"তুই কি তাহলে আমার প্রস্তাবে রাজি?" জানতে চাইলেন রাজা।
"কিসের প্রস্তাব?" অবজ্ঞা ভরে পাল্টা প্রশ্ন করে লোকটি।
"প্রাসাদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা লোকগুলোর সামনে বলবি, তুই ভুল করেছিস। যে জমিতে তুই চাষ করেছিস তার মালিক আমি। আমাকে তুই খাজনা হিসেবে অর্ধেক ফসল দিবি"
"অর্ধেক না, পুরো ফসলই দিয়ে দেব। তবে একটা শর্ত আছে।"
"কি শর্ত?" লোভে চকচক করে ওঠে রাজার চোখ।
"তোমার সৈন্যদের হাতে খুন হওয়া আমার স্ত্রী-পুত্রকে ফিরিয়ে দাও"
"আমার কথা না মানলে বউ-ছেলের মত তুইও বেঘোরে মারা পারবি।" আক্রোশে চিতকার করে ওঠেন রাজা।
"আমি না হয় মরে গেলাম।কিন্তু প্রাসাদের বাইরে দাড়িয়ে এই উন্মত্ত লোকগুলোর হাত থেকে তোমায় বাঁচাবে কে?"
গল্পঃ জাগরণ
০৫.০৩.২০১৮
"আমার স্বামীর কোন 'ক্লাস' নেই। লোকটা এত বড় কোম্পানীতে চাকরি করে, এত টাকা কামাই করে, অথচ এখনো চলার পথে রিকশাওয়ালা আর সিএনজি ড্রাইভারদের সাথে খুচরা আলাপ করে।"
লিখেই এন্টার চাপল মেয়েটি।
পাচ মিনিট পরঃ
মেয়েটির প্রিয় বান্ধবী মন্তব্য করেছেঃ আসলেই দুলাইভাই একটা ফালতু, কোন ক্লাস নেই।
হঠাত মেয়েটির মেজাজ খারাপ হয়ে গেল। তার স্বামীকে 'ফালতু' বলে, বলে কিনা তার কোন ক্লাস নেই!!! এতবড় সাহস?
মেয়েটি প্রতিমন্তব্যঃ আমার স্বামী ফালতু মানে? কি বলতে চাস তুই?
বান্ধবীর দ্বিতীয় মন্তব্যঃ বাহ, তোর মত মানসিকতার মেয়েকে যে বিয়ে করেছে, সে ফালতু না হয়ে উপায় আছে???!!!
গল্পঃ ক্লাস
০৫.০৩.২০১৮
বললাম, "দয়া করে মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন, নাহলে উনি আর বাঁচবেন না।"
ডাক্তার চিন্তিত মুখে বললেন, "রোগীর অবস্থা আসলেই সিরিয়াস, এখনই অপারেশন না করলে বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে। এক কাজ করুন। এই ফর্মটা পূরণ করে আনুন।"
"চিকিতসা চলাকালে রোগীর মৃত্যু বা অন্যকোন ক্ষতির জন্য হাসপাতাল বা চিকিতসক দায়ী থাকবেন না।"
বাধ্য হয়েই স্বাক্ষর করলাম।
"এবার এক কাজ করুন। কাউন্টারে পুরো টাকাটা জমা করে দিন।"
"কিন্তু ডাক্তার সাহেব, আমার কাছেতো এই মুহূর্তে এত টাকা নেই।"
"কোন সমস্যা নেই। আমাদের হাসপাতালের বাইরে এদেশের সব ব্যাংকের এটিএম বুথ আছে। ওখান থেকে তুলে নিন।"
"কিন্তু এত টাকাতো একসাথে তোলা যাবে না।লিমিট ক্রস করে যাবে।"
"তাহলে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে পে করুন। জলদি করুন। অপারেশন থিয়েটারে একটা মাত্র বেড খালি আছে।"
অল্প কিছুক্ষণ পর।
"ডাক্তার সাহেব, আমি পুরো টাকা জমা করে দিয়েছি। এই যে রিসিট। অপারেশন শুরু করুন।"
ডাক্তার সাহেব করুণ মুখে বললেন, "ভাই দুঃখিত। এই মুহূর্তে আমরা আপনার মায়ের অপারেশন করতে পারছি না।"
"কিন্তু কেন?" আমি চিতকার করে উঠলাম। "আমিতো আপনাদের সব রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করেছি।"
"আপনি সব শর্তই পূরণ করেছেন-মানছি। কিন্তু আপনার পরেই একজন রোগী এসে উপস্থিত হয়েছেন-তার এমন একটা জিনিস আছে যার দরুণ আপনার মা-কে ডেথবেডে রেখে আমরা এই রোগীর পাতলা পায়খানার চিকিতসা করতে বাধ্য করতে বাধ্য হচ্ছি।"
"তার এমন কি আছে যা একজন মায়ের জীবন-একজন সন্তানের ভালবাসার চেয়ে শক্তিশালী? "
"কোটা।"
গল্পঃ প্রহসন
০৫.০৩.২০১৮
===============================================================
সিরিজের আগের পর্বসমূহঃ
পরমাণু গল্পসমগ্র-১
পরমাণু গল্পসমগ্র-২
পরমাণু গল্পসমগ্র-৩
পরমাণু গল্পসমগ্র-৪
পরমাণু গল্পসমগ্র-৫
পরমাণু গল্পসমগ্র-৬
পরমাণু গল্পসমগ্র-৭
পরমাণু গল্পসমগ্র-৮
পরমাণু গল্পসমগ্র-৯
পরমাণু গল্পসমগ্র-১০
পরমাণু গল্পসমগ্র-১১
পরমাণু গল্পসমগ্র-১২
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২০ দুপুর ১২:০৪