somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পরীক্ষা...পরীক্ষার হল আর হাবিজাবি !!

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোটবেলা আমাকে বলা হইতো যে পড়ালেখা না করলে ঘোড়ার ঘাস কাটতে হবে। আমি ভাবতাম বাহ... ঘোড়া প্রাণীটাই কত সুন্দর আর তার জন্য ঘাস কাটবো। তার মানে আমার ঘোড়াও থাকবে। এত সুন্দর কল্পনা বেশি দিন টিকে নাই অবশ্য। :|
আমাকে পরীক্ষা নামক এক অদ্ভুত জিনিসের মুখোমুখি হতে হলই। নার্সারীতে থাকাকালে এত চিন্তায় পড়তে হয় নাই। আমি আবার নার্সারী থেকে সরাসরি অন্য স্কুলে ক্লাস টুতে ভর্তি হয়েছিলাম। তখন আমাকে নানান অদ্ভুত শব্দের মুখোমুখি হতে হলো। তার মধ্যে অন্যতম হলো “মুখস্থ করা”। এক পরীক্ষার আগে আম্মু দেখে আমি কান্নাকাটি করতেছি। কি ব্যাপার কি হইছে? জবাব দিলাম আম্মু আমি তো মুখস্থ করতে পারি না। আম্মু বলে, “তুমি তো এইগুলা সব পারো তাই না?” বললাম “হ্যা”। আম্মু বলে, “তাইলে আর সমস্যা কি?” আমি বলি, “পারলেই আর না দেখে বললেই হইলো নাকি...আমি তো মুখস্থ পারি না”। :((
এক পরীক্ষার আগের দিনে আমাকে নানান কুশ্চেন পড়ানো হইলো। আম্মু বললো যে এইগুলা ইম্পর্ট্যান্ট। তখন থ্রী নাকি ফোরের কথা। আমি পরীক্ষা হলে গেলাম। এরপর লেখছি তো লেখছি। পুরা ক্লাস খালি হয়ে গেছে আমি লেখতেই আছি। আম্মু তো বাইরে থেকে মহা চিন্তা সব মেয়ে বের হয়ে গেলো, তার মেয়ে বের হয় না কেন। একদম শেষের দিকে আমি বের হলাম। আম্মু জিজ্ঞাসা করলো, “মা পরীক্ষা কেমন হইলো?” “আর বইলো না...লেখতে লেখতে জান শেষ” আম্মু অবাক। “কি বলো? সবাই বললো যে অনেক সোজা প্রশ্ন হইছে। দেখি তো প্রশ্ন”। দিলাম প্রশ্ন। আম্মু বললো কমই তো লেখা দেখি। কি লেখছো বলো তো... বলতে লাগলাম কি কি লেখছি। আম্মু দেখে ঐগুলা একটাও আসে নাই।“ কি ব্যাপার এইগুলা লেখছো কেন? ঐগুলা তো চায় নাই”। “চায় নাই তো কি হইছে... তুমি না বলছো ইম্পর্ট্যান্ট। লিখবো না? নিজে নিজে প্রশ্ন বানায় লিখে আসছি”। B-)
আর এখন যা দেয় তাই লিখতে পারি না। :|
আমার কাজ ছিলো সবসময় বলতে গেলে পরীক্ষা শুরু হয়ার পর দৌড়াদৌড়ি করে হলে আসে। বাসার কাছে স্কুল থাকলে যা হয়। স্যাররা বারান্দা থেকে দেখতো যে আমি আসতেছি। স্যার-ম্যাডাম রা ব্যাপক চিন্তিত ছিলো যে এই মেয়ে এস.এস.সি তেও এই কাজ করে নাকি।
নাইন-টেনে উঠে আমরা দেখাদেখিতে আরো কয় ধাপ এগিয়ে গেলাম। এমনো ছিলো যে হায়ার ম্যাথ পরীক্ষার শেষের দিকে আমরা খাতা নিয়ে দৌড়াদৌড়িও করেছি। স্যার জিজ্ঞাসা করতো, “এই তেরো কি হচ্ছে এইগুলা?” “জ্বী মানে স্যার আমার স্টেপলারের পিন শেষ হয়ে গেছে তো তাই পিন মারতে আসছি” আর অন্যরে ইশারা দিতেছি লিখতে থাক যা লিখছি। আহারে সুখের দিন গুলা... /:)
এস.এস.সি পরীক্ষায় এক দিন আমরা ভালোই দেখাদেখি করছি কিন্তু যে ম্যাডাম গার্ডে ছিলো উনি আমাদের গুলায় ফেলেছিলো। আমাদের ভেবেছিলা আমরা অন্য স্কুলের তাই উনি সারা ক্লাস ঐ স্কুলের নাম ধরে বকাবকি করছিলো। “এই স্কুলের মেয়েরা এত দেখা দেখি করো না। আবার দেখে”। ঐ স্কুলের মেয়েরা ব্যাপক অবাক কি ব্যাপার আমাদের এত বকছে কেনো। আর আমরা হাসতেছি।:P
কলেজ জীবনে এসে আরেক অবস্থার মুখোমুখী। কোনো এক কারনে প্রতি টার্ম পরীক্ষাতেই কোনো এক পরীক্ষাতে আমার খাতা নিয়ে যাইতো। কেনো যে নিতো তাই ধরতে পারি নাই। এক বাংলা ম্যাম ছিলো উনি সবাইকে ওয়ার্নিং দিচ্ছিলো কিন্তু আমারটা প্রথমবারেই নিয়ে গেছিলো। অবশ্য আমার সাথে উনার কোনো কারনে শত্রুতা ছিলো। আর আমিও খাতা চাওয়ার সাথে সাথেই মহা আনন্দে খাতা দিয়ে বের হয়ে চলে যেতাম। তবে এক ম্যাথ পরীক্ষার দিন স্যার প্রথম ঘন্টাতেই খাতা নিয়ে গেছে। এখন দিচ্ছে ও না। কি করি... অনেক কষ্ট করে দুখী দুখী চেহাড়া বানালাম। অশ্রু আনলাম ১-২ ফোটা। উনার সাথে যে আরেকজন গার্ড দিচ্ছিলো উনি বাইরে ছিলো। এসে আমাকে দেখে যে আমি উদাস হয়ে বাইরের দিকে তাঁকায় আছি। স্যার বলে, “কি হইছে? খাতা কই তোমার”। “স্যার......খাতা তো নিয়ে গেছে”। কি?? কতক্ষন ?? আমার সাথে আরেকজনের টা নিছিলো যে বলে স্যার ১৫ মিনিটের বেশি ( ৫ মিনিট ও যায় নাই)। স্যার বলে, “দাঁড়াও খাতা নিয়ে আসি”। :D
অবশ্য এখনকারের কাহিনী ভিন্ন। মুড না আসলে লিখি না। লিখতে আলসেমী লাগে। কোনোরকমে একটু লিখে দেই। ৪-৫ লাইনের লেখা কোনোরকমে ১ লাইনে লেখার চেষ্টা চালাই। তাই অবশ্য মার্কিং ও কোনোরকমের আসে। একবার ৩ ঘন্টার পরীক্ষার সময় আমার ২ ঘন্টাতে শেষ। আগেও বের হইতে পারি না। মানুষজন ফুস ফুস করবে। এরপর কলম চিবাইলাম, ঝিমাইলাম, অন্যদের দেখলাম, স্যার দের দেখলাম। অবশেষে সময় পার হইলো আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। :|
হায়রে পরীক্ষা। ভালা পাই না তোরে। X(X(
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৩৩
২১টি মন্তব্য ২০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×