সে গ্রীষ্মে গরম একেবারে সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল।দিনের গরমের পর এসে সাঁঝের গরম , সাঁঝের পর রাতের। শুধু ভোরের দিকে একটু তাজা আমেজ এসে সমুদ্র থেকে কিন্তু এই ক্ষীন শীতলতাটুকুও থাকে বেশিক্ষন নয়। আর তাপ ছড়ায় কেবল সূর্যই নয়। পাথর , বালি , এমন কি গাছের পাতা থেকেও চুইয়ে পড়ে গরম। মাথার ওপর আলস্যে ভাসা বিরল দু’ একটি মেঘ দেখে আর তুষারের কথা মনেও পড়ে না। এমন গরমে আদৌ কল্পনা করাই অসম্ভব যে দুনিয়ার কোথাও আছে তুষার-কনা , বরফ, ঠান্ডা।
সমুদ্রতীরের এই বসতটায় নিথর হয়ে গেল জীবন। লোকে হাঁটে গা –ছাড়াভাবে , নেতিয়ে পরে , রোদে বেরোতে ভয় পায়। এমন কি ঝানু পুলিন-বিলাসীরাও হামলা সইতে না পেরে ঠাঁই নিয়েছে ছায়ায়।
কিজিল কাঠের ছড়ি-বেঁচিয়ে বুড়োটাই কেবল এই তপ্ত সূর্যকে ত্যাগ করে নি। বসতো সে ঠিক জলের কিনারে নয় , একটু দূরে , পাথরের নিচু বাঁধটায়। ছায়া খুঁজতে না সে , নিজের সমস্ত ভাবভঙ্গি দিয়ে যেন চ্যালেঞ্জ করত দুপুরের ঝাঁজকে। দেখতে রোগা , বেঁটে, পোড়া মাটির মত গায়ের রং। মুখের অসংখ্য বলিরেখাগুলোকে মনে হত রোদ-পড়া ক্ষেতের ফাটল। মাথার ছোটো ছোটো পাকা চুলগুলোকে লাগতো নুনের মতো।
বুড়োর পাশে কিজিল কাঠের তিনটে টাটকা ছড়ি। বোঝা যায়, তাদের ঘষা-মজার কাজ শেষ হয়েছে অতি সম্প্রতি , এখনো হলদে হয়ে ওঠার ফুরসত পায় নি। মসৃন , মজবুত , ওজনদার ছড়ি , ফলাও করে বাঁকানো হাতল। দূর ভ্রমনে খুব ই উপযুক্ত। কালক্রমে তাতে হাতির দাঁতের রং ধরবে , দেখাবে ভারিক্কি , বনেদী।
দুঃখের বিষয় , কিজিল কাঠের ছড়ির মর্ম সবাই বোঝে না। তাই বুড়োর বেসাতির জন্যে চাহিদা ছিল কম। খামোকাই সে বসে থাকত তপ্ত পাথরে , লোকেরা চেয়েও দেখত না। যে –কোনো একটা শিলাখন্ড কি শুকনো গাছের মতো চোখ-সহ হয়ে গিয়েছিল সে।
এমনি একটা দিনে একবার বুড়োর কাছে দাঁড়ালো মস্ত শাদা পানামা-হ্যাট পরা একটি ছেলে। ভারী রোগ সে , লিকলিকে হাত , লম্বা গলা। টুপিটা ওর পক্ষে বেশ বড়ো, কান পর্যন্ত ডেকে গেছে।
ছেলেটা যে এখানকার বাসিন্দা নয় , দক্ষিণী এই বসতটায় নিতান্ত নবাগত , সেটা নির্ভুলভাবে বলে দেওয়া যায় তার গায়ের ঈষৎ গোলাপী রং দেখে , এখনো টা রোদ -পোড়া হয়ে ওঠে নি। বুড়োর সামনে জেগে উঠলো শাদা টুপিটা --- ছড়িগুলো দেখতে লাগলো ছেলেটা। হাতের মুঠোয় ওর টাকা ছিলো , কিন্তু ছড়ি কেনাটা ওর পরিকল্পনায় ছিল না। এমন আত্মসন্মানী ছেলে কে আছে যে লাঠির জন্য পয়সা খরচ করবে , সে তো গাছ থেকে কেটে নেওয়া বা অন্য কোনো উপায়ে সংগ্রহ করা খুব ই সম্ভব ! কিন্তু কিজিল কাঠের ছবিগুলো খুব ই অসাধারণ। সাধারণ লাঠির তুলনায় তাদের রং চেহারার পার্থক্য ছাড়াও আরো একটা পার্থক্য এই ছিল যে এগুলোর জন্যে দাম দিতে হয়।
‘কত করে ?’ জিজ্ঞেস করলে শাদা-টুপি-পরা ছেলেটা।
‘ এক – এক আধুলি ,’ গা- ছাড়াভাবে জবাব দিলে বুড়ো। ছেলেটা ধারণা হল নিজের মাল বেচারা জন্যে বুড়োর মোটেই কোনো চাড় নেই। বুড়োর গোটা মুখ -ভর্তি ছোটো ছোটো ফাটল , তার মধ্যে দুটো ফাটল অন্যগুলোর চেয়ে বড়ো : তার ভেতর থেকে বুড়োর চোখ নির্বিকারভাবে ছেলেটার দিকে একবার চেয়ে ফের ফাঁটলে সেধালো। ছেলেটা চলে গেল আইসক্রিম কিনতে।
এখানে ছেলেটা উঠেছিল তার বাবার পরিচিতদের এক বাড়িতে। এ পরিচিতরা কেমন লোক , সেটা সে ঠাহর করতে পারে কেবল আসার দু'দিন পরে। পরিচিত এই লোকটি ছিল বেশ মোটা , কিন্তু আশ্চর্য চটপটে। হাঁটে , খায় , কথা বলে সবাই খুব তাড়াতাড়ি। তাছাড়া মেজাজ তার তাড়াতাড়ি বদলায়। প্রথম দিনে সে অতিথিকে বরণ করে সোরগোল তুলে , উল্লাস করে , যেন এতদিন সে কেবল ওই আসার পথ চেয়েই বসেছিল , এবার ছেলেটির একটু মুখের কথা খসা মাত্র সে তার জন্যে সবকিছু করে দেবে। কিন্তু পরের দিন সে ছেলেটাকে চেয়েও দেখলে না , নিজের কাজ নিয়েই রইল , সর্বদাই যেন তার কী একটা তারা। গৃহকর্ত্রী , পরিচিতের স্ত্রী চুপচাপ, নিরুচ্ছ্বাস মানুষ।
‘এখানে ঘুমাবি। দুপুরের খাওয়া দু'টোর সময়। সাতটায় রাতের খাওয়া। আর প্রাতরাশ আমরা করি সকাল-সকাল ,’ ছোট্ট অতিথিকে এই কথাটুকু জানিয়ে সে চুপ করে যায়।
পানামা-পড়া ছেলেটিকে কেউ কিছু করার অনুমতিও দেয় নি , নিষেধ করে নি। যা মর্জি হত সবই সে করতে পারতো। যখন সে সমুদ্র-স্নান করলে কেউ ধমক দিল না : ‘ নে হয়েছে !’ ‘ উঠে যায় !’ সেও উঠে আসে নি।
তারপর ওর ইচ্ছে হলো পাহাড়ে যাবে। মনে হয়েছিল , পাহাড় বুঝি হাতের নাগালে , আসলে হাঁটতে হয়েছিল অনেক। সমুদ্রতীর থেকে যা মনে হয়েছিল পাহাড়ের গায়ে ঘাস , দেখা গেলো তা আসলে বড় বড় গাছ – পাহাড়ি বন , ঘন , দুর্ভেদ্য, খোঁচা -খোঁচা। আকাবাকা পাথুরে হাঁটাপথ দিয়ে উঠে যায় ছেলেটা , তৃপ্তি করে শরীর জুড়িয়ে নেয়।
ডাল ভাঙার শব্দ কানে এসে ছেলেটার। সতর্ক হয়ে জড়াজড়ি ডালপালা-গুলোকে সরাতে সরাতে সে শব্দটার অনুসরণ করে। দেখতে পেলে সেই বুড়োটাকে , সমুদ্রতীরে যে কিজিল কাঠের ছড়ি বেচে। একটা ডিবিতে উঠে বুড়ো সরু একটা ছাড়া কাটছিল। কিন্তু পারছিল না। সশব্দে দম নিয়ে বুড়ো ফের কাজে নামছিল। অস্ফুট খ্যাঁক-খ্যাঁক শব্দ করে মৃদু কোঁথাচ্ছিল :
‘আঁহ্ .... আঁহ্ ...'
ডালপালার মধ্যে থেমে গেল শাদা টুপিটা। গাছটা কি এতই শক্ত যে বুড়ো কাবু করতে পারছে না ? নাকি বুড়োই এত দুর্বল ? তার পিঠটা দেখতে পাচ্ছিল ছেলেটা : বাঁকা , পরিশ্রান্ত। পিঠের শার্টটা ঘামে ভেজা।
‘আঁহ্ .... আঁহ্ ...' ভেসে আসছিলো জায়গাটা থেকে।
ছেলেটার মনে হয় এই বুঝি বুড়োর কিছু একটা ছিঁড়ে যাবে , ফেটে যাবে , ভেঙে পড়বে। খয়েরি রঙের গলায় ফুটে উঠেছে বিন্দু - বিন্দু ঘাম। সমস্ত বলিরেখাগুলো জ্বল-জ্বল করছে যেন শিশির-ভেজা। অনেক মেহনত করতে হলো বুড়োকে। শেষ পর্যন্ত কাটা গেল গাছটা। হয়রান হয়ে মাটিতে বসে পরে সে চোখ বুজলে।
সন্ধ্যার দিকে শাদা-টুপি ছেলেটা যখন সমুদ্রতীরে দেখা দিল , বুড়ো তখন বসে ছিল তার বরাবরের জায়গাটিতে। সামনের তার নুড়ির ওপর কিজিল কাঠের দুটি টাটকা ছড়ি। কাছ দিয়ে চলে যাচ্ছে লোক , বুড়ো বা তার বেসাতির দিকে কেউ তাকিয়েও দেখছে না।
একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছেলেটা দেখতে লাগল কেউ ওর ছড়ি কেনে কিনা। যেন বুড়োর সুকঠিন ভাগ্যের খানিকটা ভাগ নিতে চাইল সে। বাঁধের ওপর বুড়োর নিশ্চল মূর্তিটার দিকে তাকালো সে , মনে পরে গেল কি ভাবে ওর গলার সমস্ত ভাঁজগুলো জ্বলজ্বল করছিল ঘামে , বুক ভেঙে বেরিয়ে আসছিল কাতরানি :
আঁহ্ .... আঁহ্ ...
সে ঘাম কেউ দেখে নেই। শোনে নি কাতরানি। কিনলে না তার ছবি। ছেলেটা তখন তার পকেট থেকে আইসক্রীম কেনার পয়সাটা নিয়ে এগিয়ে গেল বুড়োর কাছে। কিজিল কাঠের টাটকা ছড়িটা কিনলে সে। ছেলেটা ভেবেছিল সওদা বেচতে পেরে খুশি হয়ে উঠবে বুড়ো , কিন্তু তার অচঞ্চল মুখের ওপর আনন্দের চিহ্ন ই দেখা গেল না। দামটা নিয়ে বুড়ো মাথা হেলিয়ে দেখালে ছড়িগুলোর দিকে:
'যেটা খুশি বেছে নে।' হাতের কাছে যেটা পেল সেটা নিয়ে চলে গেল ছেলেটা। সেই থেকে প্রত্যেক দিন সে আসতো বুড়োর কাছে , আইসক্রীমের বদলে কিনত কিজিল কাঠের ছড়ি। ঘরের কোনে তার জমে উঠল ছাঁড়র স্তুপ। ওর কিন্তু নতুন নতুন ছড়ি কেনার বিরাম নেই।
‘গাছগুলো এমন খামোখা নষ্ট করছিস কেন বল তো ?' মন্তব্য করেছিল একবার বাবার সেই পরিচিত। ছেলেটা চুপ করে থাকে। কিন্তু পরের দিন ফের আরেকটি ছবি যোগ হয় তার মজুদে। আর প্রত্যেক দিন সে ছড়ি কিনলেও কানে নেমে-পড়া সাদা পানামা- টুপিটা যেন বুড়োর নজরে পড়ত না।
গ্রীষ্মের শেষ মাস টা শেষ হতে চলেছে। কমে গেছে গরম। গাঢ় , কালচে , তারা-ভরা সন্ধ্যাগুলো শুরু হয় তাড়াতাড়ি। কাছিয়ে আসছে চলে যাবার দিন। হটাৎ ছেলেটার মনে হয় , ও চলে গেল কে কিনবে তার ছড়ি ?
যাবার আগেকার এমনি এক দিনে ছেলেটা গেল তার নিত্যকার সওদা কিনতে। নিজের অচল পশরা নুড়ির ওপর বিছিয়ে বসে ছিল বুড়ো। হয়তো ঢুলছিল সে , নয়তো মগ্ন হয়ে ছিল নিজের গভীরে। সামনে তার যখন সাদা পানামা-টুপিটা দেখা দিল , তখন একটু নড়লো না। যে ছড়িতে কিনুক , ছেলেটার তাতে এসে যায় না , তাহলেও বুড়ো যাতে ক্ষুণ্ন বোধ না করে সেজন্য ছড়ি দুটোকে অনেকখন নাড়াচাড়া করে তার একটিকে বাচলে বেশ ভারী ছড়ি , তাজা ছালের ঝাঁঝালো গন্ধ বেরুচ্ছে তা থেকে। দাম মিটিয়ে ছেলেটা চলে যাচ্ছিল , কিন্তু বুড়ো তার দিকে চেয়ে বলল :
‘বস্ এখানে ।’
উবু হয়ে বসল ছেলেটা।
‘ কাজ আমার একটা চাই-ই চাই ,' ছেলেটার দিকে না তাকিয়ে বলল বুড়ো , ‘ কাজ ছাড়া থাকতে পারি না .’
ছড়ি-বেচিয়ের গলা ছেলেটা এই প্রথম শুনলে : চাপা গলা , যেন তা উঠেছে সমুদ্রের গর্জন থেকে।
কি উত্তর দেবে ছেলেটা ভেবে পেল না। মুখে ওর চিন্তা ফুটে উঠলো। বড় শাদা পানামা-টুপিটা খসে পড়লে একটা কান থেকে।
‘আমি শিগগিরই চলে যাবো … কি হবে তাহলে ?’ জিজ্ঞেস করলে সে।
কোনো জবাব দিলে না বুড়ো। ঘড়ঘড় শব্দ করে চঞ্চল হয়ে কি একটা জিনিস বার করলে ন্যাকড়ায় মোড়া। সেদিকে নজর ছিল না ছেলেটার। বুড়ো কিন্তু ধীরে সুস্থে মোড়ক খুললে , মেটে-রঙা তার হাতে দেখা গেল রূপোর খোদাই করা একটা ছোরা । কালো খাপটায় রূপোর কাজ করা। গাঢ় লাল রঙের হাতলটা নিষ্প্রভ হয়ে এসেছে কালক্রমে।
‘ধর ,’ বলে বুড়ো এগিয়ে দিল পুরোনো ছোরাটা।
প্রথমে ছেলেটা ভেবেছিলো বুড়ো তাকে বড়োলোক ঠাউরেছে , কিজিল কাঠের ছড়িগুলোর মতো ছোরাটাও তাকে বেচতে চায়। প্রায় সে বলেই ফেলেছিল, ‘আমার টাকা নেই,’ কিন্তু বুড়োর মুখ দেখে খেয়াল হল তা বিক্রির জন্যে নয় , উপহার।
তাহলেও এমন একটা উপহার নাইস সংকোচ হলো তার।
‘ ধন্যবাদ , কিন্তু না , না , আমার দরকার নেই ,’ বলে ছেলেটা , ছোরাটা ছোঁবার সাহস হলো না তার।
‘না , ধর !’ দৃহভাবে বললে বুড়ো , ‘ তোকে আমার মনে ধরেছে। তুই একটা মানুষ। ’
ছেলেটার হাতে সে যে –হাতিয়ারটা গুঁজে দিলে তা কেবল পরমবন্ধুই দান করে তার বন্ধুকে।
বেশ ভারি ছোরা, আর ওই ভারটার জন্যে কেন জানি বুক ভরে উঠল আনন্দে।
তারপর এক নিরিবিলিতে ছেলেটা বার বার করে ছোরাটা খুলেছে খাপ থেকে, দেখেছে , তারপর ফের ঢুকিয়ে রেখেছে।
ফলাটা ভালো করে দেখতেই হাতলের কাছে পড়ল একটা লেখা। হরফ গুলো বেশ ক্ষয়ে গেছে, তাহলেও বালকের তীক্ষ্ণ চোখে তা ধরা না দিয়ে পারলো না। হরফগুলো জুড়ে জুড়ে হয়ে উঠলো শব্দ , আর সগর্বে সে শব্দ কঠোর ঘোষণা করেছে : ‘ বিশ্বস্ত বন্ধুকে !'
-------------------------------------------------------------------
বইয়ের নামঃ রূপের ডালি খেলা
ধরণঃ রাশিয়ান শিশু সাহিত্য
মূল লেখকঃ ইউ. ইয়াকভলেভ
অনুবাদঃ ননী ভৌমিক
ছবি এঁকেছেনঃ ইউ. ফমেঙ্কো
রূপের ডালি খেলা - নামের শৈশবের একটা রাশিয়ান বইয়ের একটা গল্প - কিজিল কাঠের ছড়ি ! মাঝে মাঝে শৈশবের সেই রাশিয়ান বইগুলো বুকের মাঝখান থেকে আচমকা বের হয়ে আসতে চায় লেখায়। খুব ছোটবেলায় যখন আব্বা আমাকে বই পড়ে শোনাতেন , যখন আমি বানান করেও পড়তে পারতাম না , যখন আমি স্কুলেও যেতাম না -- তখন থেকেই রাশিয়ান বইগুলো আবার সাথেই আছে। তাই সেই 'ছোটমানুষের ' বইগুলোকে মাঝে মাঝে আমি শৈশবের স্কুল বলে ডাকি !
প্রিয় রাজীব নূর ভাই জানতে চেয়েছিলেন , কিজিল কাঠ কি জিনিস?
ছোটবেলায় প্রশ্নটা মাথায় এসেছিলো। আব্বা কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। আব্বা তো সব জানেন! তবে তিনিও বলতে পারেন নি।ইন্টারনেটে অনেক খুঁজেছি নিজের মত করে। পাইনি কোথাও।
এই পোস্ট টা দেয়ার পরে প্রিয় ব্লগার রাজীব ভাই সেই একই প্রশ্ন করলেন , সেই একই জিনিস জানতে চাইলেন। 'কিজিল কাঠ কি জিনিস? '
আমি তো এতদিনে ধরে নিয়েছি কিজিল কাঠ হয়তো সৈকতে পাহাড়ের ঢালে জন্মানো কোন গাছ , ঝাউ গাছ টাইপের কিছু। পাহাড়ি কোন গাছ যে হবে সেটা নিশ্চিত ছিলাম
কিন্তু রাজীব ভাইয়ের প্রশ্নটা মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠলো। হন্যে হয়ে খুঁজলাম দুজনে। অবশেষে হতাশ হয়ে ধরে নিলাম - ওই ঝাউ গাছ টাইপের কোন গাছ , রাশিয়ান নাম হয়তো কিজিল। ঠিক করলাম এটা নিয়ে আর মাথা ঘামাবো না। কিন্তু যতই ঠিক করি না কেন , ব্রেন সেল গুলো মানলো না। কিজিল কাঠ মাথার ভেতর ব্রেন সেলগুলো নিয়ে জটলা পাকালো।
২৫ বছর পর প্রশ্নটার উত্তর নিয়ে আসলেন প্রিয় শের শায়েরি ভাই, 'ইংলিশে কর্নেলিয়ান চেরী গাছ কেই রাশিয়ানরা কিজিল গাছ বলে। '
রাজীব ভাই প্রশ্নটা না করলে হয়তো উত্তর জানা হতো না কোনদিন। আর শের শায়েরি ভাই না থাকলে উত্তরই কে দিতো।
আসলে এটাই ব্লগিং , এটাই ব্লগ। আর ব্লগিংয়ের মজা এখানেই ! সবার জন্য ভালোবাসা।
আরো সোভিয়েত শৈশব :
মানুষ উঠল আকাশে : গল্প সত্যি করার গল্প ।
নববর্ষের রাশিয়ান শৈশব : ফার গাছ
রাশিয়ান শৈশবঃ এই শীতে যারা জল ছোঁবেন না বলে পণ করেছেন
রাশিয়ান শৈশব : বাবা যখন ছোটো - ২
রাশিয়ান শৈশব : বাবা যখন ছোটো - ১
সাহসী রাশিয়ান শৈশব : বীর ছেলে কলিয়া ( শেষ অংশ )
সাহসী রাশিয়ান শৈশব : বীর ছেলে কলিয়া ( ১ম অংশ )
ঝলমলে সোভিয়েত শৈশব: আপেল
ঝলমলে সোভিয়েত শৈশব: বিপদ তারণ পাঁচন
রাশিয়ান শৈশব: ছবি ব্লগ ( বাচ্চা এবং বাচ্চাদের বাবা মায়েদের জন্য )
রুটির ফুল --- আমার সোভিয়েত শৈশব (আমার শৈশবের স্কুল !)
সাত বন্ধু ইয়ুসিকের - ( আমার সোভিয়েত শৈশব )
রূপের ডালি খেলা - (আমার সোভিয়েত শৈশব)
জ্যান্ত টুপি (আমার সোভিয়েত শৈশব)
সভ্য হওয়া - (আমার সোভিয়েত শৈশব)
মালপত্র (আমার সোভিয়েত শৈশব)
শেয়ালের চালাকি ১ (আমার সোভিয়েত শৈশব)
মোরগ ভাইটি (আমার সোভিয়েত শৈশব)
বীরব্রতী ভাসিয়া -- আমার সোভিয়েত শৈশব (আমার শৈশবের স্কুল !)
আমার সোভিয়েত শৈশব - আমার শৈশবের স্কুল !
শুনছি , ঘাস বাড়ছে...
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:১২