গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে এপ্রিল মাসে খুব কম সময়ের জন্য ভুঁই চাঁপা নামের একটি বিশেষ ফুল ফোটে। মাটি ফুঁড়ে চমৎকার সেই ফলটি বেরিয়ে এসে নিজের সৌন্দর্য বিলিয়ে দেয় লোকচক্ষোর আড়ালেই। ২০১৮ সালে আমি আর আমার বন্ধু ইস্রাফীল এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে গিয়েছিলাম গাজীপুরের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে সেই ভুঁই চাঁপা ফুলটিকে খুঁজে বের করার জন্য। কিন্তু হায়!!! সারা বন খুঁজেও একটি ভুঁই চাঁপার দেখে মেলেনি। তবে ভুঁই চাঁপার দেখা না মিললেও দেখা হয়ে গেছে পরিচিত আরেক রূপসী শটি ফুলের সাথে। যেমনি তার রূপ তেমনি তার রং, আরো আছে গুণ। এর ব্যবহার আছে প্রসাধনী ও রান্নায়।
বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি, তাই আমি পৃথিবীর রূপ
খুঁজিতে যাই না আর : অন্ধকারে জেগে উঠে ডুমুরের গাছে
চেয়ে দেখি ছাতার মতো ব্ড় পাতাটির নিচে বসে আছে
ভোরের দয়েলপাখি – চারিদিকে চেয়ে দেখি পল্লবের স্তূপ
জাম-বট-কাঁঠালের-হিজলের-অশথের করে আছে চুপ;
ফণীমনসার ঝোপে শটিবনে তাহাদের ছায়া পড়িয়াছে;
মধুকর ডিঙা থেকে না জানি সে কবে চাঁদ চম্পার কাছে
এমনই হিজল-বট-তমালের নীল ছায়া বাংলার অপরূপ রূপ
----- জীবনানন্দ দাশ -----
শটি ফুল
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : শঠি ফুল, হডি ফুল, বন হলুদ ফুল, জংলী হলুদ ফুল, হুইট ফুল, হুইড ফুল, ঘিকমা ফুল, ফইল্লা
Common Name : Wild turmeric, Aromatic turmeric
Scientific Name : Curcuma aromatica
শটি আমাদের এই উপমহাদেশীয় আদা জাতীয় গাছ। এটি বর্ষজীবী গুল্ম ও কন্দ জাতীয় উদ্ভিদ। সাধারণত যে সমস্ত এলাকায় বন্যার জল উঠতে পারে না এবং ফসলের চাষ হয় না সেই সমস্ত মাটিতে শটি জন্মে। বসন্তের শেষদিকে গ্রীষ্মের শুরুতে প্রথম যখন একপশলা বৃষ্টির জল পেয়ে মাটি ভিজে রসালো হয়ে উঠে ঠিক তখন মাটি ফুঁড়ে শটি ফুল বেরিয়ে আসে। শটি ফুল বড় মঞ্জরিদণ্ডে সুবিন্যস্তভাবে পাপড়ি সাজিয়ে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে থাকে। মঞ্জরিদণ্ডের দৈর্ঘ্যে প্রায় ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি হয়ে থাকে। ফুটন্ত ফুলের রং লাল, গোলাপি-লাল, বেগুনি ও হলুদ আভায় মিশ্রিত। ফুলের রং আর রূপ নজরকাড়া, পথিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেই।
আধো ফোটা জ্যোৎস্নায়; তখন ঘাসের পাশে কতদিন তুমি
হলুদ শাড়িটি বুকে অন্ধকারে ফিঙ্গার পাখনার মতো
বসেছ আমার কাছে এইখানে — আসিয়াছে শটিবন চুমি
গভীর আঁধার আরো — দেখিয়াছি বাদুড়ের মৃদু অবিরত
আসা — যাওয়া আমরা দুজনে বসে বলিয়াছি ছেঁড়াফাঁড়া কত
মাঠ ও চাঁদের কথা: ম্লান চোখে একদিন সব শুনেছ তো।
----- জীবনানন্দ দাশ -----
ফুল শেষে গাছের পাতা হয়। পাতাগুলি কয়েক মাস পরে মরে যায়। মাটির উপরে শটির আর কোনো অস্তিত্বই থাকে না। তবে মাটির নিচে থেকে যায় শটির কন্দ সুপ্ত অবস্থায়। পরের বছর আবার বৃষ্টির পরে মাটি ফুঁড়ে ফুল আসে, পাতা আসে। এভাবেই চলে শটির জীবনচক্র। শটিগাছের জীবনকাল ৭ থেকে ৮ মাস।
শটি গাছ দেখতে প্রায় হুবহু হলুদ গাছের মতো। গাছ উচ্চতায় ৩ থেকে ৪ ফুট হয়। গাছে সবুজ রঙের বেশ বড় বড় পাতা হয়। পাতার অগ্রভাগ সূচালো, মধ্যশিরা স্পষ্ট।
শটি গাছ যেখানে জন্মায় সেখানে কন্দের মাধ্যমে নিজের বংশ বিস্তার করে ঝোপালো আকার ধারণ করে। শটি ফুলগাছ বেশ কষ্টসহিষ্ণু। একবার কন্দ থেকে চারাগাছ জন্ম নিলে গাছের সংখ্যা দিন দিন বাড়তেই থাকে।
এককালে শটিগাছের পাতা গ্রামে নানান কাজে ব্যবহার হতো। যেমন হাট-বাজারে দোকানিরা লবণ, গুড়, মাছ, শুঁটকি মাছ ইত্যাদি শটিপাতায় মুড়ে দিতো।
শটি গাছের রয়েছে ভেষজ নানান গুণ। শটির কন্দ থেকে তৈরি করা বার্লি বা পালো ডায়রিয়া ও জ্বর নিবারণে কাজ করে। তাছাড়া এটি বেশ পুষ্টিকর খাবারও বটে। পালো সব বয়সের মানুষের জন্য একটি ভালো খাবার।
আয়ুরবেদিক চিকিৎসাশাস্ত্রে বলা হয়েছে শটি পেট ফাঁপা, প্রদাহ, ব্যথা, নানান চর্ম রোগসহ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সারাতে উপকারী।
শটির কন্দ সবজি হিসেবেও খাওয়া হয়।
ছবি তোলার স্থান : ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান, গাজীপুর, বাংলাদেশ।
ছবি তোলার তারিখ : ৯ই এপ্রিল ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দ।
তথ্য সূত্র : উইকিপিডিয়া, অন্তর্জাল।
ছবি ও বর্ণনা : নিজ।
=================================================================
আজি যত কুসুম কলি ফুটিলো কাননে
অশোক, অর্কিড, অলকানন্দা, অলকানন্দা (বেগুনী), অলকানন্দা (হলুদ), অ্যালামন্ডা (বেগুনী), আকন্দ, আমরুল, অপরাজিতা, আফ্রিকান টিউলিপ,
উগান্ডা শিখা, উর্বশী, উর্বসী, এরোমেটিক জুঁই, এ্যালামন্ডা (বেগুনী)
কলাবতী, কচুরিপানা ফুল, কসমস, কালো পঙ্গপাল, কালো বাসক, কালো বাদুড় ফুল, কর্ণফ্লাওয়ার, কন্টকলতা, ক্যালেনডুলা, কামান গোলা, কাগজ ফুল, কাঁটামুকুট, কন্টকমুকুট, কাঞ্চনার, কাঞ্চনক, কৃষ্ণচূড়া, খাড়া মুরালি
গাঁদা, গেন্ধা, গন্ধা, রক্তগাঁদা, গামারি, গামার, গাম্বার, গোলাপ, গোলাপি আমরুল, গ্লুকাস ক্যাসিয়া, গৌরিচৌরি, গিরিপুষ্প, গুলেটু, গুলমোহর, ঘোড়া চক্কর
চন্দ্রপ্রভা, চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (হালকা গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (সাদা), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (লালচে গোলাপি), চন্দ্রমুখী চন্দ্রমল্লিকা (কমলা), চন্দ্রমল্লিকা (হলুদ-সাদা), ছোটপানা
জবা, সাদা জবা, ঝুমকো জবা, ঝুমকা জবা, লঙ্কা জবা, পঞ্চমুখী জবা, বহুদল জবা, রক্ত জবা, হলুদ জবা, ক্রিম জবা, গোলাপী জবা, হাইব্রিড গোলাপী জবা, হাইব্রিড ক্রিম জবা
জারবেরা, জ্যাকারান্ডা, ঝুমকোলতা, ঝুমকো জবা
টগর, জংলি টগর, ডালিয়া, তমাল, তারাঝরা
দাঁতরাঙ্গা, দাদমর্দন, দেবকাঞ্চন, দোলনচাঁপা, ধুতুরা
নাগেশ্বর, নাগচম্পা, নাগেসর, নাগলিঙ্গম, নীল হুড়হুড়ে, নীল জ্যাকারান্ডা, নীলচূড়া, নীল বনলতা, নীল লতা, নীলাতা, নীল-পারুল, নীল-পারুল লতা, নয়নতারা,
পপী, পুন্নাগ, পারুল লতা, পঞ্চমুখী জবা, পুর্তলিকা, পুত্তলিকা, পটপটি
ফাল্গুনমঞ্জরী, ফুরুস (সাদা)
বরুণ, বড়নখা, বিড়াল নখা, বিলাই আঁচড়া, বাদুড় ফুল, বাগানবিলাস, বাসন্তীলতা, বোগেনভিলিয়া, বোতল ব্রাশ, ব্লিডিং হার্ট, বন পালং, বন তেজপাতা, বার্মিজ গোলাপি সোনাইল, ভাট ফুল, ভ্রমরপ্রিয়া
মাধবীলতা, মাধবিকা, মধুমঞ্জরি, মিয়ানমার ফুল, মূলাপাতা
রঙ্গন, রুক্সিনী, রক্তক, রুদ্রপলাশ, রাজ অশোক, রাজ অশোক, রাধীকা নাচন, রাধাচূড়া, রত্নগণ্ডি, রাণীচূড়া, রসুন্ধি লতা, রুয়েলিয়া, রক্ত জবা, রক্তকাঞ্চন, রক্তপুষ্পক, রক্ত শিমুল
লতা মাধবী, লতা পারুল, লাল আকন্দ, লাল কাঞ্চন, লাল শাপলা, লাল শিমুল
শাপলা (সাদা), শাপলা (লাল), শিউলি, শেফালি, শেফালিকা, শিবজটা, শিবঝুল, শিমুল, শ্বেত অপরাজিতা, শ্বেত পুষ্পা, শ্বেত অকন্দ
সন্ধ্যামালতী, সুলতান চাঁপা, সুখ মুরালি, সোনাপাতি, সিদ্ধেশ্বর, সিদ্ধেশ্বরা, সোকরে
হাতি জোলাপ,
অশোক ফুলের ছবি, নাগেশ্বর ও ভমর, পলাশ ফুটেছে......, ডালিয়া, ধুতরা ফুল, একটি দাঁতরাঙ্গা ফুল
মিষ্টি জলপাইয়ের ফুল, ডালের ফুল, চুকাই ফুল, চুকুর ফুল, সরষে ফুল, সর্রিষা ফুল, তিল ফুল, বিষকাটালি, পাহাড়ি বিষকাটালি,
বাংলাদেশের সংরক্ষিত উদ্ভিদের সচিত্র তালিকা, অশোক সমগ্র, কৃষ্ণচূড়া, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও কনকচূড়া বিতর্ক, পলাশ ও পারিজাত পরিচিতি, চাঁপা নিয়ে চাপাবাজি, আতা কাহিনী, বিলম্ব, মাছি ফাঁদ উদ্ভিদ, জল জমানি পাতা, শিউলি
=================================================================