২১ বছর, ইতিমধ্যেই দেশের মানুষের ভালবাসা অর্জন করে নিয়েছেন, সেইসাথে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ভালই নাম কামিয়েছেন।
ওয়ানডে স্ট্যাটাস পাওয়ার পর তিনি ২টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে খেলেন, অভিষেক ম্যাচেই আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে তুলে নেন শতক! অপরাজিত থাকেন ১২৪ রানে। অভিষেক ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটারদের মধ্যে ইতিহাসে মাত্র ২জনের স্ট্রাইক রেট শতকের উপর আছে, এদের মধ্যে মার্ক চ্যাপমেন একজন। বাকিজন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান গ্রেট ডেসমন্ড হেইন্স। ১১টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে তার সংগৃহিত রান ২৮২, স্ট্রাইক রেট ১১৪!! লিস্ট এ ম্যাচে তার ব্যাটিং গড় ৫৫ এর উপর!! বাহাতি এই ব্যাটসম্যানের মেধা সমপর্কে এরপর আর কোন প্রশ্ন থাকার কথা না।
২০১৫ সালে তাকে দলের সহ-অধিনায়ক হিসেবে মনোনিত করা হয়। তার সামনের পথ যে তার থেকেও উজ্জ্বল হবে তা দেখা শুধু সময়ের ব্যাপার।
নাদিম আহম্মেদঃ
পাকিস্তানে জন্ম নেয়া এই বাহাতি স্পিনারের অভিষেক হয়েছিল তার জন্মভূমির বিপক্ষেই! মাত্র ১৭ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তার। বর্তমানে তিনি হংকং এর পক্ষে সবচেয়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে উইকেটের মালিক!
৯টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে তে ১১টি উইকেট আছে তার ঝুলিতে। বোলিং ইকোনমি ৪.৬৩, টি-২০'র যুগে যা প্রশংসনীয় বটে। ১২টি আন্তর্জাতিক ২০ অভারের ম্যাচে তার উইকেট ৯টি, সেরা ফিগার ৪/২১!! হংকং এর বোলিং এর অন্যতম ভরষা তিনি। তিনি আরো এগিয়ে যাবেন এই আশা রাখি।
হাসিব আমজাদঃ
হংকং দলের পেস অ্যাটাকের মূল স্তম্ভ তিনি। পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি তে জন্ম এই ক্রিকেটারের, সেখানেই ক্রিকেটের হাতেখড়ি। ২০১৪ টি-২০ বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে বাংলাদেশের স্পিনিং উইকেটে দুর্দান্ত গতি তুলে প্রশংসা কুড়ান।
৬টি আন্তর্জাতিক ওয়ানডে তে তার উইকেট ১০টি! মূলত বোলার হলেও শেষের দিকে নেমে ভালই পিটাতে পাড়েন, স্ট্রাইক রেট ১২৯!! আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেটে ১২ ম্যাচে তার সংগ্রহ ১৯ উইকেট। প্রত্যাশা থাকবে তার বোলিংয়ের ধার দিনকে দিন বাড়তে থাকবে।
হংকং এর ক্রিকেটিয় ঐতিহ্য বেশ পুরোনো! তারা প্রতি বছর ব্যাতিক্রমি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট "সিক্স-এ সাইড" আয়োজন করে থাকে, যা সারা পৃথিবীর অবসরপ্রাপ্ত ক্রিকেট-দেবতাদের মিলনমেলায় পরিনত হয়! গত কয়েক দশকে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে হংকং এতটা এগিয়ে আসতে পারেনি। কিন্তু বর্তমানে তারা আবারো এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। ২০১৪ টি-২০'র মূল বাছাইপর্ব খেলে সেইবছরেই আবার ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ানডে স্ট্যাটাস পুনরুদ্ধার করে তারা। আশা করবো আরো সামনে এগিয়ে যাবে হংকং।
ছোট দলের তারকারা : একাদশ পর্ব(নামিবিয়া)
ছোট দলের তারকারা : দশম পর্ব(পাপুয়া নিউ গিনি)
ছোট দলের তারকারাঃ নবম পর্ব(স্কটল্যান্ড)
ছোট দলের তারকারা : অষ্টম পর্ব(সংযুক্ত আরব আমিরাত)
ছোট দলের তারকারাঃ সপ্তম পর্ব(নেপাল)
ছোট দলের তারকারাঃ ষষ্ঠ পর্ব(আয়ারল্যান্ড)
ছোট দলের তারকারা : পঞ্চম পর্ব(নেদারল্যান্ডস)
ছোট দলের তারকারা : চতুর্থ পর্ব(কেনিয়া)
ছোট দলের তারকারা : তৃতীয় পর্ব(বারমুডা)
ছোট দলের তারকারা : দ্বিতীয় পর্ব(কানাডা)
ছোট দলের তারকারা : প্রথম পর্ব(আফগানিস্তান)
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৩৬