গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে, দলের কোন লোকটি ভোটে মনোয়ন পাবে, সেটা নির্ধারণের জন্য 'দলীয় ভোট'কে বলা হয় প্রাইমারী ভোট। প্রাইমারী ভোট হয় দেশের ভোট হওয়ার আগে; এই ভোটে দলের লোকরা নিজ দলের থেকে উপযুক্ত প্রার্থীকে নির্বাচন করেন। আমাদের দেশে, পার্লামেন্টারী ভোটে এলাকা থেকে কে প্রার্থী হবেন, সেটা এলাকার 'দলীয় লোকেরা' নির্ধারণ করেন না, করেন শেখ হাসিনা ও বেগম জিয়া। এতে করে, দলের উপযুক্ত মানুষটি নমিনেশন পাচ্ছে কিনা, জানা সম্ভব নয়।
'দরবেশ বাবা' যদি ভোটে দাঁড়াতে চায়, এবং শেখ হাসিনার সাথে এই ব্যাপারে দেখা করে, সেই সাংসদীয় এলাকায় ওবায়দুল কাদেরও চান্স পাবেন না, ইহা আমার ধারণা। দরবেশ বাবা মানুষের রাজনৈতিক অধিকার নিয়ে ভাবার ও কাজ করার মানুষ নন, এবং তিনি 'বিল' বলতে ইলেকট্রিক ও গ্যাসের বিলকে বুঝার কথা। উনি নিজ ব্যবসাকে মনোপলি করার জন্য ৫ বছর কাজ করবে। আমাদের এমপি আমেরিকান ডলারে ২/৩ বিলিয়ন ডলারের মালিক ও শেখ সাহেবের গুণ গান গাওয়া মানুষ, শেখ হাসিনা ওখানে বাইডেনকেও নমিনেশন দিবেন না। ইহা জাতিকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ও দলকে দুর্বলদের আস্তানা করেছে।
আওয়ামী লীগ গঠন করেছিলেন সোস্যালিষ্ট মনোভাবের বাংগালীরা, পরে উহাকে দখল করে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা; এখন আওয়ামী লীগের ১০০% এমপি ব্যবসায়ী: সেজন্য বাজারদর সব সময় বাড়ছে, ব্যবসায় মাফিয়ারা স্হান করে নিয়েছে, সব ব্যবসায়ী অসততার আশ্রয় নিচ্ছে, আওয়ামী ক্যাডারেরা স্হানীয় ব্যবসার মালিক, কিংবা চাঁদাবাজ।
শেখ হাসিনা সরার সাথে সাথে ব্যুরোক্রেটরা আওয়ামী লীগকে হয় সরাবে, না'হয় তাদের চাকরে পরিণত করবে; ইহা থেকে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হলে, ইহাকে রাজনীতিতে ফিরায়ে আনতে হবে; দলকে বিভক্তি থেকে বাঁচায়ে দলের উপযুক্ত লোককে নমিনেশন দেয়ার একমাত্র পথ হলো প্রাইমারী। এখন শেখ হাসিনার সাথে ব্যবসায়ীরা বেশী পরিচিত; সীতাকুন্ডে যে ডিপোটি পুড়েছে, সেই গ্রুপের প্রধান আগামী ভোটে নমিনেশন চাওয়ার কথা ছিলো।
আমাদের এলাকায় আওয়ামী লীগে ৮/৯ জন নেতা আছে, যারা আমাদের এমপি থেকে অনেক বেশী দক্ষ ও রাজনীতিতে সময় দিবে; আমাদের এমপি নিজের ব্যবসায় ৯৫ ভাগ সময় ব্যয় করেন ও ৫ ভাগ সময় ব্যয় করেন ক্যাডারদের নিয়ে পার্টি করে; ইহাই উনার রাজনীতি। কিন্তু প্রাইমারী করলে উনি কোনভাবে জিতার সম্ভাবনা নেই, উনার থেকে উপযুক্ত ১ জন লোক অবশ্যই চান্স পাবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০২২ বিকাল ৫:৫৩