বাধ্য হয়ে, প্রবাসে ১ স্বদেশী মহিলাকে অফ করতে হয়েছিলো, এটি সেই অপকাহিনী।
'৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ের ঘটনা, আমি নিউইয়র্ক শহর থেকে ১২০ মাইল উত্তরে ১ গ্রামে চাকুরী করতাম; সেখানে একটি খুবই অমায়িক পরিবার ছিলো; স্বামী-স্ত্রী ২জনেই দোকানে চাকুরী করতেন, বেতন খুব একটা ছিলো না। মহিলা জেকসন হাইটস'এ গিয়ে পাকিস্তানী দোকান থেকে ১ জোড়া সোনার শাঁখা কিনেছিলেন ৪৫০ ডলার দিয়ে; মাস'খানেক পরে, একটির জয়েন্ট খুলে গেছে। মহিলা উহা বদলাতে গিয়েছিলেন, বদলায়ে দেয়নি; ১ বাংগালী মহিলা ছিলো সেলস-পারসন; রিপেয়ারের জন্য ৪০ ডলার চেয়েছিলো।
এক শনিবারে আমি নিউইয়র্ক আসার সময়, শাঁখাগুলো আনলাম, দুপুরের পর লোকজন কম, আমি দোকানে গেলাম; এক সুশ্রী বাংগালী মহিলা সামনে, উনাকে শাঁখা দেয়ার পরই উনি বুঝতে পেরে, পুরোনো গীতি শুরু করলেন,
-কাষ্টমার ভাংলে আমরা দায়ী নই,বদলায়ে দেয়া যাবে না, রিপেয়ার করতে ৪০ ডলার লাগবে।
-মালিক আছে দোকানে? থাকলে উনাকে ডাকেন।
-ডেকে লাভ হবে না, আমি যা বলছি তাই হবে।
-তাই হোক, উনাকে ডাকেন।
কিছুক্ষণ ম্যাঁওপ্যাঁও করে, দোকানের পেছনে গিয়ে এক পাকিস্তানী লোককে ডেকে নিয়ে আসলো; মহিলা উর্দুতে ঐ লোককে কিসব সবক মবক দিচ্ছে। আমি কিছু বলার আগেই লোকটি বললো,
-কাষ্টমার ভাংলে আমরা দায়ী নই, বদলায়ে দেয়া যাবে না, ইহা আমাদের পলিসি, রিপেয়ার ফি ৪০ ডলার।
তখন মহিলা আমাকে বাংলায় বললেন,
-এখন শুনছেন, আমি কি বলেছিলাম?
দেখালাম, এই মহিলার সাপোর্ট পেলে পাকী মিয়ার জোর বেড়ে যাবে, মহিলাকে অফ করার দরকার। মহিলাকে বললাম,
-আপনি একটু দুরে গিয়ে দাঁড়ান, সকালে দাঁত মাজেননি, এলাকা গরম হয়ে গেছে; সর্বোপরি আপনার দাঁতগুলো হাংগরের মতো আঁকাবাঁকা।
মহিলা পেছনে সরে গিয়ে মুখে হাত দিয়ে চুপ হয়ে গেলেো। আমি পাকী ভাইকে বললাম,
-আপনাদের পলিসি আপনাদের জন্য ঠিক আছে, আমার পক্ষে 'কনজিউমার রাইটস আইন' আছে, আমি ৩৬ ডলার ফি দিয়ে কোর্টে কেইজ করে দেবো; কোর্ট ঠিক করবে কি করতে হবে! ব্যাপার ওদের হাতে গেলে, ওদেরকে বলবো, আপনি স্বর্ণর নামে কি পরিমাণ পিতল বিক্রয় করছেন, উহা তলিয়ে দেখতে।
লোকটা কটমট করে তাকিয়ে রলো কিছুক্ষণ, তারপর নতুন এক জোড়া শাঁখা বের করে দিয়ে দিলো।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০২২ রাত ১:৫৯