শীতের ভোর, বাড়ি থেকে যখন বের হচ্ছি তখনো আলো ফোটেনি ঠিক মতো। শীতের ভোর বলেই আলোরা আলসেমী করছে ফুটতে। হাতে ক্যামেরা নিয়ে বেরিয়েছি, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের শেষ শুক্রবার Save the Heritages of Bangladesh এর সাথে যাবো হেরিটাজ ট্রিপে। আমি গাড়িতে উঠবো লালমাটিয়া আড়ং এর সামনে থেকে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পৌছেছি সেখানে। গাড়ি আর সহ যাত্রীরা পৌছয়নি। শুধ তপনদা এসেছেন।
সংসদ ভবনের সীমানয় লালমাটিয়ার কোনার অংশে একটি পুরনো দেবকাঞ্চন গাছ আছে, ফুল ফুটেছে। এই গাছের ফুলগুলির রং খুবই সুন্দর। তপনদাকে সঙ্গে নিয়ে সেদিকে পা বাড়ালাম দেবকাঞ্চনের ছবি তুলতে। শীতের সকালে কুয়াশা মোড়া মেদা মেদা আলোতে দূর থেকে ছবি ভালো আসবে না। কিন্তু রক্ষীরা ভিতরে ঢুকতে দিবে না। প্রথমেতো ছবিই তুলতে দিতে চাইলো না। গাছের দিকে ক্যামেরা তাক করার পরে তাদের একজন মূত্রত্যগ বন্ধ করে ছুটে এলো। আমাদের ক্যামেরার লেন্স বন্দুকের নল নাকি গ্রেনেড লঞ্চার মনে করেছে কে জানে! হয়তো ভেবেছে গাছটিকে বোমা মেরে উড়িয়ে দিবো। গাছের গোড়ায় মূত্রত্যাগে সমস্যা নেই, কিন্তু গাছের ছবি তোলায় সমস্যা!! পরে অবশ্য ছবি তুলতে দিয়েছে, তবে ভিতরে যেতে দেয় নি। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কয়েকটা ছবি তুলে ছিলাম তখন।
ফুলের নাম : দেবকাঞ্চন
অন্যান্য নাম : রাঙ্গা কাঞ্চন, রাঙা কাঞ্চন।
Common Name : Orchid Tree, Hong Kong Orchid Tree, Purple Bauhinia, Camel's Foot, Butterfly Tree, Hawaiian Orchid Tree ইত্যাদি।
Scientific Name : Phanera purpurea
নানান ধরনের কাঞ্চন ফুল দেখতে পাওয়া যায়। রং, আকার, ধরনের বিবেচনায় তাদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। তবে আমাদের বাংলাদেশে সাধারণত তিন ধরনের কাঞ্চনই বেশী দেখা যায়। শ্বেতকাঞ্চন, দেবকাঞ্চন এবং রক্তকাঞ্চন। এদের মধ্যে দেবকাঞ্চন চোখে পড়ে তুলনায় কম, শ্বেতকাঞ্চন এবং রক্তকাঞ্চনের আধিক্যই বেশী। তাছাড়া হাইব্রীড কাঞ্চনও আছে। সেগুলির ছবিও দিবো এক সময়, তোলা আছে আমার কাছে।
দেবকাঞ্চন ফুলের অসমান ও লম্বাটে ৫টি মুক্ত পাপড়ি থাকে। বাংলাদেশে এদের ফুল ফোটে হেমন্তে ও শীতে। দেবকাঞ্চনের ফুল সাধারণত কয়েকটি একত্রে একটি ডাঁটায় ফুটে, ভালো জাত ও পরিচর্যা পেলে সারা গাছ ভরে যায় ফুলে ফুলে। প্রতিটিফুল ফুল ৬ থেকে ৮ সেন্টিমিটার চওড়া। দেবকাঞ্চচন ফুল মানেই গোলাপী রঙের হবে তা কিন্তু নয় বরং দেবকাঞ্চণ ফুলের রং সাদা, লালচে গোলাপী, হাল্কা গোলাপী, হালকা বেগুনি ইত্যাদি হতে পারে। দেবকাঞ্চনের ফুল সুগন্ধি যুক্ত হয়।
ফুল শেষে গাছে সবুজ লম্বাটে শিমের মত ফল ধরে। প্রতিটি ফলে ১২-১৬ টি বীজ থাকে। চৈত্র মাসে নিষ্পত্র গাছে ঝুলন্ত ফলগুলি সশব্দে ফেটে গিয়ে বীজ ছড়ায় পরে। সেই ছড়িয়ে পরা বীজ থেকেই নতুন চারা জন্মে।
দেবকাঞ্চনের আদি নিবাস চীন এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। দেবকাঞ্চন ছোট থেকে মাঝারি আকারের পত্রঝরা বৃক্ষ, মাথা ছড়ান। দ্রুত বর্ধনশীল এই গাছ ১৫ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে পারে।
দেবকাঞ্চন বা যেকোনো কাঞ্চন গাছের পাতা কিন্তু বেশ দেখতে। অন্য যেকোনো গাছের পাতার চেয়ে অনেক বেশী আলাদা হয়। পাতা গুলি হৃদয় আকৃতির মাঝারি সাইজের হয়। পাতা দেখে খুব সহজেই কাঞ্চন গাছ চেনা যায়। তবে সেটি কোন কাঞ্চন তা পাতা দেখে কোনো ভাবেই অনুমান করা কঠিন।
অনেকই রক্তকাঞ্চন ফুলকে দেবকাঞ্চনের সাথে মিলেয়ে ফেলে। দুটি আলাদা করার সবচেয়ে সহজ বিষয় হচ্ছে ফুল ফুটার সময়। দেবকাঞ্চন ফুটে হেমন্ত ও শীতে। এই সময় রক্তক্ঞ্চন ফুটে না। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে ফুলের পাপড়ি। দেবকাঞ্চনের পাপড়ি মুক্ত, আর রক্তকাঞ্চনের পাপড়ি একটার উপরে আরেকটি উঠে আসে।
ছবি তোলার স্থান : সংসদভবন, ঢাকা, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ২৯/১২/২০১৭ ইং
=================================================================
আজি যত কুসুম কলি ফুটিলো কাননে
ফুলেদের কথা
অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অ্যালামন্ডা (বেগুনী), আকন্দ, আমরুল, অপরাজিতা, আফ্রিকান টিউলিপ,
উগান্ডা শিখা, উর্বশী, উর্বসী,
এরোমেটিক জুঁই, এ্যালামন্ডা (বেগুনী)
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা, ক্যালেনডুলা, কামান গোলা, কাগজ ফুল, কালো বাদুড় ফুল
গাঁদা, গেন্ধা, গন্ধা, গামারি, গামার, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া, গৌরিচৌরি, গিরিপুষ্প, গুলেটু
ঘোড়া চক্কর
চন্দ্রপ্রভা,
জবা, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, ক্রিম জবা, গোলাপী জবা
জারবেরা, জ্যাকারান্ডা,
ঝুমকোলতা
ডালিয়া
তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা
ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগচম্পা, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা, নীল বনলতা, নীল-পারুল, নীল-পারুল লতা,
পপী, পুন্নাগ, পারুল লতা, পঞ্চমুখী জবা
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বিলাই আঁচড়া, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বোগেনভিলিয়া, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট, বন পালং, বন তেজপাতা
ভাট ফুল
মাধবীলতা, মাধবিকা, মধুমঞ্জরি, মিয়ানমার ফুল,
রঙ্গন, রুক্সিনী, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাধীকা নাচন, রাধাচূড়া, রত্নগণ্ডি, রাণীচূড়া, রসুন্ধি লতা, রুয়েলিয়া,
লতা মাধবী, লতা পারুল, লাল আকন্দ
শাপলা (সাদা), শিউলি, শেফালি, শেফালিকা, শিবজটা, শ্বেত অপরাজিতা, শ্বেত অকন্দ
সুলতান চাঁপা, সোনাপাতি, সিদ্ধেশ্বর, সিদ্ধেশ্বরা,
হাতি জোলাপ,
=================================================================
ফুলেদের ছবি
ফুলের রাণী গোলাপ - ০১, ফুলের রাণী গোলাপ - ০২, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৩, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৪
ফুলের রাণী গোলাপ - ০৫, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৬, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৭, ফুলের রাণী গোলাপ - ০৮
ফুলের রাণী গোলাপ - ০৯, ফুলের রাণী গোলাপ - ১০, ফুলের রাণী গোলাপ - ১১, ফুলের রাণী গোলাপ - ১২
ফুলের রাণী গোলাপ - ১৩
রাতের গোলাপ - ০১, রাতের গোলাপ - ০২, রাতের গোলাপ - ০৩, রাতের গোলাপ - ০৪
অর্কিড-২, অর্কিড-৩, অর্কিড-৪, অর্কিড-৫
কচুরিপানা ফুল-২, কসমস-২, কসমস-৩, কসমস-৪, কসমস-৫, কসমস-৬, কর্ণফ্লাওয়ার-২,
গ্লুকাস ক্যাসিয়া-২, গ্লুকাস ক্যাসিয়া-৩, গোলাপি আমরুল-২,
ডালিয়া-২, ডালিয়া-৩, ডালিয়া-৪,
দাদমর্দন-২, দাদমর্দন-৩, দাদমর্দন-৪, দোলনচাঁপা-২
পপী-২, পপী-৩, পপী-৪, পপী-৫
বোতল ব্রাশ-২, বোতল ব্রাশ-৩, বোতল ব্রাশ-৪
শিমুল গাছে আগুন, অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল
মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল, চুকাই ফুল, চুকুর ফুল, সরষে ফুল, সর্রিষা ফুল,
=================================================================
গাছেদের কথা
বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, আতা কাহিনী, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================
গাছ-গাছালি; লতা-পাতা
গাছ-গাছালি; লতা-পাতা - ০১, গাছ-গাছালি; লতা-পাতা - ০২, গাছ-গাছালি; লতা-পাতা - ০৩, গাছ-গাছালি; লতা-পাতা - ০৪, গাছ-গাছালি; লতা-পাতা - ০৫, গাছ-গাছালি; লতা-পাতা - ০৬
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০২২ রাত ৯:৩৮