ভেসে থাকা কচুরীপানার ফোটে বাহারী ফুল
কখনো থাকে বদ্ধ কখনো বা চলমান জলে
ভাসমান কচুরীপানার সাথে ফুলেদের কথা
হয় জলে স্থলে ও উড়ন্ত আকাশ পথে।
----- ডঃ এম এ আলী -----
কচুরিপানা মুক্তভাবে অবাধ ভাসমান বহুবর্ষজীবী গুল্মজাতীয় জলজ উদ্ভিদ। বায়ুকুঠুরি থাকায় কচুরিপানা খুব সহজেই পানির ওপর ভেসে থাকতে পারে। বাংলাদেশে এটি আগাছা, জন্মায় বদ্ধজলাশয়ে প্রায় সর্বত্র। এর কমন নাম Common water hyacinth, Water hyacinth ইত্যাদি। বৈজ্ঞানিক নাম Eichhornia crassipes.
Eichhornia গণে এদের সাতটি প্রজাতি আছে। কচুরিপানার পরিবারের অনেকেই আমাদের খাবার পাতে বহুকাল ধরেই আছে। কচুর কন্দ, লতি, ডাঁটা, পাতা ইত্যাদি আমাদের অনেকেরই প্রিয় খাবার।
কচুরিপানার ফুল সাধারনত ফোটে অক্টোবর থেকে জানুয়ারি মাসে। কচুরিপানার একটি পুষ্পবৃন্ত থেকে ৮-১৫ টি আকর্ষণীয় ছয় পাঁপড়ি বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন ফুলের থোকা বের হয়। খুবই হালকা বেগুনি ছয়টি পাপড়ির মধ্যে ঠিক উপরেরটিতে ময়ূরের পালকের মত নীল রংয়ের নকশা থাকে। তার মাঝে হলুদ রঙের একটা তিলক। ফুলটিতে কোনো ঘ্রাণ না থাকলেও এর সৌন্দর্যের আকর্ষণ একেবারেই অগ্রাহ্য করার উপায় নেই। কচুরিপানা দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের প্রাদেশিক ফুল।
পুরু, চকচকে এবং ডিম্বাকৃতির পাতাবিশিষ্ট কচুরিপানার আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। কচুরিপানা খুবই দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। পৃথিবীর দ্রুত বর্ধনশীল উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে অন্যতম হল কচুরিপানা। বর্ষাকালে এরা সবচেয়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পরে। এরা মাত্র দুই সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়ে যায়। এদের বীজ ৩০ বছর পরেও অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলে একটিমাত্র উদ্ভিদ মাত্র পঞ্চাশ দিনে তিন হাজারের বেশি সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে। বিভিন্ন প্রজাতির জলচর পাখি এদের বীজ বিস্তারে সাহায্য করে।
ধারণা করা হয় কচুরিপানার ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এক ব্রাজিলীয় পর্যটক ১৮শ' শতাব্দীর শেষভাগে বাংলায় কচুরিপানা নিয়ে আসেন। তারপর তা এত দ্রুত বাড়তে থাকে যে ১৯২০ সালের মধ্যে বাংলার প্রায় প্রতিটি জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। ১৯৩৬ সালে কচুরিপানা আইন জারি করা হয়, যার মাধ্যমে বাড়ির আশেপাশে কচুরিপানা রাখা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত কচুরিপানা পরিষ্কার অভিযানে অংশ নেয়াকে নাগরিক কর্তব্য ঘোষণা করা হয়। পরে আইয়ুব খান দেশজুড়ে কচুরিপানা নিধনে রাসায়নিক স্প্রে করে বিল-বাঁওড় বিষাক্ত করে দেয় ১৯৬০ দশকে।
শুনতে পাই কচুরিপানার বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশ Eichhornia নামটি এসেছে প্রুসিয়ান রানির নাম থেকে। রানি এই ফুলের রূপে মুগ্ধ ছিলেন।
ফুলের সৌন্দর্যে শীতের দেশের রানি যতই মুগ্ধ হন না কেন, গরম দেশে এসে তা রীতিমতো উৎপাত হয়ে ওঠে। মশার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রজননক্ষেত্র এই কচুরিপানা। শীতের সময় কচুরিপানা মরে যায়। নোনা পানিতেও বাঁচে না। মাছ চাষে কচুরিপানার ব্যবহার আছে। গরমে পানি শীতল রাখে। কচুরির দাড়ির মতো শিকড়ের ভাঁজে ভাঁজে মাছ আশ্রয় নেয়। চিংড়ি, কই মাছের খুব প্রিয় আবাস এই কচুরিপানা। কচুরিপানা এখন প্রধানত সার হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া বর্ষাকালে বন্যা কবল এলাকায় গবাদি পশুর খাদ্য হিবেসেও ব্যবহার হয়। একটি তথ্যচিত্রে দেখলাম দক্ষিণাঞ্চলে কিছু গ্রামে কচুরিপানা থেকে একধরনের কাগজ উৎপাদন হচ্ছে। এই কাগজ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে।
বিদেশী এই কচুরিপান আমাদের দেশী বাউল গানে স্থান করে নিয়েছে -
থাকিলে ডোবাখানা, হবে কচুরিপানা
থাকিলে ডোবাখানা, হবে কচুরিপানা
বাঘে হরিণে খানা একসাথে খাবে না
স্বভাব তো কখনো যাবে না
ও মরি, স্বভাব তো কখনো যাবে না
ছবি তোলার স্থান : নাগরি, কালীগঞ্জ, গাজীপুর, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ০৪/১১/২০১৯ ইং
=================================================================
আজি যত কুসুম কলি ফুটিলো কাননে
ফুলেদের কথা
অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অলকানন্দা, আকন্দ, আমরুল,
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা
গাঁদা, গামারি, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া,
ঘোড়া চক্কর
জ্যাকারান্ডা,
ঝুমকোলতা
ডালিয়া
তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা
ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা,
পপী, পুন্নাগ
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট
ভাট ফুল
মাধবীলতা, মধুমঞ্জরি
রঙ্গন, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাধাচূড়া, রাণীচূড়া
লতা পারুল
শাপলা (সাদা), শিউলি, শিবজটা, সুলতান চাঁপা
জবা - ১, জবা - ২, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, গোলাপী জবা
=================================================================
ফুলেদের ছবি
ফুলের রাণী গোলাপ - ০১, ফুলের রাণী গোলাপ - ০২, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৩, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৪
ফুলের রাণী গোলাপ - ০৫, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৬, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৭, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৮
ফুলের রাণী গোলাপ - ০৯, ফুলের রাণী গোলাপ - ১০, ফুলের রাণী গোলাপ - ১১, ফুলের রাণী গোলাপ - ১২
ফুলের রাণী গোলাপ - ১৩, রাতের গোলাপ - ০১, রাতের গোলাপ - ০২, রাতের গোলাপ - ০৩
অর্কিড-২, অর্কিড-৩, অর্কিড-৪, অলকানন্দা (বেগুনী)-২, অলকানন্দা (বেগুনী)-৩, আমরুল-২,
কসমস-২, কসমস-৩, কসমস-৪, কসমস-৫, কসমস-৬, কর্ণফ্লাওয়ার-২,
গাঁদা-২, গ্লুকাস ক্যাসিয়া-২, গোলাপি আমরুল-২,
ঝুমকোলতা-২
ডালিয়া-২, ডালিয়া-৩, ডালিয়া-৪,
তারাঝরা- ২, দাদমর্দন-২
নাগেশ্বর-২, নাগলিঙ্গম-২, নাগলিঙ্গম-৩
পপী-২, পপী-৩, পপী-৪, ফাল্গুনমঞ্জরী-২,
বাগানবিলাস-২, বোতল ব্রাশ-২, বোতল ব্রাশ-৩,
মাধবীলতা-২
রুদ্রপলাশ-২, রাজ অশোক-২, রাধাচূড়া-২, রাধাচূড়া-৩,
লতা পারুল-২, লতা পারুল-৩
শিউলি-২
গামারির হলুদ বন্যা, আরো কিছু গামারি, শিমুল গাছে আগুন, অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল
মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল
=================================================================
গাছেদের কথা
বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০২২ বিকাল ৪:০৮