শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বিএনপি নামে যে দল গঠন করেছিলেন, তা থেকে বিএনপির অবস্থান যোজন যোজন দুরত্বে। তবে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে সুশাষন প্রতিষ্ঠিত না করলেও বিএনপির বিরুদ্ধে জনগনের উপড় দমন, নীপিড়ন বা নির্যাতনের ইতিহাস নাই যেমনটা আওয়ামিলীগের বিরুদ্ধে রয়েছে। রাজনীতিতে খালেদা জিয়ার ''আপোষহীন'' নেত্রী হিসেবে একটা সুনাম রয়েছে বরাবরই। তিনি কোনদিনই সমঝোতার রাজনীতি করেন নাই। দেশের বৃহৎ একটা জনগোষ্ঠীর মাঝে খালেদা জিয়ার বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিএনপির রাজনীতিতে দুর্নীতি বিষয়ক বদনাম মুলত বেগম জিয়ার দুই ছেলের বিরুদ্ধে। হাওয়া ভবনের মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ ও মানি লন্ডারিং বিষয়টি বাংলাদেশে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং বিতর্কিত কেলেঙ্কারি হিসেবে পরিচিত। তারেক রহমান এবং বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা এই অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন।২০০৭ সালে, বাংলাদেশের সরকার ঘুষ গ্রহণ ও অর্থ পাচারের অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। এতে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসায়িক লেনদেন এবং আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং এর প্রমাণ উঠে আসে।যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) ও সিঙ্গাপুরের আদালতেও তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তে তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০ মিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচারের অভিযোগ ওঠে।২০১০ সালে বাংলাদেশে অর্থপাচার ও ঘুষের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় । তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর বিচারিক প্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে নজরদারিতে রয়েছে । সুত্র ঃ উইকিপিডিয়া
সম্প্রতি ছাত্রদের তুমুল গনঅভ্যত্থানের মুখে স্বৈরাচারী আওয়ামিলীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি আবারো রাজনৈতিক ময়দানে ফেরার সুযোগ পেয়েছে। রাজনীতিতে ফিরেই তারা প্রসাষন ও আইন আদালত তাদের কব্জায় নিয়ে নিয়েছে। যার ফলাফল স্বরুপ আমরা দেখেছি যে , একের পর এক মামলা থেকে অব্যহতি লাভ করেছে বিএনপি নেতারা ও তারেক রহমান !! বিএনপি এখন যে কোন মূল্যে ক্ষমতায় যেতে মরিয়া যেহেতু সরকারি সব প্রতিষ্ঠানে তাদের নিয়ন্ত্রন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামিলীগ এর বিচার বা দেশে সুশাষন প্রতিষ্ঠায় তাদের কোন বার্তা নেই। আওয়ামিলীগের পুনর্বাসনেও তাদের বিন্দুমাত্র আপত্তি নাই। তাদের দরকার শুধু ক্ষমতা।
তারেক রহমান দুর্নীতিতে অত্যন্ত পারদর্শি হলেও রাজনৈ্তিক দুরদর্শিতা একেবারেই নাই। সারা জীবন মায়ের ছত্র ছায়ায় রাজনীতি করেছেন। বিএনপি এই দেশে রাজনীতি করে সফলতা পেয়েছে আওয়ামীবিরোধিতার মাধ্যমে। জিয়াউর রহমান আওয়ামিলীগের একক ক্ষমতায়নের রাজনীতি ভেঙ্গে দিয়েছিল বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করে। খালেদা জিয়াও এরই ধারাবাহিকতায় ব্যপক সাফল্য অর্জন করেছন। খালেদা জিয়ার জন্মদিন আসলেই ১৫ই অগাস্ট কিনা জানা নাই, কিন্তু তিনি ১৫ই অগাস্টে নিয়মিত কেক কেটে তীব্র আওয়ামিবিরোধি মনোভাব সৃষ্টি করেছিলেন। খালেদা জিয়া যতদিন সুস্থ ছিলেন ততদিন তীব্র আওয়ামিবিরোধি মনোভাব দেখিয়ে রাজনীতি করে গেছেন।
খালেদা জিয়া অসুস্থ হবার পরেই বিএনপি রাজনৈ্তিক ময়দানে আর সুবিধা করতে পারে নাই। আওয়ামিলীগ টানা ১৭ বছর হয়ত ক্ষমতায় টিকতে পারতো না যদি বেগম জিয়া রাজনীতিতে সক্রিয় অবস্থায় থাকতেন। খালেদা জিয়ার বয়স এখন আশির উর্ধে। শারিরীকভাবে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তার স্থলে তারেক জিয়া রাজনীতি করছে লন্ডনে বসে অনলাইনে!! বিগত ১৭ বছরে বিএনপির নেতা কর্মীরা তুমুল দমন নীপিড়নের শিকার হয়েছে। কিন্ত রাজনৈ্তিক দল হিসাবে বিএনপি কোন সরকারবিরোধি আন্দোলন সংগঠিত করতে পারে নাই। আওয়ামিলীগ আমলে যে কয়টা সরকারবিরোধি আন্দোলন হয়েছে তা সবই অরাজনৈ্তিক ব্যানারে। নিরাপদ সড়ক চাই, কোটা সংস্কার ও সাম্প্রতিক বৈষম্যবি্রোধী আন্দোলন পুরোপুরি অরাজনৈ্তিক আন্দোলন যেখানে বিএনপির সংশ্লিষ্টতা ছিল না। বিএনপির আন্দোলন হয়ে দাড়িয়েছিল নেতাদের মৌখিক '' ঈদের পরে দুর্বার আন্দোলন''!!
বর্তমানে ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে স্বৈরাচারী আওয়ামিলীগের পতন হলেও বিএনপির অবস্থান জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটের পুরোপুরি বিরুদ্ধে । বিএনপির নেতৃবৃন্দের মুখে আওয়ামিবিরোধী কোন বক্তব্য নাই। পিলখানা, শাপলা চত্বর ও জুলাইএ হত্যাকান্ড সমূহের বিষয়ে বিএনপির কোনই বক্তব্য নাই। বিএনপি নেতাদের মুখে নির্বাচন ছাড়া দ্বীতিয় আর কোন শব্দ নাই। ধরুন শেষ পর্যন্ত ইন্টারিম সরকার নির্বাচন দিয়ে দিল এবং বিএনপি প্রসাষনের সহায়তায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করে ক্ষমতায় গেল। আপনার কি মনে হয় বিএনপি সেই ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে? আমার ধারনা তারা কয়েক মাসও টিকতে পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই মে, ২০২৫ বিকাল ৪:১৪