somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

ইহতিশাম আহমদ
একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে ক্যামেরাপারসন হিসাবে চাকুরীরত। ত্রিকোন চলচ্চিত্র শিক্ষালয় নামে একটি ফিল্ম স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশিক্ষক। গল্প, কবিতা লেখা ও অভিনয়ের অভ্যাস রয়েছে।

প্রজাপতি স্বপ্নেরা (পর্ব ২)

০১ লা জুন, ২০১১ রাত ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(পর্ব ১)



আব্বার ভবিষ্যৎবানী অনুযায়ী আরিফ তার বউএর ভাত যোগাড় করতে পারবে কিনা সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা না গেলেও তার কপালে যে অন্ততঃ বউ একটা জুটবে এটা নিশ্চিত।
স্বপ্না এক সময় তার ক্লাসমেট ছিল। ঘনিষ্ঠতাটা সেখান থেকেই। তার মা বাবা বেশ অনেক দিন যাবৎই স্বপ্নার জন্যে লাগসই একটা পাত্র খুঁজছেন। প্রায় দিনই ছেলে পক্ষ এসে তাকে দেখে যাচ্ছে। তবে বিষয়টা ঠিক ব্যাটে বলে হচ্ছে না। কারণ ঠিক সুন্দরী বলতে যা বোঝায় স্বপ্নাকে এক বাক্যে তা বলা যায় না। তার চোখে একটা উজ্জ্বল দীপ্তি রয়েছে, শ্যামলা ত্বকে মসৃণতা আছে, আর এ দুয়ের কোথায় যেন লুকিয়ে আছে মমতার লালিমা, যা স্বাভাবিক ভাবেই মেয়ে দেখতে আসা লোকগুলোর চোখে ধরা পড়ে না। বোধ হয় অনেকদিন ধরে জানা শোনা থাকলে তবেই কারো চোখে এসব দৃশ্যমান হয়। এক ঝলক দেখে সব সুন্দরকে সুন্দর বলে চেনা যায় না।
অবশ্য চেহারাকে ছাপিয়ে আরেকটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে ইদানিং। প্রায় বেশির ভাগ পাত্র পক্ষই মার্স্টাস পাশ করে বসে থাকা নয় বরং ইন্টারমিডিয়েট পড়ুয়া বা সদ্য পাশ করা কচি মেয়ের খোঁজে রয়েছে। এসব নিয়ে স্বপ্নার মা বাবা প্রায় অসুস্থ হবার পর্যায়ে পৌঁছালেও স্বপ্নার এতে খুব একটা খারাপ লাগা নেই। আরিফ কোনদিনই তার বয়স তো বটেই চেহারা নিয়েও কখনও কোন অভিযোগ তোলেনি। বরং আরিফ নিজেই মাঝে মাঝে হীনমন্যতায় ভোগে তার নিজের অবস্থা নিয়ে। তখন স্বপ্নাকেই তার শান্তনা হতে হয়।

আজও আরিফের মলম পট্টি দরকার তার বাপের দেয়া ভয়ানক ক্ষতগুলোর নিরাময়ের জন্যে। অথচ মেয়েটার এখনও কোন পাত্তা নেই। নির্জন রাস্তার মোড়ে একা একা ফুঁসছে আরিফ। প্রত্যেকদিন মেয়েটা দেরি করে। ভাল কথা, করুক, মেয়েটার অভ্যাসটাই এমন। কিন্তু তাই বলে আজকেও? দাঁড়া তুই এসে পৌঁছা খালি।
আরিফের কুঁচকানো ভ্রু জোড়া আরো বেশী কুঁচকে ওঠে স্বপ্নার রিক্সাটাকে তার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে। ঘড়ি দেখে আরিফ। পাক্কা আধ ঘন্টা হল তার দাঁড়িয়ে থাকার। ভ্রু দুটোর আর কাছাকাছি আসবার জায়গা নেই। স্বপ্নার যে তা চোখে পড়েনি তা নয়। তবে এটাকে সে আরিফের মূদ্রা দোষ হিসেবে ধরে নিয়েছে। সুতরাং ছেলেটার সর্বচ্চো ভাবে কুঁচকে থাকা ভ্রু দুটোকে উপেক্ষা করে মিষ্টি একটা হাসি উপহার দিল সে। যদিও তাতে আরিফের চেহারায় কোন পরিবর্তন আসল না। তবে অতিরিক্ত হিসেবে স্বপ্না রিক্সা থেকে নামবার সময় অন্যদিনের মত এগিয়ে এল না আজ। অসুবিধা নেই, স্বপ্না অভ্যস্ত এসবে। মাঝে মাঝেই ছেলেটা এমন করে। খুব ঢিলে ঢালা ভাবে রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে আরিফের সামনে এসে দাঁড়ালো স্বপ্না।
“হাই।”
“আধ ঘন্টা লেট।”
“হ্যাঁ.. তো?” একেবারেই র্নিবিকার স্বপ্না।
“তো মানে?” আরিফের ফেটে পড়ার উপক্রম। “তুই লেট করবি কেন?”
এবার উত্তর দিতে সময় নেয় স্বপ্না। আরিফের রাগটাকে উপভোগ করে। হালকা চালে হাতের ব্যাগটাকে নাচায়। পায়ের ভর বদল করে।
“হ্যাঁ। মেয়েদের আধ ঘন্টা এক ঘন্টা লেট হতেই পারে। এটা নিয়ে এত সিন করার কি আছে?”
বাকশক্তি হারিয়ে ফেলল আরিফ। মুখে ক্ষোভটুকু প্রকাশ করতে না পেরে একেবারে টনটনে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বার প্রস্তুতি। কিন্তু কথা তো খুঁজে পাচ্ছে না যুদ্ধ করবে কি দিয়ে। শেষে স্বপ্নার এই মাত্র বলা কথাটা রিপিট করল আরিফ। যেন স্বপ্নাকে শেষ একটা সুযোগ দিচ্ছে আত্ম সর্মপনের। লাস্ট ওয়ার্নিং।
“লেট হতেই পারে?”
মাথা ঝাঁকালো স্বপ্না। সেই সাথে তার ব্যাগটাও আরেকবার দোলালো। অর্থাৎ নো সারেন্ডার। এবার নিজের মাঝে ফিরে এল আরিফ। হাজার হোক পুরুষ মানুষের মত যুদ্ধের সবগুলো রীতি নীতি সে পালন করেছে। মেয়েটাকে সাবধান করেছে, সময় দিয়েছে। এবার আক্রমন।
“তো ঠিক আছে।” বেপরোয়া ভাবে বলল আরিফ। “এরপর থেকে আমিও লেট করব।”
“তুই কি মেয়ে নাকি?” সাথে সাথে স্বপ্নার পাল্টা আঘাত। সাথে বিরক্তি। রীতিমত তাচ্ছিল্য নিয়ে স্বপ্না বলল, “আশ্চর্য!....”
মেয়েরা যখন এমন করে আশ্চর্য বলে তখন বুঝতে হবে এখানে মেয়েদের জাতিগত কিছু অধিকারের ব্যাপার রয়েছে। কিন্তু আরিফ সেটা ঠিক ধরতে পারল না। অবশ্য মেয়েদের কোনটাইবা এত সহজে ধরা যায়। সুতরাং ভ্রু কুঁচকে অপেক্ষা করতে লাগল আরিফ। তার অভিজ্ঞতা বলে এসব ক্ষেত্রে মেয়েরা তাদের ব্যাক্তিগত দর্শনটুকু প্রকাশ না করে থাকতে পারে না।
“লেট করব আমরা।” আহলাদী ভঙ্গি স্বপ্নার। এই ভঙ্গিতে তাকে খুব মিস্টি দেখায়। আর সেটা সর্ম্পকে বেশ সচেতন স্বপ্না। “আর তোরা ছেলেরা আমাদের জন্যে ওয়েট করবি।”
আরিফের ভ্রু জোড়া একদম সোজা হয়ে গেল। চোখ দুটো ইচ্ছাকৃত ভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক খানি বড় বড় করে মাথা কাৎ করে মেয়েটার প্রলাপ হজম করবার প্রস্তুতি নিল সে। স্বপ্না তখনও হাত নেড়ে নেড়ে বলে চলেছে,
“বার বার ঘড়ি দেখবি। একটু রাগ করবি। একটু টেনশন করবি। কিছু হইল না তো মেয়েটার?.. যদি হয়, যদি বাপ বাড়িতে আটকায় রাখে, তাইলে কেমন করে তাকে উদ্ধার করবি... এই সব পরিকল্পনা করবি। উত্তেজিত হবি।”
আর পারল না আরিফ। প্রলাপেরও একটা স্ট্যান্ডার্ট থাকে। এই মেয়ের সেই সেন্সটুকুও নাই। আবার ভ্রু দুটো আপনা থেকেই কুঁচকে গেল আরিফের। তবে স্বপ্নার তাতে থোড়াই কেয়ার। সে বলেই চলেছে,
“তারপর মেয়েটা যখন এসে হাজির হবে তখন তোরা ল-ম-বা একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবি। যাক বাবা, মেয়েটা তাইলে শেষ পর্যন্ত আসছে।”
অসহ্য। ফেটে পড়ল আরিফ।
“হোয়াট? তোরা..” চিৎকার করতে গিয়েও নিজেকে সামলাতে হল আরিফের। তাদের পাশ দিয়ে এক লোক হেঁটে যাচ্ছে। দৃষ্টি তাদের দিকে। কিছু বলার উপায় নাই। সরকারী রাস্তা। সবার সমান অধিকার। লোকটা চলে যেতেই আবার শুরু করল আরিফ। গলার আওয়াজ এবার নিয়ন্ত্রিত হলেও রাগ এখনও নিয়ন্ত্রনের বাইরে।
“তোরা দেরী করে আসবি আর আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলব?”
“হ্যাঁ।” স্বপ্না র্নিবিকার ভঙ্গিতে হাঁটতে শুরু করবে। আরিফও হাঁটবে। “মান আর না মান, তোদেরকে অপেক্ষা করায় রাখাটা আমাদের এক রকম প্রিভিলেজ। আমরা তো আর তোদের কাছ থেকে কোন রকম অধিকার পাই না।”
আরিফ হাল ছেড়ে দেয়। সব মেয়েই এক। কোন না কোন ভাবে তারা নারী অধিকার, নারী স্বাধীনতা এই সব বিষয়কে টেনে আনবেই। শালার এত দেখে শুনে প্রেম করলাম তারপরও নারী অধিকার আর নারী স্বাধীনতা। কান পঁচে গেল একেবারে। ইদানিং আর প্রতিবাদ করে না আরিফ। বিরক্তি নিয়ে প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাঁটতে থাকে স্বপ্নার পাশে। জানে মেয়েটার ভাষণ এখনও শেষ হয় নাই। আজকে বোধ হয় ভাষণ দিবস। ভাবল আরিফ। প্রথমে আব্বা, এখন স্বপ্না। সবই কপাল।
“সব সুযোগ সুবিধাই তোরা এক চেটিয়া দখল করে রাখছিস।” বলে যাচ্ছে স্বপ্না। “তাও তো এই সুযোগটা কেবল মাত্র বিয়ের আগ পর্যন্ত পাওয়া যায়। বিয়ের পরে তো এখানে যাবা না, ওখানে যাবা না, এর সাথে মিশবা না, ওর সাথে মিশবা না।”
এটা বাড়াবাড়ি। স্বপ্না জানে আরিফ এরকম ছেলে না। দাঁড়িয়ে যায় আরিফ। চেঁচিয়ে উঠে,
“বাজে কথা.....” পরক্ষনেই নিজেকে সংযত করে। মনে পড়েছে এটা রাস্তা। “....বলবি না। আমি মোটেও এই রকম করি না।”
স্বপ্না ডানে বাঁয়ে তাকায়। আরিফের অসহায়ত্বে বেশ মজা পায় সে। বেচারা। রাস্তা বলে প্রাণ খুলে চেঁচাতেও পারছে না ছেলেটা। আরিফকে আরেকটু উসকে দেবার জন্যে বলল,
“এখন করিস না বিয়ের পরে করবি।”
এবার গম্ভীর হল আরিফ। অনেক বড় অভিযোগ।
“দেখ স্বপ্না ...”
হঠাৎ আব্বার কথাটা মনে পড়ে গেল আরিফের। কোন ভদ্রলোক নাকি তার সাথে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে রাজী হবে না। উত্তেজিত হল আরিফ। কথাটা যদি সত্যি হয়? স্বপ্নার সাথে কি তাহলে তার....
“ভাল কথা। আচ্ছা, তোর বাপ কি ভদ্রলোক?”
“কি?” হতভম্ব বোধ করল স্বপ্না। এ আবার কি ধরনের প্রশ্ন।
“আরে বাবা সিম্পিল একটা প্রশ্ন...” স্বপ্নার বুঝতে না পারায় বিরক্ত আরিফ। “তোর বাপ কি ভদ্রলোক না অভদ্রলোক?”
এবার স্বপ্না চিন্তিত হয়। নিশ্চয় কিছু হয়েছে। আরিফের চোখের দিকে তাকিয়ে বুঝতে চেষ্টা করে বিষয়টা।
“আরিফ? তোর কি হইছে?”
এবার আরিফের হুঁশ হয়। প্রশ্নটা কেমন বেআক্কেলের মত হয়ে গেছে। কিন্তু কি করবে আব্বা এমন করে বলল যে.... আরিফ গোমরা মুখে মাটির দিকে তাকিয়ে বলল,
“বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আব্বা আামাকে অনেক কথা শুনাইল।... কোন ভদ্রলোক নাকি তার মেয়ের সাথে আমাকে বিয়ে দিবে না।”
একমুহূর্তের নিস্তব্ধতা। তারপরই হো হো করে হাসিতে ফেটে পড়ল স্বপ্না। এবং বেশ জোরেই। রাস্তার ওপারে লম্বা সাদা দাড়িওয়ালা মুরুব্বী গোছের এক লোক দাঁড়িয়ে ছিল। স্বপ্নার এমন ভয়াবহ হাসিতে ঘুরে তাকালো লোকটা। অস্বস্তিতে পড়ে গেল আরিফ। কিন্তু কিছু বলতেও পারছে না স্বপ্নাকে। সে কথাই বলেছে এমন হাস্যকর। লোকটা এখনও দেখছে তাদের। আরিফ হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিল। এবার স্বপ্নাও দেখেছে লোকটাকে। মুখে হাত চাপা দিল স্বপ্না। তবে তার হাসি থামল না।
“তুই এই জন্যে এই রকম আপসেট হয়ে আছিস। ....খোদা, পারিসও তুই।”
এবার বিরক্ত হবে আরিফ। না হয় হাস্যকর একটা কাজ করেই ফেলেছে তাই বলে এত হাসতে হবে? সব আব্বার দোষ।
“আরে ভাই,” হাত পা ছুঁড়তে লাগলো আরিফ, “প্রত্যেক দিন আব্বা সকাল বিকাল কথা শুনাচ্ছে। এত লোকের চাকরী হয়, আমার হয় না। আমি একটা অপর্দাথ।”
আরিফের অনিয়ন্ত্রিত হাত দুটো থেকে বাঁচাবার জন্যে নিজের মুখের সামনে একটা হাত তুলে ধরল স্বপ্না। তার চোখে মুখে কৌতুক। আরিফের এই ছেলেমানুষীগুলো কেন যেন ভাল লাগে স্বপ্নার। এই না পাওয়ায় ভরা জীবনে কয় জন এমন সরল ছেলে মানুষী নিয়ে থাকতে পারে। বরাবরের মত স্বপ্না আরিফের ছেলেমানুষীকে উস্কে দেয়।
“হুঁ, তাতো বটেই।”
তবে উস্কানিটা কাজে লাগে না। আরিফ ঝিমিয়ে যায়। অনেক তো হল বেকার থাকা। এক দিক দিয়ে আব্বা তো ঠিকই বলেছে। হাত দুটো প্যান্টের পকেটে ঢোকায়। মৃদু অভিমানী কন্ঠে বলে,
“আজকে আবার নুতন গান ধরছে। বউয়ের ভাত জোগাড় করো দূরে থাক আমি নাকি আমার নিজের ভাতই জোগাড় করতে পারব না।”
“ঠিকই তো।” হাসি চাপবে স্বপ্না। সে এখনও ইয়ার্কীর মুডে আছে। ছেলেটা মন খারাপ করলে একদম ছোট মানুষ হয়ে যায়। গাল টিপে আদর করতে ইচ্ছে করে।
“এল পি আরএ যাওয়ার পর থেকে আব্বা সারাদিন বাসায় বসে থাকে, আর আমার চাকরী নিয়ে বকবক বকবক করতে থাকে।” পায়ের সামনে পাওয়া একটা ছোট ইটের টুকরোতে কষে লাথি লাগালো আরিফ। সব রাগ যেন ঢিলটার উপর। “আরে চাচা মামা ছাড়া কারো চাকরী হয়?”
স্বপ্নার চোখে মুখে এখন কৌতুক। আরিফের সাথে তাল মিলায় সে। ঠোঁট গোল করে আফসোসের শব্দ করতে করতে ডানে বাঁয়ে মাথা ঝাঁকায়।
“চু চু চু ... ঠিকই তো।”
আরিফের অভিমান যেন আরো বাড়ে। আগের মতই পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাঁটতে থাকে। এবার থামা দরকার। নয়ত ছোট মানুষটা আবার বিগড়ে যাবে। প্রসঙ্গ পাল্টায় স্বপ্না।
“মনে আছে গত মাসে আমরা একটা এনজিওতে ইন্টারভিউ দিছিলাম?”
“কোন এনজিও?” বিরক্ত হয় আরিফ। “আমি এ পর্যন্ত ১৫/২০ টা এনজিওতে ইন্টারভিউ দিসি?”
এবার স্বপ্না বিরক্ত হয়। এত অস্থির কেন ছেলেটা। কথায় কথায় খালি বিরক্তি।
“আ হা .. যেটাতে আমার সাথে দিলি।”
এবার যেন কেউ চিরতার পানি খাইয়েছে এমনি ভাবে চোখ মুখ কুঁচকালো আরিফ। আজকাল আর ইন্টারভিউ দিয়ে আসার পর সেগুলোর কথা মনে আনতেই ইচ্ছা করে না তার। মেয়েটা কেন যে খালি খালি এই সব বিষয় নিয়ে কথা বলে। অযথা।
“হ্যাঁ। মনে পড়ছে। হয় নাই ওটা। হবে না জানতাম।”
স্বপ্না হঠাৎ দাঁড়িয়ে যায়। তার চোখে মুখে উৎকন্ঠা ভর করে। আরিফ এবার ভয় পায়। স্বপ্নার চোখ মুখ সহজে এমন হয় না। তাহলে কি মেয়েটার চাকরী হয়েছে? বুকের ভিতরটা কেঁপে উঠে আরিফের। কোন রকমে প্রশ্ন করে,
“কি?”
“আমার হইছে।”
মৃদু কন্ঠে বলে স্বপ্না। আরিফের এবার পৃথিবীটা টলে ওঠে। নিজেকে অপরাধী মনে হয় স্বপ্নার। ব্যাগ থেকে এপয়েন্টম্যান্ট লেটারটা বের করে আনমনে।
“কালকে দুপুরে আসছে।”
আরিফ আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে না। হাঁটতে শুরু করে এলোমেলো পায়ে। স্বপ্নার একবার মনে হয় খামটা ছিঁড়ে ফেলা যায় না। পরক্ষণেই চিঠিটা ঢুকিয়ে রাখে সে। চুপচাপ হাঁটতে থাকে আরিফের সাথে। ছেলেটার একটু সময় দরকার। আরিফ কিছুটা সহজ হতেই স্বপ্না বলে,
“মন খারাপ হইল?”
মন খারাপ? ভাবে আরিফ। এরচেয়ে বেশী খারাপ কিছু কি সম্ভব? একটা র্দীঘশ্বাস ছাড়ে আরিফ। তার বাড়ির সবাই অপেক্ষায় আছে কবে তার একটা চাকরী হবে। শুধু অপেক্ষা না, রীতিমত পাষবিক ভাবে অপেক্ষা, প্রত্যেক দিন প্রত্যেকটা রাত। যেন তার চাকরী আছে তো সে আছে। কিন্তু তার চাকরী হয় না। অথচ স্বপ্নার মা বাবা স্বপ্নার বিয়ের জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে। আর তার চাকরীটা হয়ে গেল। বাহ। ফাজলামীর একটা সীমা থাকা উচিৎ। আচ্ছা চাকরী অদল বদলের ব্যবস্থা নাই বাংলাদেশে? ম্লান হাসে আরিফ। তেতো গলায় বলে,
“না। তোর রেজাল্ট আমার চেয়ে ভাল, সো... এনি ওয়ে কংগ্রাচুলেশন।”
আরিফের বাহুতে আলতো করে হাত রাখল স্বপ্না। তার নরোম বুকের কোথায় যেন একটা চিনচিনে ব্যাথা হল আরিফের জন্যে। আবারও অপরাধ বোধটা ফিরে এল স্বপ্নার মাঝে। মনে হল যেন চাকরীটা তাদের মাঝে একটা দূরত্ব সৃষ্টি করেছে। তার চাকরীটা হবার পর মা বাবা কি চাকরী ছাড়া একটা ছেলের সাথে তার বিয়ে দেবে? নিজের অজান্তেই স্বপ্না আরিফের বাহুটা আরো ভালো করে আঁকড়ে ধরতে চাইল। পাশ দিয়ে একটা লোক হেঁটে যাওয়াতে সেটা আর হল না। লোকটা এদিকে তাকিয়ে আছে কেন? কখনও কোন ছেলে মেয়েকে এক সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতে দেখেনি নাকি? আরিফের ওসবে খেয়াল নেই। তার যেন সব জীবনী শক্তি ফুরিয়ে গেছে।
“এত হতাশ হচ্ছিস ক্যান?” বলে স্বপ্না, “আজকে আমার হইছে কালকে তোর হবে।”
“আমার আর হবে না।” পরাজিত কন্ঠ আরিফের। “হইলে এতদিন হয়ে যাইত।”
স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করে আরিফ। পারে না। মুখে এক টুকরো ম্লান হাসি ঝুলে থাকে তার। আরিফের বাহু পেঁচিয়ে ধরে স্বপ্না। বাহু পেঁচিয়ে ধরলেই আরিফ সব সময় দুষ্টুমী করে বলে, এভাবে ধরলেই বোঝা যায় আল্লাহ মেয়েদের কত নরোম করে বানাইছে। আর প্রতিবারই কথাটা শেষ হতে না হতেই স্বপ্না আরিফকে মারতে শুরু করে। কিন্তু আরিফের বাহু ছাড়ে না। আজ আরিফ কিছুই বলল না। মনটা খারাপ হয়ে গেল স্বপ্নার।
“তুই অন্য কিছু একটা করার চেষ্টা করিস না ক্যান?”
“কি?... ব্যাবসা?” হতাশ ভঙ্গিতে হাসে আরিফ, “পয়সা কই?”
আরো একটা র্দীঘ শ্বাস বুকের মাঝে দানা পাকায় আরিফের। বিরক্ত হয় আরিফ। এক জীবনে আর কত র্দীঘ শ্বাস ছাড়বে? সে কি র্দীঘশ্বাসের ডিপো নাকি। শ্বাস চাপতে গিয়ে বুকটা ফুলে ওঠে তার।
“আব্বাকে বললাম বাড়ির সামনের খালি অংশটা বিক্রি কর। একটা দোকান দেই। রেডিমেট কাপড়ের অথবা গিফট আইটেম অথবা বই... যাই হোক একটা কিছু....” শ্বাসটা শেষ পর্যন্ত চেপে রাখতে পারল না আরিফ। নিজের অজান্তেই বেরিয়ে গেল। “আব্বা তার পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করবে না।”
এই ব্যাপারে আরিফের সাথে আগেও কথা হয়েছে স্বপ্নার। আব্বার সেন্টিমেন্টটা বোঝে স্বপ্না। তাছাড়া জমি জমা বিক্রি করাটা তারও ঠিক ভাল লাগে না। পৈত্রিক ভিটা হল একটা মানুষের শেকড়, অস্তিত্বের স্বীকৃতি। আরিফ ঝোঁকের মাথায় ব্যাপারটা বুঝছে না।
“তোদের তো,” স্বপ্নার কন্ঠে সহানুভুতি ঝরে পড়ে, “বাড়িটা ছাড়া আর কোন জমি জমাও নাই।”
“জানি...” আনমনে বলে আরিফ। নিজেকে খুব বিদ্ধস্ত লাগে তার। সে জানে স্বপ্নার ধারনা বাড়ির সামনের খোলা জমিটার প্রতি তার কোন মমতা নাই। ঐ উঠানে সে ছোট থেকে বড় হয়েছে। নিজের বাড়ি ঘর কেউ কি এমনি এমনি বেঁচতে চায়।
“আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি রে আমার আর ভাল লাগে না।”
আবারও একবার এপোয়েন্টমেন লেটারটা ছিঁড়তে ইচ্ছা করে স্বপ্নার। এটার জন্যেই তো আরিফ আজকে এতটা ভেঙ্গে পড়েছে। আবার মনে হয় ছিঁড়েই বা কি লাভ। তাতে কি আরিফের সমস্যা মিটবে। মনটা খারাপ হয়ে যায় স্বপ্নার। নিচের দিকে তাকিয়ে আনমনে হাঁটতে থাকে। হঠাৎ হেসে ওঠে আরিফ। অবাক হয় স্বপ্না।
“শালার কোন বড়লোকের মেয়ের সাথে প্রেম করলেও তো হইত। অন্ততঃ যৌতুক হিসাবে কিছু টাকা আদায় যাইতো।”
মনটা ভাল হয়ে যায় স্বপ্নার। মেঘ কাটতে শুরু করেছে। যদিও তাকে নিয়ে ছেলেটা কিছু ভয়ানক আপত্তিকর কথা বলেছে, তারপরও আরিফের এই হাসি খুশি চেহারাটার জন্যে আজ সাত খুন মাফ। বুকটা হালকা হতেই স্বপ্না টের পেল এতক্ষণ কি তীব্র কষ্ট তার বুকটাতে চেপে বসে ছিল। আরিফ নিজের আবিষ্কৃত আইডিয়ার উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে পড়ে। স্বপ্নার মুখোমুখি হয়। তার চোখে মুখে কৌতুক। সেদিকে তাকিয়ে স্বপ্নার মনে হয় কি হবে তার এই পাগল ছেলেটাকে ছাড়া?
“আমাদের ক্লাসের,” বলল আরিফ, “সবগুলা বড়লোক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে কিনা একটু খোঁজ লাগা তো।”
এটা সহ্য করা যায় না। না হয় আর্থিক সমস্যার কারণে তুই আমাকে ছেড়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করবি, মানলাম। কিন্তু তোর জন্যে আমাকেই বউ খুঁজতে হবে। এটা কি মগের মুল্লুক। ঠাস ঠাস করে আরিফের বাহুতে কয়েকটা চাপড় মেরে দিল স্বপ্না। চোখ গোল করে বলল,
“একদম মাইর লাগাবো। অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকায় দেখিস খালি। চোখ ফুটা করে ফেলব একদম।”
স্বপ্নার পিট্টি দেয়া বাহুটাতে হাত বুলাতে বুলাতে দাঁত কেলিয়ে হাসে আরিফ। বরাবরই মেয়েটার কথার কোন দাম নাই। বলল মাইর লাগাবো। অথচ অলরেডী মার দিয়ে দিয়েছে। হঠাৎ করে তার মনে হয় আজকের দিনটা তো এমনই হবার কথা। আনন্দে ভরা। স্বপ্নার চাকরী হয়েছে আজকে। আমার হয় নাই, কিন্তু আমাদের কারো তো হইছে। এত দুঃখের গান আর ভাল লাগে না। যা আছে কপালে। আজকে শুধু সেলিব্রেশন।
“তার চেয়ে বরং এক কাজ করি।” কন্ঠে কৌতুক নিয়ে বলল স্বপ্না। আরিফের মনের রং বোধ হয় তার মনেও লেগেছে। “আমি গরিব হইলেও আমার চেহারাটা মাশাল্লাহ খারাপ না, কি বলিস?”
অন্য কারো সামনে স্বপ্না ভুলেও তার চেহারা নিয়ে এমন কথা বলে না। কিন্তু আরিফের সামনে বলা যায়। এবার আরিফের চিন্তিত হবার পালা। নিশ্চয় মেয়েটা কোন মতলব পাকাচ্ছে মনে মনে। যথারীতি আরিফের ভ্রু দুটো অনেকক্ষণ পরে আবার কুঁচকে গেল।
“হ্যাঁ.. তো?”
স্বপ্না হালকা চালে হাতের ব্যাগটা দোলাতে দোলাতে হাঁটা শুরু করল। হাঁটা শুরু করলে ভ্রু সোজা করতে হবে এমন কোন কথা নেই। তাই আরিফের ভ্রু দুটো আগের মতই থাকল। শুধু পা দুটো চলতে লাগল। দেখা যাক, তুমি আমাকে কোন কোর্ট দেখাও। হাইকোর্ট না সুপ্রিম কোর্ট।
“তুই আমার জন্যে একটা বড়লোক পাত্রের খোঁজ কর।” আরিফের তীর আরিফের দিকেই ফিরিয়ে দিল স্বপ্না। “বিয়ের পর আমার বরকে বলে টলে তোর জন্যে না হয় বেশ কিছু টাকার ব্যবস্থা করে দিব। দারুণ না বুদ্ধিটা।”
তীরটা জায়গা মত লাগল না। আরিফ সাথে সাথে হিসাব করা শুরু করে দিল কার সাথে স্বপ্নার বিয়ে দেওয়া যায়।
“কথা হচ্ছে,” বলল আরিফ, “বউএর প্রেমিকের জন্যে টাকা খরচ করবে এমন বড় লোক এই শহরে আছে কিনা খোঁজ নেওয়া দরকার।”
সটান দাঁড়িয়ে যায় স্বপ্না। আবারও মারতে শুরু করে। তবে আগের চেয়ে বেশী এবং আগের চেয়ে জোরে।
“কি? তোকে খুন করে ফেলব আমি। শয়তান, কুত্তা।”
আরিফ মারের হাত থেকে বাঁচার জন্যে ঝট করে ডানে বাঁয়ে তাকাবে। যেন রাস্তা ভর্তি লোক রয়েছে।
“এ্যাই, রাস্তার মধ্যে কি শুরু করলি?”
যদিও এই রাস্তাটা বরাবরই নির্জন। সে জন্যেই তারা এ রাস্তাতেই হাঁটতে আসে। তারপরও থেমে গেল স্বপ্না। ঠোঁট ফুলিয়ে দূরে সরে গেল। হাসল আরিফ। অভিমান করলে মেয়েটাকে তার খুব মিষ্টি লাগে। পিঠে হাত দিয়ে মেয়েটাকে ঠেলা দিল আরিফ।
“চল মিষ্টি খাওয়াবি। তোর চাকরীর মিষ্টি।”
“চল।” অভিমানী ভঙ্গিতে হাঁটতে শুরু করল স্বপ্না।

(পর্ব ৩) (পর্ব ৪) (পর্ব ৫) (পর্ব ৬) (র্পব ৭) (পর্ব ৮) (পর্ব ৯) (পর্ব ১০) (পর্ব ১১) (পর্ব ১২) (পর্ব ১৩) (শেষ পর্ব)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৫:৫৫
১৮টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ওরা আমাদের ঐতিহ্যের পোশাককে নোংরা পোশাক হিসেবে পরিচিত করতে চায়। ওরা আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে গ্রাস করতে চায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০


"লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি'মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।"

এক মৌলভী পোস্ট দিয়েছেন
"শাড়িকে একটি নোংরা পোশাক বানিয়ে দিয়েন না।
শরীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমূদ্র-সৈকতে - ১৬

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৫ ই জুন, ২০২৪ বিকাল ৫:১৯



ছবি তোলার স্থান : মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : পহেলা অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ।

বেড়াবার সবচেয়ে আকর্ষণীয় যায়গাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমূদ্র সৈকত। কখনো কখনো আমারও সুযোগ হয় বেড়াতে যাবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাঁআআআচ্চুউউউ! :) :D ;)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ৯:৩৩



হাঁচতে নাকি জানে না কেউ,
কে বলেছে বোন
এই দেখোনা কত্ত হাঁচির
ওজন শত টন।

কিম হাঁচে বাড়া ভাতে,
বাইডেন হাঁচে তার সাথে সাথে,
লালচে চীনের জোরসে হাঁচি,
কাঁদে সবুজ ঘাস।
মাদার রুশের হাঁচি দেখে
হয় যে বনবাস!!

বনবিবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেইন্ট মার্টিন ও কোক ইস্যু

লিখেছেন নিবারণ, ১৫ ই জুন, ২০২৪ রাত ১১:৩৪

বিগত কয়েকদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় সবচেয়ে চর্চিত বিষয়, কোকের বয়কট ও গত দুই দিন ধরে সেইন্ট মার্টিন মায়ানমার দখল করে নেয়ার খবর।

সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্রিভাবে ছড়িয়ে পড়েছে, মায়ানমার সেইন্ট মার্টিন দখল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে গান গাইলাম (সাময়িক)

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ১৬ ই জুন, ২০২৪ ভোর ৪:০৮

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে আমি আদর করে 'আই' ডাকি। আইকে দিয়ে অনেক কাজই করাতে হয়। এবারে, আমাদের ৫ ভাইদের নিয়ে একটি গান বুনেছি। আমরা ৫ ভাই অনেক দিন একসাথে হই না। আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×