somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাল শাপলা

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সময়টা ২০২২ সাল, জানুয়ারি মাসের ৫ তারিখে গিয়ে ছিলাম দিনাজপুরের সেই বিখ্যাত রামসাগর দিঘী দেখতে। সকালে হোটেল থেকে বেরিয়ে আমাদের প্রথম গন্তব্য ছিলো রামসাগর দিঘী। সেই সময় দিনাজপুরে ছিলো প্রচন্ড শীত। সেদিন ছিলো ঘন কুয়াশার প্রকপ। সকাল সাড়ে নয়টায় যখন দিঘীর ধারে পৌছেছি তখন কুয়াশা আর শীতে আমাদের অবস্থা খারাপ। ঠান্ডা যেমনতেমন, কুয়াশায় ছেয়ে আছে চার ধার। দিঘীর জলের মাঝখানে যেনো কুয়াশার চাদর বিছিয়ে দেয়া হয়েছে। একটু দূরের কিছুই ঠিক মতো দেখা যাচ্ছিলো না। সেই কুয়াশার মাঝেই দেখতে পেলাম বেশ কিছু লাল শাপলা ফুটে আছে দিঘী জলে।



লাল শাপলা
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : রক্ত কমল, লাল কমল, আলগন্ধা, অলিপ্রিয়া, আলোহিতা, নিলুফার
Common Name : Red Water Lily
Scientific Name : Nymphaea Rubra


লাল শাপলা বা রক্ত কমল নাতিশীতোষ্ণ ও গ্রীষ্মমণ্ডলীয় এলাকার স্বল্প গভীর জলের হ্রদ ও পুকুরে জন্মে। সাধারণত বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, চীনের ইউনান প্রদেশ, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশে শাপলা ফুটতে দেখা যায়।



সারা বাংলাদেশের সমস্ত বদ্ধ জলাশয়েই জলজ ফুল শাপলাকে ফুটে থাকতে দেখা যায়। গ্রামবাংলার চিরায়ত এক দৃশ্য বিলের জলে কিশোর ছেলে ছোট্ট নৌকোয় তুলছে শাপলা। আমাদের বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশী চোখে পরে সাদা শাপলা। এবং তারপরেই আছে লাল শাপলার অবস্থান। এই লাল শাপলার বৈজ্ঞানিক নাম Nymphaea Rubra। প্রচীন যুগে গ্রীকরা এই জাতীয় ফুলকে Nymph (জলপরীদের) উৎসর্গ করতো, সেখান থেকেই এই Nymphaea শব্দটি এসেছে।

Hylas and the Nymphs by John William Waterhouse (উইকি)

বাংলাদেশে কয়েক প্রজাতির শাপলা দেখতে পাওয়া যায়। এদের মধ্যে শুধু মাত্র সাদা শাপলাই আমাদের জাতীয় ফুলের মর্যাদা পেয়েছে, অন্য কোনো রঙের শাপলা তা পায়নি।

যতদূর জানি সারা পৃথিবীতে মোটামুটি ৩৫ প্রজাতির মত শাপলা দেখতে পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের শাপলাদের রং সাধারণত সাদা, লাল, লালচেগোলাপী, নীল, আর নীলচে সাদা, বেগুনী হতেই বেশী দেখা যায়।



জলের উপর ভেসে থাকে শাপলা ফুল আর তার বড় সবুজ পাতা। সাধারণত শাপলা ফুল পানির উপরে ছড়ানো অবস্থায় থাকে। কদাচিৎ পানির অল্প নীচে থাকতে পারে, কোথাও কোথাও এই অল্প ডুবে থাকা শাপলাকে “ডুবুরি শাপলা” বলে

শাপলার পাতা আর ফুলের কান্ড বা ডাটি বা পুস্পদন্ড পানির নিচে মূলের সঙ্গে যুক্ত থাকে আর এই মূল যুক্ত থাকে মাটির সঙ্গে। এই মূল থেকই আবার নতুন শাপলা জন্ম নেয়। শাপলার কান্ড বা ডাটা বা পুস্পদন্ড সবজী হিসেবেও খাওয়া হয়। আজকাল এই শাপলা ফুলের কান্ড বা ডাটা বা পুস্পদন্ড বাজারে বিক্রি হচ্ছে হরহামেসাই। তবে লাল শাপলা অনেকেই খেতে চায় না।



পূর্ণবিকশিত শাপলা ফুলের গর্ভাশয়ে গুড়ি গুড়ি বীজ থাকে। আঠালো এই বীজ গ্রামের ছোটো ছোটো বাচ্চাদের খেতে দেখা যায়। তাছাড়া এই বীজ ভেজে এধরনের খাবার তৈরী করা হয় যার নাম “ঢ্যাপের খৈ”। খেতে খুবই চমৎকার। কিন্তু উপযুক্ত সময়ে গর্ভাশয়ের এই বীজ সংগ্রহ না করা হলে শেষ পর্যায়ে তা শুষ্ক হয়ে যায়।



শাপলা সারা বছর ধরেই একটু-আকটু ফুটতে দেখা যায় তবে বর্ষায় ও শরৎ কালে এদের ফুটার সিজন বলা যায়। তখন এরা ফুটে প্রচুর পরিমানে।



ছবি তোলার স্থান : রামসাগর দিঘী, দিনাজপুর, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ৫ জানুয়ারি, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ।
তথ্য সূত্র : বাংলাপিডিয়া, উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : নিজ।



=================================================================

আজি যত কুসুম কলি ফুটিলো কাননে

অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অ্যালামন্ডা (বেগুনী), আকন্দ, আমরুল, অপরাজিতা, আফ্রিকান টিউলিপ,
উগান্ডা শিখা, উর্বশী, উর্বসী, এরোমেটিক জুঁই, এ্যালামন্ডা (বেগুনী)
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা, ক্যালেনডুলা, কামান গোলা, কাগজ ফুল, কালো বাদুড় ফুল, কাঁটামুকুট, কন্টকমুকুট, কাঞ্চনার, কৃষ্ণচূড়া, খাড়া মুরালি
গাঁদা, গেন্ধা, গন্ধা, রক্তগাঁদা, গামারি, গামার, গাম্বার, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া, গৌরিচৌরি, গিরিপুষ্প, গুলেটু, ঘোড়া চক্কর
চন্দ্রপ্রভা, চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (হালকা গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (সাদা), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (লালচে গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (কমলা), চন্দ্রমল্লিকা (হলুদ-সাদা), ছোটপানা
জবা, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, ক্রিম জবা, গোলাপী জবা
জারবেরা, জ্যাকারান্ডা, ঝুমকোলতা, ঝুমকো জবা
ডালিয়া, তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা, ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগচম্পা, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা, নীল বনলতা, নীল লতা, নীল-পারুল, নীল-পারুল লতা, নয়নতারা,
পপী, পুন্নাগ, পারুল লতা, পঞ্চমুখী জবা, পুর্তলিকা, পুত্তলিকা, পটপটি
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বিলাই আঁচড়া, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বাসন্তীলতা, বোগেনভিলিয়া, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট, বন পালং, বন তেজপাতা, বার্মিজ গোলাপি সোনাইল, ভাট ফুল
মাধবীলতা, মাধবিকা, মধুমঞ্জরি, মিয়ানমার ফুল,
রঙ্গন, রুক্সিনী, রক্তক, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাজ অশোক, রাধীকা নাচন, রাধাচূড়া, রত্নগণ্ডি, রাণীচূড়া, রসুন্ধি লতা, রুয়েলিয়া, রক্ত জবা, রক্তকাঞ্চন, রক্তপুষ্পক
লতা মাধবী, লতা পারুল, লাল আকন্দ, লাল কাঞ্চন, লাল শাপলা
শাপলা (সাদা), শাপলা (লাল), শিউলি, শেফালি, শেফালিকা, শিবজটা, শিবঝুল, শিমুল, শ্বেত অপরাজিতা, শ্বেত পুষ্পা, শ্বেত অকন্দ
সন্ধ্যামালতী, সুলতান চাঁপা, সুখ মুরালি, সোনাপাতি, সিদ্ধেশ্বর, সিদ্ধেশ্বরা, সোকরে
হাতি জোলাপ,

অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল

মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল, চুকাই ফুল, চুকুর ফুল, সরষে ফুল, সর্রিষা ফুল, তিল ফুল, বিষকাটালি, পাহাড়ি বিষকাটালি,

বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, পলাশ ও পারিজাত পরিচিতি, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, আতা কাহিনী, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:১৯
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×