সিটি প্যালেস থেকে বের হয়ে দলের বাকী সদস্যদের খুঁজে বের করতে বেশ বেগ পেতে হলো। মহোদয়গণ প্যালেস দর্শনের চাইতে জয়পুর নগর এবং এর জনজীবন দর্শনে বেশী ব্যস্ত ছিলেন এমনটা নয়, উনারা এই ফাঁকে হালকা কেনাকাটায় মত্ত হয়ে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দল বিচ্ছিন্ন হয়েছিলেন। সবাইকে একত্রিত করে এবার রওনা হলাম আমাদের পরবর্তী গন্তব্য “যন্তর মন্তর” ফুঁ এর জাদুবিদ্যার কারখানার দিকে। এই জাদুবিদ্যা মূলত আজ থেকে চারশত বছর আগে নির্মিত জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র তথা “মানমন্দির”।
১৭২৪ থেকে ১৭৩৫ সালের মধ্যবর্তী সময়ে জয়পুরের মহারাজা দ্বিতীয় জয় সিং উত্তর ভারতের দিল্লি, জয়পুর, উজ্জয়িনী, মথুরা এবং বারাণসীতে মোট পাঁচটি জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র তথা “যন্তর মন্তর” নির্মাণ করেছিলেন। এই যন্তর মন্তর মূলত পাথরের তৈরি জ্যোতির্বিদ্যা যন্ত্রের সমাবেশ যা সাধারণ ভাষায় “মানমন্দির” বলা হয়ে থাকে। নাম শুনে মনে হয় এটি মনে হয় কোন জাদুর স্থাপনা, কিন্তু ব্যাপারটি আসলে তেমন নয়। যন্ত্র এর রাজাস্থানি কথ্যরূপ “যন্তর” আর পরামর্শ করা বা গণনা করা’র আঞ্চলিক শব্দ মন্ত্র তথা “মন্তর”। এইদুটি একত্রিত হয়ে হয়েছে যন্তর-মন্তর। উত্তর ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বেড়াতে গেলে চোখে পড়বে এই যন্তর মন্তর।
রাজা দ্বিতীয় জয় সিং ছিলেন গণিত, স্থাপত্য এবং জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহী আর তার এই আগ্রহের কারনেই ভারতবর্ষে যন্তর মন্তর গুলো নির্মিত হয়েছিলো। এরমধ্যে জয়পুরের যন্তর মন্তরটি বিশেষভাবে অনন্য, এখানে তিনি ২০টি স্থায়ী যন্ত্ৰ স্থাপন করেছিলেন। এটি বিশ্বের বৃহত্তম পাথরের “সূর্যঘড়ি”, যা “বৃহৎ সম্রাট যন্ত্র” নামে পরিচিত। জয়পুরের এই যন্তর মন্তরটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট।
তৎকালীন ভারতে পাওয়া পঞ্জিকা ও জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত তালিকাগুলোয় অনেক ভুল ধরা দেয় রাজা দ্বিতীয় জয় সিং এর কাছে; যখন জ্যোতির্বিদ্যা এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়াদিতে আগ্রহী জয় সিং ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, পর্তুগাল ও জার্মানি থেকে এই বিষয়ে প্রচুর বই সংগ্রহ করেন। তখন তিনি উপলব্ধি করেন উপমহাদেশে জ্যোতির্বিদ্যার চর্চা এবং অগ্রগতি খুবই ধীর। সেই সাথে তিনি প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন দৃশ্যমান গ্রহ-নক্ষত্রের সাথে মিল থাকবে এমন নতুন পঞ্জিকা ও জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত তালিকা তৈরীর।
তখন তিনি তার রাজদরবারে হিন্দু, ইসলামিক ও ইউরোপীয় জ্যোতির্বিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ থেকে পণ্ডিতদের সাদর অভ্যর্থনা জানান। তিনি তার রাজদরবার হতে একটি দলকে ইউরোপে প্রেরণ করেন জ্যোতির্বিদ্যার ওপর বিভিন্ন বই ও তথ্য সংগ্রহ, যন্ত্র ক্রয় করে নিয়ে আসার জন্য। তিন শতক আগে প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের মধ্যে যোগাযোগের ঘাটতির কারণে তথ্যের আদান প্রদান ছিলো না বললেই চলে। তা ছাড়া ধর্মীয় গোড়ামির কারনেও প্রাচ্যের দেশগুলো পিছিয়ে ছিলো পাশ্চাত্যের থেকে। ভারতের তৎকালীন প্রথা অনুযায়ী, ব্রাহ্মণ পণ্ডিতরা ইউরোপে যাত্রা করতে অস্বীকার করেন যখন রাজা জয় সিং তাদের কাছে এই প্রস্তাব পেশ করেন, কারণ ইউরোপে যেতে হলে তাদের সমুদ্র পার হতে হবে যার অর্থ তাদের কাছে জাতভ্রষ্ট হওয়া। এমনকি ইউরোপ থেকে কিনে আনা যন্ত্রগুলোর মধ্যে কোপারনিকাস ও গ্যালিলিওর উদ্ভাবিত সূর্যকেন্দ্রিক ধারণাগুলোকে সমর্থন করার জন্য ব্যবহৃত নতুন নতুন যন্ত্রগুলো ছিলো না। এর পেছনেও সেই ধর্মীয় গোড়ামির একটা প্রভাব ছিলো বলে মনে করেন রাজা জয় সিং এর জীবনীর লেখক ভি. এন. শর্মা।
এখানে থাকা যন্ত্রগুলো হলঃ
● সম্রাট যন্ত্র
● জয় প্রকাশ যন্ত্র
● দিশা যন্ত্র
● রাম যন্ত্র
● চক্র যন্ত্র
● রাশিবাল্য যন্ত্র
● ডিঙ্গাশ যন্ত্র
● উণতামাশা যন্ত্র।
উণতামাশা যন্ত্র
এগুলোর মধ্যে সম্রাট যন্ত্র, জয় প্রকাশ, রাম যন্ত্র এবং চক্র যন্ত্রের মতো প্রত্যেকটি বিভিন্ন জ্যোতির্বিজ্ঞানের গণনার জন্য ব্যবহৃত হয়। এখানে থাকা মানমন্দিরের প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল জ্যোতির্বিদ্যার সারণী সংকলন করা এবং সূর্য, চাঁদ এবং গ্রহের সময় ও গতিবিধির পূর্বাভাস দেওয়া। সম্রাট যন্ত্র ছাড়া মানমন্দিরের অন্য তিনটি কাঠামো হলো রাম, জয়প্রকাশ এবং মিশ্রা যন্ত্র। এই যন্ত্রগুলো সূর্য ও বিভিন্ন নক্ষত্রের বিষুবাংশ, কৌণিক দূরত্ব এবং দিগংশ পরিমাপ করার জন্য খুব সূক্ষ্মভাবে তৈরি করা হয়েছে। মিশ্রা যন্ত্রটির সাহায্যে সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন শহরে কখন দুপুর হয়েছে তা-ও জানা সম্ভব। মিশ্রা যন্ত্র ছাড়া উল্লেখিত সব যন্ত্র জয় সিং উদ্ভাবন করেছিলেন যার মধ্যে অন্যতম একটির নাম চক্র যন্ত্র।
সম্রাট যন্ত্র, কখনও কখনও "সুপ্রিম ইন্সট্রুমেন্ট" বলা হয় বিশাল অনুপাতের একটি নিরক্ষীয় সূর্যঘড়ি। যদিও এটি সহজ যন্ত্রগুলির মধ্যে একটি, এবং শত শত বছর আগে বিকশিত সূর্যঘড়িগুলোর থেকে খুব বেশি আলাদা নয়। রাজা জয় সিং এর এই সম্রাট যন্ত্রটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি তৎকালীন সময়ে সবচাইতে নির্ভুলতর সময় পরিমাপ করতে সক্ষম ছিলো। উদাহরণস্বরূপ, জয়পুরের সম্রাট যন্ত্র দুই সেকেন্ডের নির্ভুলতার সময় পরিমাপ করতে সক্ষম।
সম্রাট যন্ত্র
রাম যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে এক জোড়া নলাকার কাঠামো, আকাশের দিকে খোলা, প্রতিটির কেন্দ্রে একটি স্তম্ভ বা খুঁটি রয়েছে। স্তম্ভ এবং দেয়াল সমান উচ্চতার, যা কাঠামোর ব্যাসার্ধের সমান। দেয়ালের মেঝে এবং অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠ উচ্চতা এবং আজিমুথের কোণ নির্দেশ করে দাঁড়িপাল্লা দিয়ে খোদাই করা আছে। রাম যন্ত্রগুলি শুধুমাত্র জয়পুর এবং দিল্লির মানমন্দিরে নির্মিত হয়েছিল। রাম যন্ত্রটি কেন্দ্রীয় স্তম্ভের উপরের অংশ এবং মেঝে বা প্রাচীরের বিন্দুর সাথে সারিবদ্ধ করে আকাশের কোনো বস্তুর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে ব্যবহৃত। দিনের বেলায়, স্তম্ভের শীর্ষের ছায়া মেঝে বা দেয়ালে যে বিন্দুতে পড়ে সেখানে সূর্যের অবস্থান সরাসরি পরিলক্ষিত হয়। রাতে, একজন পর্যবেক্ষক তারকা বা গ্রহটিকে স্তম্ভের শীর্ষের সাথে সারিবদ্ধ করে এবং মেঝে বা দেয়ালের বিন্দুটিকে ইন্টারপোলেট করে যা একটি দর্শন নির্দেশিকা ব্যবহারের মাধ্যমে তারকা বা গ্রহটিকে চিহ্নিত করে।
রামযন্ত্র
জয়প্রকাশ যন্ত্র জয় সিংয়ের সবচেয়ে বিস্তৃত এবং জটিল যন্ত্র বলে বিবেচিত হয়। এটি 300 খ্রিস্টপূর্বাব্দের প্রথম দিকের ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরী, যখন গ্রিক-ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী বেরোসাস একটি গোলার্ধের সূর্যালোক তৈরি করেছিলেন বলে জানা যায়। জয়পুরের ছোট কপ্পালা যন্ত্রটি এমন একটি ডায়ালের উদাহরণ। জয় প্রকাশ হল একটি বাটি আকৃতির যন্ত্র, যা আংশিকভাবে মাটির স্তরের উপরে এবং আংশিক নীচে নির্মিত। জয়পুর যন্ত্রের জন্য বাটির রিমের ব্যাস 17.5 ফুট এবং দিল্লিতে 27 ফুট। অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠটি সেগমেন্টে বিভক্ত, এবং সেগমেন্টের মধ্যবর্তী ধাপগুলি পর্যবেক্ষকদের অ্যাক্সেস প্রদান করে। বাটির কেন্দ্রে সরাসরি বৃত্তাকার খোলার সাথে একটি ধাতব প্লেট রয়েছে যা রাতের পর্যবেক্ষণের জন্য একটি দর্শনীয় যন্ত্র হিসাবে কাজ করে এবং সৌর পর্যবেক্ষণের জন্য বাটির অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠে একটি সহজে শনাক্তযোগ্য ছায়া ফেলে। জয়প্রকাশের উপরিভাগগুলি আজিমুথ-উচ্চতা, বা দিগন্ত এবং নিরক্ষীয় স্থানাঙ্ক ব্যবস্থা সম্পর্কিত চিহ্নগুলি খোদাই করা রয়েছে যা অবস্থান বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়।
জয়প্রকাশ যন্ত্র
কাপালি যন্ত্র
আমরা এসবের কিচ্ছু না বুঝেই নিজেদের মত করে ঘুরে দেখলাম, চললো ফটোগ্রাফী। বাসায় ফিরে ব্লগ লেখার আগে এইসকল তথ্য জানা হলো। আসলে এই ধরনের স্থাপনা ভ্রমণের আগেই ব্যাপক স্টাডি করে দেখতে যাওয়া উচিৎ। আমার পরবর্তী সকল ভ্রমণে এখন থেকে এই কাজ করবো বলে মনস্থির করেছি। আগে আমি ভ্রমণের আগে সেই জায়গার ছবি, তথ্য, ভিডিও দেখার বিপক্ষে ছিলাম, আমার যুক্তি হচ্ছে একটা জায়গা সম্পর্কে মনের মাঝে নিজের মত করে ধারণা তৈরী করে সেটা বাস্তবের সাথে মেলানো। কিন্তু ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতার আলোকে এখন আমার মতামত, আগে স্টাডি করে গেলে সেটা ভ্রমণের আনন্দকে আরও অনেকগুণ বাড়িয়ে দিবে। যাই হোক যন্তর মন্তর থেকে আমাদের পরের গন্তব্য “জল মহল”।
জলমহল ‘মান সাগর’ নামক লেকের মাঝখানে স্থাপিত। এলাকার মানুষের পানিসংকট দূর করতে লেকটি তৈরি করেছিলেন রাজা মান সিং। ১৬১০ সালে হঠাৎ ভয়ানক খরা আর দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে দ্রুত বারবতী নদীতে বাঁধ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করেন মান সিং। তৈরি করা হয় বিশাল এক লেক। যার নাম দেন মান সাগর। তিন দিকে পাথরের সুউচ্চ পাহাড় ঘেরা আর তারই মাঝখানে ছয় কিলোমিটার লম্বা বিশাল নীল জলের হ্রদ। আর সেই হ্রদের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে গোলাপী এক আবাসস্থল, নাম তার “জল মহল”। এই হ্রদের গভীরতা সর্বোচ্চ ১৫ ফুট এবং সর্বনিম্ন গভীরতা ৪.৯ ফুট।
ধারণা করা হয় রাজা মহারাজ মাধু সিং এই জল মহল নির্মান করেন। এর সম্মুখভাগে রয়েছে মহলের প্রবেশদ্বার। এই জল মহলটি পাঁচতলা বিশিষ্ট যদিও বছরের বেশীরভাগ সময় এর নীচের চারটি তলা পানির নীচে তলিয়ে থাকে। জল মহলের অভ্যন্তরে রাজপুতানা আর মুঘল দুই ঘরনার অসম্ভব সুন্দর চিত্রকর্মর দেখা মেলে। জলমহল নির্মাণে লাল বেলেপাথর ব্যবহার করা হয়েছিল। প্রাসাদের চার কোণে অষ্টভুজাকৃতির চারটি অপূর্ব ছত্রে শোভা পাচ্ছে। প্রাসাদের চূড়ায় একটি আয়তাকার ছত্রি রয়েছে যা বাঙালি শৈলীতে নির্মিত। জলমহলের টেরেস গার্ডেনটি খিলানযুক্ত প্যাসেজ দিয়ে অলঙ্কৃত ছিল।
১৮ শতকে নির্মিত এই প্রাসাদটির মাধু সিং এর পর তার পুত্র দ্বিতীয় মাধু সিংয়ের তত্ত্বাবধানে চলে আসে; কিন্তু তিনি তার বাবার তৈরী এই প্রাসাদকে কিছুটা বর্ধিত করে প্রাসাদের সঙ্গে কেবল একটা বিচারশালা যোগ করেছিলেন। দ্বিতীয় মাধু সিংয়ের শাসনের পরবর্তী সময়ে এই জল মহলের আর তেমন কদরের ইতিহাস জানা যায় না। ফলে দিনকে দিন অনাদরে অবহেলায় কুঁকড়ে গিয়েছে জলের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা এই “জল মহল” এর সৌন্দর্য। ২০১৫ সালে একটি বেসরকারী সংস্থা দায়িত্ব নেয় জল মহল আর মান সাগরের। খুব দ্রুত আবার আগের রূপ ফিরে পায় মহলটি। সেইসঙ্গে সাগরটিও হয়ে ওঠে টলটলে পরিষ্কার।
আমরা রাস্তার পাশের পর্যটকদের জন্য নির্মিত চত্বরে দাঁড়িয়েই দেখলাম এই অনন্য সুন্দর জল মহল, তুললাম এর ছবি সাথে নিজেদের এবং গ্রুপ ফটোও। এরপর রওনা হলাম আজকের এবং এবারের ট্যুরের শেষ গন্তব্য “আম্বার ফোর্ট” তথা “আমের ফোর্ট” এর উদ্দেশ্যে।
ছবি কৃতজ্ঞতাঃ
পোষ্টের শুরুর ফুল ওয়াইড পিকচার ছাড়া বাকি সকল ফুল ওয়াইড পিকচার উইকিপিডিয়া এবং উইকিকমন্স হতে নেয়া।
পোষ্টের শেষের সকল ছবি বোকা মানুষের তোলা, Xiaomi Redmi Note 3 মোবাইল দিয়ে তোলা।
তথ্য এবং লেখনী (আংশিক) কৃতজ্ঞতাঃ
উইকি পিডিয়া
ডেইলি বাংলাদেশ ডট কম
প্রিয় ডট কম
উৎসর্গঃ আমার ভারত ভ্রমণের এই সিরিজটি ব্লগার "কামরুন নাহার বীথি" আপাকে উৎসর্গ করছি। উনি আমার এই ট্যুরে ট্যুরমেট ছিলেন। গত পহেলা জানুয়ারী রাত এগারো ঘটিকায় বীথি আপা আল্লাহ্র ডাকে সারা দিয়ে পরপারে চলে গেছেন আমাদের সবাইকে ছেড়ে। আল্লাহ্ তার শোকার্ত পরিবারকে এই শোক সইবার ধৈর্য দাণ করুন। আর আপাকে পরপারে আল্লাহ্ সকল গুনাহ (যদি থাকে) মাফ করে তার কবরে আজাব মাফ করুন এবং আখেরাতে বেহেশত নসীব করুন।
প্রথম পর্ব থেকে বীথি আপার এই ট্যুরে যুক্ত হওয়ার ঘটনাটা আবার তুলে ধরলামঃ
ঈদের কয়েকদিন আগে আমি কোন একটা কাজে নীলক্ষেত মোড়ে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি, একটি অচেনা নাম্বার থেকে কল এলো, কল রিসিভ করতে অপরপাশ থেকে অচেনা কণ্ঠস্বর। আমাদের দলের সাথে যুক্ত হতে চায় এই ট্রিপে। “সামহোয়্যার ইন ব্লগ” এ তখন পর্যন্ত আমার পূর্বপরিচিত কেউ ছাড়া আর কারো সাথে পরিচয় ছিলো না। “সাদা মনের মানুষ” খ্যাত কামাল ভাই এর সাথে পরিচয় ভ্রমণ বাংলাদেশ থেকে। সেই কামাল ভাই এর কাছ থেকে খবর পেয়ে ফোন দিয়ে প্রিয় ব্লগার কামরুন নাহার বীথি আপা। উনি এবং ভাইয়া যুক্ত হতে চাচ্ছেন আমাদের সাথে। আমি একদিন সময় নিয়ে উনাকে কনফার্ম করলাম উনাদের যুক্ত হওয়ার ব্যাপারটা। এরপর উনাদের এয়ার টিকেট এর ব্যবস্থা করা হলো। দল গিয়ে দাড়ালো দশজনের। সিদ্ধান্ত হল চারজনের একটা দল ঈদের দিন রাতে রওনা হয়ে যাবো কলকাতার উদ্দেশ্যে। একদিন পরে বাকী ছয়জন রওনা হবে, যেহেতু কোরবানী ঈদের ছুটি, তাই অনেকেই সারাদিনের কোরবানীর হ্যাপা পোহানোর পর সেদিন রাতেই রওনা হতে রাজী হলো না। ফলে আমরা যে চারজন আগে রওনা হবো, তারা একরাত কলকাতা থেকে পরেরদিন সরাসরি বিমানবন্দর চলে যাবো। অপর দলও সরাসরি বেনাপোল বর্ডার হতে দমদম বিমানবন্দর চলে আসবে। এরপর ঢাকা থেকে সকলের কলকাতার বাসের টিকেট এবং আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করে অপেক্ষার পালা চলতে লাগলো….
ভ্রমণকালঃ সেপ্টেম্বর ২০১৬
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর, ২০১৬ এর সকল পর্বঃ
* যাত্রা শুরুর আগের গল্প (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ০১)
* কলকাতায় অপেক্ষা... (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ০২)
* ফ্লাইট মিসড তো ট্যুর ক্যান্সেলড... টেনশনিত অপেক্ষার শেষে (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ০৩)
* আগ্রার পাণে যাত্রা (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ০৪)
* আগ্রার ঘাগড়ায়, দেখা হলো না নয়ন জুড়িয়া (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ৫)
* তাজমহলে পদধূলি (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ৬)
* আগ্রা ফোর্ট - বহু ইতিহাসের সাক্ষী (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ৭)
* কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা "ফাতেহপুর সিকরি" ভ্রমণ (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ৮)
* পিঙ্ক সিটি জয়পুর ভ্রমণে চলে এলাম "হাওয়া মহল" - (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ৯)
* "সিটি প্যালেস - জয়পুর" অনবদ্য রাজকীয় কীর্তি (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ১০)
* “যন্তর মন্তর” ফুঁ (থুক্কু) টু “জল মহল” (গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গাল ট্যুর - পর্ব ১১)
এক পোস্টে ভারত ভ্রমণের সকল পোস্টঃ বোকা মানুষের ভারত ভ্রমণ এর গল্পকথা
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৫৯