somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীল বনলতা

০১ লা মে, ২০২৩ দুপুর ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সময়টা তখন ২০১৬ সালের জুলাই মাসের ২৯ তারিখ। ২০ জনের একটি গ্রুপের সাথে আমি ছিলাম মিরসরাই এলাকায়। দুই দিন ধরে নানান ঝিরি পথ আর পাহাড়ি পায়ে চলা ট্রেকিং রুট ধরে ঘামে ভেজা ক্লান্ত শরীরে বিশাল এক ভুড়ি টেনে টেনে পথ চলছি ঝর্না দেখবো বলে। দুই দিনে গোটা ৮-৯টা ঝর্না দেখা হয়েছিল সেবার। তেমনি এক ঝর্ণার খোঁজে প্রথমে ঝিরি পথ ধরে অনেকটা পথ গিয়ে শুরু হয় পাহাড়ে উঠা। খুব চড়াই কিছু না, তবুও আমার মতো মোটা-আলসে মানুষের জন্য সেটাই অনেক কিছু। আমার এক হাতে ক্যামেরা আরেক হাতে একটি বাঁশ। বাঁশটি পথ চলতে সাহায্য করছে, আর ক্যামেরাটি স্মৃতি ধরে রাখতে। ক্যামেরার ভারে মনে হয় হাত-কাঁধ অবস হয়ে যাবে। পানির বতোল আর টুকিটাকি জিনিস হয় ক্যামেরার ব্যাগ দিয়েছি বন্ধু ইস্রাফীলের হাতে। ওর হাতেই এইসব থাকা ভালো, নইলে হাত খালি পেলে কোন ফাঁকে সিঙ্গায় ফু দেয়ার মতলব আটে বলা যায় না।



তো যাইহোক এতো কষ্টের মাঝেও অচেনা একটি ফুল দেখে মনটা জুড়িয়ে গেলো। চোখ আটকে গেলো নীলচে এক ফুলের সৌন্দর্যের ঝলকে। কিন্তু হাতে সময় ছিলোনা, এই পথে একা পিছিয়ে পড়াটা বোকামী হবে। তাছাড়া ম্যমরি কার্ডের স্পেসের হিসাবটাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। তাই টপাটপ ২-৩টি ছবি তুলে হাঁটা শুরু করলাম।

নামনাজানা সেই পাহাড়ি ফুলটিকে আবার খুঁজে পেলাম এক বছর পরে ২০১৭ সালের মার্চ মাসের ১৭ তারিখে পুরান ঢাকার বলধা গার্ডেনে, নাম তার নীল বনলতা। ফুলটি দেখতে যেমন সুন্দর তার নামও তেমনি সুন্দর।

পরে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে বোটানিক্যাল গার্ডেনে দেখা পাই এই নীল বনলতা ফুলের।



নীল বনলতা
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : নীল লতা, নীলাতা, নল লতা, নালাতা ।
Common Name : Bengal Clock Vine, Blue Trumpet Vine, Clockvine, Skay Flower
Scientific Name : Thunbergia grandiflora



নীল বনলতা আমাদের নিজস্ব ফুল, এর আদি নিবাস বাংলাদেশ, ভারত। এটি চীন, ভারত, নেপাল, ইন্দোচীন, মায়ানমারে প্রাকৃতিক ভাবে জন্মে।

নীল বনলতা শক্ত লতার গাছ। দ্রুত বর্ধনশীল চিরহরিৎ লতানো এই গাছ ২৫ থেকে ১০০ ফুট পর্যন্ত উঠতে পারে। এদের পাতা রুক্ষ, আগা চোখা। বাগানের চারদিকে আলংকারিক বেড়া হিসেবে এর ব্যপক ব্যবহার সম্ভব। তাছাড়া তোরণ বা মাচা করে দিলে চমৎকার দেখতে হয়। নীল বনলতা ইতোমধ্যে বিশ্বের অনেক দেশে গার্ডেন প্ল্যান্ট হিসেবে খ্যাতি কুড়িয়েছে। আমাদের কাছের পাহাড়ে গুলিতে প্রকৃতিক ভাবেই এই বনফুল বছরের প্রায় নয় মাস নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরে ফুটে থাকে। ফলে এটি বাগানের জন্য খুবই উপযোগী একটি ফুল। উদ্যানে কিংবা বাড়ির ছোট্ট বাগানে ঝাঁকা কিংবা মাচা তৈরি করে এদের লাগালে চমৎকার মানিয়ে যাবে।



নীল বনলতা গাছে লম্বা ঝুলন্ত ডাঁটায় এক সাথে অনেকগুলি কলি আসে। কলিগুলি থেকে একটি বা একাধিক ফুল ফুটতে শুরু করে। ফুল দেখতে কিছুটা ঘণ্টার মতো। দলনল সামান্য বাঁকা। প্রতিটি ফুলে ৫টি করে পাপড়ি থাকে। পাপড়ির রঙ হালকা নীল বা আকাশী নীল, কিছুটা সুগন্ধিযুক্ত। যেহেতু গাছটি লতাজাতীয় ও বুন এবং ফুলের রং নীল, এই কারণেই ফুলটির নাম হয়েছে নীল বনলতা ফুল। ফুলের পুংকেশর চারটি, দলের সঙ্গে লাগানো থাকে। ফুলগুলি পর্যায়ক্রমে ধীরে ধীরে মার্চ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফুল ফুটে।

শুনেছি এর ফল বেশ শক্তপোক্ত ধরনের, তিন থেকে পাঁচ সেন্টিমিটার লম্বা হতে পারে। গাছটির বংশবিস্তার বীজ ও কলমে হয়ে থাকে।

নীল বনলতার অনেক ভেষজ গুণ রয়েছে। পেটের পীড়ায় কাজে লাগে।
পাতা সবজি হিসেবে আদিবাসীরা ব্যবহার করে।


=================================================================

আজি যত কুসুম কলি ফুটিলো কাননে

অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অ্যালামন্ডা (বেগুনী), আকন্দ, আমরুল, অপরাজিতা, আফ্রিকান টিউলিপ,
উগান্ডা শিখা, উর্বশী, উর্বসী, এরোমেটিক জুঁই, এ্যালামন্ডা (বেগুনী)
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কালো বাসক, কালো বাদুড় ফুল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা, ক্যালেনডুলা, কামান গোলা, কাগজ ফুল, কাঁটামুকুট, কন্টকমুকুট, কাঞ্চনার, কাঞ্চনক, কৃষ্ণচূড়া, খাড়া মুরালি
গাঁদা, গেন্ধা, গন্ধা, রক্তগাঁদা, গামারি, গামার, গাম্বার, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া, গৌরিচৌরি, গিরিপুষ্প, গুলেটু, গুলমোহর, ঘোড়া চক্কর
চন্দ্রপ্রভা, চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (হালকা গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (সাদা), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (লালচে গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (কমলা), চন্দ্রমল্লিকা (হলুদ-সাদা), ছোটপানা
জবা, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, ঝুমকা জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, ক্রিম জবা, গোলাপী জবা, হাইব্রিড গোলাপী জবা, হাইব্রিড ক্রিম জবা
জারবেরা, জ্যাকারান্ডা, ঝুমকোলতা, ঝুমকো জবা
টগর, ডালিয়া, তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা, ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগচম্পা, নাগেসর, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা, নীলচূড়া, নীল বনলতা, নীল লতা, নীল-পারুল, নীল-পারুল লতা, নয়নতারা,
পপী, পুন্নাগ, পারুল লতা, পঞ্চমুখী জবা, পুর্তলিকা, পুত্তলিকা, পটপটি
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বিলাই আঁচড়া, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বাসন্তীলতা, বোগেনভিলিয়া, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট, বন পালং, বন তেজপাতা, বার্মিজ গোলাপি সোনাইল, ভাট ফুল, ভ্রমরপ্রিয়া
মাধবীলতা, মাধবিকা, মধুমঞ্জরি, মিয়ানমার ফুল, মূলাপাতা
রঙ্গন, রুক্সিনী, রক্তক, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাজ অশোক, রাধীকা নাচন, রাধাচূড়া, রত্নগণ্ডি, রাণীচূড়া, রসুন্ধি লতা, রুয়েলিয়া, রক্ত জবা, রক্তকাঞ্চন, রক্তপুষ্পক, রক্ত শিমুল
লতা মাধবী, লতা পারুল, লাল আকন্দ, লাল কাঞ্চন, লাল শাপলা, লাল শিমুল
শাপলা (সাদা), শাপলা (লাল), শিউলি, শেফালি, শেফালিকা, শিবজটা, শিবঝুল, শিমুল, শ্বেত অপরাজিতা, শ্বেত পুষ্পা, শ্বেত অকন্দ
সন্ধ্যামালতী, সুলতান চাঁপা, সুখ মুরালি, সোনাপাতি, সিদ্ধেশ্বর, সিদ্ধেশ্বরা, সোকরে
হাতি জোলাপ,

অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল

মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল, চুকাই ফুল, চুকুর ফুল, সরষে ফুল, সর্রিষা ফুল, তিল ফুল, বিষকাটালি, পাহাড়ি বিষকাটালি,

বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, পলাশ ও পারিজাত পরিচিতি, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, আতা কাহিনী, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মে, ২০২৩ দুপুর ২:০৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফিরে দেখা ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং ভারতের প্রতি একটি সতর্ক বার্তা

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:০০

অতীতে গরুর মাংসে হাড় বেশি হওয়ার জের ধরেও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হতে দেখেছি,
.
ও ভাই মুজে মারো মুজে মারো নেহি মাজাক হ রাহে
.
ঢাল-সড়কি,টেঁটা-বল্লম, গুলতি, লাঠিসোটা, ইট পাটকেল নিয়ে তারা দলে দলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকা কেন শেখ হাসিনার সরকারকে উৎখাত করলো?

লিখেছেন জেনারেশন৭১, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১১



ব্লগে কে কে বলেন, আমেরিকা শেখকে হত্যা করেছে? খুব বেশী ব্লগার ইহা বলেন না; তারা শেখের দুর্নীতি, আওয়ামী লীগের দোষ টোষ নিয়ে বলেন যে, কিছু বিপথগামী সৈনিক শেখকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গড়ে উঠুক ধর্মীয় সম্প্রিতীর মিলন মেলা

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:২৩


ধর্মের নামে একি রক্তের খেলা চেতনাহীন উন্মত্ত মঞ্চে
বিবেকের প্রদীপ যেন নিভে যাচ্ছে অদৃশ্য ঘন কুটচালে
শতাব্দীর সঞ্চিত মানবতার দীপ্যমান শিখা
অন্ধকারের আবরণে ঢেকে দিচ্ছে সম্প্রিতীর গৌরব গাথা।

গোপন লালসার দাবানলে পুড়ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় বিএসএফের বর্বরতা: পঞ্চগড় সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশিকে হত্যা

লিখেছেন শাম্মী নূর-এ-আলম রাজু, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:২১

আরেকটি নিরীহ প্রাণের বলিদান

আবারও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশের সীমান্তে নিরীহ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। পঞ্চগড় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হওয়ার ঘটনা এলাকাবাসীর মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......

লিখেছেন জুল ভার্ন, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:৪৭

ইন্ডিয়া আমাদের দেশ দখল করে নেবে......

এতো সোজা!
চাইলেই কেউ কোনো দেশ দখল করে নিতে পারে না- তা সে যতই শক্তিধর দেশ হোক। বড়ো, শক্তিশালী রাষ্ট্র হলেই যদি ছোট এবং দুর্বল দেশকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×